নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অজানা দেশ, অজানা শহর। অচেনা পথে অবিরত মানুষের মুখ। এই ইমারতের ভীরে, রাজপথে নগরে, আমি এক অচেনা আগন্তুক।

ম ইসলাম

ম ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনলাইন অভিজ্ঞতা

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০০


সময়ের সাথে সাথে ফেসবুক মানুষের জীবনে অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে বা উঠছে। ভাল খারাপ দিক নিয়ে অনেক বিতর্ক হবে। আমি সে তর্কে যাচ্ছি না। মুলত ফেসবুকের কারনে কিছু অনলাইন পত্রিকা ঘাসের মত গজিয়ে উঠেছে এবং প্রতিদিনই গজাচ্ছে। এদের খবর গুলোর বিচিত্রতা দেখলে মাঝে মাঝে নিজের হাত কামড়াতে ইচ্ছে করে। বিচিত্র বিষয় হল, এদের হেডলাইন। অনলাইন সাংবাদিকতা যে কোন অধঃপতনে নেমেছে, হেডলাইন দেখলে বোধগম্য হয়। একি করলেন! একি বললেন! ভাইরাল! অবাক হবেন! শব্দগুলো কমন হেডলাইন। অথচ খবরে ঢুকে দেখুন, বাশ বাগানের মাথার উপর ভুত দেখা গেছে ঐ টাইপ খবর। যে খবরটা পড়তে আপনি পেজ ওপেন করেছেন তার কোন নাম-নিশানা নেই। আবার একই খবর এরা বিভিন্ন রকম হেডলাইনে প্রচার করছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার যত রকম পদ্ধতি আছে, এরা সব জানে। কিছু দিন আগে বাতাসে আর্দ্রতা বৃদ্ধির জন্য মেঝে ঘামছিল। কয়েকটা অনলাইন পত্রিকা বিষয়টাকে ভুমিকম্পের লক্ষণ বলে প্রচার করে দিলো। "হলুদ সাংবাদিকতা" বলে একটা কথা জানি। কিন্তু এই ধরনের সাংবাদিকতা কোন "রং"এর, আমার জানা নেই।

এই অনলাইন পত্রিকার কারনে এদেশের মানুষেরা পরকিয়া করে শান্তি পায় না! গরুর জন্য ঘাস কেটে শান্তি পায় না। একটা ভুত যে নিরিবিলিতে মানুষকে ভয় দেখাবে, সেখানেও শান্তি নেই। ঠিক কেউ ভিডিও করে ফেলবে। এই টাইপ খবর গুলো হল এখন অনলাইন পত্রিকার কমন খবর।

সবচেয়ে বিচিত্র বিষয়, দুটাকা দামের একটা অনলাইন পত্রিকায় ঢুকলে ওদের বিজ্ঞাপন দেখতে আপনার চার টাকার ডাটা খরচ করতে হয়। তারপর আরও মজার বিষয়, আপনি যে পেজে ঢুকেছেন, বিজ্ঞাপনের কারনে সেই খবরের লিংকটাই হারিয়ে ফেলবেন। খবর তো কোন দূর। অথচ এই অনলাইন পত্রিকা গুলোর লাইক হাজার হাজার। সেটা কিভাবে হয়?

প্রথম কথা, ফেসবুকে এখন পেমেন্ট সহজ এবং সহজলভ্য বলে খুব সহজেই মানুষের কাছে পেজ গুলো বিজ্ঞাপন আকারে পৌছে যায়। আর সেই বিজ্ঞাপনে থাকে এমন কোন খবর, যা আপনাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে খবরটায় ঢুকতে বাধ্য করে ফেলে। মুলত ধর্ম নিয়েই এদের কারবারটা বেশি। মানুষের এই ইমোশনটা কাজে লাগিয়ে অনায়াসে আপনার কাছ থেকে এরা লাইক আদায় করে নেয়। এই টাইপ পেজের সবচেয়ে বড় উদাহরণ, রেডিও.......। খোজ নিয়ে দেখেন, এদের এডমিনরা সুরা ফাতিহা জানে কিনা সন্দেহ।

ফেসবুকে মানুষের অজ্ঞতা, সৌন্দর্য প্রীতি, মেয়েদের প্রতি দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে কিছু পেজ তাদের প্রচারণা চালায়। আমি গরীব বলে/গ্রামের মেয়ে বলে/দেখতে ভাল নই বলে কেউ আমার ছবিতে লাইক দেয় না, আমার ছবি শেয়ার করলে আমি তাকে আমার ইমো নাম্বার দেবো ইত্যাদি ইত্যাদি। এই পেজ গুলোর ক্যাটাগরি খেয়াল করলাম, News/Media. পেজের লাইক হয়ত 50k. কিন্তু একটা পোষ্টের লাইক 200k, কমেন্টস 100k, শেয়ার 10k. লাখ লাখ লাইক জোগাড় করে এক সময় এই পেজ গুলোই অনলাইন পত্রিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

মোবাইলে UC Browser এর হোম পেজে Zoombangla নামে একটা অনলাইন পত্রিকা বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকার কিছু "ব্যতিক্রম" খবর কপি-পেষ্ট করে। অবশ্য পত্রিকার নাম উল্লেখ করেই করে। এদের কিছু খবরের হেডলাইন দেখলে মনে হবে আপনি ভুল করে চটি গল্পের পেজে ঢুকে পড়েছেন।

অনলাইন খারাপ এটা বলছি না। শুধু ফেসবুকে থেকেই আপনি বিশ্বের সব খবর পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দিন দিন ভুয়া এবং বিভ্রান্তকর খবরে এটা যে বিরক্তির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে সেটা বুঝতে খুব বেশি মাথা খাটানোর দরকার হয় না।

আমাদের দেশে এখনও জনসংখ্যার একটা বৃহত্তর অংশ নেট, ডাটা বলতে ফেসবুক বোঝে। এবং মানুষের এই অজ্ঞতার কারনে পত্রিকা, পেজ গুলো তাদের বিরক্তিকর প্রচারণা গুলো চালানোর সুযোগ পেয়ে পাচ্ছে।

ফেক বা ভুয়া পোষ্ট নিয়ে ফেসবুক খুব সম্প্রতি কিছু ব্যবস্থা গ্রহন শুরু করেছে। কিন্তু পৃথিবীর এত গুলো ভাষা থেকে ফেক পোষ্ট খুজে বের করে তা অপসারণ করা খুব সহজ কাজ নয়। ইউটিউবও ইতিমধ্যে ফেক পোষ্ট অপসারণের কাজ শুরু করেছে। কারন এই ফেক পোষ্টের কারনে ইউটিউব থেকে বিশ্বের নামকরা কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

আমার মনে হয়, মানুষকে এই বিভ্রান্তিকর অবস্থা থেকে মুক্ত করতে সাংবাদিকদের লাইসেন্স পদ্ধতি চালু করা উচিৎ, যা সরকার নিয়ন্ত্রন করবে। যেখানে মিনিমাম একটা যোগ্যতার বিচারে সাংবাদিক করা হবে। পত্রিকায় চাকরি করলেই সাংবাদিক, দুচারটা লেখা পোষ্ট করলেই সাংবাদিক, এই ধরনের চিন্তা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

অনলাইন পত্রিকাগুলো মুলত তাদের খবর বা পত্রিকার "ভিউ" বাড়ানোর জন্য এ ধরনের কাজ করে থাকে। ভিউ বাড়লে বিজ্ঞাপন পাওয়া যাবে। আর বিজ্ঞাপন মানেই টাকা। কিন্তু এদেশে যত গুলো কোম্পানি আছে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য আমার মনে হয় তারচেয়ে বেশি আছে অনলাইন পত্রিকা। ফলে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। আর এই প্রতিযোগিতার যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছি আমরা সাধারণ পাবলিক।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ঠিকই বলেছেন ভাই, কিছু পোর্টাল খুবই বিশ্রিভাবে সংবাদ শিরোনাম করে নিজেদের ব্যবসা বাড়াতে ব্যস্ত, আবার একশ্রেণির লাইকার ওসবেই পড়ে থাকে দেখি। খুবই অবাক করা পরিস্থিতি।

আপনার আলোচনা ভালো লাগলো ভাই।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৪

ম ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ফেইসবুকের অপব্যবহার হচ্ছে খুব বেশি; নতুন প্রজন্ম মিথ্যা আর গুজব শিখে বড় হচ্ছে৷এটা দুঃখজনক৷

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৩

ম ইসলাম বলেছেন: আমার মনে হয়, এসব বিষয়ে সময় হয়েছে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণের।

৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমরা সবসময় প্রযুক্তির খারাপ দিকটাকে গ্রহণ করতে বেশী পছন্দ করি...

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৫

ম ইসলাম বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভুল যে অভিজ্ঞতা দেয় জীবনের জন্য তাকে স্বাগতম!

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৩

ম ইসলাম বলেছেন: সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.