নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী-র ব্লগ

একলা চলো রে

ভালো নাম মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী।কল্পবিজ্ঞান, সাইকোলজিক্যাল গল্প এবং ফ্যান্টাসি নিয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। এসব নিয়েই লিখছি অল্পবিস্তর।

একলা চলো রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: অসমাপ্ত ডায়েরি (পর্ব-২)

০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১৮

পর্ব-১

জিব্রান ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ ভাবল। তারপর বলল, "এমন ঘটনা কি আপনার সাথে

এরপর আর হয়েছে?"



"হ্যা হয়েছে।"



"কখন?"



"অনেকবারই হয়েছে। আরেকটার কথা বলি। একবার স্বপ্ন দেখি, আমার এক শিক্ষক

রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছেন। তার কোয়ার্টজ ঘডির রিস্টওয়াচের ডায়াল ভেঙে

চুরচুর হয়ে গেছে। ঘুম থেকে উঠে দেখি, আমার হাতে একটা ঘড়ি। ডায়াল ভাঙা।

সেখানে সময় দেখাচ্ছে, ৫:১৭ । এর কিছুদিন পর সত্যিই আমার সেই শিক্ষক রোড

এক্সিডেন্টে মারা যান। তার হাতঘড়িতে তখনও সময় দেখাচ্ছে- ৫:১৭।"



"স্ট্রেঞ্জ!"



জিব্রান কিছুক্ষণ চুপচাপ ভাবল। তারপর বলল,



"মিস বলাকা, আপনার স্বপ্নগুলো আপাতদৃষ্টিতে অদ্ভূত মনে হলেও এর ব্যাখ্যা আছে।"



"তাই?"



"হ্যা, আমি বলছি। শুনুন। আপনার যেটা হয়েছে সেটা হল- স্লিপ এনশাইটি ডিসঅর্ডার। অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা থেকে আপনি আবোল-তাবোল স্বপ্ন দেখছেন। আপনার অবচেতন চাইছে আপনি স্বপ্নগুলো বিশ্বাস করুন। আপনি করছেনও। আপনার সচেতন মনের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য সে আপনাকে দিয়ে কিছু কাজ করাচ্ছে। আমার ধারণা, আপনার মামার আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট ছিল, কিংবা আপনাদের পরিবারের কেউ শ্বাসকষ্টে মারা গিয়েছেন। আপনার অবচেতন মনের কাছে সে তথ্য ছিল।

আপনার মামা শ্বাসকষ্টে মারা যাবেন, এটা অবচেতন মন ধারণা করে নিয়েছিল। সম্ভবত কোন এক অলস সময়ে আপনাকে দিয়ে সে ডেথ সার্টিফিকেটটা টাইপ করিয়ে নিয়েছে কম্পিউটারে...আপনার মামার মৃত্যুর পরেই! কিন্তু আপনাকে সে বিশ্বাস করিয়েছে যে ডেথ সার্টিফিকেটটা আপনার হাতে এসেছে একবছর আগে।"



"আমি কিভাবে ডেথ সার্টিফিকেট টাইপ করব? আমি তো ডাক্তার নই!"



"আগেই বললাম, আপনি টাইপ করেছেন মামার মৃত্যুর পরে, আগে নয়। মামার ডেথ সার্টিফিকেটটা দেখেই আপনি টাইপ করেছেন।"



"আপনি যেটা বলছেন, সেটা কি আপনি নিজে বিশ্বাস করছেন?"

"বিশ্বাস-অবিশ্বাস করার চেষ্টাই করছি না আমি। আপনার সাথে কি ঘটেছে সেটার একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা বের করার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতের কোন বস্তু বর্তমানে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। কাজেই এটাই একমাত্র ব্যাখ্যা। এই ব্যখ্যাটা ধরে নিলে কিন্তু আমরা দ্বিতীয় ঘটনাটাও ব্যাখ্যা করতে পারি। আপনার শিক্ষকরে মৃত্যুর পরেই আপনি হুবহু এক রকমের দেখতে আরেকটা ঘড়ি কিনে শিক্ষকের ঘড়ির সময়ের সাথে মিলিয়ে নিয়েছেন। কাজটা আপনাকে দিয়ে করিয়েছে আপনার অবচেতন মন। তাই আপনার মনে নেই। এসব ক্ষেত্রে অনেক সময় পেশেন্টদের একই সাথে মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারও হয়। অর্থাৎ আপনার মধ্যে এখন একই সাথে দু'টো ব্যক্তি বাস করছে। একজন চাইছে আপনি স্বপ্নে ভবিষ্যত দেখার বিষয়টা বিশ্বাস করুন, আরেকজন মনেপ্রাণে এই ঘটনাগুলো বিশ্বাসও করছে। অবশ্য, আরো সময় নিয়ে কয়েক সেশন কাউন্সিলিং না করে পুরোপুরি বোঝা যাবে না। তবে যতটুকু মনে হয়-এটাই একমাত্র ব্যাখ্যা।"



"ভবিষ্যতের জিনিস বর্তমানে আসতে পারবে না, এমনটা মনে হল কেন আপনার? আপনি কি স্টিফেন হকিংয়ের ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইমে-Arrow of Time এর কথা পড়েননি?"



"পড়েছি। এরো অফ টাইম এখনো একটা থিওরি মাত্র। তাছাড়া একা আপনার ক্ষেত্রে এরো অফ টাইম প্রযোজ্য হবে না।"



"আপনার ব্যাখ্যা মেনে নিতে পারছি না।"



"কোন অসুবিধা নেই। আপনার আসলে কাউন্সিলিং এর দরকার। আপনি এক কাজ করুন। আগামী সোমবার আসুন....।"



বলাকা স্মিত হাসল।



"জিব্রান সাহেব, আমি আসলে আপনার কাছে কাউন্সিলিং কিংবা মেডিকেশনের জন্য আসিনি।"



"তাহলে?"



"আমি এসেছি আপনাকে একটা বিপদ থেকে বাঁচাতে।"



জিব্রান অবাক হল- "মানে?"



"গতকাল রাতে আমি স্বপ্ন দেখি, সুজাতা নামের একটা মেয়ের সাথে আপনার বিয়ে হচ্ছে। কাজী সাহেব আপনাদের বিয়ে পড়াচ্ছেন। হঠাৎ সুজাতা উঠে দাড়িয়ে আপনার বুকে একটা লম্বা হাতলওয়ালা ছুরি ঢুকিয়ে দিল। আপনি সাথে সাথে মারা গেলেন....!"



জিব্রান জোরে জোরে হো হো করে হেসে উঠল।

"সত্যি বলছেন? তা এবার কোন 'ভবিষ্যতের বস্তু' পাননি?"



বলাকা অপ্রস্তুত হয়ে গেল। "আমি জোক করছি না জিব্রান সাহেব। সত্যি সত্যি আমি দেখেছি এমন একটা স্বপ্ন। আর হ্যা, ঘুম থেকে উঠে কি পেয়েছি জানেন? রক্তমাখা একটা পেইন্টিং-সালভাদর দালির আকা। আর একটা ফটো। যেখানে আপনি আর সুজাতাকে দেখা যাচ্ছে।"



জিব্রান একটু থতমত খেয়ে গেল। "আমি কি দেখতে পারি পেইন্টিং আর ফটো?"



"অবশ্যই, পেইন্টিংটা বাইরের ঘরে রেখে এসেছি।

আর ছবিটা এখনই দিচ্ছি, আপনি পিয়নকে ডেকে পেইন্টিংটা আনান।"



জিব্রান পিয়নকে ডেকে পেইন্টিংটা নিয়ে আসতে বলল। বলাকা ততক্ষণে হ্যান্ডব্যাগ থেকে একটা ছবি বের করেছে।

"এই যে দেখুন।"



জিব্রান দেখল। ফটোতে একটা অনুষ্ঠানে সত্যিই জিব্রান আর সুজাতাকে দেখা যাচ্ছে। সুজাতার মুখের একটা পাশ শুধু বোঝা যায়, অবশ্য তাতেই স্পষ্ট চেনা যাচ্ছে সুজাতাকে। আর জিব্রানের পরনে একটা নীল পাঞ্জাবী। অথচ কোন নীল পাঞ্জাবী নেই ওর। সুজাতার পরনের শাড়ীটা কি রংয়ের স্পষ্ট বোঝা যায় না। লাল কিংবা গোলাপী হতে পারে। আশ্চর্য, এমন ছবি তো কখনো তুলেছে বলে মনে পড়ে না! তাহলে? ভবিষ্যতের ছবি? তা কি করে হয়?



পিয়ন পেইন্টিংটা নিয়ে এসেছে। সেটা দেখে তো আরও অবাক হল জিব্রান। এটা আরেকটা ক্যাভালো মেটাফিস্কো। তবে রক্তে রাঙা। ছবিতে ঘোড়ার মুখটা রক্তে ঢেকে গিয়েছে। চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগল জিব্রান। রক্তটা কি ওরই? ল্যাব টেস্ট করে দেখতে হবে। হঠাৎ কি মনে করে সুজাতা আর ওর ফটোটা হাতে নিয়ে দেখল ও। ফটোতে কোথাও বড়সড় একটা খুঁত আছে। কোথায়?....হ্যা, ধরতে পেরেছে জিব্রান। সুজাতা শাড়ীর আঁচলটা ফেলেছে ডান কাঁধে, অথচ মেয়েরা শাড়ীর আঁচল রাখে বাম কাঁধে।



"বলাকা, আপনার ফটোর একটা বিষয়...."

বলতে গিয়ে থেমে গেল জিব্রান। বলাকা নেই কামরায়। জিব্রান হাক ছাড়ল- "আব্দুল, আব্দুল।"



এসিস্ট্যান্ট আব্দুল এসে দাড়াল- "জ্বী স্যার?"

"পেশেন্ট কই গেল?"

"উনি তো এইমাত্র বেরিয়ে গেলেন স্যার!"

"শীট!"





সেদিন রাতে ল্যাব টেস্টের রেজাল্ট পেল জিব্রান... হ্যা,পেইন্টিংয়ে লেগে থাকা রক্তটা জিব্রানেরই ছিল।



(চলবে)

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩

গ্য।গটেম্প বলেছেন: চলবে বললে হবেনা!!

০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪০

একলা চলো রে বলেছেন: কোরানে একটা কথা আছে- ওহে মানবজাতি, তোমাদের বড্ড তাড়াহুড়া। :P

২| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫

শুঁটকি মাছ বলেছেন: শেষ পর্যন্ত লেখাটা দিলেন তাহলে!!!!!!!!!!!!!!!!
সুন্দর হয়েছে!!!!!!!!!!আপ্নাকে ফলো দিয়ে রাখলাম যাতে বাকি গল্পটা মিস না করি!শুভকামনা!!!!!!!!

০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪১

একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ। বাকীটুকু তাড়াতাড়ি লিখে ফেলার চেষ্টা করব।

৩| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০৫

মেহেদী হাসান ভূঁঞা বলেছেন: হুমায়ন প্রভাবিত লেখা। একটা উপন্যাস পড়ছিলাম এমন।

০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

একলা চলো রে বলেছেন: আমি পড়েছি। বইটার নাম ছিল- নিষাদ। এটা আরেকটা গল্প। এটার সাথে কোন মিল নাই। ওটা ছিল আলৌকিক গল্প, এটা বাস্তবধর্মী। ওটা মাথায় রেখে গল্পটা লিখিনি। লেখার পরে দেখি কিছু অংশ মিলে গেছে।

৪| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

ৈজয় বলেছেন:
ভাল যন্ত্রনা শুরু করছেন দেখি। চলবে আবার কি?

চলবে টলবে বাদ দিয়ে নেক্সট বার থামবে পোস্ট দিবেন আশা করি।

তবে লেখা ভাল হচ্ছে।

০৯ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৬

একলা চলো রে বলেছেন: আপনি পড়েছেন ভাল যন্ত্রনায়। আমি পড়েছি খারাপ যন্ত্রনায়। আগের লেখা মনে করতএ করতে অবসথা কেরোসিন।

৫| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

চলুক সাথেই আছি।

০৯ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২

একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ। চলবে।

৬| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চলুক।

০৯ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩

একলা চলো রে বলেছেন: চলবে।

৭| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

িটউব লাইট বলেছেন: Cholbe......cholbe....

০৯ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪

একলা চলো রে বলেছেন: আগামী পর্বেই শেষ করব।

৮| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:০০

মায়াবতী নীলকন্ঠি বলেছেন: আপনার আগের পর্বটার মতই এখনও আপনাকে খুন করতে ইচ্ছা করছে...তাড়াতাড়ি শেষ করুন...নেশা হয়ে গেছে..শেষ না করলে ঘুম হবে না :(.+++++++++++++++

১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

একলা চলো রে বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। তাড়াতাড়ি শেষ করার চেষ্টা করব।

৯| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:৩৩

মামুন রশিদ বলেছেন: এই পর্বের শেষটা পড়ে গায়ে কাঁটা দিলো । :-& :|



চলবে ! মানে সামনে আরো !! পাঠক হিসাবে আমি ভিতুর ডিম :P

১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১৫

একলা চলো রে বলেছেন: নির্ভয় থাকুন। সামনে আর রহস্য নেই। সকল রহস্যের জট খোলা হবে পরের পর্বে।

১০| ১০ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯

শুঁটকি মাছ বলেছেন: ভাই,বাকিটা এখনো দেন না কেনো? :( :(( :(( :((

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬

একলা চলো রে বলেছেন: Click This Link

১১| ১০ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: বেশ ভাল লাগলো.........।

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬

একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।

১২| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: কাহিনীটা এগিয়ে এনেছেন দেখে ভাল লাগছে। পরের পর্ব কবে পাচ্ছি?

পর্ব করে লিখলে আগ্রহ কিছুটা নষ্ট হয়, একবারে বেশি করে লিখে ফেলুন না। পড়তে ভালই লাগবে!

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

একলা চলো রে বলেছেন: লিখে ফেলেছি। পর্ব করার জন্য দুঃখিত। Click This Link

১৩| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:২৫

অহন_৮০ বলেছেন: চলুক সাথেই আছি।

১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:০৩

একলা চলো রে বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.