নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভবিষ্যতের আবরণ উন্মোচিত হয় ধীরেধীরে, অথচ মানুষকে কাজ করে যেতে হয় দিন থেকে দিনে

ভবিষ্যতের আবরণ উন্মোচিত হয় ধীরে ধীরে, অথচ মানুষকে কাজ করে যেতে হয় দিন থেকে দিনে

মিঠুন চাকমা

মিঠুন চাকমা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাঙামাটির সাজেক ভ্যালীতে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ: মূল লক্ষ্য কি পাহাড়ি জনগণের ভূমি বেদখল?

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮

পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই এলাকায়। গত ০৬ নভেম্বর এ কথা ঘোষনা দিয়ে এসেছেন দেশের সামরিক বাহিনীর চট্টগ্রাম ডিভিশনের প্রধান মেজর জেনারেল সাব্বির আহম্মেদ।(সূত্র: সিএইচটি২৪.কম)



না, তিনি পর্যটনমন্ত্রী নন এবং সম্ভবত পর্যটন সমৃদ্ধি বা উন্নয়নের দায়িত্বও তিনি পাননি।

দেশে সেনাশাসন বা সামরিক শাসনও চলছে না। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম বলে কথা!



কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামমে দেশের অন্য অঞ্চলের চেয়ে ভিন্নভাবে শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হয়! তাই পর্যটনমন্ত্রী বা অন্য কোনো মন্ত্রী সেখানে গিয়ে কোনো ঘোষনা দেন না।পর্যটনকেন্দ্র করার ঘোষনা দিয়ে এসেছেন চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি।



প্রসঙ্গ কথায় আসি, রুইলুই বা সাজেক ভ্যালীর অনেক অংশই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্তর্ভু্ক্ত। উক্ত অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পার্বত্য জুম্ম জনগণ বসত গেড়েছে নানা কারনে। প্রথম কারণ ১৯৫৮ থেকে ৬২ সালের মধ্যে গড়ে ওঠা কাপ্তাই বাঁধ। কাপ্তাই বাঁধের ফলে যারা উদ্বাস্তু হয়েছিল, তাদের কেউ কেউ সাজেকে আশ্রয় নিয়েছিল। এছাড়া ১৯৭৫ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সশস্ত্র প্রতিরোধ হয় তার প্রতিক্রিয়ায় শাসকশ্রেনী পার্বত্য চট্টগ্রামে ডজনের অধিক গণহত্যা চালায়। এই গণহত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে হাজার হাজার জুম্ম সাজেকে আশ্রয় নিয়েছিল তারা তাদের বাপদাদার ভিটেমাটি হারিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল।

ভিটামাটি হারানো অনেকেই এখনো সেই সাজেকেই আছে। তারা রুইলুই মোন বা রুইলুই পাহাড়েও আছে। তাদের কেউ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার ফেনীকূল তাইন্দং-তবলছড়ি থেকে গিয়েছিল জীবন বাঁচানোর তাগিদে। তাদের ভিটেমাটি তারা তাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেনি!

কেউ আশ্রয় নিয়েছিলো লুঙুদু থেকে, কেউ বা দিঘীনালার কবাখালী, বোয়ালখালী, মেরুঙ থেকে। তাদের অনেকেই তাদের বাপদাদার ভিটেয় ফিরতে পারেনি। কারণ সেই ভিটেমাটি এখন সেটলারদের দখলে।





বর্তমানে তারা সেখানে নিশ্চিন্তে সুখে নেই। প্রকৃতি প্রতিবেশ তাদের প্রতিকূল।



তাছাড়া মাঝখানে ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সেখানকার জায়গা দখলের চেষ্টায় নেমেছিলো দেশের উগ্রবাদী শাসকগোষ্ঠী। সেখানকার বাঘাইহাট এলাকা থেকে জুম্ম জনগণকে উচ্ছেদ করে সেটলারদের জন্য বসতবাড়ি বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিল উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠী ।





কিন্তু প্রবল প্রতিবাদ প্রতিরোধ এবং আন্দোলনের মুখে তারা তাতে সফল হয়নি।

সে যাত্রায় সাজেক ভ্যালী বেদখলের হাত থেকে বেঁচে গেল বটে। কিন্তু এখন আবার নানা সুতোয় সেই ভ্যালী দখলে নিতে তৎপর উগ্রবাদী এই শাসন নির্যাতনকারী।





চাকমা ভাষায় একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে। তা হচ্ছে- "সিবিদি হেইনেই জিল ঘা অহলে দোই পিলে দ্যালেও দর গরে " অর্থাৎ, কেউ চুন খেয়ে জিহ্বা পুড়িয়ে ফেললে তার সামনে দইয়ের ভান্ড রাখলেও সে তা দেখে ভয় পেয়ে যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণেরও বর্তমানে সেই অবস্থা হয়েছে। সাদাচোখে 'উন্নয়নের' নামে 'পর্যটন কেন্দ্র' নির্মাাণের কথা ইত্যাদি ভালো মুখরোচক স্বপ্নময় কথা বলা হলেও তার পেছনের উদ্দেশ্য কি তা নিয়ে সন্দিহান তো থাকতে হয়...











সন্দিহান হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ ভাবছে, এবার এই ভ্যালী দখলে নিতে লোভ দেখানো হচ্ছে উন্নয়নের! এই উন্নয়ন হচ্ছে পর্যটনের! সূত্রটি পর্যটন বটে! কিন্তু ঘোমটার নিচে খেমটার মতো তার পেছনে আছে অন্য অভিলাষ!





সেই অভিলাষ উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা বাস্তবায়ন করতে পারলে আবার উচ্ছেদ হবে সেই কয়েক পর্যায়ে ভিটেমাটিহারানো জুম্ম জনগণ।



পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ কিভাবে তা হতে দিতে পারে?

না, তা হতে দেয়া যাবে না !

এবং তাই দখলদারির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে! দখলষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলবে!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৯

বেকার সব ০০৭ বলেছেন: কারো পেটে লাথি মেরে ভ্যালীতে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের তিব্র প্রতিবাদ জানাই ( যদি আপনার কথা সত্য হয় )

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫১

মিঠুন চাকমা বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ

২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

আমি রিয়াদ বলেছেন: বেকার সব ০০৭ বলেছেন: কারো পেটে লাথি মেরে ভ্যালীতে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের তিব্র প্রতিবাদ জানাই ( যদি আপনার কথা সত্য হয় )

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৩

মিঠুন চাকমা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৬

মিঠুন চাকমা বলেছেন: লেখাটি ফেসবুকে শেয়ার করার পরে একজন যে মন্তব্য করেছেন তা নিচে তুলে ধরছি-

" সাজেক ভ্যালীতে পর্যটন হবে না। কারণ রিজার্ভ এরিয়ায় জনবসতি থেকে শুরু করে কোনোকিছু্ই করা যায় না। গভর্নমেন্টের নিষেধ।"

হ্যাঁ, কথাটি ঠিক। আমরা যারা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করি বা ভূমি আইন বিষয়ে যারা কিছুটা ওয়াকিবহাল তারা জানেন যে, সংরক্ষিত বনভূমিতে বসতজাতীয় কিছু করাটা বেআইনী। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই বেআইনী কাজ আইনী সংস্থা যখন করে তখন কীভাবে তার সুরাহা করা যায়?

তখন তো যারা "আম জনতা" তাদের কিছুই করার থাকে না...

৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৫

মিঠুন চাকমা বলেছেন: বিডিট্মরো ব্লগে লেখাটি শেয়ার করলে ঘাড় তেড়া নামে একজন লিখেছেন-

:"...তার পেছনে আছে অন্য
অভিলাষ"আপনি অভিলাষ কি সেটি কিন্তু বলবেন
না...শুধু বিরোধিতার জন্যই কি এই লিখা ?
বর্তমান সরকার তো পাহাড়ীদের
পক্ষেরসরকার...স
েনা সরানো হয়েছে...সংসদে আইন পাশ
হয়েছে...আমি অবশ্যই চাই পাহাড়ী দের সব
নৈতিকঅধিকার দেয়া হোক...যতটুকুবাক
ী বাংলাদেশীরা পায়...

৫| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

মিঠুন চাকমা বলেছেন: তবে তার এই প্রশ্নের উত্তর লেখাটিতে রয়েছে

৬| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১২

বঙ্গমিত্র সিএইচটি বলেছেন: মিঃ মিথুন আপনি অনেক ভাল লেখেন। কিন্তু সবকিছুর একটা শেষ থাকে। পাহারের সকল জমি চাকমাদের এটা কি করে ভাবলেন? এখানে কি বাঙ্গালী নেই? এটা বাংলাদেশ সরকার ও কর্মকর্তারা যদি উন্নয়নের কথা বলে আপনাদের মত নাক চেপ্টাদের নাক সিকটায়। কারণ এখানে উন্নয়নের ছোয়া লাগলে সাধারণ জুম্ম উপজাতিরা আর আপনাদের কথায় অস্ত্র হাতে দেশাদ্রোহির কাতারে দার করাতে পারবেননা এটাই ভয়? কোন শিক্ষিত মানুষ এলাকার ও জাতির উন্নয়নের জন্য বাধার সৃষ্ঠি করেনা। আপনি সেটা করে সুশিক্ষার পরিচয় দিলেন কিন্তু স্বশিক্ষার পরিচয় আপনার নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.