নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভবিষ্যতের আবরণ উন্মোচিত হয় ধীরেধীরে, অথচ মানুষকে কাজ করে যেতে হয় দিন থেকে দিনে

ভবিষ্যতের আবরণ উন্মোচিত হয় ধীরে ধীরে, অথচ মানুষকে কাজ করে যেতে হয় দিন থেকে দিনে

মিঠুন চাকমা

মিঠুন চাকমা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকায় তিন সংগঠনের সমাবেশে প্রদত্ত বক্তব্য

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০২

১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন সংগঠন ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা পাদদেশে। সেখানে তিন সংগঠনের(পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম) নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জাতীয় ছাত্র-নারী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। উক্ত সমাবেশে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)এর প্রতিনিধি হিসেবে আমি বক্তব্য প্রদান করি। বহুদিন পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য দিলাম। যখন ছাত্র সংগঠনে ছিলাম তখন মাঝে মাঝে মিছিল সমাবেশ হলে বক্তব্য দিতে হতো। এছাড়া মিছিলে শ্লোগান ধরতাম তখন। এরপর অনেকদিন অনিয়মিত ছিলাম মিছিল ও সমাবেশে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিক্ষোভে আমি যা বক্তব্য দিয়েছি তা সংক্ষেপে এখানে তুলে ধরতে ইচ্ছে হলো।

এক.

আলোচনায় বলি, অপারেশন উত্তরণ জারির মাধ্যমে এবং সবশেষে গত জানুয়ারি মাসে ১১ দফা নির্দেশনা জারির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে দেশের অন্য অঞ্চলের চেয়ে আলাদা শাসনব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। সংবিধানে এককেন্দ্রীক শাসনব্যবস্থার বৈধতা রয়েছে। কিন্তু দেশের অন্য অঞ্চলে গণতান্ত্রিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু রাখা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে চালু রাখা হয়েছে ভিন্ন শাসন ব্যবস্থা। একদেশে দুই ধরণের শাসনব্যবস্থা চলতে পারে না। পুরো দেশের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামেও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু করতে দাবি জানাই এবং সভা সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে বলে বক্তব্য দিই।

এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে যদি সীমিত মাত্রায় হলেও সেনাশাসন চালানো হয় তবে তার প্রভাব একসময় না এক সময় দেশেও পড়বে বলে মন্তব্য করি। আমি বলি, দেশে দেখা গেছে কয়েকবছর ব্যবধানে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বদলে সেনা নিয়ন্ত্রিত বা সেনা পরিচালিত শাসন কায়েম হয়। তার অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন চালু থাকার কারণে সেখান থেকে পরে তার বিস্তৃতি দেশেও ছড়িয়ে যায়। সুতরাং, গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল দাবিদার সংগঠন ব্যক্তিগণ যদি শুধু দেশের প্রেক্ষিতে কথা বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে বাদ দিয়ে ‘গণতন্ত্র’ ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ ইত্যাদির কথা বলে থাকেন তবে তাতে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। এছাড়া বলি, অনেকেই পার্বত্য সমস্যাকে শুধুমাত্র পার্বত্য জনগণের সমস্যা হিসেবে দেখে এ বিষয়ে সোচ্চার থাকে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে দেশের সচেতন সজাগ প্রগতিশীল দাবিদার ও বিপ্লবী সংগ্রামী সংগঠন ব্যক্তিকে আরো সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করি।

দুই.

সাধারণত আমরা জানি রাষ্ট্রীয় নীতি পদ্ধতি বা রাষ্ট্রের পরিচালনা পদ্ধতি কী ধরণের হবে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংহতি কী ধরণের হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভাবে নির্বাচিত সরকারই ঠিক করে দিয়ে থাকে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে কী ধরণের শাসন চলবে, সেখানে সেনাশাসন চলবে নাকি চলবে না, সেখানে কার উপর নিপীড়ন চালানো হবে তা নিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কোনো কর্মকর্তা প্রকাশ্যে পত্রিকায় মিডিয়ায় মত প্রকাশ করতে পারেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করি। আমি বলি, যদি তারা দেশের একটি অঞ্চলের বিষয়ে নীতি নির্ধারণ করতে প্রকাশ্যে মত দিয়ে থাকেন বা করে থাকেন তবে দেশে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীমন্ডলী তথা সরকার গঠনের কীইবা প্রয়োজন রয়েছে?

তিন.

আমি বক্তব্যে বলি, এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে ‘দেশপ্রেম’ ‘দেশপ্রেমিক’ এই শব্দগুলো খুব বেশি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু প্রকৃতই দেশকে ভালবাসলে দেশের বর্তমান অবস্থা তো আরো ভালো হবার কথা ছিলো। আমি বলি, অপরাজেয় বাংলা এই ভাস্কর্যটিতে তিনজনের মূর্তি রয়েছে। এরাই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামীদের প্রতীক। তারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের মুক্তি এনেছেন। কিন্তু প্রকৃতই নিজেদের স্বার্থ ছেড়ে দিয়ে কেইবা দেশকে ভালবেসেছে? দেশপ্রেম মানে হলো নিজেদের অধিকারের প্রতি সচেতন থাকার পাশাপাশি অন্যের অধিকারের প্রতি মর্যাদা দেয়া, অন্যের অধিকার রক্ষার প্রতি সচেষ্ট থাকা। দেশপ্রেম মানে হলো, অন্যদেরকে মর্যাদা দেয়া।

কিন্তু আমরা দেখি এই সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয়ার নামে তলে তলে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়ত জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে চেষ্টায় থাকে। তারা সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের রাজনৈতিক শক্তিকে ধ্বংস করে দেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে এরই মাঝে জুম্ম জনগণকে সংখ্যালঘু করার পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

যে অন্যায় আমাদের উপর করা হচ্ছে তা দ্বিগুণ হয়ে দেশের জনগণের উপর চেপে বসছে এবং তার জন্য দেশে জঙ্গী সাম্প্রদায়িকতাবাদ অশান্তি তীব্রতর হচ্ছে বলে মন্তব্য করি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার বিষয়ে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মত প্রকাশ করি।

মূলত, উপরের এই সকল বিষয়েই আমি বক্তব্য প্রদান করি।

বক্তব্য লিখে ব্লগে প্রকাশ করার মানে হলো, বক্তব্য বিষয়ে আরো দায়িত্বশীল হবার চেষ্টা করা।

যা বলা প্রয়োজন তা যতই তেতো হোক তা সোজাসুজি করে বলা দরকার বলে আমার মত।

তাই এই লেখা লিখলাম।

যদি বক্তব্য বিষয়ে কোনো সমালোচনা বা আপত্তি থাকে তা জানালো খুশি হবো।

ধন্যবাদ

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:

"উক্ত সমাবেশে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)এর প্রতিনিধি হিসেবে আমি বক্তব্য প্রদান করি। "

-ইউপিডিএফ'এর লোকদের কি পাহাড়ে থাকার অধিকার আছে? তারা যেভাবে মানুষ মেরেছে, তাদের বিচার হবে না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.