নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের কোথাও একটি ছাপ রেখে যেতে চাই

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময়

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

নুহা - ২৪

০২ রা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮

আমার খুব কাশি হচ্ছিলো। নিনো আমার কপালে হাত রেখে আমার গায়ের তাপমাত্রা দেখে। তোমার তো বেশ জ্বর!



নিনোর কথা শুনে জ্বর যেন হুড়মুড়িয়ে গায়ে কাঁপন ধরিয়ে দিতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। আমি ওর গাড়িতে পানির বোতল খুঁজি। কেমন বমি বমি পাচ্ছে। নিনো একটা বারের সামনে গাড়ি থামিয়ে বলে - এখানে ফ্রেশ রুম আছে। ফ্রেশ হয়ে এসো, ভালো লাগবে।



বারের উজ্জ্বল বাতি আমার চোখে এসে খুব লাগছিলো। আমি ফ্রেশ হয়ে, চোখে মুখে পানি দিয়ে এসে একটা টেবিলে বসি। নিনোকে আশেপাশে দেখছি না। আমার ইচ্ছে করছে টেবিলে মাথা রেখে এখানেই ঘুমিয়ে পড়ি। মিনিট পাঁচেক পর নিনো এসে বসলো। সিগারেটের গন্ধ পাচ্ছি ওর কাছ থেকে। গন্ধটা হালকা হলেও কেমন নাকে এসে লাগছিলো। আমার দিকে তাকিয়ে নিনো জিজ্ঞেস করে কফি খাবে? আমি মাথা নাড়াই। দুই কাপ কফি এনে একটা আমাকে দেয়। ওর মনেও হয়তো আমাকে নিয়ে নানান জিজ্ঞাসা কাজ করতে পারে, যেমনটা ওকে নিয়েও আমার মাঝে কাজ করছে। আবার এরকম ভাবনা নিনোর মাঝে কাজ নাও করতে পারে। কথা বলতে হয় বলেই হয়তো নিনো শুরু করে ইতালিয়ান মিউজিক আর স্পোর্টস নিয়ে । বাধ্য হয়ে আমাকে জানাতে হয় এসব নিয়ে সীমাবদ্ধ জ্ঞানের কথা। টুকটাক এসব কথার ফাঁকেই আমি নিনোর একটা ব্যাপার আবিষ্কার করে ভীষণভাবে মুগ্ধ হই যে ও খুব মনোযোগী শ্রোতা এবং আমার কথা বলার মাঝে বা শেষ হবার আগে কোনো কোথায় ও ইন্টারাপ্ট করছিল না। অথচ অনেককেই দেখা যায় অন্যের কথা শেষ হবার আগে আমরা তাদের কথা কেড়ে নিয়ে নিজেরাই বলতে থাকি , শুনতে চাই কম আর বলতে চাই বেশি। আমি নিজেও এরই মাঝে দুইবার নিনোর কথার মাঝে কখন যে নিজের মন্তব্যও জুড়ে দিয়েছিলাম আর ও ঠিক তক্ষুনি চুপ করে আমাকে বলতে সময় দিয়েছিলো, এতটুকু বিরক্তি প্রকাশ না করে। আমার বলা শেষ হলে নিনো যেখানে থামিয়েছিল কথা সেখান থেকে পুনরায় শুরু করলে আমি আমার ভুলটা বুঝতে পেরে মন এমনে বেশ লজ্জিতই হই। একসময় নিনো বললো - চলো, বাইরে হাঁটি।



বার থেকে বেরিয়ে এসে হাঁটতে থাকি রাস্তা বরাবর। জায়গাটা পরিচিত মনে হচ্ছে। এখানকার এয়ারপোর্টের কাছাকাছি একটা জায়গা। পাশেই সমুদ্র। বিমানের শব্দ কানে এসে লাগতেই নস্টালজিক লাগে। ইচ্ছে করে এক ছুটে বাংলাদেশগামী কোনো প্লেনে চড়ে বসি। কিন্তু ভাবনাটা ক্ষণিকেরই। দেশে ফিরে গেলেই কী এমন আহামরি কিছু আমার জীবনে ঘটে যাবে ! সেই তো গেলে আমার মায়ের নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হবে আমার দোষ না থাকা সত্ত্বেও। আর রেজাও কী বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের কাছে নিজের দোষ ঢাকতে নানান কাসুন্দি ঘাঁটবে না আমার নামে? কয়েক ঘণ্টা আগে রেজার সাথে ঘটে যাওয়া কদর্যতাগুলো ভাবতেও ঘেন্না হচ্ছিলো, যা একদিনে তৈরি হয়নি। এসব ভাবতে না চাইলেও কেন যে এমন নাজুক আর মামুলি অধ্যায়গুলো বারে বারে চলে আসে চোখের সামনে !মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সময়টার মধ্যে সুন্দর ব্যাপারগুলোর সাথে কিছু কদর্যতা থাকবেই।ঠিক যে সময়টায় একটা শূন্যতার বোধ আমাকে আবার ঘিরে ধরছিলো, নিনো জিজ্ঞেস করে, কী ভাবছো নুহা ? ততক্ষণে আমরা একটা বেঞ্চের কাছে এসে বসি। একটা লম্বা করে নিঃশ্বাস টেনে বলি - নাহ্‌ তেমন কিছু না। কোথায় যেন একবার পড়েছিলাম, “ জীবনটা যে একটা ফাঁদ , সে কথা আমরা সবসময়ই জানি। আমরা জন্ম নিতে চাই কিনা , এটা জিজ্ঞেস না করেই আমাদের জন্ম দেয়া হয়েছে, এমন একটা শরীরে আমাদের বন্দী করে রাখা হয়েছে , যে শরীরটি আমরা নিজেরা পছন্দ করিনি এবং আমার জন্য আবার মৃত্যু অনিবার্য করে রাখা হয়েছে ।"



- হুম বেশ গম্ভীর ভাবনা। আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করি, যদি কিছু মনে না করো ! ও কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে। এটা মনে হয় নিনোর একটা অভ্যাস। কয়েকবারই দেখলাম ওকে এ কাজটা করতে।



- বলো, শুনে দেখি কী জানতে চাও!



- তুমি প্রায় রাতেই দেখি বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকো। ঘুমাও না কেন?



আমি নিঃশব্দে হাসি, বলি - সে তো তুমিও বসে থাকো বারান্দায় আর সিগারেট খাও।



- আগামীকাল ছুটি, আর আসলে আমার গল্প করার তেমন কেউ নেই তো! তাই !



নিনোকে আমার বেশি কিছু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে না। যেটুকু অজানা ও আমার কাছে আছে, সেটুকু অজানাই থাক। যখন তখন ভাবনার একটা জায়গা হয়তো হারিয়ে যাবে ওর সম্পর্কে বেশি বেশি জেনে ফেললে। যেখানটায় বসেছি জায়গাটা একটু আলো আঁধারিতে ঘেরা। ফিনফিন করে বাতাস বইছে আর কিছুক্ষণ পর পর বিমান উড্ডয়ন কিংবা অবতরণের আওয়াজ পাচ্ছি। এখন সময় কতো জানি না, মোবাইলটা ব্যাগ থেকে বের করি সময় দেখতে।ভোর প্রায় সাড়ে চারটা। রাতের গাঢ় অন্ধকার ভেঙে সকাল হলেই প্রত্যাশিত ঝলমলে রোদ উঠবে ভাবছিলাম আমি। রোদের রঙটা তীব্র লাল হলে মনে হবে পুরো প্রকৃতিটাই রক্তের মাঝে ডুবে আছে।চাঁদের আলো শূন্যতা ছাড়া আসলে কিছুই না। মোবাইলে যখন সময় দেখছিলাম নিনো বললো, তোমার চোখ ফুলে ফুলে আছে। খুব কেঁদেছিলে? ও আমার চোখের পাতা ছুঁয়ে দিলো। একজন অচেনা ছেলে, যে আমার চোখের পাতা ছুঁয়ে দিচ্ছে, আমার মাঝে কেন যেন কোনো অপরাধবোধ কাজ করে না। মন এহয় এরকমটাই হবার কথা ছিলো, এরকম করেই আমার পাশে কোনো একজনের থাকার কথা ছিলো, যে আমাকে নিয়ে ভাববে কিন্তু বেশি বেশি প্রশ্ন করবে না, শুধু ছুঁয়ে থাকবে আমার ব্যক্তিগত অনুভবের সবটুকু।



কী সব ভাবছি আমি! আমার মাথা ঠিক নেই নাকি? ভালো-মন্দ ন্যায় অন্যায়ের মতো এতো মহান বা সূক্ষ্ম কোনও বোধই আমার মাঝে কাজ করছিলো না। কী হবে ভেবে। আমি প্রাণপণে একটা বালিশ খুঁজছিলাম, আমার মাথাটা ভারমুক্ত রাখতে। বিড়বিড় করে বোধহয় নিনোকে বললামও, একটু সরে বসবে? আমি শোবো। আমি কী অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছি? ছোটবেলায় কতো শুনেছি, বড় হয়েও শুনেছি মানুষ নাকি মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন আমিও খুব ভাবতাম, একদিন আমিও অজ্ঞান হয়ে যাবো, আমাকে নিয়ে সবাই কতো ছুটোছুটি করবে, আমাকে কতো কেয়ার করবে, বাবা অস্থির হয়ে উঠবে, মা কান্না করবে, আমার জন্য বাড়িতে ডাক্তার আসবে, প্রয়োজনে আমাকে হাসপাতালেও নেবে। কিন্তু একি, এখন কী হচ্ছে? আমি আমার মাথার ভার সামলাতে পারছি না, শরীরটাও ভীষণ হালকা মনে হচ্ছে। আমি হাত বাড়িয়ে কাউকে ধরতে চাইলাম কিন্তু সব কেমন ঘোলা ঘোলা লাগছে চোখের সামনে। কিন্তু উঁচু জায়গা থেকে পড়তে গিয়েও মনে হয় কিছুতে আটকে গেলাম, কেউ বোধ হয় আমাকে দু'হাতে তুলে নিলো। আহ্‌ শান্তি। এবার আমি ঘুমাবো।



হেই নুহা, আর ইউ ওকে?



ওর কাঁধে কী আমি মাথা রেখেছি? ও আমাকে ঝাঁকাচ্ছে কেন? আমি একটু চোখ খুলে দেখতে চাইলাম। নিনো আমাকে জাগিয়ে রাখতে চাচ্ছে, ঘুমোতে দিচ্ছে না কেন? হাহাহা নিনো কী ভেবেছিলে, যাকে গভীর রাতে প্রায়ই বারান্দায় দেখো, আজ তাকে হাতের মুঠোয় পেয়ে খুব একচোট ফুর্তি করে নেবে? ভেবেছো বাঙালি বলেই মেয়েরা সহজলভ্য? কিন্তু কই নিনো তো আমাকে জোর করে এখানে আনেনি, আমি স্বেচ্ছায় এসেছি। নিনো কী আমার মনের কথা পড়ে ফেললো? ও চলে যাচ্ছে কেন আমাকে রেখে? আমি দুই একবার নিনো নিনো বলে ডেকে খুব ক্লান্ত হয়ে যাই, মনে হয় ঘুমিয়ে যাই। কতটা সময় পার হয় জানি না, আমি কতো সময় ঘুমিয়েছিলাম! কারো হাতের স্পর্শ আমার কপালে এসে লাগে।



নুহা, তুমি হাঁটতে পারবে? চলো, গাড়িতে গিয়ে শোবে। তোমার অনেক জ্বর! ওঠো!



আমাকে ও ধরে ধরে গাড়ির সামনে নিয়ে যায়। কিন্তু ওর গাড়ি তো এখানে ছিলো না, একটা বারের সামনে ও গাড়ি রেখেছিলো, এখানে এলো কী করে? ও আমাকে রেখে চলে গিয়েছিল নাকি গাড়ি আনতে? তারমানে আমি যে মুহূর্তটায় অচেতন হয়ে যাচ্ছিলাম, আমাকে এই ছেলে একা রেখে গাড়ি আনতে গিয়েছিলো? আমার এমনিতে ভূতের ভয় নেই কিন্তু সে সময় যদি খারাপ কিছু একটা ঘটতো ভেবে আমার ভীষণ ভয় লাগে, গায়ে কাঁটা দেয়। গাড়িতে বসার পর নিনো আমাকে আমার জ্যাকেটটা খুলে ভারমুক্ত হয়ে বসতে বলে। আমার সিটটা পেছনের দিকে এলিয়ে দেয়। দেখলাম ও পকেট থেকে ওষুধ বের করে বোতলের পানিতে মিশিয়ে দিলো। বললো- খাও। জ্বর ছেড়ে যাবে। এ দেশে কিছু কিছু ফার্মেসী আছে চব্বিশ ঘণ্টাই খোলা থাকে। এই রকম অসময়ে এখানে কোথায় ও ফার্মেসী খুঁজে পেলো কে জানে।



নুহা, তুমি একটু ঘুমাও। সকাল হয়ে এলো বলে। নিনোও সিটে গা এলিয়ে দেয়। গুনগুন করে ও সুর ভাজছে -



I'd like to meet you

In a timeless

Placeless place

Somewhere when out of the Context

And beyond all consequences...



ঘুম ঘুম জড়ানো কণ্ঠে এটা কার গান জিজ্ঞেস করি ওকে।

- সুসান ভেগা।



-তুমি ইংরেজি গান শোনো ? তোমরা তো ইংরেজি বোঝো না নিনো !



- হাহহাহাহা গানের আবার ইংরেজি ইতালিয়ান কী নুহা ! অবাক করলে। আমার জন্ম হয়েছে ইংল্যান্ডে, বড় হয়েছিও সেখানে।



- তারপর?



- কিছু না। ঘুমাও। একটু পরেই সকাল হয়ে আসবে। তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেবো। ও আমার চুলে বিলি কাটতে থাকে। আমার ভীষণ ভালো লাগে। ওর গলায় গানটাও চমৎকার লাগছে।



I'd like to meet you

In a timeless

Placeless place...



একটা ঠাণ্ডা বাতাসের ঝলক এলো, সাথে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি। গাড়িতে বৃষ্টির শব্দ মন্দ না। ভোরের আলো একটু একটু করে পাপড়ি মেলতে চাইলেও বৃষ্টির কারণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। গাড়ির উপর বৃষ্টির শব্দ টিনের চালের শব্দকে মনে করিয়ে দিচ্ছিলো। আমাদের টিন শেডের পুরনো বাড়ির কথা নিনোকে বলতে চাইলাম কিন্তু আমার কথা কেমন জড়িয়ে গেছে। আমাদের উঠোনে আমি আর ভাইয়া কী আনন্দ করেই না বৃষ্টিতে ভিজতাম বাবার বকাবকি শুনেও। আমার ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি লেগে থাকে।



চোখে সূর্যের আলো পড়তেই ঘুমটা ভাঙে আমার। আলো ঢাকতে চোখের উপর স্কার্ফটা ফেলে আমি একটু কাত হয়ে শোবার চেষ্টা করি সিটের ওপর। যতই হোক গাড়ির সিট তো, বিছানার সাথে তফাৎ তো থাকবেই। কিন্তু বেশিক্ষন এপাশ ওপাশ করে সুবিধা হলো না। চোখ খুলে তাকাই বাঁ পাশে নিনোর দিকে। পা নাচাচ্ছে দিব্যি। এ ছেলে কী তাহলে একটুও ঘুমায়নি? আমার চোখে চোখ পড়তে আমাকে " বন জরনো " বলে স্বাগত জানায়। কী এখন শরীরটা একটু ভালো লাগছে?

আমি মাথা কাত করে জানাই ভালো আছি।



ও গাড়ি স্টার্ট করে জানায় বাসাতেই যাবো নাকি আমার অন্য কোথাও এপয়েন্টমেন্ট আছে ? সকাল প্রায় সাড়ে নয়টা বাজে মোবাইলে দেখলাম। মোবাইল সাইলেন্ট ছিলো বলে কোনও ফোনের শব্দই পাইনি। রেজার বেশ কিছু কল, এসএমএস, শবনমের কলও। এতো সকালে তো শবনম আমাকে কল করে না বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া। রেজা কী ওকে কিছু জানালো? কোনো একদিন রেজাই আমাকে প্রসঙ্গক্রমে বলেছিলো এদেশে নারী এবং শিশুদের আইনগত সুবিধা স্পেশাল ভাবে দেয়া হয়, মেয়েদের সচরাচর কেউ ডিস্টার্ব করে না আর এক্ষেত্রে আইনের সুবিধা তারাই বেশি পাই। গতকাল রাতে ঠিক সুবিধার কথা বলেই আমি ওকে নিবৃত্ত করেছিলাম আমাকে বাঁধা দিতে। নিশ্চয়ই ভয় পেয়েছে। যেখানে সাহস দেখাবার প্রয়োজন সেখানে কিছু পারে না, ভুল জায়গায় যায় পুরুষগিরি দেখাতে। গাড়ি চালাতে চালাতে নিনো জানতে চায় -



কী বাসা থেকে বুঝি তোমাকে খুব খোঁজাখুঁজি হচ্ছে ?



আমি হাসি। সে হাসিতে কী থাকে সেটা নিনোই দেখতে পায় বোধ হয়। এখানে আমার আমি ছাড়া আর কেউ থাকে না। তবে আমি আমার হাসব্যান্ডের ডিপেন্ডডেন্ড ভিসায় এসেছি। কোনও একটা বারের সামনে পার্ক করবে? একটু ফ্রেশ হওয়া দরকার। আমি মিনিট দশেকের মাঝে ফ্রেশ হয়ে আমার আর নিনোর জন্য কাপুচিনো আর কর্নেত্তো নিয়ে বের হই বার থেকে। বাঁচোয়া যে নিনো আমি ফেরার পর রেজার ব্যাপারে তেমন কিছু জানতে চায়নি।



কর্নেত্তো খেতে খেতে নিনো জানায় - হুম আমি নোটিশ করেছি এখানে এশিয়ান মেয়েরা বেশীরভাগই তাদের স্বামী কিংবা স্বামীর পরিবারের আরও লোকদের নিয়ে একসাথে থাকে। আমি কিছু ইন্ডিয়ান, শ্রীলঙ্কান ফ্যামিলি চিনি। আর বাঙালি বলতে তোমাকে। ও নিঃশব্দে হাসে। ওর গালের খোঁচাখোঁচা দাঁড়িগুলো দেখতে বেশ, ইচ্ছে করে একটু ছুঁয়ে দেই। বিষণ্ণ নীল চোখের যে ছেলেটিকে প্রায়ই রাতে দেখি অন্ধকারে বারান্দায় বসে থাকে, একা একা,এখন ঐ ছেলেটিই আমার সামনে। আমি বাসায় ফিরলে কি কি হতে পারে কিংবা রেজা আজ সকালে কাজে গিয়েছে কিনা জানিও না। ওর লাস্ট কল এসেছিলো সকাল সাতটা পঞ্চাশে। যা কিছু হোক, হু কেয়ারস টাইপের একটা মুড আনতে চাচ্ছিলাম। এখন সোজা সান পাওলোতে যাবো তবে শবনমের ওখানে না। আমার ইতালিয়ান ফ্রেন্ড সোনিয়াকে কল দিবো, তারপর ওর বয় ফ্রেন্ড জর্জোর সাথে ব্লক বাস্টারে গিয়ে দেখা করবো, যদি ওর সময় হয়। তাই আমি নিনোকে বলি, সম্ভব হলে সান পাওলোর রাস্তা দিয়ে যেও, আমি ওখানে নেমে যাবো। একটু ব্লক বাস্টারে কাজ আছে।



- মুভি নিবে নাকি ?



- নাহ্‌ এক ফ্রেন্ড আছে ওখানে। দেখি জবের ব্যাপারে কথা বলবো।



- নুহা, আমার কেন যেন তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে, তুমি আর এ দেশে থাকবে না। চলে যাবে দূরে কোথাও।



ওর কথাটা শুনে আমার ভেতরটা কেঁপে ওঠে। সত্যিই কী আমার মাঝে বিদায়ী কোনও ছাপ লেগে আছে? আমি কী মনের সঙ্গোপনে কখনো ভেবেছি এ দেশ থেকে রেজাকে ছেড়ে চলে যাবো? যাবো নাই বা কেন, এখানে থাকার মতো নিজেকে তেমন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ কেউ মনে হচ্ছে না। যে জায়গা, যে মানুষটিকে ছেড়ে যেতেই হবে একদিন শুধু শুধু আর দুঃখ বাড়িয়ে লাভ কী! এভাবে পড়ে পড়ে মার খাবার চেয়ে সংগ্রাম করে বাঁচাটা আরও বেশি সম্মানের। ছেড়ে যাবার কথা ভাবছ কেন নুহা, রেজা যেমন তেমনটা মেনে নিয়েই কেন থাকছ না, তোমার মা না বলে, মেয়েদের জিদ মাটি করে তারপর সংসার করতে হয় ! হাহাহহাহাহা! উফ নুহা তুমি আবার এসেছ আমাকে জ্বালাতে !



- তুমি যে অনেক কনফিউজড এখনো, না জ্বালালে কী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বোকা মেয়ে !



সান পাওলোর কাছাকাছি প্রায় চলে এসেছি। ব্লক বাস্টারের একটু সামনেই শবনমের বাসা। এখন বেশ কয়েকটা বাঙালি বাসা আছে, আর পরিচিত অনেক লোকও আছে। ব্লক বাস্টারের কাছেই একটা বাচ্চাদের পার্ক আছে, নিনোকে আমি গাড়ি ওখানেই রাখতে বলি। সোনিয়াকে ফোনে সহজেই পেয়ে যাই আজ ওর ছুটি বলে। ও আমার গলার আওয়াজ শুনে চিন্তিত হয়। আমি সংক্ষেপে ওকে জানাই আমার জবের কথা, কিছু মানসিক সংকটের কথা। ও আমাকে বলে জর্জোর সাথে দেখা করতে, ও জানিয়ে দেবে এখুনি ওকে ফোন করে এবং সামনের সপ্তাহে ওর ছুটির দিনে আমার সাথে দেখা করবে বলে শিডিউল ঠিক করে নেয়।



আমি নিনোর দিকে তাকাই, বিদায় নেয়া দরকার কিংবা ওকে বিদায় দেয়া দরকার। গতকাল রাত এক অর্থে বিভীষিকাময় একটা রাত হলেও কেন যেন তার তীব্রতা আমি টের পাচ্ছিলাম না। হয়তো খুব বাজে একটা মুহূর্তে নিনোর আগমনের কারণে এবং এর পরের সময়গুলো যেন ঘোরের মাঝেই দ্রুত কেটে গেলো। আমার সাথে সাথে নিনোও গাড়ি থেকে নামলো। আমি জিজ্ঞাসু চোখে তাকাতেই বললো - আজ তো সাপ্তাহিক ছুটির দিন, রবিবার। বাস আসতে দেরী হবে। আমি তোমাকে বাসার কাছের সুপারশপে নামিয়ে দিবো, ওখান থেকে হেঁটে হেঁটে যেও। যদিও তোমাকে বাসায় নামায় দিতে আমার সমস্যা নেই কিন্তু তোমার সমস্যা হতে পারে। ওর চেহারায় অভিব্যক্তি এই মুহূর্তে না থাকলেও গলার আন্তরিকতাটুকু গোপন থাকে না। আমি ব্যাগ থেকে চিরুনি বের করে চুলটা গাড়ি থেকে নামার আগেই আঁচড়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু ব্লক বাস্টারে গিয়ে দেখি জর্জো আসেনি, ওর ডিউটি বিকেলে। উফফ্‌ ! সোনিয়াকে ফোন করে জানাবার আগেই সোনিয়ার ফোন এলো, জানালো- বিকেলে আসলে ওকে পাওয়া যাবে। তবে আমি বেবি সিটিং এর কাজ করতে চাইলে ও খুঁজে দেখবে। আমি ফোনে ওকে বিদায় জানালাম। নিনো দেখলাম দোকানে ঘুরে ঘুরে মুভির কালেকশন দেখছে। ওকে বললাম- বিকেলে আসতে হবে। এখন আপাতত আমার এখানে কাজ নেই। বাসার দিকে যাবার উদ্দেশ্যে নিনোর গাড়িতে উঠলাম আবার কিংবা শেষবারের মতো। Audi গাড়ি আমার বিশেষ পছন্দের, রেজার কেনার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ওর কেনা হয়ে ওঠেনি। নিনোর গাড়িটা অ্যাশ কালারের, খুব সুন্দর! সান পাওলো থেকে আমার বাসার সামনের সুপারশপে আসতে পাঁচ মিনিটও লাগলো না। আমি বাস স্টপেজের কাছে নেমে গেলাম নিনোকে বিদায় জানিয়ে। যাবার আগে ও জানালো, আমাদের চার তলার যে ফ্ল্যাটে স্যাম আর তার স্ত্রী থাকতো, ওরা ফ্ল্যাটটা সেল করে দিচ্ছে। সামনের মাসে নিনো আর তার বাবা সেখানে উঠবে। জানা গেলো নিনো এখানে একা থাকে না, ওর বাবাও আছে। আমি ধীর পায়ে বাসার উদ্দেশ্যে হাঁটতে থাকি। এখানকার রাস্তাটা ভেজা ভেজা লাগছে, তার মানে সকালে এখানেও বৃষ্টি হয়েছিলো।



চলবে ...





মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:০২

আহসানের ব্লগ বলেছেন: Bah :-)

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৫৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০২ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:০৫

মামুন রশিদ বলেছেন: নুহা, খুব মিষ্টি নাম । :D B-)


০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: জি অয় B-)

৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৯

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: আহারে , বেচারী :(

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তোমরা এমন ফাঁকিবাজি মন্তব্য করো, দিলে দুঃখ পাই :||

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: একটানে পড়ে ফেললাম। এ অংশ খুব আকর্ষণীয়। সময় পেলে এর আগের অংশগুলোও পড়ে ফেলবো।

চমৎকার।

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভালো থাকবেন

৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:২৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার এগুচ্ছে।

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:০০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান ভাই

৬| ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৫

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: বাহ চমৎকার । :)

নাম দেখে ভেবেছিলাম কোন সাইন্স ফিকশান গল্প পড়তে যাচ্ছি । হা হা হা ...

০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নুহার নাম আগে রু দিয়েছিলাম। কিন্তু একজন রিকোয়েস্ট করলো তার সৃষ্ট এক চরিত্রের নাম রু। তাই বদলে দিলাম !

শুভেচ্ছা রইলো

৭| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
পড়ছি আর ভুলছি ৷

আনুমানিক কত পর্ব হতে পারে ? মানে কিঞ্চিৎ কোন ধারণা থাকলো ৷ একসাথে পড়ার ইচ্ছে ৷ গতি আসুক সাথে অনেক চরিত্র হয়ে যাক মহাউপাখ্যান ৷

মঙ্গলার্থে.......

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:০১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমি নিজেও ঠিক জানি না কতো পর্ব হতে পারে। আলসেমিতে না ধরলে এতদিনে শেষ হয়ে যেতো কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে একবার এই নুহা লিখতে বসলে কলম চলতেই থাকে। সমস্যা নেই। আপনার সময় থাকলে আপনি পরে না হয় একবারেই পড়বেন ।

শুভকামনা রইলো আপনার জন্যও।

৮| ২০ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

উমার বলেছেন: আসলে এই ধরনের স্বামী আর ধর্ষকের মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিল । এই স্বামীগুলো সমাজের রশি দিয়ে আটকিয়ে মেয়েদের ধর্ষণ করছে । এরা মেয়েদের কোন অনুভূতির মূল্য দেয় না । ধর্ষক ধর্ষণ করলে মেয়েরা তাও চিৎকার করতে পারে , এক্ষেত্রে তাও পারে না । নুহাদের প্রতি সমবেদনা । মুগ্ধপাঠ.................

২১ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ। মানসিক নিপীড়ন যদি শারীরিক নিপীড়নে পৌঁছায় বেচে থাকাটা অনেক সংকটময় হয়ে যায় নিঃসন্দেহে।

৯| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৪২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বাসার দিকে যাবার উদ্দেশ্যে নিনোর গাড়িতে উঠলাম আবার কিংবা শেষবারের মতো

নুহা এই কথা বলল কেন? এর আগপর্যন্ত নিনোর যা আচরণ ছিল তাতে তো আরও উৎসাহী হবার কথা। ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে দুজনের মাঝে শারীরিক সম্পর্কের কোন উৎসাহ দেখা যায় নাই। ক্যাজুয়াল বন্ধুর সাথে ঘুরাঘুরির মত ছিল ব্যাপারটা। নুহা এবং রেজাকে (কারণ রেজা তো এইটা জানে না, সে সন্দেহ করবে) কিভাবে এটা প্রভাবিত করে সেটা দেখার বিষয়।

গত দশটা পর্ব এভাবে পেলাম-

পর্ব১৪- সংসারের টক-ঝাল-মিষ্টি কথোপকথন।
পর্ব১৫- নুহার জব করতে চাওয়া, নিনো।
পর্ব১৬- স্মৃতিকাতরতা, মনোলগ, লিয়ানার এন্ট্রি।
পর্ব১৭- লিয়ানা-রেজার সম্পর্ক ধরা পড়ে যাওয়া।
পর্ব১৮- নুহা এবং নুহার মনোলোগ, রেজার হাতেনাতে ধরা, ঝগড়া, আলাদা শোয়া।
পর্ব১৯- মানসিক দ্বন্দ্ব, শারীরিক চাহিদার আলোচনা, নিনো।
পর্ব২০- নুহা-নুহা মনোলগ, চাকরির যোগাড়যন্ত্রের চেষ্টা।
পর্ব২১- মনোলগ, নিনোর প্রথম মঞ্চে প্রবেশ।
পর্ব২২- রেজার বাড়িভাড়া দেওয়া।
পর্ব২৩- রেজার সাথে ঝগড়া, ধর্ষণ এবং নিনোর সাথে বেরিয়ে যাওয়া প্লাস মনোলগ।
পর্ব২৪- নিনোর চরিত্র-ডিটেইলস, নুহার ভাল লাগা ঘনীভূত, বাসায় ফেরা।

এইখানে বোঝা যায় প্রথম দিকে কাহিনিতে কিছুটা স্থবিরতা এসেছিল, বারবার ঘুরেফিরে মূল কিছু জিনিস-ই এসেছে; কিন্তু ১৭, ১৮, ২২, ২৩ এই কয়টা পর্ব স্পিড অনেকটাই ফিরিয়ে এনেছে।

পরের পর্বে এই গতি এবং নতুন আলোয় সম্পর্কটাকে পর্যবেক্ষণ করার প্রচেষ্টা- দুটোই অক্ষুণ্ণ থাকবে আশা করি। ভাল লেগেছে নুহা-নিনোর ইন্টারএকশন। নিনোকে বেশি নিখুঁত মনে হচ্ছে, সামনে পালটায় কিনা দেখা যাক।

শুভরাত্রি।

২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:২০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনি এতো সুন্দর ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন নুহার পর্ব গুলোকে, সত্যিই ভালো লেগেছে। আমি লিখে গেছি ঠিকই, ওরকম ভাবে ইভালুয়েট করিনি যা আপনি পয়েন্ট আকারে করলেন।

এখন অবসর আছে কিন্তু লিখতে ইচ্ছে করে না। দেখি আবার নুহার মাঝে ডুবে যেতে হবে।

আপনিও ভালো থাকবেন।

১০| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৬

বোকামানুষ বলেছেন: এই পর্বটা অনেক ভাল লেগেছে নুহা আর নিনোর সম্পর্কের এগিয়ে যাওয়া

সেই সাথে সুসান ভেগার গান উনার গান আমার অনেক পছন্দ বিশেষ করে গানের কথা তবে মজার ব্যাপার হল ইংরেজি গানের লিরিকস আমার মনে থাকে না :( এইটাও ছিল না সুসান ভেগার নাম দেখে খুঁজে দেখি আমার প্রিয় Language গানের লিরিকস( উনার নাম কি সুসান নাকি সুযান কারণ সবখানেSuzanne Vega লেখা থাকে )

আমার পছন্দের গানের অংশ ছিল

I won't use words again
They don't mean what I meant
They don't say what I said

তবে এই পর্বটা পড়ে গল্পে লিখা অংশটুকুও প্রিয় তালিকায় যোগ হয়েছে :D


I'd like to meet you
In a timeless, placeless place
Somewhere out of context
And beyond all consequences

২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ইংরেজি গানের সাথে আমার সখ্যতা নেই বললেই চলে। লিরিকস টা ভালো লেগেছে আর নামটা সুসান ভেগাই তো দেখেছিলাম ! আমার প্রিয় অংশ --

I'd like to meet you
In a timeless, placeless place
Somewhere out of context
And beyond all consequences

১১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:২৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
//গানের আবার ইংরেজি ইতালিয়ান কী //

-দারুণ!

আশ্চর্য হয়ে দেখলাম যে, এপর্বে মন্তব্য দেওয়া হয় নি। হয়তো দিয়েছি, কোন অজানা কারণে সেটি সেইভ হয় নি।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: দেরি হয়ে গেল উত্তর দিতে। মাঝে মাঝে ব্লগের মাথা খারাপ হয়ে যায়, লগিন করে কমেন্ট করতে গেলে দেখা যায় আমি নাকি লগিন নাই!!!

শুভকামনা রইল ভাইয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.