নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\n

মা.হাসান

মা.হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

টিকা ভাবনা

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫৬




[ এই পোস্টে টিকা বলিতে ভ্যাকসিন বুঝাইয়াছি। রয়েল ডিস্ট্রিক্টের ব্লগারদের প্রতি অনুরোধ- অন্য কিছু ভাবিয়া পোস্টটি রিপোর্ট করিবেন না । ]

প্রতিদিনই বাজারে টিকা নিয়ে নানান গুজব শুনছ। অবশ্য যে টিকার ম্যানেজমেন্টে পিপিপি এন্ড সন্স এবং বিপণনে দরবেশ এন্ড ব্রাদার্স নিয়োজিত সেই টিকা নিয়ে গুজব না হওয়াটাই অস্বাভাবিক হতো।

অক্সফোর্ডের টিকার বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ এইমাত্র এই টিকা মাত্র ৭০% কার্যকর, শতভাগ কার্যকর নয়। অভিযোগ প্রায় সত্য (অক্সফোর্ডের টিকা পূর্ণ ডোজে দিলে ৬২% কার্যকর, ৭০% না)। তবে প্রকৃতপক্ষে বাস্তবে এমন কোন টিকা নেই যা শতভাগ কার্যকর। কিছু কিছু টিকা আছে যেগুলো ৯০% এর উপর কার্যকর। এগুলি অসাধারণ ভালো টিকা। যেখানটাতে কোন টিকা পাওয়া যায় না সেখানে ৫০% এর উপরে কার্যকর টিকা পেলে তা ব্যবহার করা যায়। সেই প্রেক্ষিতে অক্সফোর্ডের টিকা ব্যবহারে কোনো সমস্যা থাকার কথা না।

ফাইজার বা মডার্নার টিকা প্রায় ৯৫% কার্যকর। আমরা তাহলে ফাইজার বা মডার্নার টিকা ব্যবহার না করে অক্সফোর্ডের টিকা কেন ব্যবহার করবো?
- ফাইজারের টিকা -৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করতে হয়। আমাদের দেশে এটা সংরক্ষন এবং পরিবহন করার কোন বাস্তবসম্মত উপায় নেই এটা বুঝতে হবে।

এই চেইন আমাদের দেশে গড়ে ওঠেনি কেন? এটা কি সরকারের ব্যর্থতা না?
-না। কেননা এখন পর্যন্ত আমরা এতদিন যত টিকা ব্যবহার করে এসেছি তা কখনই এত লো-টেমপারেচারে সংরক্ষণ করতে হয়নি। কাজেই আমাদের দেশে এরকম চেইন তৈরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় নি।

এখন কি করা যেত না?
-যেতো । তবে অসম্ভব বড় বিনিয়োগ করতে হতো। অনেক সময় লাগতো।

মডার্নার টিকা তো এত কম টেমপারেচারে সংরক্ষন না করলেও চলে।
-হ্যা । মডার্নার টিকা অবশ্য -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখা যায়। আইসক্রিম রাখার উপযোগি ডিপ ফ্রিজে এই টিকা সংরক্ষন করা যেতো। কিন্তু ২টা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। শেলফ লাইফ এবং প্রাপ্যতা। এই টিকার শেলফ লাইফ ১ মাস। এই বিষয়টা পরে আলোচনায় আসবে। আর টিকা এখন দুষ্প্রাপ্য। আমেরিকা বা ইইউতেও টিকার সংকট আছে। এই মুহূর্তে আমাদের মডার্নার টিকা পাওয়া সম্ভব না।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন এর বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ এই যে ভারত নিজেও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে না, করছে বায়োটেকের ভ্যাকসিন ব্যবহার (ব্লগেও এরকম পোস্ট দেখেছি)। এটি মিথ্যা অভিযোগ। ভারত বায়োটেক এর ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনও ব্যবহার করছে । হাতের কাছে যা পাওয়া যাচ্ছে ভারত তাই ব্যবহার করছে। বুদ্ধিমানের কাজ করছে। আরো টিকা পাওয়া গেলে ভারত সেগুলোও ব্যবহার করবে বলে মনে হয়। প্রায় ১০০ কোটি লোককে টিকার আওতায় আনতে গেলে তাই করতে হবে।

অভিযোগ ভারতের টিকা নিম্নমানের । নিম্নমানের কথাটি বলতে গেলে অন্য কারো সাথে তুলনা করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন এর মত কঠোরভাবে ভারতের ভ্যাকসিন এর মান হয়তো নিয়ন্ত্রণ করা হয় না । কিন্তু ভারতের ভ্যাকসিন এতটা খারাপ না । সিরাম ইনসটিটিউট পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান। এরা বছরে দেড়শো কোটি ডেজের মতো টিকা তৈরি করে। এদের টিকা শুধু ভারতে ব্যবহার করা হয় এমন না, পৃথিবীর অনেক দেশে ভারত থেকে ভ্যাকসিন কেনে। ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও, পেইহো এসব বড় বড় সংস্থাও সিরামের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কেনে।

টিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ এর অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া । ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেছেন ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে পুরুষ নারীতে পরিনত হতে পারে , মানুষ কুমিরে পরিণত হতে পারে, চেহারা বিকৃত হতে পারে। ( বাংলাদেশে উত্তর কোরিয়ার কিম জং এর সমর্থক আছে, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সমর্থক থাকা অসম্ভব না)। তবে আমি বলবো, তিন ডলারের ভ্যাকসিন দিয়ে যদি পুরুষ থেকে নারীতে পরিনত হওয়া যেতো তবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মানুষ এই অপারেশন করাতো না।

লক্ষ লক্ষ লোককে ভ্যাকসিন দেওয়ার পর সম্প্রতি একটি রিপোর্ট পত্রিকায় এসেছে যেখানে টিকার প্রতিক্রিয়ায় চেহারার কিছুটা বিকৃতি দেখা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। রিপোর্টটি কতটা সত্য যাচাই করা সম্ভব হয় নি। এরকম হয়ে থাকলেও এটি ভ্যাকসিনের কারণেই হয়েছে কিনা এমন বলাটা বলা মুশকিল বলেই মনে হয়। ভ্যকসিন গ্রহণের ফলে মানুষের কুমিরে পরিবর্তন হবার কথা এখনো শুনিনি।

ভ্যাকসিন এর বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ ভ্যাকসিন গ্রহণ করে মানুষ মারা যাচ্ছে। যেকোনো ফরেন অবজেক্ট শরীরে প্রবেশ করলে কিছু সাইড এফেক্ট হতে পারে, এটা স্বাভাবিক। ফোলা, ব্যথা, হালকা জ্বর এগুলো সাধারণ সাইড এফেক্ট। খিচুনি, শ্বাসকষ্ট, সেপ্টিসিমিয়া এগুলো অতি রেয়ার সাইড এফেক্ট। ক্ষেত্র বিশেষে মৃত্যু হওয়াটা অসম্ভব না। যে কোনো টিকা নিলে এগুলো হতে পারে। যে কোনো মেডিক্যাল প্রসিডিউরের ফলে মৃত্যু হতে পারে। এটা বুঝতে হবে।

আমাদের দেশে এমএমআর টিকা অনেক বছর থেকে দেয়া হয় । এটা প্রায় ৯০%এর মতো কার্যকর। এমনকি উন্নত বিশ্বেও এই টিকা দেয়ার পর প্রতি লাখে ২৫ থেকে ৩০ জন শিশু মারা যায়। সত্য এই যে এই ভ্যাকসিন না দেওয়া হলে আরো বহুগুণ শিশু মারা যেত।

ভারতে কয়েক লক্ষ লোককে এই টিকা দেওয়া হয়েছে এরমধ্যে ৫২ টি মৃত্যুর ঘটনা শোনা গেছে । আমেরিকায় প্রায় তিন কোটি লোককে টিকা দেয়া হয়েছে। এরম মধ্যে ৫০টির মতো মৃত্যুর ঘটনা শোনা গেছে। এটি বড় ফিগার না। আর যারা মারা গেছেন তারা ঠিক টিকার রিঅ্যাকশনে মারা গেছে এটা নিশ্চিত ভাবে বলা মুশকিল। মনে রাখবেন, ট্রায়াল দেয়া হয়েছে কয়েক হাজার লোকের উপর। টিকা দেয়া হচ্ছে কয়েক কোটি লোকের উপর। কাজেই ট্রায়ালে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও বাস্তবে ঘটতে পারে।

মুখে বলা সহজ। টিকা নিলে আমি যে মারা যাবো না এমন কি গ্যারান্টি?
-গ্যারান্টি নেই । কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিদিন এখনো সরকারী হিসেবে ১০-১৫ জনের মতো লোক মারা যাচ্ছে । আপনি যে এর মধ্যে থাকবেন না এই গ্যারান্টি দেওয়া যায় না। আর টিকা নিয়ে কেউ মারা যাক এটা সরকার চাইবে না। কাজেই দু-একজন যদি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পাবে বলে আশা রাখি

টিকা তো মাত্র ৬২% কার্যকর। তাহলে তো ৩৮% সম্ভাবনা রয়েই যায় কোভিড-১৯ হবার।
-তা সত্য। তবে অধিকাংশ টিকার ক্ষেত্রেই দেখা যায় যাদের ক্ষেত্রে টিকা কার্যকর হয় না তারাও অসুস্থ হলে অসুখের সিরিয়াসনেস কম হয়, মৃত্যুর ঝুকি কম হয়। কাজেই টিকা আপনার উপর পুরোপুরি কার্যকর না হলেও কিছুটা উপকার করবে।

অক্সফোর্ডের টিকার বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ ৬৫ বছর বয়সের উপরের লোকের জন্য এই টিকা কার্যকর না। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এই দাবি করেছেন। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে ম্যাখো অনেকের নিকট সুপার হিরো হয়ে গেছেন। ওনার অনেক ভক্ত ওনার বাণীকে অমৃত বাণী ভাবেন। ম্যাখোর কাছে এই দাবির স্বপক্ষে প্রমান চাওয়া হলে অবশ্য তিনি স্বীকার করেছেন এর সপক্ষে তার কাছে কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নাই।

এটি একটি অপপ্রচার। অক্সফোর্ড টিকা ৬৫ বছরের উপরের লোকদের জন্যেও কার্যকর। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা তথ্য না থাকা পর্যন্ত ৬৫ বছরের উপরের লোকের উপর টীকার ট্রায়াল দেয়া অনৈতিক। এইজন্য প্রথম পর্যায়ে ৬৫ বছর বয়সের উর্ধের লোকের উপরে ট্রায়াল দেওয়া হয় নাই। পরবর্তীতে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়ার পর ৬৫ বছর বয়সের লোকের উপরেও ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে এবং টিকা কার্যকর পাওয়া গেছে।

আরেকটি অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী নিজে এই টিকা নেননি। বাংলাদেশের লোকদের গিনিপিগ বানিয়ে এই টিকার ট্রায়াল দেয়া হচ্ছে এবং এতে প্রধানমন্ত্রীর সায় আছে। এটি সত্য বলে মনে হয় না। আমেরিকাতেও জো বাইডেন বা মাইক পেন্স বা ফাউসি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টিকা নেন নি । অনেক লোক টিকা নেওয়ার পরে তারা টিকা নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট ভিআইপি । এমনকি তারা কোনো খাবার খাওয়ার আগে ডাক্তার সেই খাবার পরীক্ষা করে দেখেন, এরপরে প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট সেই খাবার খান। টিকার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট টিকার কার্যক্রম শুরু করবেন এমন ভাবা ঠিক না।

আরেকটি গুজব- প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে ফাইজারের টিকা নিয়ে নিয়েছেন। এটি সত্য হবার সম্ভাবনা কম। টিকা জোগাড় করা এবং বাংলাদেশে নিয়ে আসা দুরূহ হবে। আর শুধু টিকা আনলে হবে না। এই টিকা পুশ করার টেকনিক আলাদা। এর জন্য আলাদা নার্সও আনা লাগবে। এরকম হলে বিষয়টি গোপন রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করি না।

টিকার উপর প্রধানমন্ত্রীর আস্থা থাক বা না থাক, তিনি বাইরে যেয়ে টিকা নেবার পরিকল্পনা নিয়েছেন বা না নিয়েছেন , টিকার উপর মানুষের আস্থা আনার জন্য এমনকি খালি ফায়ালে পানি ভরে হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টিকা নেয়া প্রয়োজন। এবং এটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার প্রয়োজন। গুজব টিকায় আগ্রহী মানুষকেও নিরুৎসাহিত করে ফেলতে পারে।

টিকার বিরুদ্ধে আরেকটি অপপ্রচার এই যে টিকায় শুকরের চর্বি আছে। ফাইজার, মডার্না এবং অক্সফোর্ড নিশ্চিত করেছে তাদের টিকায় কোনো শুকরজাত প্রোডাক্ট নেই।

আরেকটি কথা শুনছি। ভারত নাকি টিকার মধ্যে স্লো পয়জন ঢুকিয়ে দিয়েছে। তা হলে তো খুব ভালো হয়। যত চেতনার ফেরিওয়ালা টিকা নিয়েছে সবাই হাপিশ হয়ে যায়।

যারা টিকা নিতে চাচ্ছেন না তাদের কাউকে কাউকে বলতে শুনছি- করোনা চলেই গেছে, পরীক্ষাকৃত লোকদের মাঝে সংক্রমন ৩% এর কম। এমনকি ইউরোপ বা আমেরিকাতেও সংক্রমন ও মৃত্যুর হার কমে আসছে। এমনটা যদি সত্যিই হয় তবে খুব ভালো হয়। করোনা আরো অনেক কাল থাকুক এমনটা চায় এমন লোকের সংখ্যা খুব বেশি হবে বলে মনে হয় না। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন যে এই ভাইরাস আরো অন্তত কয়েক বছর থাকবে, স্থায়ী ভাবেও থেকে যেতে পারে। পশ্চিমা অনেক বিশেষজ্ঞ আশংকা করছেন যে আর কয়েক মাস পর আরো ভয়ংকর আকারে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেবে। সেই হিসেবে টিকা নেয়াই মনে হয় শ্রেয় হবে।

কেউ কেউ বলছেন যে টিকা নিয়ে কি লাভ, করোনার নতুন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধেতো টিকা কাজ করে না। ইউকে এবং দক্ষিন আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের দুই রকম বক্তব্য কিছুটা কনফিউশন তৈরি করেছে এটা সত্য। তবে দক্ষিন আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের দাবি যদি সত্যও হয়, তাহলেও বলতে হয় এর চেয়ে ভালো টিকা যতক্ষন না পাওয়া যাচ্ছে ততক্ষন এটা থেকে যতটুকু প্রটেকশন পাওয়া যায় তাই ভালো।

টিকার নামে ফটোসেশন হচ্ছে। সোসাল ডিসট্যান্স মানা হচ্ছে না । কাজেই টিকা নেবো না।
-ভিআইপিদের হাসপাতালে না যেয়ে ছোটো হাসপাতালে চলে যান। তার পরেও টিকা নেয়া ভালো হবে বলে মনে করি। যারা ফটোসেশন করে তারা টিকা হোক, মিলাদ মাহফিল হোক আর হরতাল বা হরতাল প্রতিরোধ যাই হোক না কেনো, ফটোসেশন করবে, আটকানো যাবে না।

তিন ডলারের টিকা দরবেশ বাবার কাছ থেকে পাঁচ ডলারে কেনা হলো কেনো? এই টিকা নিয়ে চুরির অংশিদার হবো না।
-৬০০০ টাকা দিয়ে বালিশ বা ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে পর্দা কেনা হলো, সেখানে মাত্র পাঁচ ডলারে টিকা কেনায় দরবেশ বাবার কত লস হলো সেটা ভাবলে আর টিকা না নিয়ে পারবেন না।

টিকা তো নার্স দিচ্ছে না। বিভিন্ন নেতারা দিচ্ছে। ওনাদের হাতে টিকা নেবো না।
-নেতারা নিজেদের মধ্যে টিকা মারামারি করুক। ওনাদের কাছে টিকা নেয়ার দরকার নাই। আপনি নার্সদের কাছ থেকেই নিয়েন।

এই টিকা আওয়ামীলীগ আবিস্কার করেছে। আওয়ামীলীগের আবিস্কার করা টিকা নেবো না।
-আওয়ামীলীগের আবিস্কার করা স্যাটেলাইট দিয়ে দিন রাত স্টারস্পোর্টস, এইচবিও, স্টার মুভিজ, জি বাংলা দেখলে যদি সমস্যা না হয় তাহলে আওয়ামীলীগের আবিস্কার করা টিকা নিলেও সমস্যা হবে না।

গুজব দূর করে ভালো করলেন। টিকা নিতে ইচ্ছা হচ্ছে। কিন্তু বয়স ৪০ হয় নাই। উপায় কি?
- উপায় আছে।



রেজিস্ট্রেশনের সময়ে পুল ডাউন লিস্ট পেশা হিসেবে থেকে গনমাধ্যম কর্মি বা লাশ দাফনকারি হিসেবে নিবন্ধন করুন। ব্লগে লেখালিখি করলে নিজেকে গনমাধ্যম কর্মি বলা যেতেই পারে। জীবনে কোনো না কোনো লাশ দাফনের সাথে যুক্ত থাকলে ঐ পেশাও লেখা যায়। অথবা ধর্মীয় প্রতিনিধিও বাছতে পারেন। পেশা যাচাইয়ের ব্যবস্থা না রাখায় এরকম কাজ অনেকেই করছেন।

কিছু সমস্যাঃ

(১) surokkha ওয়েব সাইট , অ্যাপ ও রেজিস্ট্রেশন- সার্চ ইঞ্জিনে surokkha লিখে সার্চ করলে এই নামের একটা বাংলাদেশি ইনসিওরেন্স কম্পানির পেজ চলে আসে। এমনটি গুগল প্লে স্টোরে ঐ কম্পানির এই নামের অ্যাপও আছে। । এটা বিভ্রান্তিকর। নাম বাছাইয়ের আগে সংশ্লিষ্টরা একটু চেক করে দেখলেও পারতেন।

আমার বয়সি লোকেদের কাছে এইরকম একবার ব্যবহারের অ্যাপ মানে অনর্থক ফোনের স্টোরেজ মেমরি নষ্ট করা। তবে কম বয়সিরা অ্যাপ খোঁজেন। প্লেস্টোরে এখনও অ্যাপ আসেনি। আসলে ভালো হতো।

বিপুল সংখ্যক লোক ইন্টারনেট ব্যবহার জানেন না। ফোনের পুশপুল মেসেজ ব্যবহার করে বা অটোমেটেড কল সার্ভিস ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা চালু করলে ভালো হতো।

রেজিস্ট্রশনের পর কার্ড প্রিন্ট করা আমার কাছে ঝামেলার মনে হয়েছে। সব অনলাইনে করার সুযোগ যেহেতু আছে, এটাও ক্লাউডে স্টোর করা যেতো।

ওয়েবসাইট টি চালুর পর থেকেই টিকা সনদের বিষয়ে দেখাচ্ছে আপডেট আসছে-

কয়েক লক্ষ লোক প্রথম টিকা নিয়ে নিয়েছেন। এখনই ক্লাউডে এগুলো আপডেট না করা হলে পরে বড় ঝামেলা হবে।

(২) টিকার প্রাপ্যতা নির্ধারণ- কিছু পাটিগণিতিয় সমস্যাঃ
প্রথমে শোনা গেলো দেড় কোটি লোককে টিকা দেয়া হবে । পরে ঘোষনা আসলো মোট তিন কোটি চল্লিশ লাখ লোককে টিকা দেয়া হবে। দেশে পঞ্চান্ন বছরের ওপরের লোক সোয়া দুই কোটি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি প্রায় কুড়ি লাখ, বিদেশ থেকে ছুটিতে এসে আটকা পড়া শ্রমিক কয়েক লক্ষ, সামরিক বাহিনির সদস্য আড়াই লাখ, আড়াই লাখ মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিন দুজন করে ধরলে পাঁচ লাখ, আনুপাতিক হারে অন্য ধর্মের পুরোহিত পঞ্চাশ হাজার, জনপ্রতিনিধি ও সম্মুখ সারির গনমাধ্যম কর্মি ধরি দু লাখ- সব মিলিয়ে আড়াই কোটির মতো।( মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একজন বাদে সবার বয়স ৫৫র উপর বলে ওনাদের বাদ দিয়েছি) । সরকারি কর্মচারি, ধর্মিয় প্রতিনিধি এদের কেউ কেউ ৫৫র উপরে বলে গোনায় দুবার চলে এসেছেন। সরকারের প্রাপ্যের প্রথম লিস্টে যারা ছিলেন তাদের শতভাগ টিকা নিলেও এক কোটি লোকের দু কোটি ডোজ টিকা রয়ে যায়। মৃত লোক নৌকাকে ভালোবেসে ভোট দিতে আসতে পারে, কিন্তু মৃতদের করোনার ভয় নেই, তারা টিকা নিতে আসবে বলে মনে হয় না। সরকার কি হিসেব করে প্রথম প্রাপ্যতার লিস্ট করেছিলো?

৪০-৫৫ বছরের লোকদের নতুন করে প্রাপ্যতার তালিকায় নেয়ায় আরো প্রায় আড়াই কোটি লোক যুক্ত হলো। মোট পাঁচ কোটি লোক টিকার জন্য আবেদন করতে পারবে। তিন কোটি চল্লিশ লাখ টিকা দিতে গেলে প্রাপ্যের ৬৮% লোককে টিকা দিতে হবে। এত লোক কি আগ্রহি হবে? বিশেষ করে গ্রামের দিকে (এখনো ৬০% লোক গ্রামে থাকে) টিকা নেবার জন্য লোকের আগ্রহ তেমন একটা আছে বলে শুনছি না। আশির দশকে ভ্যাসেকটমি-লাইগেশনের পর সাবজেক্টদের শাড়ি-লুঙ্গি দেয়া হতো। এখন শাড়ি লুঙ্গি কিনতে গেলে দেখা যাবে পর্দার মতো চল্লিশ পঞ্চাশ হাজারে কেন হচ্ছে। এর বদলে নগদ অর্থ প্রনোদনা দেয়া যায়।

চল্লিশের নিচের বয়সের বেশি কিছু লোক আছেন যারা ডায়াবেটিস-কিডনি সমস্যা-উচ্চ রক্তচাপ-অ্যাজমা এসব সমস্যার কারণে উচ্চ ঝুঁকিতে আচেন। এদেরও টিকার আওতায় আনা দরকার।

(৩) টিকার পরিধি, টিকার সাথে সংযুক্ত জনবল, Herd immunity - আরো কিছু পাটিগণিতের সমস্যাঃ
Herd immunity আনতে গেলে দেশের ৬০% এর উপর লোককে সুরক্ষা চক্রের আওতায় আনতে হবে। এই ভ্যাকসিন যদি ৬২% কার্যকর হয় তবে ১০০% অ্যাডাল্টকে টিকার আওতায় না আনলে এটা সম্ভব না। এই বিষয়ে সরকারের কি পরিকল্পনা তা সরকার জানায় নি। এনআইডি এখনো সব লোককে দেয়া হয় নি। এনআইডি যাচাই করে টিকা দেয়া হলে সবাইকে টিকা দেয়া সম্ভব না। কোভিড যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে তা মোকাবেলায় সরকারের প্ল্যান থাকা উচিৎ।

আমাদের চেয়ে প্রায় আট গুন বড় জন সংখ্যার দেশ ভারত দিনে আড়াই লাখের মতো করে টিকা দিচ্ছে। পশ্চিম বঙ্গের টার্গেট দিনে কুড়ি হাজার। ৩২ কোটি লোকের দেশ আমেরিকায় নার্স আছে ৩৫ লাখের মতো । আমেরিকায় দিনে দেয়া হচ্ছে ৪ লাখের মতো টিকা। ষোল কোটি লোকের বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালে নার্স আছে ১৫ হাজার, বেসরকারি হাসপাতালে আছে আরো পাঁচ হাজার। জন সংখ্যার অনুপাতে আমেরিকার একশ ভাগের এক ভাগ (ডাক্তার আছেন প্রায় ৫০ হাজার, কিন্তু ইন্টার্নশিপ শেষ হবার পর ওনারা কাউকে ইঞ্জেকশন দেয়ার কথা না)। এই জনবল দিয়ে দিনে তিন লাখ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা অতি উচ্চাভিলাসি। হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। একধার দিয়ে লোক দাড়া করালাম, তার পর গরুর ইঞ্জেকশন দেবার মতো করে দিয়ে গেলাম এটা কোন সুস্থ চিন্তা না। ইনফেকশনের কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে বড় সমস্যা হবে।

বিভিন্ন হাসপাতালে ওয়ার্ডবয় আর অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের অপারেশন করার কথা শোনা যায়। টিকার কাজে এরকম না শুনতে হলেই ভালো হবে।

একটি টিকার দাম ৫ ডলার বা প্রায় সাড়ে চারশ টাকা। এক জোড়া হ্যান্ড গ্লাভস মাত্র দশ টাকা বা আরো কম। জীবানু নাশকের জন্য জন প্রতি খরচ দুটাকার বেশি হবার কথা না । প্রোটোকল মেনে টিকা দেয়া দরকার।

একজন নার্স হ্যান্ড গ্লাভস পরবেন, এর পর ভায়াল থেকে সিরিঞ্জে টিকা ভরবেন, হাতে জীবানু নাশক লাগাবেন, টিকা পুশ করবেন, আবার জীবানু নাশক লাগাবেন, টিকা কার্ডে স্বাক্ষর করবেন। সময় লাগে। ঠিক মতো টিকা দেয়া হলে দিনে এক লাখ টিকা দেয়া সম্ভব বলে মনে করি। মাসে পচিশ লাখ টিকা দেয়া হলে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা দিতে দু বছরের কিছু বেশি লাগবে। দিনে দু লাখ করে টিকা দেয়া হলে লাগবে এক বছরের কিছু বেশি।

মানব শরীরে টিকার কার্যকারিতা কতদিন থাকবে এটা অজানা। যদি কার্যকারিতা মাত্র এক বছর থাকে তবে সাড়ে তিন কোটি লোককে টিকা দেয়া শেষ করার আগেই বুস্টার ডোজ দেয়ার সময় চলে আসবে। নেভার এন্ডিং প্রসেস। খোলাবাজারে টিকা ছেড়ে দিয়ে সবাইকে নিজ দায়িত্বে টিকা নিতে বলা ছাড়া উপায় থাকবে না।

(৪)স্টোরেজ সমস্যাঃ ছয় মাসের মধ্যে নাকি সব টিকা চলে আসবে। টিকার শেলফ লাইফ ছয় মাস। টিকা দিতে লাগবে এক বছরের বেশি সময়। এই টিকা কি ভাবে স্টোর করা হবে স্পষ্ট না। ঢাকার বাইরে বিদ্যুৎ সমস্যা প্রকট। থানা এলাকা গুলোতে গরমের সময়ে দিতে পাঁচ-ছয় ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকার ঘটনা স্বাভাবিক। ফ্রিজ চালু না থাকলে টিকা স্টোরেজে আরো সমস্যা হবে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।

কোনো কোনো কেন্দ্রে টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই, প্রতিদিন সকালে টিকা আনা হয়, টেবিলে রেখে একজন একজন করে দেয়া হয় (নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি)। এখন শীতে তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু এপ্রিলে দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে। ঐ তাপমাত্রায় সকাল ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত টিকা বাইরে রাখা হলে কার্যকারিতা কিছুটা কমে যাবার কথা । টিকার জন্য খুব বড় ফ্রিজ দরকার নেই, কয়েক শত কোটি টাকার টিকার জন্য কয়েক কোটি টাকার ফ্রিজ কেনা হলে আখেরে তা কাজে লাগবে।

(৫) শিক্ষকদের টিকা দানঃ সরকার স্কুল গুলো খুলে দেবার চিন্তা করছে। সরকারি প্রাইমারি স্কুলগুলোতে তিন লাখের কিছু বেশি শিক্ষক আছেন। এরা সকলেই নাহয় সরকারি আইডি দেখিয়ে টিকা নেবেন। বেসরকারি স্কুল গুলোর প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষকদের কি হবে? এনাদেরও টিকার আওতায় আনা দরকার। পেশার প্রমান নেবার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত রাখা হয় নি, এটা উপরে আগেই বলেছি।

(৬) সবার অংশগ্রহনঃ যদিও দেশের জনসংখ্যার ৫০% মহিলা, এখন পর্যন্ত টিকা গ্রহনকারীদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ৩০% এর কাছাকাছি। প্রয়োজনে মহিলাদের জন্য আলাদা কেন্দ্র করে হলেও মহিলাদের অংশগ্রহন বাড়ানো দরকার।

কেন্দ্রগুলোতে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তদের দেখছি। খেটে খাওয়া গরিব মানুষদের দেখছি না। দেশের ২০% লোক পোভার্টি লাইনের নিচে বাস করে। সংখ্যার হিসেবে-চল্লিশোর্ধ টিকার প্রাপ্য পাঁচ কোটি লোকদের মধ্যে প্রায় ১ কোটি। কয়েক ঘন্টা ব্যয় করে এরা টিকা দিতে আসবে এমন সম্ভাবনা কম। বিভিন্ন মহল্লায়/ওয়ার্ডে ক্যাম্প করে, হাতের ছাপ মিলিয়ে অন স্পট রেজিস্ট্রেশন করে এবং টিকার বিনিময়ে টাকা দিয়ে এদের টিকায় আগ্রহী করা যায়। মনে রাখতে হবে, এরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে । অসুস্থ হলে প্রাইভেট হাসপাতালে দেখানোর অবস্থা এদের নেই।

(৭) রমজানের প্রস্তুতিঃ টিকা নিলে রোজা ভেঙে যাবে এই ধরণের ধারণা অনেকেরই আছে। রোজার মধ্যে টিকাদেয়ার প্রক্রিয়া কি ভাবে সমান গতিতে চালু রাখা যায় সে বিষয়ে এখন থেকে সরকারের প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

পরিশেষে বলবো সবাই টিকা নিন। তবে অনুগ্রহ করে টিকা নেবার পরেও মাস্ক ব্যবহার এবং হাত ধোয়ার অভ্যাস ছাড়বেন না ( টিকা গ্রহণকারি নিজে করোনা থেকে নিরাপদ থাকলেও তার কাছের লোকের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারেন )।

আমেরিকাতে ৬৫ বছরের উপরের লোকেরা টিকা পাচ্ছেন। ইইউতে আশির ওপরের লোকেরা। আমাদের দেশে চল্লিশের উপরে হলেই পাওয়া যাচ্ছে। এটা একটা বড় সুযোগ।

ভবিষ্যতের পৃথিবী টিকা পাওয়া আর না পাওয়া এই দুই দলে ভাগ হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। সৌদি আরব বলেছে যে টিকা ছাড়া ওমরাহ করতে দেবেনা। যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে টিকা না থাকলে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করা ভবিষ্যতে সম্ভব নাও হতে পারে। টিকা নিন, এগিয়ে থাকুন।

মন্তব্য ৫৮ টি রেটিং +১৭/-০

মন্তব্য (৫৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৮

নীল আকাশ বলেছেন: প্রথম চালান শেষ হোক। দেখা যাক সবার কি অবস্থা হয়? তারপর দ্বিতীয় চালানে চিন্তাভাবনা করা যাবে।
লেখা ভাল হয়েছে। কিন্তু দিন শেষ ভারতের উপর ঠিক বিশ্বাস আসছে না। এর আগে ভিটামিন এ প্লাসের নামে অঘটন ঘটিয়েছিল।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৭

মা.হাসান বলেছেন: টেন্ডারের মাধ্যমে যখন সরকার কেনাকাটা করে তখন একটা শক্তিশালি চক্র নিজেদের সুবিধার জন্য নিম্ন মানের জিনিস কেনা কাটা করে। ভিটামিন এবং কৃমির ওষুধ নিয়ে অঘটনের কারণ সম্ভবত এটাই । ভ্যাক্সিন যদি অনেক গুলো সংস্থার কাছ থেকে কেনা কাটা করার সুযোগ থাকতো তবে এখানেও দুই নম্বরি করা হতো বলে অনুমান করি।

ভারত নিজে যা ব্যবহার করতে পারবে তার চেয়ে বেশি ভ্যক্সিন এই মুহূর্তে ভারতের কাছে আছে। এ ছাড়া নিজের ইয়ে চীনের সাথে বেশি মাখামাখি করুক এটাও ভারত চায় নি। এই কারণে ভারত বাংলাদেশকে ভ্যাক্সিন দিচ্ছে।

প্রথম চালান শেষ হতে হতে সম্ভবত মার্চ পার হয়ে যাবে। সে পর্যন্ত বেশি বেশি সতর্ক থাকুন। অশেষ শুভ কামনা।

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৩

জুন বলেছেন: প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবো কি আমি ?
তবে যাই বলেন এই ভ্যাক্সিনের ব্যাপারে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসাধারন এবং সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন এটা মানতেই হবে আমাদের । আমার ছোট ভাই কানাডা থাকে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে তাঁর নাম রেজিস্ট্রি হয়েছে সেপ্টেম্বরে । ট্রুডো আমেরিকাকে বিশ্বাস করতে পারে নাই তাই অক্সফোর্ডের টিকার অর্ডার দিয়েছিল তাও মাথাপিছু এক একজনের জন্য ৯টি টিকার অর্ডার দিয়েছিল। যার জন্য বিশ্বব্যাপী তাঁর সমালোচনাও হয়েছে । এখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের চাপে ইউরোপের বাইরে সরবরাহ বন্ধ। বেচারা এখন মোদীর কাছে অনুরোধ করেছে । মোদী আশ্বাস দিয়েছে ।
সুতরাং আমরা অনেক ভালো অবস্থায় আছি কি বলেন ?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৯

মা.হাসান বলেছেন: রেজিস্ট্রেশন না করেও ভ্যাক্সিন পাওয়া সম্ভব, তবে সে ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে না। এটা দুই নম্বরি পন্থা, আলোচনা করলাম না। রেজিস্ট্রেশন করে ভ্যাক্সিন নেয়াই ভালো, সনদ পাওয়া যাবে ।

সরকার যে ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট দেবে সেটা কি রকম দেখতে হবে জানা যায় নি। এমনও হতে পারে যে সনদে পেশা লেখা থাকবে। যদি তাই হয় তবে যারা ভুয়া পেশা লিখে রেজিস্ট্রেশন করছেন তারা বিপদে পড়বেন। ভুয়া পেশা লিখতে চাইলে সবচেয়ে নিরাপদ হবে 'মৃৎদেহ সৎকারের সাথে যুক্ত লোক'। কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলা যাবে স্বেচ্ছাসেবি হিসেবে কাজ করেছি। আপনি 'অদক্ষ' হিসেবে কেন রেজিস্ট্রেশন করবেন? আপনার কাকুকে বললেই উনি এক গাড়ি ভ্যাক্সিন আপনার বাসায় পাঠিয়ে দেবেন। B-)

ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে হয়তো ট্রুডোর জন্য ভ্যাক্সিন পাওয়া সহজ হতো। চুরি করে ওনাকে হারিয়ে দেয়ায় গোটা বিশ্বই ক্ষতিগ্রস্থ।

অক্সফোর্ডের ভ্যাক্সিন অনুমোদন পায় ডিসেম্বরের শেষে। সিরাম ইন্সটিটিউট এর অনেক আগেই উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করে। বাংলাদেশের কাছে যে ভ্যাক্সিন আছে তা উৎপাদন করা হয়েছে অক্টোবরে।

ভারতের পরিকল্পনা প্রথম ফেজে ৩ কোটি লোককে ভ্যাক্সিন দেয়া (ডাক্তার, নার্স, পুলিশ এই সব সম্মুখ সারির লোক)। ভারতের কাছে এর অতিরিক্ত যা ভ্যাক্সিন আছে তা সিলেক্টেড কিছু দেশকে ভারত দিচ্ছে। ভারত কুটনীতিতে অত্যন্ত দক্ষ । এর বিনিময়ে যা সুবিধা নেয়ার সবার কাছ থেকেই তা আদায় করবে। কুটনীতিতে ভারতের দক্ষ হওয়া দোষের না। আমরা দুর্বল এটা দোষ। চীন ফ্যাক্টর হিসেব না থাকলে আমরা ভ্যাক্সিন পেতাম কি না বলা মুশকিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রি যতই উদারতা দেখান না কেনো তিস্তার পানি আমরা পাই নি।

ভারতের কাছে বেলজিয়াম এবং জার্মানিও ভ্যাক্সিন চেয়েছে শুনেছি, খবরের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয় নি।

কোভিড পরিস্থিতির বিবেচনায় নিঃসন্দেহে আমরা অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছি।

৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আজকে করোনার নিউজ দেখে মন কিছুটা হালকা লাগছে। বৃটেনে আক্রমণ কমেছে, ফ্রান্স স্প্রে বাহির করেছে করোনায় ৯৯ ভাগ কাজ করে। তা নাকে স্প্রে করে আক্রান্ত রোগীকে, দাম ১৪,৯০ ইউরো। ঈসরাইলে টিকা নেওয়া লোক আক্রান্ত ৯০ ভাগ কম হচ্ছে। দেশে মাত্র ৪৩৪জন টিকা নিয়ে পাশ্বপ্রতিক্রিয়ায় পড়েছে ।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০৩

মা.হাসান বলেছেন: সেকেন্ড ওয়েভ পিক থেকে নামতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি গত মাসের চেয়ে ভালো। তবে থার্ড ওয়েভ হিট করলে আবার খারাপ হবে। আশার কথা এই যে এখন হাতে অনক গুলো ভ্যাক্সিন। কাজেই ভাইরাসটা মডিফাই হয়ে মোকাবেলার অযোগ্য না হওয়া পর্যন্ত বলবো আমরা আগের চেয়ে বেশি প্রিপেয়ার্ড।

৪৩৪ জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পরিসংখ্যানের সাথে একমত হতে পারছি না। 'পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া' বলতে সরকার কি বুঝাচ্ছে? কি ভাবে এই তথ্য সংগ্রহ করছে? কাজী ফাতেমা ছবি আপা জ্বর জ্বর অনুভুতির কথা বলছেন । উনি কি এই ৪৩৪ জনের মাঝে আছেন? আমার পরিচিত অনেকেই প্রচন্ড ব্যথা ও হালকা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ তাদের পরিসংখ্যান নেয় নি।

ইসরায়েল ফাইজারের ভ্যাক্সিন ব্যবহার করছে যা ৯৫% কার্যকর। অক্সফোর্ডের ভ্যাক্সিন করোনা ঠেকাতে এতটা কার্যকর না, তবে নিঃসন্দেহে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনবে। দেশের মোট জন সংখ্যার ২৫%কে ভ্যাক্সিন দিতে পারলে তা বড় সফলতা হবে।

৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আজ টিকা দিয়ে আসছি। এখন জ্বর জ্বর অনুভুত হচ্ছে।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০৫

মা.হাসান বলেছেন: যারা করোনার চেয়ে শক্তিশালী তাদের কোন সমস্যা হবার কথা না। বোঝা যাচ্ছে আপনি করোনার চেয়ে শক্তিশালী না :(

শোক থেকে শ্লোকের উৎপত্তি। এই সুযোগে কিছু কবিতা লিখে ফেলেন এবং আমাদের সাথে শেয়ার করেন B-))

৫| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪২

ওমেরা বলেছেন: সুযোগ থাকা সত্বেও টিকা না নেয়া বোকামিই —- ভালো একটা পোষ্ট দিয়েছেন।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০৯

মা.হাসান বলেছেন: আপনি মন খারাপ করবেন না, কম বয়স্কদের টিকা নেয়া নিয়ে পরীক্ষা চলছে, আপনারও সুযোগ শীঘ্রই চলে আসতে পারে।
ভালো একটা পোষ্ট দিয়েছেন

আমার অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট যাচাই না করে এরকম উদার মন্তব্য করায় অনেক ধন্যবাদ :||

৬| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রথমেই ধন্যবাদ দেই এতদিন পরে এসে ভালো একটা পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য। সুন্দর সাজানো গোছানো পরিশ্রমী পোস্ট।++ আমাদের অনেকেরই অজানা অনেক কিছু এই পোস্ট থেকে নিবৃত্ত হবে।
আমরা কবে টীকা পাবো জানিনা। দেখি কি হয়. ‌

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৩

মা.হাসান বলেছেন: আমরা কবে টীকা পাবো জানিনা। দেখি কি হয়

ভারত গত এক মাসে প্রায় ৮৫ লাখ লোককে টিকা দিয়েছে। এই বছরের মধ্যে ৩০ কোটি লোককে টিকা দিতে চাচ্ছে। এটা খুব বড় চ্যালেঞ্জ , পারবে কি না বলা মুশকিল। আমার ধারণা পেশাগত কারণে আপনি এবং ভাবি এই ৩০ কোটির মধ্যে পড়বেন।

না পাওয়া পর্যন্ত আপনি মোমবাতি জ্বালিয়ে মঙ্গল বন্দনা, পঞ্চগব্য সেবা এই সব পন্থা অবলম্বন করতে পারেন।
অনেক দিন ধরেই ফিরতে চাচ্ছিলাম, ফিরতে পেরে এবং আপনাদের সাথে পেয়ে আমিও খুব খুশি :)
অশেষ শুভ কামনা।

৭| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৪

শাহ আজিজ বলেছেন: রেজিস্ট্রেশন করলাম যেদিন সুরক্ষা চালু করল । ৮ তারিখ ডেট পাইলাম । ৭ তারিখ আমি ৬৪ তে পা দিছি । পেশা চাইলে খুইজা দেখলাম আর্টিস্ট আছে , ওইটাই দিলাম । নার্স কোন কিছু ছাড়াই গোস্ত চাইপ্যা সুই ঢুকাইল । ভয়ে কিছু কইলাম না যদি ধোলাই দেয় । ছবি কাজির মত আমারও জ্বর জ্বর ভাব আসছিল । অজানা মাথা ব্যাথা , বুক ব্যাথা হইছিল । ডরাই নাই , ৭ দিনে বেশ ফ্রেশ লাগতাছে । আগামি মাসে সেকেন্ড ডোজ , কি হয় জানি না তয় তুলা ডেটল লগে নিমু ।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩৩

মা.হাসান বলেছেন: ভারতে জ্বর বা এরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হার ০.১৮% আর টিকার কারণে হসপিটালাইজেশনের হার ০.০০০২% । আমার স্ত্রী বলেন টিকার পর জ্বর-ব্যথা এসব হওয়া ভালো, এসব থেকে বোঝায় শরীরের ইমিউন সিস্টেম কাজ করা শুরু করেছে (ব্যথা না হলে কাজ করছে না এমন মনে করার কারণ নেই)। আর আমি জানি যে 'আমার উনি সব জানেন'। কাজেই আপনি এখন সুরক্ষিত। মার্চের প্রথম সপ্তাহে যেয়ে ২য় ডোজ নিলেই নির্ভার।

আমি গ্লাভস-স্যাভলন নিয়ে গেছিলাম। নার্স পরিস্কার বলে দিছে গ্লাভস পরতে পারবে না (অনেক লোক লাইনে দাড়িয়ে, সময় নেই, ওনাকে দোষ দিতে পারি না)। নিজে নিজের হাতে স্প্রে করার পর নার্স কিছুটা রাগ করে বললো ডিস্টিল্ড ওয়াটার ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করলে টিকার কার্যকারিতা কমে যায়। আমি কোনো কথা বলি নাই, ওনাকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে এসেছি। কাজেই তুলা-ডেটল নিয়ে গেলে কাজে লাগাতে পারবেন কি না বলতে পারছি না। অগ্রিম শুভেচ্ছা রইলো।

৮| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



টিকার ৭০ ভাগ কার্যকর, ইহাকে আপনি কিভাবে বুঝেছেন, আপনার কাছে ইহার মানেটা কি? বুঝায়ে লিখতে পারবেন তো?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩৯

মা.হাসান বলেছেন: আমি দেশি-বিদেশি ডিগ্রিহীন অশিক্ষিত মানুষ ইহার মানে বোঝার ক্ষমতা থাকিলেতো ট্রাম্পের টয়লেট ধোয়ার চাকুরি পাইতাম।

তবে এই খানে দেখিতে পাইবেন:
https://doi.org/10.1016/S0140-6736(20)32623-4

আগেই জানাইয়া রাখি, লেখকেরা বিদেশি ডিগ্রীধারি হইলেও হোয়াইট হাউসে কাজ করিবার মত বিশেষজ্ঞ কেউ নন।

অনেক ভালোবাসা

৯| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: আমার এক ডাক্তার বন্ধু ও আমার প্রথম দিনেই তারিখ ছিল। ওই বন্ধু ও আমি যোগাযোগ করেই যাই ভ্যাকসিন নিতে। ও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদলাল। বলল, না প্রধানমন্ত্রী কেন নেন নি। ওনি না নেয়া পর্যন্ত এই টিকা নিবো না। আমি নিলাম।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৪৭

মা.হাসান বলেছেন: আমেরিকার মতো দেশেও অনেক ডাক্তার-নার্স ভ্যাক্সিন নিতে আগ্রহী না। ফ্রান্সে সম্ভবত ৪০% লোক বলেছে তারা ভ্যাক্সিন নেবে না। বাংলাদেশে ছোটাখাটো যেসব সার্ভে হয়েছে তাতে দেখা গেছে ১৫% এর মতো লোক কখনোই নেবে না বলেছে। ট্রাম্প প্রকাশ্যে ভ্যাকসিন নিলে আমারিকায় ভ্যাক্সিনে আগ্রহীর সংখ্যা বাড়বে মনে করি, ওনার সাপোর্টারের সংখ্যা বিশাল। আমাদের দেশে বিএসএমএমইউর ভিসি সহ অনেক বিখ্যাত লোকই টিকা নিয়েছেন। ভিআইপিদের টিকা নেয়া লাইভ দেখানো হলে ভালো হয়। আমার ধারণা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২১ ফেব্রুয়ারি বা ৭ মার্চ বা ১৭ মার্চ বা ২৬ মার্চ টিকা নেবেন। ওনার বয়স ৭৫। তাড়াতাড়ি টিকানেয়াই উত্তম। আপনি টিকা নেয়ায় অভিনন্দন।

১০| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: টিকা নিয়ে নেয়াই উচিত। এইটা ইন্ডিয়ার সিরাম থেকে আসলেও অক্সফোর্ডের টিকা। অক্সফোর্ডের কারনে এইখানে দুই নাম্বারি করার সুযোগ নাই।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৪৩

মা.হাসান বলেছেন: অক্সফোর্ডের কারনে এইখানে দুই নাম্বারি করার সুযোগ নাই

দুই নাম্বারীর প্রচুর সুযোগ আছে। সিরাম দুই নম্বরি করবে বলে মনে হয় না। মনে রাখতে হবে আমরা দরবেশের কাছ থেকে কিনছি, সিরামের কাছ থেকে না।
এই মুহূর্তে ডিমান্ডের চেয়ে সাপ্লাই বেশি আছে। সাপ্লাইয়ের চেয়ে ডিমান্ড বাড়লে এবং খোলা বাজারে টিকা বেঁচা শুরু হলে কথার সত্যতা বুঝতে পারবেন।

এই খবরদুটা পড়তে পারেন:
https://www.dailymail.co.uk/news/article-9068437/Texas-hospital-accused-FAKING-nurses-coronavirus-vaccine-injection-TV.html

https://www.afr.com/world/asia/china-arrests-70-in-fake-vaccine-smuggling-ring-20210216-p572sw

১১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:০৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: মা.হাসান,






সুবিন্যস্ত, সুলিখিত, ভয় তাড়ুয়া লেখা। আপনাকে প্রশংসা করতেই হবে, এভাবে সাধারণ জনগণকে ( অবশ্য জনগণ এই ব্লগ পড়ে কিনা জানা নেই।) আশা ভরসা দেয়ার জন্যে।

" তোরা যে যা বলিস ভাই , আমার টিকা নেওয়া চাই...." এটাই এখন সত্য হয়ে উঠুক আপনার এমন বিশ্লেষণ ধর্মী লেখা পড়ে বা দেখে ।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৪৮

মা.হাসান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। টিকার বিষয়ে আমার জ্ঞান সীমিত। গত তিন সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত ভাবে বিভিন্ন গুজব শুনে যাচ্ছি। লেখায় ভুল থাকার প্রবল সম্ভাবনা আছে জেনেও লিখতে হলো। আপনার এবং কলাবাগান ভাইয়ের মন্তব্য থেকে বুঝছি তেমন ব্লান্ডার করিনি। উৎসাহের জন্য পুনরায় ধন্যবাদ।
নিরন্তর শুভেচ্ছা।

১২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৬

কলাবাগান১ বলেছেন: নার্স রা খালি হাতে কোন ডিসইনফেকটেন্ট ইউজ করছে না দেখে ভীষম খেলাম....Disinfectant wipe দিয়ে একটু মুছে দিতে কি সমস্যা??? ব্যান্ড এইড দিয়ে ঢেকে দেওয়া উচিত। আর এত আস্তে আস্তে সুচ ঢুকানো আর বাহির করা মানে যে টিকা নিচ্ছেন তার উপর জুলুম। সুচ হতে হবে সবচেয়ে চিকন এবং একটানে ঢুকানো আর বের করে আনতে হয়। আমাদের নার্সের দের দেখে মনে হয় ভয় পাচ্ছে সুচ টেনে বের করতে....

নতুন এক ধরনের সিরিন্জ এসেছে যেটা ইউজ করে পাচ টিকার শিশি থেকে ৬ টিকা দেওয়া যাচ্ছে....এতে সুচের বেইসে যে কিছু তরল টিকা নস্ট হয়, সেটা হয় না....।

চিন্তা করছি দেশে আসব টিকা নিতে কিন্তু সমস্যা হল আমার তো জাতিয়তার কার্ড নাই!!!! আমেরিকাতে আগামি তিন মাসেও কোন টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা নাই আমার....

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৫২

মা.হাসান বলেছেন: স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বিরাট। কিন্তু এই বিরাট বাজেটের বড় অংশই কর্মকর্তাদের বিদেসগ ভ্রমন, পর্দা-গাড়ি-এসি কেনা এসব কাজে খরচ হয় এবং বেশ বড় অংশ লুটপাট হয়। এই কালচার দীর্ঘ দিনের। হাসপাতালগুলোতে পিপিই নাই। নার্সদের মুখে খুব সাধারণ মানের মাস্ক, কতদিন ধরে একই মাস্ক পরছেন কে জানে। হাসপাতাল গুলোতে ডিজইনফেকট্যান্ট এর সরবরাহ অপ্রতুল, কোথাও কোথাও একেবারেই নেই। আমিতো ভয় করেছিলাম এক সুই দিয়ে সবাইকে ইঞ্জেকশন দেয় কি না। কিন্তু এতটা নিচে নামেনি।

লোকবল খুব কম। আমি যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েছিলাম সেখানে দুজন নার্স, লিস্টে আছে সাড়ে পাচশতের মতো নাম। সকাল আটটা থেকে দুপুর দুটা- এই ছয় ঘন্টায় একেক জন প্রায় তিনশত জন কে ইঞ্জেকশন দেবেন। বাথরুম ব্রেকের সময় নেই। গ্লাভস যদি সরকার থেকে দেয়াও হয় তাহলে ব্যবহার করার সময় থাকবে না। ওনারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন যতটা পারা যায় করার। শুনলাম আগের দিন তিনটা পর্যন্ত টিকা দিয়েছেন।অব্যবহৃত টিকা নষ্টের জন্য ফেরৎ পাঠানো হয়। ফেরৎ পাঠানোর আগ পর্যন্ত লিস্ট ভুক্ত কেউ এলে তাকে ফিরিয়ে দেন না।

কূটনীতিবিদদের যেখানে টিকা দেয়া গচ্ছে সেখানে অবস্থা ভিন্ন। পত্রিকার ছবিতে দেখলাম বসার ব্যবস্থা ভালো, নার্সদের হাতে গ্লাভস, মুখে ভালো মাস্ক ইত্যাদি। যারা নিয়মিত দেশকে ধমকি ধামকি দেয় তাদের জন্য এই ব্যবস্থা আর যাদের ট্যাক্সের পয়সায় দেশ চলে তাদের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা। আয়রনি।

শুনছি জুলাইয়ের আগেই আমেরিকার ভ্যাকসিন সংকট কেটে যাবে। মডার্না/ফাইজারের ভ্যাকসিনের অপশন থাকলে মনে হয় সেটা নেয়াই ভালো। এই মুহূর্তে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল বেশ ঝামেলার। তবে ন্যাশনাল আই ডি কার্ড না থাকলে দেশে এসে করানোর সুযোগ আছে। যখনই আসবেন করিয়ে নিলে ভালো। আমার পরিচিত প্রবাসি বাংলাদেশি সবাই করিয়েছেন। ভবিষ্যতের সম্পত্তি সংক্রান্ত সম্ভাব্য জটিলতা নাকি এতে করে এড়ানো যায়।
অনেক শুভকামনা।

১৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৩৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বাজারে ১৪ পদের টিকা,
যে কোন ডিজিজের টিকা একটাই হয়, যেমন বিসিজি টিটেনাস পোলিও টিকা।
করোনা টিকাও বছর দুই বছরদুই ফলোআপ দেখে শেষ পর্যন্ত যে কোন একটা টিকবে।
বর্তমান টিকাগুলো ৫০-৬০% কাজ করলেও সন্তষজনক বলতে হবে।
বসন্তের টিকা পোলিও দির্ঘ ট্রায়াল, ৮ বছর ফলোআপ এর পর ফাইনাল হয়েছে।

কোভিড ভ্যাক্সিনগুলো মাত্র ৬ মাসে উদ্ভাবন ও প্রথমিক সংক্ষিপ্ত ট্রায়ালে এই টিকাগুলো জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে সিডিসি-এফডিএ, ডাব্লুএইচও
এখনকার টিকা গুলো দেয়া হচ্ছে মুলত মানুষদের মনস্তাত্তিক ভাবে চাংগা করা। অর্থনীতি চালু করার ও পাবলিক মনবল ফিরিয়ে এনে মানুষকে কর্মমুখি করা।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৫৮

মা.হাসান বলেছেন: অনেক টিকার কিন্তু একটা হলেও সুফল আছে- তা হলো দাম এখন কম্পিটিটিভ।

এই ভাইরাস কতোদিন থাকবে বলা মুশকিল। দীর্ঘ মেয়াদি হলে এবং সবাইকে বছর বছর টিকা দিতে হলে নিজেদের টিকা উৎপাদনে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

বিজ্ঞানীরা মোটামুটি সফল , এক বছরের কম সময়ের মধ্যে টিকা বের করতে পেরেছেন। রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ, টিকার সুষম বন্টন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। সবাই জাতীয় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন, আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে কেউ আবির্ভুত হতে পারেন নি, দেশের বাউন্ডারির বাইরে যেয়ে সবার টিকার প্রাপ্যতা নিয়ে কেউ কথা বলেন নি। পৃথিবীর ১৩০টা দেশ এক ডোজ টিকাও পায়নি।

টিকা নেয়ার আগ পর্যন্ত সতর্ক থাকার অনুরোধ রইলো।

১৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪৭

কলাবাগান১ বলেছেন: Ashish K. Jha, MD, MPH
@ashishkjha
Am often asked about different vaccines and their efficacy

Each trials tracks, reports efficacy differently

Currently, we have preliminary results for Novavax and J&J

But what numbers matter? What should you look for?

Here's one set of data to track. In a simple table


Israel study on Pfizer vaccine indicates 94% drop in symptomatic COVID-19 cases: report

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১০

মা.হাসান বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। তবে হাজারের ট্রায়ালে যা রেজাল্ট পাওয়া গেছে, লাখ বা কোটির উপর প্রয়োগে তার থেকে কিছু বিচ্যুতি হওয়া স্বাভাবিক। যারা টিকা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্যের বয়স ৭০ এর উপর । আগে হোক আর পরে হোক , টিকা গ্রহনকারিদের মধ্যে কিছু লোক স্বাভাবিক কারনেও মারা যাবেন। কিছু পত্রিকা সেটা নিয়ে আট কলামের হেডলাইন করবে। চায়ের স্টলে এগুলো নিয়ে বড় আড্ডা হবে।
সাড়ে তিন কোটি ডোজের প্রতিটি কাজে লাগবে এটাই কামনা।

১৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে টিকা নিয়ে যে সংশয় ছিলো, আমার মনে হয় সেটা কেটে গেছে। সবাই আগ্রহ করে টিকা নিয়েছেন। ফেসবুকে ছবি দিয়েছেন। এখন সবাই চিন্তা করছে, আমরা টিকা পাবো তো!?

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১২

মা.হাসান বলেছেন: পাঁচ কোটি লকের মধ্যে ত্রিশ লাখের কম রেজিস্ট্রেশন করেছে। এটাকে আমি খুব ভালো বলবো না। সারে তিন কোটি টিকা দেয়া দুরুহ হবে।

১৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৩:৩৫

কাছের-মানুষ বলেছেন: প্রথম দিকে টিকা দেশে আসলে মানুষের এর উপর আস্থা কম ছিল! তবে আমার মনে হয় এখন টিকার উপর জনগনের ঈমান বেড়েছে। আশার কথা হল অনেকেই টিকা নিচ্ছে। আমাদের দেশের জন্য এটা দরকারি ছিল, পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকার আওতায় আনতে পারলে দেশের জন্য মঙ্গল হবে।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২৬

মা.হাসান বলেছেন: আমার নিজ গ্রামের দিকে ২০-২৫ বছরের ছেলেপুলেরাও ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়ার জন্য টিকা নিচ্ছে। মহিলাদের অংশগ্রহন কম, গরীব খেটে খাওয়া লোকদের অংশগ্রহন নেই বললেই চলে।
পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকার আওতায় আনতে পারলে দেশের জন্য মঙ্গল হবে।
মহামারীর মোকাবেলায় এর বিকল্প নেই।
অশেষ শুভ কামনা।

১৭| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৫১

সোহানী বলেছেন: ঘটনা কি!! দীর্ঘদিন নিখোঁজ থেকে হঠাৎ ফিরা্ আইসা বিশাল পোস্ট!!!! এ ক'দিনের সব পোস্ট মনে হয় এক সাথেই দিসেন B:-/

যাহোক, একটু বিজি তাই এতো পোস্ট পড়ার সময নাই। পড়ে পড়ুম। আপনি যে ফিইরা আসছেন তাতেই খুশি। রিক্সা থেইকা নাকি পড়ছিলেন??

আপনারে স্মরণ কইরা পোস্ট!!

একজন কিরপিনের গল্প B-))

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪১

মা.হাসান বলেছেন: আমার লেখার গতি খুব কম। গত মাসের শেষ সপ্তাহে ওয়ার্ড প্যাডে এই পোস্ট লেখা শুরু করেছিলাম।
৩০ সেন্টিমিটার বরফের নিচে আপনার কি ব্যস্ততা বুঝতে পারলাম না :|| । বাংলাদেশ-ভারত পানি চুক্তির আওতায় আমরা বর্ষা মৌসুমে বেশ ভালো পানি পাই। দেখেন কানাডা-আম্রিকা বরফ চুক্তি করে কিছু বরফ আম্রিকায় পাঠাতে পারেন কি না।

আপনি মনে হয় আল জাজিরার নিউজ দেখেন। ঐ খানে এই রকম উল্টাপাল্টা খবর দেখায় । আপনার কেবল কোম্পানিকে বলে বিটিভি ওয়ার্ল্ড এর কানেকশন নেন। ভাল ভালো খবর পাবেন।

আমারে স্মরণ করায় অশেষ ধন্যবাদ। হিসাবি লোককে কিরপিন বলা ঠিক হবে না। :D

১৮| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



টিকায় ভয় নেই। সকলেরই টিকা নেয়া উচিত বলে মনে করি।

সুলিখিত পোস্টে +++

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪৫

মা.হাসান বলেছেন: যার যার সুযোগ আছে এই সময়ে নিয়ে নিলে ভালো।
প্লাসে অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।

১৯| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৯

অজ্ঞ বালক বলেছেন: বেশ চমৎকার পুস্ট, ডাইরেক্ট প্রিয়তে। সাথে পিলাচ ফ্রি।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪৯

মা.হাসান বলেছেন: যে কোনো জিনিস ফ্রি পাইতে আমার খুব ভাল লাগে। :D
অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

২০| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:০৫

আখেনাটেন বলেছেন: বিরাট পোস্ট। সচেতন হোক সকল বাঙালী।

নানামুখি সমালোচনায় এই প্রথম সরকার মনে হয় সঠিক কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে। টিকা ফ্রি করে, বেক্সিমকোকে সাইডলাইনে রেখে। তবে দরবেশও বসে আছে নয়া চাল দিতে মনে হয়।

রিজভী সাব না কে যেন এটাকে মুরগির টিকা বলেছিল। উনি কি টিকা নিয়েছেন? এরা পারেও বটে। :P

চমৎকার লেখা।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৬

মা.হাসান বলেছেন: জানুয়ারির শুরুর দিকে কোনো একটা কাজে সরকারের একটা গুরুত্বপূর্ণ অফিসে গিয়েছিলাম। বিভিন্ন জায়গায় গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর। চারিদিকে দালাল চক্র। ভ্যাক্সিন নিয়ে কোনো ব্যবসা করা যায় কি না। সরকারের পদক্ষেপ ভালো ছিলো, অঘটন ঘটে নি।

দরবেশ বাবা সাইড লাইনে নেই। ভারত কোভিশিল্ড কিনছে ২১০ রুপি দরে যা বাংলাদেশি টাকায় ২৪৬ টাকার কাছাকাছি। বাংলাদেশ সরকার দরবেশের কাছ থেকে কিনছে ৫ ডলারে যা বাংলাদেশের মুদ্রায় ৪২৫ টাকা। ৩ কোটি ডোজে অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে ৫৩০ কোটি টাকা, ৬ কোটি ডোজে (৩ কোটি লোক কে ২ ডোজ হিসেবে) ১০৬০ কোটি টাকা।

৫০ লাখ ডোজের ওজন ৭ টনের মতো। কেজি প্রতি দু ডলার পরিবহন খরচ ধরলে প্রতি চালানে খরচ ১৫ হাজার ডলার, ৬ চালানে সর্বোচ্চ ১ লাখ ডলার, টাকায় ১ কোটি টাকার কম।

৫০০ কোটিটাকায় অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স হয় ২৫ কোটি টাকা। দরবেশ বাবা সেটাও ছাড় পেয়েছেন।
সরকারি টাকা নানা ভাবে নয়-ছয় হয়। পাব্লিক কিছুই পায় না। এইক্ষেত্রে চুরি যাই হোক, আমরা কিছুতো সুফল পেলাম।

রিজভি সাবেরা পাবলিককে চিরকাল ছাগল হিসেবে ট্রিট করে এসেছেন। এখন মুরগী হিসেবে প্রমোশন দিয়েছেন বলে ওনাকে ধন্যবাদ।

লেখা ভালো লেগেছে বলায় অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

২১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কোথায়?
এত মানুষ মন্তব্য করেছেন। উত্তর দিবেন কখন?

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৮

মা.হাসান বলেছেন: দুঃখিত রাজীব নুর ভাই, বিভিন্ন সমস্যা থাকে, ইচ্ছে থাকলেও আসা হয় না। ধৈর্য নিয়ে সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

২২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এই জন্যই ব্লগ ভালা পাই। জ্ঞানী গুনীদের কতোরকমের জ্ঞানের কথা জানা যায়! আসলে জানার কোন শেষ নাই। এই পোষ্টটা যদিও ব্যক্তিগতভাবে আমার কোন কামে লাগবো না, তারপরেও.......দেশে জ্ঞাতি-গুষ্ঠি আছে। তাগো কাছে জ্ঞানী সাজার চেষ্টা করা যাবে। এইটাই বা কম কিসে!! :P

জ্ঞান স্বল্প হওয়ার কারনে কয়েকটা জায়গাতে বুঝি নাই। একটু বুঝায়া কইলে কৃতজ্ঞিত হইতাম। :-B


১. মানুষ কুমিরে পরিণত হতে পারে মনে করেন, কোন কুমির এই টিকা নিল। সে কি মানুষে পরিনত হতে পারবে?

২. ম্যাখো সম্ভবতঃ টেরাম্প মামার শিষ্যত্ব গ্রহন করেছে। এই ব্যাপারে আপনার মুল্যায়ন কি?

৩. একটি টিকার দাম ৫ ডলার বা প্রায় সাড়ে চারশ ডলার। এই পাটিগণিতিয় সমাধানটা খুবই জরুরী। প্রায়োরিটির ভিত্তিতে এর সমাধান দিবেন, পিলিস!!

৪. এতোদিন জানতাম ''গ্লাভস'' এমন একটা জিনিস, যেটা হাতে পরিধান করে। তাইলে হ্যান্ড গ্লাভস বিষয়টা কি? তবে কি লেগ গ্লাভসও আছে? কৌতুহল থেকে জানতে চাইলাম!!

৫. কয়েক শত কোটি টাকার টিকার জন্য কয়েক কোটি টাকার ফ্রিজ কেনা হলে আখেরে তা কাজে লাগবে। আখেরে কি কাজে লাগবে? ডাক্তার/নার্সদের বাজার সদাই রাখার কাজে??

@জুন আপাঃ টিকা নিয়ে কুমির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাটা মাথায় রাইখেন। বলা তো যায় না............!!! =p~

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৪৩

মা.হাসান বলেছেন: আপনার পরিবারে শমশের বাই থাকিতে পরিবাবের লোক আপনার কথায় পাত্তা দিবে এমনটা বিশ্বাস করা কঠিন।
(১) যাহেড সাহেবের অত্যাশ্চর্য আবিস্কার এই টিকা ধন্বন্তরির মতোন সর্বরোগে কাজ করে। কাজেই কুমির চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা যাইবে। কুমিরের যেহেতু হাত নাই, এই টিকা বাহুমূলে দেয়া সম্ভব নহে। এই ক্ষেত্রে টিকার মধ্যে টিকা দিতে হইবে (শুধু ২য় টিকা ভ্যাক্সিন অর্থে লইতে হইবে)। (তবে এই টিকা কুকুরের লেজ সোজা করিতে পারে না, ঐ চেষ্টা করিতে যাইয়া অনেকে রিটায়ারমেন্টে চলিয়া গিয়াছেন। কাজেই পরিবারের বড়দের চিকিৎসায় ব্যবহার করিতে যাইবেন না।)
(২) মানুষ তার ভুল হইতে শিক্ষা লয়। ম্যাখো যদি পরবর্তি নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সাহায্য চায় তাইলে বুঝতে হপে উনি ঠিক পথে আছেন।
(৩) প্রথমটা আম্রিকান ডলার, পরেরটা বাংলা ডলার। সব খুলিয়া না দেখাইলে বোঝেন না এই স্বভাবখানা ভালো নহে।
(৪) ধরা যাক কুমির গ্লাভস পরিবে । তখন কোথায় পরিবে? হ্যান্ড গ্লাভস না বলিলেতো কুমিরও এই গ্লাভস লইয়া টানাটানি করিবে।
(৫)


এই দুটি নমুনা মাত্র। বাস্তবে এই অবস্থা অনেক জায়গায়। এই হইলো চিকিৎসা ব্যবস্থার হাল। টর্চ জ্বালাইয়া অপারেশন করা লাগে।
সাপোজিটরি এবং অনেক ওষুধ ফ্রিজে রাখা লাগে। বাচ্চাদের জন্য সাপোজিটরির বিকল্প নাই। বাজেট থাকিলে না হয় দুই খানা করিয়াই ফ্রিজ কেনা হউক, একখানা খাবারের জন্য আরেক খানা ওষুধের জন্য।

২৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:২৮

করুণাধারা বলেছেন: ভাঙ্গা হাত নিয়ে এই বিশাল পোস্ট লিখেছেন, না জানি কত কষ্ট হয়েছে। কিন্তু এমন একখান পোস্ট দিয়ে অত্যন্ত সুবিবেচনার পরিচয় দিয়েছেন, এই লেখাতে টিকা সংক্রান্ত প্রায় সকল প্রশ্নের উত্তর আছে, অনেকেই এটা পড়ে নিশ্চিন্তে টিকা নিতে যাবেন বলে মনে হয়।

আমার পরিবারের ৭৫% মানুষের টিকা নেয়া হয়েছে, অবশিষ্ট ২৫% এর কবে হবে জানিনা :(

আপনি নাসিরউদ্দিন হোজ্জার গল্প জানেন আমি জানি, তবু আবার বলি। একবার এক লোক এসে হোজ্জাকে বলল অন্য এলাকায় থাকা তার ভাইয়ের জন্য একটা চিঠি লিখে দিতে। হোজ্জার লিখতে ইচ্ছা করছিল না, তাই বললো আমার পায়ে ব্যথা... আজকাল অনলাইনে লিখতে তো হাত লাগে না, লেখার ইচ্ছা থাকা লাগে...

আশাকরি এখন থেকে নিয়মিত লিখবেন।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫৮

মা.হাসান বলেছেন: আসলে হাত তো ভাঙে নাই, কিছু ব্যথা ছিলো, কিন্তু এখন সকলের সহমর্মিতা পূর্ণ বথা শুনে মনে হচ্ছে ভাঙলেও খারাপ হতো না B-)
এমনিতেও আমার টাইপের গতি কম। হাতের কারণে আরো কমে গেছে। তবে আপনাদের দেখতে পেয়ে ব্যথা তুচ্ছ মনে হচ্ছে।
আশা করি আপনার বাসার আর সকলেও শিঘ্র টিকা পেয়ে যাবেন।
জিবোর্ড বা বর্ন বা ক্রোম ব্রাউজারের স্পিচ টাইপিং- কোনোটাতেই আমি ভালো ভাবে টাইপ করতে পারি না। স্পিচ টু টেক্সটে এত উল্টাপাল্টা টাইপ হয় যে প্রায়ক্ষেত্রেই আমাকে পুরোটাই রিটাইপ করতে হয়। এই যেমন একটু আগে টাইপ করতে চাইলাম- ''পাঁঠার দুর্গন্ধ ভালো লাগে না'', কিন্তু বদলে টাইপ হয়ে গেলো ''কুকুরের লেজ সোজা হয় না''। দোষ আমার ভয়েসের , এটাতে সন্দেহ নেই।

নিয়মিত হবার ইচ্ছে ষোল আনা।

অনেক শুভকামনা।

২৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০৮

জুন বলেছেন: আপনার হাত ব্যাথার কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে । এই অবস্থা আমারও কয়েক মাস আগে হয়েছিল । আল্লাহর রহমতে এখন ভালো আছি । তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে নিয়মিত হন এই প্রত্যাশা রইলো মা হাসান। অনেকদিন না দেখে যখন নানা রকম চিন্তা করছিলাম তখন শুনলাম আপনি অসুস্থ ।

@ ভুয়া আপনে যখন ৮১ বছরেও হন্ননাই তখন আমিতো কিশোরী :`>
মনে আছে কাকু আপনার পোস্টে বলছিল কিশোরদের রাজনীতির আসর :P
আর আপনার সেই পোস্টে আমিও সক্রিয় ছিলাম আর এই মন্তব্যে আমি হাসতে হাসতে শেষ =p~

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৯

মা.হাসান বলেছেন: ব্যথা তো ভালো হয়ে গেছে। ব্যথার কথা শুনে খারাপ লাগছে না কি সারার কথা শুনে খারাপ লাগছে B:-)
অনেকদিন না দেখে যখন নানা রকম চিন্তা করছিলাম...
মনে বড় দুঃখ। অনেকেই অনেক রকম চিন্তা করছে, কিন্তু ব্যান খাইছি এরকম চিন্তা কেউ করে নাই। আমারে ব্যান খাওয়ার যোগ্য কেউ ভাবে না :((
আপনি হাসতে হাসতে শেষ হবার পর আবার শেষ থেকে শুরু করতে পারছেন যাইনা আমরা আনন্দিত।

২৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: বুঝলাম না এত মোটিভেশনের কি দরকার !!
আমি তো আগেই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়ে নিয়েছি :P আফসোস সবাই বয়স যেনে গেলো /:)


চমৎকার বিশদ ভাবে লিখেছেন, ফেসবুকে শেয়ার দিলে বেশি মানুষ পড়ত। সৌদি আরব বলেছে যে টিকা ছাড়া ওমরাহ করতে দেবেনা। যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে টিকা না থাকলে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করা ভবিষ্যতে সম্ভব নাও হতে পারে। টিকা নিন, এগিয়ে থাকুন।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩১

মা.হাসান বলেছেন: কোনো মোটিভেশনের দরকার নাই, সরকার ঘোষণা দিক যে মহিলারা ১৮ বছর হইলেই টিকা নিতে পারবে, তাইলে টিকা নেয়ার হার বাইড়া যাইবে। দেশে ১৮র উপরে মহিলার সংখ্যা নাই বললেই চলে। :-P

ফেসবুকের ইউজারদের প্রায় সবাইই মোবাইল থেকে আসে। মোবাইল ডাটা দিয়ে বাংলাদেশে ব্লগে ঢোকা যায় না। কাজেই ফেসবুকে ব্লগের পোস্ট শেয়ার দেয়া অর্থহীন। তবে আলজাজিরার খবর নাকি মানুষজন খুব পড়ে। আর পয়সা পাইলে নাকি আল জাজিরারে যা বলবেন তাই লিখবে। এই জন্য সরকার আল জাজিরারে দিয়ে টিকা নেয়ার জন্য কিছু ভিডু বানাইলে কাজে লাগতো।

গত বছর হজ্ব সীমিত আকারে হইছে। এই বছরও মনে হয় সে রকমই হবে। আফ্রিকান দেশ গুলাতে টিকা যায় নাই। পাকিস্তানে সামান্য কয়েক হাজার লোক টিকা নিয়েছে। ভারতে সাধারণ লোক এখনো টিকা পায়নি। ইন্দোনেশিয়ায় বড় সমস্যা ইনফ্রাস্ট্রাকচার। স্বাস্থ্য বিভাগের লোকদেরই আপাতত টিকা দেয়া হচ্ছে। সব দেশে টিকা দেয়া শেষ হতে আরো এক বছরের বেশি সময় লাগবে। আমরা সেই হিসাবে ভাগ্যবান।

২৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৫৯

ঢুকিচেপা বলেছেন: বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করে লেখা চমৎকার হয়েছে।
আমি আগামীকাল নিব ইনশাআল্লাহ্।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩২

মা.হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ ঢুকিচেপা। আশা করি সুস্থ্য আছেন। টিকা নেয়ায় অভিনন্দন।

২৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৪

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ১৩ তারিখে নিয়েছি ২য় ডোজ ১৫ মার্চ। হালকা জ্বর ও হাত ব্যাথা ছাড়া অন্যকোন খারাপ প্রভাব নেই।

ধন্যবাদ।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩৬

মা.হাসান বলেছেন: সরকারের গাইড লাইনে কিছু পরিবর্তন হয়েছে, ২য় ডোজ পাবেন এপ্রিলের ১০-১৫ তারিখের দিকে, এস এম এস আসবে। টিকা নেয়ায় অভিনন্দন। অনেক শুভ কামনা।

২৮| ০৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:২১

জুল ভার্ন বলেছেন: আমি টিকা নিয়েছি-কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করি নাই।

২৭ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৫৪

মা.হাসান বলেছেন: টিকা নেয়ায় অভিনন্দন।
মন্তব্যের জবাবে বিলম্বের জন্য আন্তরিক দুঃখিত। ৭ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত ব্যক্তিগত কারণে ব্লগে ছিলাম না বলে বিলম্ব ঘটেছে।
অনেক শুভ কামনা।

২৯| ১৭ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১১:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: অত্যন্ত চমৎকার একটি পোস্ট। বুঝাই যাচ্ছে, অনেক তথ্য উপাত্ত ঘাটাঘাটি করে এ পোস্ট সাজিয়েছেন এবং তা যৌক্তিকতার সাথে উপস্থাপন করেছেন। এর জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
টিকা সনদ সংগ্রহের ব্যাপারটাকে ঘোলাটে (ফিশী) মনে হচ্ছে।
"এ ছাড়া নিজের ইয়ে চীনের সাথে বেশি মাখামাখি করুক এটাও ভারত চায় নি" - হাসি চাপিয়ে রাখতে পারছি না! :)
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি টিকা নিয়েছি-কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করি নাই। - আমিও সস্ত্রীক নিয়েছি, আমরাও কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করি নাই
প্রায় সবগুলো প্রতিমন্তব্য চমৎকার হয়েছে, অনেকগুলো মন্তব্যও।
পোস্টে প্লাস +।

২৭ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১

মা.হাসান বলেছেন: আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ব্যক্তিগত প্রয়োজনে প্রায় কুড়ি দিন ব্লগ থেকে দূরে ছিলাম বলে আগে মন্তব্যের প্রত্যুত্তর করা সম্ভব হয় নি বলে দুঃখিত।

পত্রিকাতে চোখে পড়লো আমেরিকার মতো দেশে ২০০ ডলারে টিকা জাল ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট আর ৩০ ডলারে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশকে অনেক দেশই মডেল হিসেবে নিয়েছে এতে আর সন্দেহের অবকাশ নাই।

টিকা সনদের বিষয়ে বিভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন পলিসি নিলে ভবিষ্যতে ঝামেলা হবে। International Organization for Migration (IOM) এর মতো সংস্থাকে গাইডলাইন তৈরির দায়িত্ব দিলে এবং সরকারি পর্যায়ে ডাটাবেস তৈরি করে অনলাইনে যাচাইয়ের সুযোগ রাখলে অনিয়ম করা কঠিন হবে। এটা আমাদের আয়ত্বের বাইরে। যা সরকারের আয়ত্বের মধ্যে তা হলো একটা স্বচ্ছ , সুলভ , সহজ এবং অনলাইনে যাচাই যোগ্য টিকা সনদের ব্যবস্থা করা।

পরিচিত যারা টিকা নিয়েছেন প্রায় সবাই ই ব্যথার উপসর্গের কথা বলেছেন। বিনা ব্যথায় টিকা নিতে পারায় আলাদা অভিনন্দন রইলো। অনেক শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.