নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আততায়ী।

মেহরাব হাসান খান

আমি H2O,,,,Solid,Liquid & Gas.How do you deserve me?

মেহরাব হাসান খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিথির অসুখ

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৩২

তিথির ধারণা সে গল্প উপন্যাসের নায়িকাদের মত নিখুঁত সুন্দর।মাঝে মাঝে আয়নায় নিজেকে স্নো হুয়াইটের চেয়ে সুন্দরি লাগে।
বারান্দার রেলিঙয়ে একটা বড় দাঁড়কাক কা কা করছে।সে জিজ্ঞাসা করল,দাঁড়কাক!দাঁড়কাক! কে বেশি সুন্দর?
আজব!কাকটা উত্তর দিল,তিথি তিথি!সে পাগল হয়ে যায়নি তো।কি হচ্ছে এসব!

সাহেরা বেগম তাকে ডাকলেন,এই খেয়ে যা।
"আমি নিচে নামব না,মা।আমার ঘরে খাবার দিয়ে যাও।"
"কেন নামবি না?"
"আমার সাজা হয়েছে মা,তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। আমি এই ঘরেই বন্দি থাকব।"

মেয়ের কথায় সাহারা অবাক হলেন না।এই বয়সি মেয়েরা হেয়ালি করে কথা বলবে না তো কে বলবে?

তিথি মঈনের কথা ভাবতে লাগল।লাজুক ছেলে মানুষ। তার প্রেমে ডুবে মারা গেলেও স্বীকার করবে না।কেউ তার প্রেমে পরলে মেয়েরা ঠিক বুঝতে পারে।ছেলেরা পারে না।কথাটা কোন লেখক বলেছেন?হুমায়ুন আহমেদ।তবে তার বান্ধবীরা ডাকে,হুমায়ুন হাফম্যাড!

মঈনের সাথে দেখা পরিচিত হওয়াটাও অপ্রত্যাশিত ছিল।কলেজের বর্ষবরণ, সে খুব শখ করে শাড়ি পরে গেল।শাড়ির কুচি খুলে গেল।কি লজ্জা!সে মাঠেই বসে পরল।সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে,এমনকি বান্ধবীরাও মজা করছে।এমন সময় কেউ না তাকালেও মনে হয় সবাই তাকিয়েই আছে।

তখন মঈন একটা মেয়েকে নিয়ে এল।কি জানি নাম?হ্যা নিপা।সে শাড়ি ঠিক করে দিল।তিথি দৌড়ে রিকশায় চড়ে বাড়ি ফিরে এল।

পরে তাকে ধন্যবাদ দিতে গিয়েই হল বিপত্তি।তিথি দেখল,ছেলেটার চোখে তার জন্য ভালোবাসা চকচক করছে।সেও প্রেমে পরে গেল।

কিন্তু বলা হয়নি।ছেলেটা সব সময় দলে দলে থাকে।মানিক,বিপ্লব,হাসান,সৌরভ আরো নাম না জানা,,,,,ডাকতে গেলেই মনে হয় সে লজ্জায় মরে যাবে।

আজ শুক্রবার। মঈনের কোন টিউশনি নেই।কলেজ মাঠও ফাকা থাকবে।এই একটা দিন তার অস্বস্তিতে কাটে।তিথির সাথে দেখা হয় না।

তবে আজ হবে।তিথি আজ ৪টায় সানকিপাড়া রোডে তার বান্ধবীর কাছে আসবে।
সে মোড়ের দোকানে বসে থাকলে,সহজেই দেখতে পাবে।কিন্তু মানিক, হাসানের চোখ ফাকি দেয়া অসম্ভব। তারা টের পেলে আবার হাসাহাসি করবে।ইতোমধ্যে তার মজনু নাম হয়ে গেছে।

মঈন ঈস্ত্রি করা নতুন শার্ট পরেই বের হল।সাথে সাথেই একটা ধাক্কা খেল।তিথি তার বাসার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে।

:তিথি,এখানে কেন?
:বাসায় যাব,রিকশা পাচ্ছি না।

:চল মোড়ে ঠিকই পাওয়া যাবে।
তিথি মনে ভাবল,যেন রিকশা না পাওয়া যায়।যেতে যেতে গল্প করা যাবে।

:মঈন, চল আমরা শর্টকার্ট রাস্তা দিয়ে যাই।এখন রিকশা পাওয়া যাবে না।
:না,,,, যাবে।
সেও তাই ভাবছিল।কিন্তু ওদিকে আবার মানিকের বাসা যদি দেখা হয়ে যায়!

সামনে একটা রিকশা দেখা যাচ্ছে।মঈন মনে মনে চাইল,রিকশাটা যেন যেতে রাজি না হয়।

তিথি রিকশা চড়ে বসল।
:আচ্ছা মঈন যাই।আজ আমাকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে।
:আমিও ওই দিকে যাব।

:আমার সাথে যাওয়া যাবে না।কেউ দেখে ফেললে দূর্নাম হবে।
তিথি মনেপ্রাণে চাইল মঈন তার রিকশায় উঠুক,তার হাত ধরে বলুক,আসুক পাত্র পক্ষ। চল আমরা নৌকা নিয়ে ঘুরে আসি।ঐপাড়ে সাদা কাশফুল ফুটেছে,চল দেখে আসি।

রিকশা চলে যাচ্ছে।মঈন ভাবছে,এখনি তিথি ফিরে তাকাবে আর চিৎকার করে তাকে ডাকবে।হ্যা,তিথি ফিরে তাকালো।ডাকল না।তার চোখে কি জানি চকচক করছে।

আজব,রিকশা পার্কের দিকে যাচ্ছে।মঈন এগিয়ে যেতে শুরু করল।

তিথি আবার পিছনে তাকাল।মঈন আসছে।আনন্দে তার কান্না পেল।আজ সে মঈনকে বলবে,সব বলবে।

মঈন তিথির পাশে বসল।সে অন্য দিকে তাকিয়ে।আজ সে তিথিকে সব বলবে।
প্রেম নামক এই পোকা সে গত এক বছর মাথায় নিয়ে ঘুরছে।আর নয় আজ সে বলবেই।

তিথি চোখ মুছে তার দিকে তাকাল।
:তুমি বাসায় গেলে না?
:ইচ্ছে হল না।আমার বিয়ে হয়ে যাবে।আর একা এখানে বসে থাকতে পারব না।তাই বসে থাকতে এলাম।

:তোমাকে কিছু কথা বলব।
:আমিও......তুমি আগে বল।

মঈনের মনে হচ্ছে,দুনিয়া উলট-হচ্ছে।সে ঊড়ে যাচ্ছে।
পেছনে হাসানের ডাক শোনা গেল,
:তুই এখানে,আমি তোকে মেসে খুজে এলাম।তিথি তুই এখানে কি করিস?

তিথি হনহন করে চলে গেল।একবারও পেছন ফিরে তাকালো না।

রাত ৮ টা বাজে।মঈনের ফোন বাজছে।মনে হচ্ছে চিল্লাচ্ছে,,বাচাও, আমাকে বাচাও! কল ধর!নিপা কল দিয়েছে।

:তুই কোথায় মঈন?
:মেসে

:এখনি হাসপাতালে আয়।
:কেন?

:তিথি হাসপাতালে,,
:কি হয়েছে তার?

:পাত্রপক্ষ বাসায় এসেছিল।সে ফোন অফ করে কোথায় গিয়েছিল,বাসায় যায় নি।তাই ওর বাবা খুব মেরেছে।

মঈন ঘোরের মধ্যে চলে গেল।

মঈন ল্যাবএইডের ১৪৩ নাম্বার রুমে প্রবেশ করল।

ঘরে অনেকেই আছে।মনে হয়,সেই সবার শেষে এল।

তিথি তার বাবা দিকে তাকিয়ে বলল
:বাবা,আমি মঈনের সাথে একা কথা বলতে চাই।
:যা বলার সবার সামনেই বল।

তিথি মঈনের হাত ধরল।বলল,"মঈন, আমার চোখের দিকে তাকাও।দেখ,আমি অংক বুঝি তবু তোমার কাছে যেতাম,তোমার ক্লাস রুমের সামনে ঘুরঘুর করতাম,কলেজ রোড আমার কোন বান্ধবী নেই,আমি তোমার জন্য যাই,তোমাকে দেখার জন্য,একটু কথা বলার জন্য যাই!"
মঈনের ইচ্ছে হল,সেও চিৎকার করে বলবে,"আমিও তোমাকে ভালোবাসি তিথি, সেই প্রথম দেখার দিন থেকে।"
রহমত সাহেবের অগ্নিদৃষ্টি উপেক্ষা করে সে কিছুই বলতে পারল না।
তার চোখ থেকে দুফোটা জল তিথির হাতে গড়িয়ে পড়ল।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৫৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: জীবনটা এত সহজ হয়? গল্পের রোমান্স ভালই, তবে আরেকটু গুছিয়ে আনলে ভাল হতো।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:২৮

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: জীবন কি কঠিন?!আমি নতুন,,লিখা মাত্র শুরু করলাম।চেষ্টা করব গুছিয়ে লিখতে,,

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.