নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী-র ব্লগ

একলা চলো রে

ভালো নাম মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী।কল্পবিজ্ঞান, সাইকোলজিক্যাল গল্প এবং ফ্যান্টাসি নিয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। এসব নিয়েই লিখছি অল্পবিস্তর।

একলা চলো রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

কল্পগল্পঃ বিবর্তন

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৬

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম- "ব্রত্য‚ টাইম মেশিনটা  ল্যান্ড করতে এত সময় নিচ্ছে কেন?"



ব্রত্য টাইম মেশিনের জটিল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল- "আমরা অনেক দূরে চলে এসেছি তো তাই। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান কাউন্সিল তথ্য সংগ্রহের জন্য কোন টাইম মেশিনকে এত দূরের ভবিষ্যতে পাঠানোর চেষ্টা করেনি।"



"ঠিক কতদূরে এসেছি আমরা?"



"২০৯১ মিলিয়ন বছর পরের পৃথিবীতে।"



"মাই গড!"



হুরমুর করে ছোট টাইম মেশিনটা একটা খোলা মাঠে ল্যান্ড করল। আমি আর ব্রত্য বাইরে বেরোলাম‚ গায়ে ফিউচার স্যুট আর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে।



চারিদিকের দৃশ্য খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম আমরা। পৃথিবীটার চেহারা পুরোপুরি বদলে গেছে। যে মাঠটাতে দাড়িয়ে আছি‚ তার একদিকে বেশ বড় একটা আগ্নেয়গিরি দেখা যাচ্ছে। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ঠিক তার উল্টোদিকে ঝিরঝিরে বরফ পড়ছে। মেঘের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম যে অনেক নিচে নেমে এসেছে বায়ুমন্ডল। সূর্যের আলোর তীব্রতা বেড়ে গেছে অনেক।



"ব্রত্য‚ আমাদের কম্পিউটার কি বলছে এই সময়  সম্পর্কে?"



"কম্পিউটার বলছে যে পৃথিবীতে ১৭ টা বরফ যুগ পেরিয়ে গেছে। পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যকার দূরত্ব কমে এসেছে অনেক। বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমান ৫% মাত্র। কোন ধরনের জীবন্ত প্রাণীর অস্তিত্ব নেই। কিন্তু..."



"কিন্তু?"



"কিন্তু একধরনের রহস্যময় ভর আছে জায়গাটাতে। এখানকার বায়ুমন্ডলীয় চাপ হলো 10^5 বার। বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলোর ভরের  সাপেক্ষে  হওয়ার কথা ছিল 10^3‚ একশো বার পরিমান অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। চাপ বেশি মানে ভর বেশি। কিন্তু এই অতিরিক্ত ভরের কোন উৎস পাচ্ছে না আমাদের কম্পিউটার।"



"ইন্টারেস্টিং! যাই হোক‚ ৫ মিনিট হয়ে গেছে। বিজ্ঞান কাউন্সিল এর আইন অনুযায়ী ১৫ মিনিটের বেশি সময় থাকা যাবে না ভবিষ্যতে। কিছু ভিজ্যুয়াল নিয়ে নাও। তারপর ফিরি।"



ব্রত্য হলোগ্রাফিক ক্যামেরায় আশেপাশের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। টাইম মেশিনের ভেতর বসে ফিরে যাবার জন্য প্রোগ্রাম সেট করতে লাগলাম আমি। ঠিক তিন মিনিট পর কেউ একজন মস্তিস্কের ভেতর বলে উঠল-



"আপনারা কত সাল থেকে এসেছেন?"



ব্রত্য চমকে উঠে ক্যামেরা ফেলে দিল। ভয়ার্ত চোখে তাকাল আমার দিকে। তার মানে সেও শুনতে পেয়েছে অদৃশ্য আওয়াজ। আমারও চমকানো স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ব্রত্যের চেয়ে আমার সময় পরিভ্রমণের অভিজ্ঞতা বেশি। ভবিষ্যতের বিরূপ পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখার ক্ষমতা আছে আমার। আমি একটুও উদ্বিগ্ন না হয়ে বললাম- "২০৫৯ সাল থেকে। এখানে কি প্রায়ই অতীত থেকে মানুষ আসে?"



অদৃশ্য কন্ঠটা বলল- "ঠিক প্রায়ই আসে না‚ তবে আসে। ভবিষ্যৎ থেকেও আসে। ২৬০ বছর আগে আরেকদল অভিযাত্রী এসেছিল; ৩১৭০ সাল থেকে।"



"বাহ! কিন্তু আপনাকে দেখতে পাচ্ছি না কেন! কই আপনি? আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন; কে আপনি?"



"আমার নাম ত্রয়োন্ডালন্যান‚ এই এলাকাতেই থাকি। দেখতে পাবার কোন কারণ নেই‚ আমার কোন দেহই নেই। শুধু চেতনা আছে। অবিনশ্বর চেতনা।"



"মানে কি! আপনি মানুষ নন?"



"হ্যা এবং না। আমি মানুষের বিবর্তনের পরের ধাপ -হোমো লেসিথান। আমার দেহ নেই‚ তাই দেখাদেখির ব্যাপারও নেই। বিবর্তন এর এই ধাপে মানুষ তার দেহ হারিয়েছে- পেয়েছে অবিনশ্বর চেতনা।"



"তা কি করে হয়‚ দেহহীন চেতনা কি প্রজনন করতে পারে? প্রাণীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রজনন ক্ষমতা।"



"এটা বিবর্তনের প্রাথমিক পর্যায়ের কথা। বিবর্তন মানে টিকে থাকার সংগ্রাম। মাত্র ৫% অক্সিজেন নিয়ে টিকে থাকতে হলে দৈহিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। সম্ভবত সে কারণেই মানুষ এ পর্যায়ে এসেছে। এটা অত্যন্ত স্থির একটা পর্যায়! এ যুগটাকে আমরা বলি আইসোইভ্যুলশনারি পিরিয়ড।"



"এ যুগের অন্যান্য প্রাণীরাও কি আপনাদের মতো দেহহীন?"



"না। প্রাণীদের চেতনা নেই। যার চেতনা নেই তার অস্তিত্বও নেই।"



"দেহহীন চেতনা দিয়ে আপনি আমার সঙ্গে কথা বলছেন কি করে?"



"ব্রেইন ওয়েভের মাধ্যমে।"



"এখানে কিছু রহস্যময় ভর দেখা গেছে। এর উৎস কি জানেন?"



"হ্যা। আমাদের ভর। আমাদের দেহহীন চেতনারও ভর রয়েছে। তা হলো: ২১ গ্রাম।"



"মানুষ মরে গেলেও কিন্তু ২১ গ্রাম ভর কমে যায় দেহের‚ এই ২১ গ্রামের সাথে আপনার ২১ গ্রামের কোন সম্পর্ক আছে কি?"



"আমার জানা নেই।"



"আচ্ছা। ১৫ মিনিট হয়ে গেছে। আমাদের ফিরতে হবে। আপনার তথ্য অনেক কাজে লাগবে আমাদের। অনেক  ধন্যবাদ আপনাকে।"



ব্রত্যকে নিয়ে আমি টাইম মেশিনে করে উড়াল দিলাম। বিজ্ঞান কাউন্সিলকে জানাতে হবে এই অদ্ভূত তথ্যের কথা।



মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভাবনার কোন ষীমা নেই :)

বেশ ভেবেছেন তো :)

++

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫০

একলা চলো রে বলেছেন: আসলেই। ভাবার জন্য টাকা পয়সা লাগে না। :D

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৫

সাইফুদ্দিন আযাদ বলেছেন: সায়েন্স ফিকশন পড়ার ক্ষেত্রে যেমন স্বাদ পায় ঠিক তেমনি এই গল্পেও পেলাম। চালিয়ে যান...... ধন্যবাদ লেখককে!

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০১

একলা চলো রে বলেছেন: এটাকে আমি মোটেও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মনে করি না‚ বরং বলা যায় অবৈজ্ঞানিক কল্পগল্প। যাই হোক‚ আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২১

আজমান আন্দালিব বলেছেন: বেশ তো!

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৭

একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪২

হাসান মাহবুব বলেছেন: ২১ গ্রাম, আত্মার ওজন?

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৮

একলা চলো রে বলেছেন: Click This Link

৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১২

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ভালো লাগল :)

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩১

একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৮

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ভাল লাগল আপনার কল্প গল্পটি। :)

২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৩

একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.