নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নহারা স্বপ্নবাজ আমি

মেশকাত মাহমুদ

ব্যক্তিজীবনে অহিংসায় বিশ্বাস করি। বুদ্ধের দর্শন গভীরভাবে ভাবায় আমায়। “আসক্তিই সকল দুঃখের কারণ, অধিকারবোধ থেকেই দুঃখের সৃষ্টি।” এই দুটো বাক্যের উপর অগাধ বিশ্বাস। কারো চিন্তা-চেতনাকেই ছোট করে দেখিনা। আমি বিশ্বাস করি যে মতবাদই হোক, তার গভীরে না ঢুকে সে সম্পর্কে মন্তব্য করা উচিত না। যেকোন চরমপন্থা, হোক সেটা যেকোন ধর্ম অবলম্বন করে অথবা অন্য যেকোন মতবাদের উপর ভিত্তি করে, আমি ঘৃণা করি। শুরুতেই অহিংসা আর এখন ঘৃণা দুটো শব্দ পরস্পর বিরোধী হয়ে যায়। কিন্তু চরমপন্থার ক্ষেত্রে মানবজীবনের কোন মূল্য নেই। যে মতবাদের বাস্তবায়নে নিঃসংকোচে নির্দিধায় মানুষ হত্যা করা হয়, আমি যতটাই অহিংসতায় বিশ্বাস করি, ঠিক ততটাই ঘৃণা করি। সবার উপর মানুষের জীবন আর মৌলিক অধিকার সত্য, এর উপরে কিছু নাই। এটাই আমার জীবনের দর্শন। নিজে অসুস্থ হয়েও মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষগুলোর এবং তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে নিজে মনঃচিকিৎসক হওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছি। প্রতিটি মৃত্যু আমাকে গভীরভাবে ভাবিয়ে তোলে। সবসময় একটা মানবতাবাদী সমাজের স্বপ্ন দেখি, যদিও জানি পৃথিবীতে হানাহানি কোনদিন শেষ হবেনা। তৃতীয় বিশ্বের মানুষের জীবন, প্রথম বিশ্বের একটা পোষা কুকুরের জীবনের মূল্যের থেকেও কম। এটা খুব ভাবায় আমায়। ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধে উঠতে খুব ইচ্ছে করে। পারিনা, তবে চেষ্টা করে যায়। যেদিন SELF ACTUALIZATION আসবে সেদিন ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধে উঠে যাবো, এই ভাবনাই হৃদয়ের বাম অলিন্দে, মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাসে ধারণ করে যায়।।

মেশকাত মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্রোহ এবং চিঠির দিনগুলোতে প্রেম।

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৪৬

১।
সময়টা ছিল ১৯৯৬। একদিকে বিএনপির একপাক্ষিক নির্বাচন আর অন্যদিকে আওয়ামীলীগের কঠোর আন্দোলন। আবির তখন পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র। তার বয়স ছিল ক্লাসের সবার চেয়ে কম। ছোটবেলায় আবিরকে নিয়ে তার মা সিনেমা দেখতে যায়। সেটা ১৯৮৯ সালের কথা। আবিরের বয়স তখন মাত্র ২ বছর। মায়ের মুখ থেকে আবিরের গল্প শোনা।
তখন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরাও হলে সিনেমা দেখতে যেত। আবিরের মায়ের পাশে বসা মহিলাটা গল্প করছিল তার ছেলে মাত্র ১৫ বছর বয়সে এসএসসি পাশ করেছে। আবিরের মায়ের অবচেতন মনে বাসা বেঁধে যায় তার একমাত্র ছেলেকে ১৫ বছরের পূর্বেই এসএসসি পাশ করাবে। সেই ভাবনা থেকেই আবিরকে চার বছরের আগেই প্রি-প্রাইমারি ক্লাস এবং ৫ বছরের আগেই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করে দেয়। ছাত্র ভাল হওয়ায় আবিরের মাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি।
২।
৯ বছরের পূর্বেই আবির ক্লাস ফাইভে উঠে যায়। আবিরের বৈষয়িক বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ খুব বেশি না হলেও পড়াশুনা এবং দেশ বিদেশের চলমান অবস্থার খবর সম্পর্কে ছিল অবাধ জ্ঞান। সেই বয়সেই আবির গণতন্ত্র- স্বৈরতন্ত্র বুঝতো। আবিরের পরিবার ছিল দুই রাজনৈতিক তাঁবুতে বিভক্ত। বাপ-চাচা ভাইবোন এমনকি বাবা-মাও রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। আবির ছিল গণতান্ত্রিক দর্শনে বিশ্বাসী। স্বৈরতন্ত্র সে মোটেও পছন্দ করতোনা। সে মা-বাবা কারো পক্ষেই ছিলোনা। অল্প বয়সেই স্বাধীনভাবে ভাবতে পারতো। সে পরিবারের সবার তর্ক-বিতর্ক শুনত। কখনোবা নিজেও মতামত উপস্থাপন করত। দেশ ছিল আগ্নেয়গিরির মত উত্তপ্ত আর দুই দলের সম্পর্ক ছিল বরফ শীতল। সে তার বাবার সাথে সিক্স-ব্যান্ড রেড়িওতে বিবিসি বাংলা আর ডয়েস-এভেলে শুনতো। এত অল্প বয়সে বেশি রাজনৈতিক সচেতনতার জন্যে তাকে বকাও শুনতে হতো।
৩।
এরই মধ্যে ক্লাস ফাইভের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে চিঠির আদান-প্রদানের খবর তাকে কৌতুহলী করে তুলত। স্যারেরা রোজই চিঠির বিচার করতেন। শাস্তি হিসেবে ছিল তাচ্ছিল্য আর বেত্রাঘাত। বরাবরের ফার্স্ট বয় আবিরের ভদ্র হিসেবে খুব খ্যাতি ছিল। সে অবশ্য চিঠি লেখার কথা ভাবতেও পারতনা। বড় বড় সাইজের ছেলেরা চিঠি লিখত। তখনকার প্রেম শুধু চিঠি লেখা আর একটু তাকানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত। প্রেমটা ছিল একটা প্লেটোনিক ব্যাপার। কয়েকটি মেয়ে বয়োঃসন্ধির কাছাকাছি পৌঁছালেও ছেলেরা তখন একদমই বয়োঃসন্ধির কাছাকাছি পৌঁছায়নি। অপরদিকে আবিরতো সবার চেয়ে ছোট। বয়সে সবচেয়ে বড় ছেলেটিও বয়োঃসন্ধির কাছাকাছি পৌঁছায়নি। এরই মধ্যে আবিরের মধ্যে প্রেম প্রেম একটা ভাব জন্ম নিল।
৪।
মেয়েটির নাম ছিল সঞ্চিতা। মেয়েটির একটু ভিন্ন ধরণের নাম প্রথমে আবিরকে মুগ্ধ করল। তারপর মুগ্ধ করল মেয়েটির কথা আর সৌন্দর্য্য। মেয়েটিও সবার মত আবিরের চেয়ে বয়সে বড় ছিল। আবির মনে মনে ভাবত একদিন মেয়েটিকে চিঠি দিয়ে তার ভাললাগার কথা জানাবে। কিন্তু আবিরের মনে সে সাহস নেই। তাই সে দুই বছর পরের জন্য চিঠি লেখা ফেলে রাখল।
৫।
আবির মেয়েটির সাথে স্কুলের মাঠে খেলত। ক্লাসে পাশপাশি বসত। এর বাইরে গিয়ে চিঠি লেখা মোটেও সম্ভব ছিলনা। আবির ভাবত মেয়েটিকে সে চিঠি দিয়েছে। দুজন একসাথে হাটছে আর পাশাপাশি বসে গল্প করছে। কিন্তু এ স্বপ্ন আবিরের কাছে মাউন্ট এভারেস্টে আরোহন করার চেয়েও কঠিন ছিল। তারপরও আবিরের স্বপ্ন জলে স্থলে বিচরণ করতে থাকল। একদিকে ছিল রাজনীতি আর দেশের ভবিস্যতের মাঠে উত্তেজনা আরেকদিকে ছিল আবিরের মনে উত্তেজনা। আবির ভাবত একদিন দুটোই একটি সুস্থ পরিনতির দিকে যাবে।
৬।
এভাবেই জানা-অজানার ভিড়ে আবির স্বপ্নের জাল বুনতে থাকে। কঠিন পরিস্থিতি পারি দিয়ে দেশে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। দেশসচেতন মানুষের মত আবিরের মনেও স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু ভাললাগার স্বপ্নের দেশে কোন স্বস্তি ফিরে আসেনা।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:০১

ডেড আকাশ বলেছেন: হুম বোঝা গেল

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:২৮

মেশকাত মাহমুদ বলেছেন: পড়া এবং বুঝার জন্য ধন্যবাদ আকাশ সাহেব।

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:১০

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: এইখানেই কি শেষ হয়ে গেলো?

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:২৮

মেশকাত মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ। ছোট গল্পের তো শেষ হয়না শতদ্রু সাহেব।

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৩১

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: তাও তো ঠিক। আমিতো আবার এতো কিছু জানিনা, তাই জিগাইলাম আরকি।

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৪০

মেশকাত মাহমুদ বলেছেন: 8-| 8-| 8-| 8-| :(

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



কিশোর বয়সে সবকিছু ও সবাকে ভালো লাগে।

দেশের অবস্হা যাদের মণের উপর ছায়া ফেলে তারা সেনসেশানেল মানুষ

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:১০

মেশকাত মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদ্গাজী সাহেব।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.