নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের কোথাও একটি ছাপ রেখে যেতে চাই

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময়

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুবুনের ডায়েরি

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২



১।

এক তারিখে আমার স্কুলে ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু তার তিন দিন আগেই আমার মাথাটা অপ্রত্যাশিতভাবে ফেটে গেলো। ঘটনা তেমন বিশেষ কিছুই না। বাসার সামনেই একটা খালি প্লট আছে। খালি জায়গাটা কাদের সেটা না জানলেও আমাদের খেলাধুলা থেমে থাকে না। আমি তেমন বেশি খেলতে যাই না বিশেষ করে দৌড়াদৌড়ি খেলা। কারণ আমি ভালো দৌড়াতে পারি না। আমার স্বাস্থ্য ভালো না। মহল্লার দুষ্টু আর বাজে ছেলেরা আমাকে ক্যাঙ্গারু বলে ডাকে। আগে আমি এসব কথাকে খুব গায়ে লাগাতাম কিন্তু এখন আগের চেয়ে একটু বুঝি বেশি। তাই এসব কথাকে পাত্তা দেয়ার কিছু দেখি না। ক্যাঙ্গারু বললেই তো আমি আর ক্যাঙ্গারু হয়ে যাচ্ছি না। যাই হোক সেদিন ছিল শুক্রবার। আমি বাসার সামনের ঐ খালি প্লটে আকাশ, নিপু,মুসা আর ফারহানের সাথে বসে ছিলাম। একটা বড় গাছ ছিল ঐ খালি জায়গাটায়। একদিন অনেক ঝড় বৃষ্টি হওয়াতে গাছটা কাঁত হয়ে পড়ে গিয়েছিলো। আমার শোবার রুমের জানালা দিয়েই সকালে আমি দেখেছিলাম মাঠে অনেক ভিড়। তারপর ভিড় একটু কমলে দেখলাম গাছটা পড়ে আছে। এরপর থেকে বাসার সামনের খালি ঐ জায়গাটায় গেলে আমরা ভেঙে পড়া গাছটার উপর উঠে বসতাম গল্প করার জন্য। আমার তেমন গল্প বলার কিছু নেই,আমি অন্যদের গল্প বেশি শুনি।

যেদিন আমার মাথা ফাটল সেদিন বুঝেছিলাম আকাশ আমার ভালো বন্ধু,সত্যিকারের ভালো বন্ধু। অবশ্য তার দুই দিন আগেও আকাশের সাথে আমার ঝগড়া হয়েছিলো। ক্রিকেট খেলতে গেলে সবসময় আমি টাকা বেশি দেই বল কেনার জন্য। আমি দেই বিশ টাকা আর আকাশ, নিপু, মুসা,শিহাব অরা একসাথে মিলিয়ে দেয় দশ টাকা। আমি শুধু একটাই শর্ত দিয়েছিলাম বল যদি মাঠের বাইরে পুকুরে গিয়ে পড়ে কিংবা দেয়ালের কোণা বা আরো দূরে গিয়ে বল হারায় সেটা ওদের খুঁজে আনতে হবে। কিন্তু সেদিন আকাশ আমার সাথে কথা দিয়ে কথা রাখেনি। টাকা তো দেয়ই নি,বলে এতো জোরে ব্যাট করেছিলো সেটা গিয়ে পড়েছে পুকুরে, কচুরিপানার উপরে। পড়ার পর আকাশ বলে যে ও বল আনতে পারবে না। যার বল সে নাকি আনবে। আমার খুব মেজাজ খারাপ হয়েছিলো। ওরা তো ভালো মতই জানে আমি এতো উঁচু দেয়াল টপকে পুকুরের সামনে যেতে পারবো না আর কচুরিপানা ঘেঁটে বলও খুঁজতে পারবো না। তারচেয়েও বড় ভয়ের কথা আমাদের বাসার কাছাকাছি একটা কবরস্থান আছে পুকুরের কাছে। শুনেছি ওখান থেকে মাঝে মাঝে নাকি লাশ ভেসে আসে। শিহাব আমাকে বলেছিল ছাদে দাঁড়িয়ে গল্প করার সময়। আমাদের বিল্ডিং এর ছাদ থেকে কবরস্থান ফকাফকা দেখা যায়। আম্মুকে যখন বলেছি এই ঘটনা আম্মু বলেছে -

আরে বোকার মতো এসব কে বলেছে শুনি। কবরস্থানে অনেক শেয়াল ,কুকুর ঘোরে। হয়তো কোনো ফাঁকে কবর খুদে মৃত মানুষের হাড়গোড় টেনে বের করেছে। সেটাই হয়তো পুকুরে পড়েছে।

আম্মু যত যাইই বলুক পুকুরে এসব ভাসে কিনা কে জানে, মুসাও আমাকে বলেছে কিছু খারাপ লোক আছে তারা কবর থেকে নাকি মৃত মানুষের গায়ের কাফন চুরি করে বিক্রি করে দেয়। যাই হোক যে কথা বলছিলাম আকাশ সেদিন ত্যাড়ামি করে আমার বল এনে দেয়নি। আমার খুব রাগ লেগেছিল। টাকাও আমি দিবো আবার আমাকেই বল আনতে দেয়াল টপকাতে হবে ভেবে রাগ করে আমি আমার ব্যাট নিয়ে বাসায় চলে এসেছিলাম। পরে বারান্দা থেকে দেখলাম বিকালে সেই বল দিয়েই ওরা খেলছে। লাল কস্টেপ দিয়ে বলটা প্যাঁচানো ছিল। আমি দেখেই চিনেছি আমার বল ওটা। ওখানে আকাশও ছিল। মাঝে মাঝে আকাশ কলেজে পড়া বড় ভাইদের দলেও খেলে। ও বোলার হলেও তেমন বেশি উইকেট পায় না। তারপরেই আমি ঠিক করেছিলাম আমি আর আকাশের সাথে কথা বলবো না। কিন্তু যেদিন আমার মাথাটা ফাটলো সেদিন আকাশই আমার জন্য অনেক দৌড়ঝাঁপ করেছিলো।

মাথা ফাটার ফিলিংসটা আমার মাঝে একই সাথে ভয়, দুঃখ আর অবাক ভাব এনে দিয়েছিলো। আমি সিনেমায় বা টিভিতে দেখেছি মানুষের মাথা ফেটে যায়, গলগল করে রক্ত বের হয়, আমার বড় মামার মুখেও শুনেছি তার ছোটবেলায় তারও মাথা ফেটে গিয়েছিলো, তার হাতে সাইকেলের চেন লেগে কেটে গিয়ে সাদা চিকনাই বের হয়ে গিয়েছিলো, পায়ে সেলাই লেগেছিলো ফুটবল খেলতে গিয়ে ব্যথা পেয়ে কিন্তু তাই বলে আমার মাথা ফেটে গেছে এটা যেন আমার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না। আমার সাথে তো মুসা, শিহাব, নিপু ওরাও ছিলো ওদের কিছু হলো না আর আমার মাথাটাই ফেটে গেলো! আমার অনেক কষ্ট লেগেছিল সব খারাপ জিনিস কি শুধু আমার সাথেই হবে। আমার তিন দিন পর ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে আর আমারই এমন হলো। পরক্ষণেই মনে হলো আম্মু বাইরে যাওয়ার আগে বারবার বলে গিয়েছিলো আজকে বাইরে না খেলতে। কিন্তু আমি তো খেলতে যাইনি, বসে বসেই গল্পই করছিলাম। আম্মু যদি বাসায় ফিরে বকা দেয় বা মার লাগায়! আমার কেমন কান্না কান্না চলে আসছিলো। ততক্ষণে নিপু বলছিল

আরে দোস্ত কিছু হয় নাই, একটুখানি ঢিল লাগছে। একটু রক্ত বের হইলে কিছু হইব না।

আমার খালি মনে হচ্ছিলো আমার ঘাড় বেয়ে গরম কি যেন নামছে। এর আগে মনে হচ্ছিলো ধারালো কিছু দিয়ে আমার চামড়াটা কেটে দেয়া হয়েছে। একবার আমাকে নেইল কাটারের বদলে ব্লেড দিয়ে আমার দিদুন নখ কেটে দিয়েছিলো। তখন কচ্‌ করে আমার নখে ব্লেড দেবে গিয়ে রক্ত বের হয়েছিলো। ঐ ব্যথাটা এমন যেন মনে হচ্ছে চিকন চিকন করে আমার হাতের আঙুলের মাংস কেউ কেটে দিচ্ছে। দেখতে দেখতে আমার সবুজ গেঞ্জিটা রক্তে ভিজে লাল হয়ে গেলো। আমার খালি মনে হচ্ছিলো আমি বোধ হয় আজকেই মারা যাবো, এতো রক্ত বের হয়েছিলো। আমি বারবার মনে করার চেষ্টা করছিলাম আমার রক্তের গ্রুপ কি, আমার রক্ত লাগলে কে আমাকে রক্ত দিবে। এর মাঝেই মনে হলো আমাকে কেউ কোলে তুলে নিয়ে দৌড়াচ্ছে। তাকিয়ে দেখি আমার ফাইয়াজ মামা আর তার বন্ধুরা। অন্য সময় হলে আমি লজ্জা পেতাম আমাকে কোলে নেয়াতে। কারণ আমি এখন ক্লাস সেভেনে উঠবো, বড় হয়ে যাচ্ছি। হাত পা তরতরিয়ে বড় হচ্ছে। আমার আরও মনে হচ্ছিলো আমার স্মৃতিশক্তি মনে হয় চলে যাবে। ঐ যে সিনেমাতে যেমন দেখায়।আমার খুব ভয় ভয় লাগতে থাকলো। আমার নতুন কেনা হট হুইলসের গাড়ির সেট দিয়ে আমার ছোট ভাইটা খেলবে আর আমি স্মৃতি হারিয়ে বোকাদের মতো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো, শুন্যে হাতে নেড়ে কথা বলবো, আমার আম্মু-আব্বু কাউকে চিনবো না এসব ভেবে আমার খালি কান্না পাচ্ছিলো।

২।

আমি যদি সত্যি মারা যাই তবে কি আমার বিচার হবে? আচ্ছা, আমি কি ভালো মানুষ? আম্মু বলে আমি ভালো ছেলে। একবার আমি ফাইয়াজের সাথে অল্প ঝগড়া হবার পর ওর স্কুলের হোমওয়ার্কের খাতা চুরি করে বাইরে ফেলে দিয়েছিলাম যাতে করে ও টিচারের বকা খায়। টিচার ওকে বকেছিলোও, আর কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলো। ও যখন কান ধরে দাঁড়িয়েছিলো আমার তখন খারাপ লাগতে শুরু করে। আমি বাসায় এসে আম্মুকে বলি,

- "আচ্ছা, আমি যদি ইচ্ছা করে কারো ক্ষতি করি, তবে কি আমি খারাপ ছেলে?"

আম্মু বলেছিলো,

- "খারাপ কাজ করে যদি তোমার খারাপ লাগে, তবে তুমি এখনো খারাপ হওনি। ভালো ছেলেই আছো!"

নিজেকে ভালো ভাবতে আমার ভালো লাগে। আমি একটা ভালো ছেলে হতে চাই।

যাইহোক, আমাকে মামারা কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে। আমি চোখে অন্ধকার দেখছি। আমি কোনদিন মৃত্যু নিয়ে সেভাবে ভাবিনি। এই প্রথমবারের মত ভয় পাচ্ছিলাম। যদি আমি মরে যাই, আম্মু কি খুব কাঁদবে? দিদুন কি করবে? আর আব্বু? আব্বু কি করবে?

মরে গেলে নিশ্চয়ই আমারও বিচার হবে। আচ্ছা, আমি কি কোন ভালো কাজ করেছি জীবনে? খুব বেশি মনে পড়ছে না। দুষ্টুমি করেছি অনেক। চোখ বন্ধ অবস্থাতেই মনে করতে চেষ্টা করলাম। কি ভালো কাজ করেছি আমি?

ক্লাস থ্রি তে থাকতে একটা পিচ্চি বিড়ালের বাচ্চা ড্রেনে পড়ে গিয়েছিলো। কাল্লো পচা পানির ড্রেন। বাচ্চাটা মিউ মিউ করে চীৎকার করছিলো, অনেক কষ্ট পাচ্ছিলো। কিন্তু কেউ ওকে তুলে আনছিলো না। বরং কিছু ছেলে ওকে কাঠি দিয়ে খুচিয়ে আবার ড্রেনের দেয়ালের দিক থেকে ভেতরে ঠেলে দিচ্ছিলো। আমার খুব খারাপ লাগছিলো, কষ্ট পাচ্ছিলাম। আমি দৌড়ে দোকানদার চাচ্চুর কাছে গিয়ে একটা পলিথিনের ব্যাগ নিয়ে আসি। এরপর সেটাতে হাত পেঁচিয়ে বিড়ালের পিচ্চি বাচ্চাটাকে তুলে আনি। এরপর স্কুলের বাথরুমে গিয়ে বাচ্চাটাকে সাবান দিয়ে গোসল করাই। শ্যাম্পু খুঁজছিলাম, পাইনি! তবে গোসল করিয়ে ওকে সামনে ছেড়ে দিতেই ও মিউ মিউ করে আমার পায়ের দিকেই আসছিলো। আমি ওর চোখ দেখেছিলাম, কী ভীষন মায়া ভরা চোখ! ও কি আমাকে থ্যাঙ্কস জানাচ্ছিলো ওর চোখের আর অজানা মিউ মিউ ভাষায়? সেই থেকে ও আমার সাথেই আছে। ওর নাম ইটিক্স। ইটিক্সকে বাঁচানো কি ভালো কাজ বলা যাবে?

ওকে তুলে আনবার পর আমি লাইজু ম্যাডামকে জোর গলায় কাউকে বলতে শুনেছিলাম,

- "ওটা বুবুনই তুলেছে, হাত দিয়ে..."

আমার শুনতে খারাপ লাগছিলো, সবাই আমাকে কত নোংরা ভাবছিলো। কিন্তু এই বিল্লী বাচ্চাটার মিউ মিউ ডাক যে আমার আর কিছুতেই সহ্য হচ্ছিলো না!

আমি দিদুনের কাছ থেকে গল্প শুনেছিলাম একটা বুড়ি নাকি একটা কুকুরকে পানি খাইয়েছিলো অথবা সাহায্য করেছিলো দেখে উনি বেহেস্তে যাবেন। আর নাকি কোন ভালো কাজ করেন নি। আমিও অন্য কোনো ভালো কাজ করিনি। তবে এটাও তো তেমনই কাজ। আমি আর কোনো ভালো কাজ করেছি বলে মনে পড়ছে না। আমি মনে মনে ভাবলাম, আমি যদি বেঁচেই যাই, তবে অনেক অনেক ভালো কাজ করবো। যাতে অন্তত মৃত্যুর পরে বিচার হলে কি হবে সেটা নিয়ে ভাবতে না হয়... আমি কি সত্যি বাঁচবো?

আমার চোখ আরো অন্ধকার হয়ে এলো।

আবার জেগে উঠলাম। তবে চোখ খুলবার চেষ্টা করতেই দেখলাম চারদিক অন্ধকারের মতই, খুব আবছা আলো... কিছু দেখতে পাচ্ছি না সেভাবে। এর মাঝেই হুট করে আমি চিৎকারের মত শুনতে পেলাম,

- "জ্ঞান ফিরেছে! জ্ঞান ফিরেছে!!"

সেখানে আমি আম্মুর গলার আওয়াজও পেলাম। আমার এখন আর চোখ খুলে রাখতে ভালো লাগছে না। খুব ক্লান্ত লাগছে। আম্মুর কোলে মুখ লুকিয়ে ঘুমোতে ইচ্ছে করছে। আম্মু আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে, আমি চোখ বন্ধ রেখেও আম্মুর হাতের স্পর্শ টের পাচ্ছি। আম্মুর গায়ের গন্ধে আমার আবারো কান্না কান্না পাচ্ছে।

সমাপ্ত

নোটস -- ১ নাম্বার পার্টটা লিখে আমি আর লেখার আগ্রহ পাচ্ছিলাম না তবুও লেখাটা পোস্ট করেছিলাম। বলেছিলাম কেউ চাইলে লেখাটার বাকী অংশ লিখে সমাপ্ত করতে পারেন। তারপর ব্লগার ইনফেকটেড মাশরুম কমেন্ট করে কিছুটা লিখেছিলেন। তাকে ধন্যবাদ। আর সেখানে কিছুটা যোগ করে লেখাটা সমাপ্ত করলাম। ব্লগারদের পারস্পারিক ইন্টার‍্যাকশন বাড়ানোর জন্যও এটা একটা প্রয়াস ছিল। গল্পের বুবুনটা ছিল আমার ছেলে বাবুই। প্রথম অংশের ঘটনাটা তাকে নিয়েই ঘটেছিলো।

মন্তব্য ৬৮ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৬৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৯

রাজ বিদ বলেছেন: হায়,ক্রিকেট নিয়ে কত ঝগড়াঝাঁটি কত মন কষাকষি হয়ে গেল সে হিসেব আর করতে বসিনাই।
আর আপনি এই কাজটা ভাল করলেন না।এতদূর যখন লিখেই ফেললেন,.. পাঠকরা হতাশ হবে যে..

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ক্রিকেট নিয়ে অনেক মজার মজার ব্যাপার আমার আশেপাশেও ঘটেছে।

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

তার আর পর নেই… বলেছেন: ভাল লেগেছে ।আমি ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আপনার ছেলের কথা বলছেন ।পড়তে পড়তে ভাবছি ছেলের ডায়েরি আপনি পোস্টও করে দিলেন!
আমি কি চেষ্টা করতে পারি?

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ব্যস্ততার জন্য দেরি হলো উত্তর দিতে। একজন যেহেতু লিখে ফেলেছিল গল্পের বাকী অংশটা সেটাই পোস্টে যুক্ত করে দিলাম।

আপনি তো বরাবর কবিতাই লেখেন। এবার গল্প লিখেও চেষ্টা করতে পারেন। আশা করি আপনার ভালো লাগবে

৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫০

ইনফেকটেড মাশরুম বলেছেন: এটাকে আপনি কতদুর ভাবছিলেন? ছোটগল্প হলে বলবো কাহিনী শুরুই হয়নি, বুবুনের ক্যারেক্টার বলতে বলতেই ফুয়েল এম্পটি। আরো বড় কিছু ভাবলে ভুমিকা হিসেবে ঠিক আছে। আমি এটাকে টানতে পারি আরেকটা পর্ব, কমেন্টে এসে দিয়ে যাব। ১৫-২০ মিনিটে যা মাথায় আসে তাই...

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এটা নিয়ে তেমন করে ভাবিনি। লেখার একটা ফ্লো ছিল আর সেটা হুট করেই চলে গিয়েছিলো। জাস্ট শুরু করেছিলাম আর কি

৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩৮

ইনফেকটেড মাশরুম বলেছেন: আমি যদি সত্যি মারা যাই তবে কি আমার বিচার হবে? আচ্ছা, আমি কি ভালো মানুষ? আম্মু বলে আমি ভালো ছেলে। একবার আমি ফাইয়াজের সাথে অল্প ঝগড়া হবার পর ওর স্কুলের হোমওয়ার্কের খাতা চুরি করে বাইরে ফেলে দিয়েছিলাম যাতে করে ও টিচারের বকা খায়। টিচার ওকে বকেছিলোও, আর কান ধরে দাড় করিয়ে রেখেছিলো। ও যখন কান ধরে দাড়িয়েছিলো আমার তখন খারাপ আগতে শুরু করে। আমি বাসায় এসে আম্মুকে বলি,

- "আচ্ছা, আমি যদি ইচ্ছা করে কারো ক্ষতি করি, তবে কি আমি খারাপ ছেলে?"

আম্মু বলেছিলো,

- "খারাপ কাজ করে যদি তোমার খারাপ লাগে, তবে তুমি এখনো খারাপ হওনি। ভালো ছেলেই আছো!"

নিজেকে ভালো ভাবতে আমার ভালো লাগে। আমি একটা ভালো ছেলে হতে চাই।

যাইহোক, আমাকে মামারা কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে। আমি চোখে অন্ধকার দেখছি। আমি কোনদিন মৃত্যু নিয়ে সেভাবে ভাবিনি। এই প্রথমবারের মত ভয় পাচ্ছিলাম। যদি আমি মরে যাই, আম্মু কি খুব কাঁদবে? দিদুন কি করবে? আর আব্বু? আব্বু কি করবে?

মরে গেলে নিশ্চয়ই আমারও বিচার হবে। আচ্ছা, আমি কি কোন ভালো কাজ করেছি জীবনে? খুব বেশি মনে পরছেনা। দুস্টামী করেছি অনেক। চোখ বন্ধ অবস্থাতেই মনে করতে চেষ্টা করলাম। কি ভালো কাজ করেছি আমি?

ক্লাস থি তে থাকতে একটা পিচ্চি বিড়ালের বাচ্চা ড্রেনে পড়ে গিয়েছিলো। কাল্লো পচা পানির ড্রেন। বাচ্চাটা মিউ মিউ করে চীৎকার করছিলো, অনেক কষ্ট পাচ্ছিলো। কিন্তু কেউ ওকে তুলে আনছিলো না। বরং কিছু ছেলে ওকে কাঠি দিয়ে খুচিয়ে আবার ড্রেনের দেয়ালের দিক থেকে ভেতরে ঠেলে দিচ্ছিলো। আমার খুব খারাপ লাগছিলো, কষ্ট পাচ্ছিলাম। আমি দৌড়ে দোকানদার চাচ্চুর কাছে গিয়ে একটা পলিথিনের ব্যাগ নিয়ে আসি। এরপর সেটাতে হাত পেঁচিয়ে বিড়ালের পিচ্চি বাচ্চাটাকে তুলে আনি। এরপর স্কুলের বাথরুমে গিয়ে বাচ্চাটাকে সাবান দিয়ে গোসল করাই। শ্যাম্পু খুঁজছিলাম, পাইনি! তবে গোসল করিয়ে ওকে সামনে ছেড়ে দিতেই ও মিউ মিউ করে আমার পায়ের দিকেই আসছিলো। আমি ওর চোখ দেখেছিলাম, কী ভীষন মায়া ভরা চোখ! ও কি আমাকে থ্যাঙ্কস জানাচ্ছিলো ওর চোখের আর অজানা মিউ মিউ ভাষায়? সেই থেকে ও আমার সাথেই আছে। ওর নাম ইটিক্স। ইটিক্সকে বাঁচানো কি ভালো কাজ বলা যাবে?

ওকে তুলে আনবার পর আমি লাইজু ম্যাডামকে জোর গলায় কাউকে বলতে শুনেছিলাম,

- "ওটা বাবাই তুলেছে, হাত দিয়ে..."

আমার শুনতে খারাপ লাগছিলো, সবাই আমাকে কত নোংরা ভাবছিলো। কিন্তু এই বিল্লী বাচ্চাটার মিউ মিউ ডাক যে আমার আর কিছুতেই সহ্য হচ্ছিলো না!

আমি দিদুনের কাছ থেকে গল্প শুনেছিলাম একটা বুড়ি নাকি একটা কুকুরকে পানি খাইয়েছিলো অথবা সাহায্য করেছিলো দেখে উনি বেহেস্তে যাবেন। আর নাকি কোন ভালো কাজ করেন নি। আমিও অন্য কোন ভালো আজ করিনি। তবে এটাও তো তেমনই কাজ। আমি আর কোন ভালো কাজ করেছি বলে মনে পরছেনা। আমি মনে মনে ভাবলাম, আমি যদি বেঁচেই যাই, তবে অনেক অনেক ভালো কাজ করবো। যাতে অন্তত মৃত্যুর পরে বিচার হলে কি হবে সেটা নিয়ে ভাবতে না হয়... আমি কি সত্যি বাঁচবো?

আমার চোখ আরো অন্ধকার হয়ে এলো।

আবার জেগে উঠলাম। তবে চোখ খুলবার চেষ্টা করতেই দেখলাম চারদিক অন্ধকারের মতই, খুব আবছা আলো... কিছু দেখতে পাচ্ছি না সেভাবে। এর মাঝেই হুট করে আমি চীৎকারের মত শুনতে পেলাম,

- "জ্ঞান ফিরেছে! জ্ঞান ফিরেছে!!"

এ তো আম্মুরই গলা! আমাকে কেউ জড়িয়ে ধরলো। এটা আম্মুরই স্পর্শ, আমি জানি। আচ্ছা, আমি কি মরে গিয়েছি? দিদুন বলেছিলো মৃত্যু হলে নাকি সব অন্ধকার হয়ে যায়। আমারও তো সব অন্ধকার লাগছে। তবে এখানে আম্মু আছে। আর অন্যরাও নিশ্চয়ই আছে। মৃত্যুর পরের জীবনে কি সবাইকে সাথে পাওয়া যায়? আমি জানি না...

আমি আম্মুকে ধরে থেকেই বললাম,

- "আম্মু, আমি তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না কেন?"

(দ্বিতীয় পর্ব সমাপ্ত, পছন্দ হইলে পোস্ট দিয়েন। ইটিক্সের কাহিনী সত্যি, ক্লাস ফাইভের ছেলেটা আমিই ছিলাম। কাহিনী আরও ভয়াবহ ছিলো, আমি স্কুলের প্যানের ফুটার ভিতর থেকে পলিথিনে হাত পেঁচিয়ে তুলছিলাম। কুডন্ট রেসিস্ট মাইসেলফ... তৃতীয় পর্বে পিচ্চিটার সাময়িক অন্ধত্বের কাহিনী আগান, মা বাবার পরিস্থিতি, পিচ্চিটার মানসিক অবস্থা। কিভাবে এডজাস্ট করছে। না পারলে আমি আছি। আমার নিজের অন্ধত্বের ফার্স্ট হ্যান্ড অভিজ্ঞতা আছে।)

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধারাবাহিক কিছু লেখার ব্যাপারে আমার ভয়াবহ অলসতা আছে। তাই এটা আর বড় করলাম না। মাথায় খুব বড় আঘাত ছাড়াই ছোট একটা ঢিলে অন্ধত্বের ব্যাপারটা আনা মনে হচ্ছে অস্বাভাবিক দেখাবে।

পার্টিসিপেট করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৭

উল্টা দূরবীন বলেছেন: ভাল্লাগছে

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বাহ, ইনফেক্টেড মাশরুমের কলাবরেশন ভাল হয়েছে। কমেন্টে প্লাস। পরের পর্ব কেমন হয় দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

কিন্তু আপনি তো অলস হয়ে যাচ্ছেন, পাঠক নিয়ে লিখিয়ে নেয়ার মত অভ্যাস করলে লেখকেরা ভাত পাবে না :((

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পরের আর কোনো পর্ব লিখুম না। ইনফেক্টেড মাশরুমের কমেন্ট এ লেখা অংশটাই মূল পোস্টে যোগ করে দিলাম। আপনি তো জানেন ধারাবাহিক লিখতে গিয়া অতীতে নুহা, বর্তমানে নবনীতাও মারা গেছে!

অবশ্য একবার ভাবছিলাম আপনাকে দিয়া পরেরটা লেখায় নেই কিন্তু আপনি যেহেতু অনিয়িমত কিছুটা তাই আপনাকে আর কষ্ট করালাম না। বাচ্চাদের নিয়ে লেখাটা আমার কাছে ইজি মনে হয় কারণ আমার ঘরে একজন আছে যাকে আমি খুব ভালো ভাবে অব্জার্ভ করি।

৭| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ডায়রি পড়লাম ভাল লেগেছে
মাশরুমের লেখা ও ।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপা

৮| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৯

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: নষ্টালজিক হয়ে গেলাম লেখাটা পড়ে। ছোটোবেলায় এমন কতোই না স্মৃতি আছে। যা কখনো ভুলে যাওয়ার নয়।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমাদের বেশিরভাগের ছোটবেলাতেই অনেক মজার মজার স্মৃতি আছে যা নস্টালজিক করে

৯| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল লাগছিল পড়তে। এটাকে ডাইরি হিসেবেই নিতে ইচ্ছে করছে।
ক্লাস সেভেনের একটা ছেলে এতোটা ইম্ম্যাচিউর? এটা ঠিক যাচ্ছে না। ওকে বরং ফোর কিংবা ফাইভের ছেলে হিসেবে মেনে নেয়া যায়।
বাকিটাও লিখে ফেলুন। মাশরুমের কমেন্ট ভাল লাগল।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ক্লাস সেভেনের ছেলে বা সেভেনে উঠবে এমন অনেকেই সহজ সরল হতে পারে। আমার এক কাজিন আছে অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে, ও খুব মেধাবী। ওকে বিশেষ পছন্দ করার কারণ হচ্ছে ও খুব স্বচ্ছ আর শিশুমন আছে ওর মাঝে যে কারণে ওর সঙ্গটা খুব ভালো লাগে।
বুবুনের ডায়েরি হিসেবে আমি অনেক গুলো পার্ট লিখেছি এবং লিখতে খুব এঞ্জয় করেছি। এক সময় ওগুলো পোস্ট করবো।
ধন্যবাদ আপনাকে

১০| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৫

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ভাল লাগ ল লেখা । মাশরুমের কমেন্ট ভাল লেগেছে। হঠাৎ আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন কেন আপা ?

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অলসতা আর কি!

১১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২২

আহমেদ জী এস বলেছেন: অপর্ণা মম্ময় ,




সবটা মিলিয়ে একটা "টাচি" গল্প হয়েছে । ২য় অংশটা ১ম অংশটাকে সার্থক ভাবেই সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছে ।

দুই অংশের দুই লিখিয়েকেই সাধুবাদ , একটি নির্মল কিশোরের নিদোর্ষ ভাবনাগুলোকে নিষ্কলুষ করে গাঁথতে পেরেছেন বলে ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব ভালো লাগলো আপনার আন্তরিক মন্তব্যে।
ভালো থাকবেন

১২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


পাড়ার দুস্ট ছেলেরা নামটা কিন্তু সঠিক দিয়েছিলো, ক্যাংগারু!

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নামের খেতাবে সে তো আর সন্তুষ্ট হতে পারেনি!

১৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৯

জুন বলেছেন: আপনি শেষ অংশটুকু লেখার জন্য আহবান জানিয়েছিলেন । তার প্রতীক্ষায় ছিলাম অপর্না মম্ময় ।
ইনফেকটেড স্বার্থক ভাবে কাহিনীর যবনিকা টেনেছে । দুজনকেই ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা সকালের :)
+

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ আপু লেখাটা পড়ার জন্য

১৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হৃদয় ছোঁয়া গল্প।

ধন্যবাদ অপর্ণা মন্ময়।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

১৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৪

সায়ান তানভি বলেছেন: বেশ পরিমার্জিত ।ভালো লিখেছেন ।নিয়মিত লিখুন ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার ব্লগ ঘুরে দেখলাম। একজন গল্প লিখিয়েকে পাওয়া গেলো, ভালোই হলো

১৬| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪১

আরজু নাসরিন পনি বলেছেন:
খুব স্পর্শ করে গেল লেখাটা।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পনি

১৭| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০১

জেন রসি বলেছেন: আপনার ছেলেকে নিয়ে শুরু করেছিলেন তা বোঝা যাচ্ছে। তবে হঠাৎ করে আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন কেন? মাশরুম ভাইয়ের অংশটুকো পড়লাম। তবে কিছু ব্যাপার আরোপিত মনে হয়েছে। যেমন পরকাল নিয়ে ভাবনা। বাচ্চাদের মনে এ ভাবনা কিভাবে কাজ করবে সেটাও ভেবে দেখতে হবে। যদি সেটা ফিকশন না হয়ে থাকে। তাই দ্বিতীয় অংশটা কিছুটা বড়দের মত ভাবনা বলেই মনে হয়েছে। তবে আপনার এবং মাশরুম ভাইয়ের লেখার স্টাইল এবং চিন্তা ভাবনা আলাদা। তাই বলব সব মিলে চমৎকার একটা এক্সপেরিমেন্ট হলো। :)

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: জেন, বেশ কয়েক মাস ধরেই এমন হচ্ছে আমার।খুব আগ্রহ নিয়ে লিখতে শুরু করলাম কিন্তু মাঝপথেই থেমে যাচ্ছি। এ ধরণের অভ্যাস প্রশ্রয় দিলে যে বাড়ে সেটা দেখতে পাচ্ছি। উচিত ছিল ধরে বেঁধে লেখা শেষ করা। এরকম অনেক লেখা আমার আলোর মুখ দেখেনি।

পরকাল নিয়ে বাচ্চাদের মনে দাগ কাটার কারণ আছে। আমার কাজিনের শশুড় বাড়ির দিকের এক রিলেটিভ এর বাচ্চা বেহেস্ত দোজখ নিয়ে ভেবে খুব ছোট থেকেই টেন্সড ছিল। কোনটা পাপ আর কি করলে জান্নাত ঐ পিচ্চি খুব ভাবতো। এর পেছনে পারিবারিক ধর্মীয় বোধকেও যোগ করা যায়। এর প্রভাব বাচ্চাদের উপর খুব বেশি মাত্রায় পড়ে মনে হয়। কাউকে কষ্ট দিলে গুনাহ হবে, নামাজ পড়তে হবে বেহেস্ত পেতে হলে এবং যেহেতু মুসলিম হলে নামাজ পড়তে হয়। এগুলো পরিবার থেকেই আসে হয়ত।

ধন্যবাদ আপনাকে।

১৮| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৫

আবু শাকিল বলেছেন: অপর্ণা আপু গল্প পড়েই বোঝতে পারলাম গল্পের প্লট জানলার কাছ থেকে দাঁড়িয়ে দেখা অথবা আপনার ছেলের।
প্রথম অংশ খুব উপভোগ করলাম।কচি মনে যা জাগ্রত হয় এবং ঘটে সবই ঠিক আছে।
আপনার গল্পে ক্রিকেট নিয়ে যা লিখছেন।তা আমার বেলায় ঘটেছে।
বল কিনতে টাকা দেয়া,বল কুড়িয়ে আনা,মাথা ফাটানো।জীবে দয়া করা।
২য় অংশে আমার আপত্তি আছে-
যে বয়সের গল্প লিখছেন সে বয়সে আমার মনে মৃত্যুর চিন্তা আসে নাই।মৃত্যুর চেয়ে ভয় পেয়েছি বাবা-মায়ের মাইর,বকা অথবা ভূত টুতে।সেই বয়সে মৃত্যুটা মনে কাজ করে নাই।
তবে গল্পে যদি একটা ম্যাসেজ দেয়ার ইচ্ছে থাকে -
মৃত্যু আনা যেতে পারে।
জেন রসি ভাইয়ের মন্তব্যে সহমত।
২য় অংশ মাশরুম লিখছেন।মন্তব্য পড়ে বোঝতে পারলাম।গল্পের পরিপূর্ণ রূপ পেতে যদি মৃত্যু আনা হয়য় তাহলে
পুরো গল্প পড়ে একটা ম্যাসেজ পাওয়া যায়-
মন্দ কাজের শাস্তি হয় অথবা খারাপ কাজে পাপ হয়।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো শাকিল ভাই আপনার কমেন্ট পড়ে।

ভাল থাকবেন।

১৯| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩১

আমি তুমি আমরা বলেছেন: আমার আরও মনে হচ্ছিলো আমার স্মৃতিশক্তি মনে হয় চলে যাবে। ঐ যে সিনেমাতে যেমন দেখায়।আমার খুব ভয় ভয় লাগতে থাকলো। আমার নতুন কেনা হট হুইলসের গাড়ির সেট দিয়ে আমার ছোট ভাইটা খেলবে আর আমি স্মৃতি হারিয়ে বোকাদের মতো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো, শুন্যে হাতে নেড়ে কথা বলবো, আমার আম্মু-আব্বু কাউকে চিনবো না এসব ভেবে আমার খালি কান্না পাচ্ছিলো।

এই অংশটা পড়ে হঠাৎ কেন যেন হাসি পেল। গল্পে সপ্তম ভাল লাগা :)

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার হাসি পাইছে কিন্তু বাবুই বহুত কানছে! স্মৃতি হারাবার ভয়ে। আর আপনার কমেন্ট পড়ে আমারো এখন হাসি পাচ্ছে

২০| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



পুত্রের লেখা এইভাবে নিজ নামে চালিয়ে দিলেন ?

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হ বাবুই আইসা আপনেরে কইয়ে গেছিলো তো

২১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৫

আলোরিকা বলেছেন: বাচ্চাদের মনোজগৎ ,তাদের সারল্য , চিন্তা-ভাবনার ধরণ সব মিলে বুবুনের ডায়েরি ভালই লেগেছে । আপনার বাবুইয়ের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা :)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আলোরিকা।

২২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩

বিজন রয় বলেছেন: সম্ভবত আপনি লেখক।
খুব ভাল লাগল।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: জ্বি ভাই,লেখক হবার চেষ্টায় আছি। দোয়া করবেন।
আপনাকে শুভেচ্ছা।

২৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনবদ্য সরলতা ভরা লেখনী। আগের বিজন ভাইয়ের কমেন্ট থেকে জানলাম আপনি লেখিয়ে। কোন বই বেরিয়েছে কি ? সংগ্রহের ইচ্ছা।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: না একক কোনো বই নেই আমার

২৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫

প্রামানিক বলেছেন: হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গল্প। ধন্যবাদ

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ

২৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩

শুভ্রা হক বলেছেন: যৌথ লেখার এই উদ্যোগ ভালোই লাগলো আপু। চালিয়ে যান। শুভকামনা।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ শুভ্রা

২৬| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: বাহ! কি সুন্দর করে দু'জনে মিলে একটা গল্প বলে গেলেন! খুব ভালো লাগলো। সংযোজন প্রায় ত্রুটিহীন মনে হলো আমার কাছে।
অনেকের মন্তব্য ভালো লেগেছে, এবং আপনার উত্তরও। সেগুলোতে 'লাইক' দিয়ে গেলাম।
বুবুনের ডায়েরীতে আমারও ছেলেবেলার কিছু সাযুজ্য প্রতিফলিত হয়েছে বলে মনে হলো।
মা ও ছেলের নৈকট্য ও সাহচর্য উভয়ের জীবনে ঋদ্ধি আনুক।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ব্যস্ততার মাঝেও সময় দিচ্ছেন ব্লগে, এজন্য।
ভালো থাকুন।

২৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৪

মোঃ আব্দুল্লাহ আল গালিব বলেছেন:

অনেক ভালোলাগা। ছোটতে ছোটবড় যেরকমই জখম হতোনা কেন বাসাতে জানানো সমীচিন মনে করতাম না। যেবার মাথায় ৪ সেলাই দিল সেবারতো বাসাতেই আর ফিরবোনা ভাবছিলাম।।

নবনীতা কি আর দিনলিপি লেখে না? বিপাশার কি বিয়ে হয়েছিলো পরে?

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ছোট বেলায় আমাদের মা-বাবার কাছে বকা খেয়ে খেয়ে এমন অভ্যাস হয়ে যায় অনেকেরই যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে অনেকেই সেটা বলতে চাই না। ৪ সেলাই লেগেছিল বেশি দুষ্টুমি করতেন নাকি? হাহহা

সত্যিই খুব ভালো লাগলো জেনে নবনীতার ডায়েরি পড়তেন। বিপাশা, নবনীতা সবাইকে নিয়ে লেখার সময়টা কেন যে করে উঠতে পারছি না! অলসতা।

ভালো থাকবেন গালিব।

২৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৩

মোঃ আব্দুল্লাহ আল গালিব বলেছেন: নুহাকেও জানবো, আজ রাতেই।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সেটাই তো দেখলাম যে পড়েছেন

২৯| ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৮

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: বাবুই মিয়ার লেখায় যেন একটা কিছু হাতে রেখে যেন গল্প করছে এমন মনে হলো। মনে হলো হাতে কি আছে চুপটি করে দেখে ফেলি, কিন্তু সে দেখতে দিবে না। সে শুধু চোখের সামনে ঘুরিয়েই লুকিয়ে ফেলবে, একটা রহস্যকে বড় হতে দেবে। যখন রহস্যটা খুলতে শুরু করলো তখন মনে হলো রহস্যটা না খুললেই ভালো লাগতো!

সাবলীল বর্ননা!

২৯ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভালো লাগলো সাবলীল কমেন্টে।
আমার বাবুই পাখিরও ব্লগ আছে। সময় পেলে দেখতে পারেন।
ধন্যবাদ

৩০| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল... অনেক নস্টালজিক হলাম। তবে, আমার ছিল বুবুনের বিপরীত চিন্তা, আমি কি খুব বেশী খারাপ ছেলে? :P

সুন্দর গল্পে ভালোলাগা রইল, ভালো থাকুন সবসময়, ভালো থাকুক বুবুন। শুভকামনা রইবে।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনিও লিখে ফেলুন আপনার চিন্তাগুলো।
আপনিও ভালো থাকুন

৩১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:০২

কালীদাস বলেছেন: আচ্ছা। নোট পড়ে বুঝতে পারলাম গল্পের মোজেজা। ভাল লেগেছে বুঝতে পারার পর, সুন্দর :)

কত বড় হয়েছে এখন আপনার ছেলে? কেমন আছে? কিসে পড়ে?

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:১৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ও ক্লাস এইটে পড়ে। এবার জেএসসি পরীক্ষা দিবে। একটা সময় ওর আবদারে গল্প লিখতে হতো, ব্লগে একাউন্ট করেও দিতে হয়েছিল।

৩২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:২২

কালীদাস বলেছেন: আচ্ছা। লিংক দেখলাম উপরের কমেন্টটাতে আপনি বলার পর। এখন ব্লগিং করে না কেন? ব্লগের পরিবেশ এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল, এটলিস্ট নোংরামি তেমন চোখে পড়ছে না এখনও।

মা-ছেলের একসাথে ব্লগিং দেখে ভাল লাগল :)

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:২৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ও এখন ডায়েরি কম লেখে। লিখলেও লুকায় রাখে। অবশ্য দুখ সুখ বাড়লেই লেখে। আর সেই ডায়েরি পড়তে চাইলে তার প্রাইভেসি কমে যায়,তাই ধরি না। আর টাইপ সেই আমাকেই করতে হবে, ও ডায়েরি লিখলেও। ওর ব্লগ আইডি রিসেট করাতে হবে। ইন্তেকাল করছে ব্লগ যখন হ্যাকারদের কবলে পড়েছিল।

৩৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:৩১

কালীদাস বলেছেন: ব্লগ হ্যাক হয়েছিল নাকি? কবে? কিভাবে?

প্রাইভেসিকে সম্মান করছেন এটা খুব ভাল একটা জিনিষ।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হয়েছিল তো। ম্যাক্সিমাম আইডি রিসেট করাতে হইছে। আমিও রিসেট করায়ে নতুন করে ব্লগিং শুরু করছি।

৩৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:৩৫

কালীদাস বলেছেন: আপনি কি মেইলে ভেরিফিকেশনের কথা বলছেন? গত বছর মনে হয় একবার লগইন করার সময় পাসওয়ার্ড চেন্জ করতে হয়েছিল আমার মেইলে ভেরিফিকেশনসহ। ঐটা? ঐটাই কি হ্যাকিংএর জন্য করতে হয়েছিল?

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:৪০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কারো কারো পাস ওয়ার্ড রিসেট ছাড়াই ব্লগে ঢুকতে পেরেছিল। আর আমি যে সময় গ্যাপে ছিলাম তখন বোধ হয়েছিল। আমার আবার আইডি, পাস ওয়ার্ড ভোলার রোগ ও আছে। ব্লগ থেকে আমার আইডি দুইবার ঠিক করে দিয়েছে। বেশি সতর্কতার জন্য আইডি পাস কোথাও সেইভ করি না আর অব্যবহারে ভুলে যাই। হ্যাক সম্ভবত দুই বার হয়েছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.