নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্তর মম বিকশিত করো/ অন্তরতর হে/ নির্মল করো, উজ্জ্বল করো,/ সুন্দর কর হে

মহান অতন্দ্র

কবিতার মত মেয়ে

মহান অতন্দ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাড়ি নিয়ে বাড়াবাড়ি

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

সকালটা শুরুই হল এক অনাসৃষ্টি কাণ্ড দিয়ে। গতকাল ভারী একটা তুষারপাত হয়ে গেছে। রাতে শোয়ার আগে রান্নাঘরের সবকিছু আরেকবার গুছিয়ে নেওয়ার অভ্যেস। গুছিয়ে নিতে যেয়ে কি মনে হল দরজা খুলে দেখি দিনের আলোর মত ঝকঝক করছে সব। রাত তখন দুটো। সাদা তুষার মখমলে ঢেকে আছে বাড়ি-ঘর, পিচের পথ । দেখলাম একটা কালো বিড়াল ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। যদিও একটা বিল্টইন পশমী জ্যাকেট ওর গায়ে, তবু খুব মায়া হচ্ছিল বেচারির জন্য। আমরা দুজন দুজনকে কিছুক্ষণ দেখছিলাম।



হঠাৎ পিছনে দেখি পতিমশাই। সে বলল, বন্ধ কর দরজা। এতখন ধরে বিড়াল দেখার কিছু নেই। আর জগতের সকল নিশাচর কালো হুলোরাই আসলে জ্বীন। সেই অর্থে জ্বীন দেখা থামিয়ে আমি ঘুমোতে আসলাম।



পরদিন দুপুর ১২ টা। পতিমশাই আগেই নেমে গেছে। তুষারে ঢেকে আছে গাড়ি। তুষার নিয়ে আমার বড্ড বাড়াবাড়ি থাকলেও এই পরিষ্কার বড্ড হ্যাপার কাজ। সেই নামলো। আমিও লাঞ্চ আর সবকিছু গুছিয়ে নামছিলাম। নামার জন্য বরাবর পিছনের একটা প্রাগৈতিহাসিক লোহার সিঁড়ি ব্যবহার করি আমরা। কারন একটাই, পার্কিং পর্যন্ত যেতে সামনের সিঁড়ি দিয়ে একটু ঘুর পথ হয়।



আমি নামছিলাম। হাতে কফির মগ, ট্রাসের জন্য ময়লার ব্যাগ, আর আরেক হাতে শাড়ির ব্যাগ। শাড়িটি এক ভাবীকে দিতে হবে। পতিদেব বারবার করে বলছিলেন খুব সাবধান, ভীষণ পিছল কিন্তু। আসলেই বরফ তখন সব গলতে শুরু করেছে। সুর্যও বেশ জোরেশোরে কিরন ছড়াচ্ছে কিন্তু তাপমাত্রা শুন্যের নিচে। তুষার গলে ব্লাক আইসে ভরে গেছে চারপাশ। সিড়িতেও একই অবস্থা। অবশ্য পতি আমাকে বারবার সাবধান করে দিচ্ছিলেন আর শোনাচ্ছিলেন অতীতে কারা এই সিঁড়িতে চিৎপটাং হয়ে কোনরকমে কোমর বাঁচিয়েছেন।



আমি খুব মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনছিলাম আর খুব সাবধানে নামছিলাম। হঠাৎ একটা দড়াম আওয়াজ হল।



পতি মশাই যখন ছুটে এসে আমাকে তোলার চেষ্টা করলেন, আমি বুঝলাম আমি পড়ে গেছি। মনে হল কোমরের হাড় বুঝি আজকে ভেঙেই গেছে। হাতের কাছেও ছিলে গেছে। কারন খুব জ্বলছিল আর হাত নাড়াতেও কষ্ট হচ্ছিল।



সে তখন আমাকে নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ল। বলল তুমি গাড়িতে বস। সবটা আমিই সামলাচ্ছি । তার ডিপার্টমেন্ট পর্যন্ত গাড়ি সেই চালাল। সে নেমে গেলে আমি এক হাত ব্যাথা নিয়ে আমার ডিপার্টমেন্টে ছুটলাম।

গাড়ি ছুটছে সেই সাথে আমার কান্নাও। কোনরকমে তাকে চেপে রেখেছি। এ কোন দেশে আসলাম। এইরকম একটা পড়ার পরও ক্লাস! পৌঁছে গাড়ি পার্ক করে শাড়ির ব্যাগ নিতে যেয়ে দেখি, শাড়িটা তো নেই। আমার তো মাথায় হাত। সাথে সাথে তাকে জানালাম, শাড়ি কোথায় , সেতো নেই এখানে?



- শাড়ি নেই! তাহলে নিশ্চিত ময়লা মনে করে ট্রাস করে দিয়েছি। আসলে তখন তোমাকে নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম কোনটা শাড়ি আর কোনটা ময়লা টেরই পাইনি।



সে আরও কিছু বলছিল, আমি সেসব না শুনে সোজা বাড়ির পথে গাড়ি ঘুরিয়েছি । পড়ে হাত পা ছেলার ব্যাথা তখন শাড়ি হারানোর ব্যাথার কাছে খুব সামান্য। বাঙালি ললনা মাত্রই জানে এ ব্যথার তীব্রতা কতখানি। তাছাড়া বিয়ের পর এই শাড়িটা প্রথম সে কিনে দিয়েছিল।



একটানে গাড়ি চালিয়ে আমি থামলাম ডাস্টবিনের পাশে। ডাস্টবিনে নাক বন্ধ করে শাড়ি খুঁজছি। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে আমার কিন্তু শাড়ি তো কোথাও নেই। ময়লার ব্যাগও দেখছি হাতে গোনা। তাহলে কি এর মধ্যে মিউনিসিপ্যালের লোক এসে ময়লা নিয়ে গিয়েছে!



আমার তখন খুব কাঁদো কাঁদো অবস্থা। কাঁদবার জন্য আমি আবার ঐ চিৎপটাং সিঁড়ির উপর বসলাম। হাড়গোড় আবার দু একটা ভাঙ্গে ভাঙুক। শাড়ি হারানোর চেয়ে হাড়গোড় ভাঙার ব্যাথা ঢের কম আমার কাছে। চোখের জল মুছে কিছুক্ষণ পর উঠতে হল। ক্লাসের তাড়া ছিল।



উঠতে যেয়েই দেখি নিচে একটা কালো রঙের ব্যাগ। আরে এইতো আমার শাড়ির ব্যাগ। শাড়ির মুখ দেখে আমার তখন পর্বত জয়ের খুশী। অনেকটা ‘ আমি পাইলাম ইহাকে পাইলাম’ অনুভুতি।



গাড়ি ছুটিয়ে ডিপার্টমেন্টে এসেই দেখি সে ভাইবারে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে ‘আমি খুব সরি, তোমার শাড়িটা ট্রাস করার জন্য। তুমি কি ডাস্টবিন থেকে তুলতে পেরেছ?............... এজন্য তোমার তো লম্বা কাউকে দরকার...... আমাকে ......’



আমি তখন ঐ ভাইয়ার ডেস্কে শাড়ি রেখে এসে মনে মনে হাসছি। আর সমানে সে সরি লিখে টেক্সট করছে। আমি কিছু বলছি না। একটু কষ্ট পাক লম্বুটা। এতদিন যে হাড় জ্বালিয়ে মেরেছে আজ একটু তার শোধ নেওয়া যাক।



কিন্তু ক্লাসের সময় হয়ে গেল। প্রফেসর এসে গেছে।



বাধ্য হয়ে আমাকে জানাতে হল ......“গট ইট”

মন্তব্য ৩৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৩৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১০

এম এম করিম বলেছেন: হা হা, ভাল লাগল। ভালো লিখেন আপনি।

অনুসরণে নিলাম।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২১

মহান অতন্দ্র বলেছেন: :) :) :)

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

আদম_ বলেছেন: বল্গে চোখ বুলাতে এসেছিলাম.......আর আপনি লগইন করিয়ে ছাড়লেন।
বরাবরের মতো চমতকার লেখা।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩

মহান অতন্দ্র বলেছেন: মু হা হা হা । ধন্যবাদ ভ্রাতা। ভাল থাকা হোক।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬

কলমের কালি শেষ বলেছেন: শাড়ী বিভ্রাট !!. হা হা হা হা । :P :P

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৩২

মহান অতন্দ্র বলেছেন: হা হা হা হা :D :D :D

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

শায়মা বলেছেন: গাড়ি ছুটিয়ে ডিপার্টমেন্টে এসেই দেখি সে ভাইবারে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে ‘আমি খুব সরি, তোমার শাড়িটা ট্রাস করার জন্য। তুমি কি ডাস্টবিন থেকে তুলতে পেরেছ?............... এজন্য তোমার তো লম্বা কাউকে দরকার...... আমাকে ......’



হা হা হা আপুনি!!!!!!!!!!!!!!

আহালে আমার ভাইয়াটা!!!!!!!!!!!!!!!!!!

তবে আমিও অনেক অনেক পড়ি আমাকে কেউ উঠায় না .......... :( নিজে নিজে উঠি :( :( :(

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৩৩

মহান অতন্দ্র বলেছেন: আহারে আপু :( :( :(

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: হাহা! :#)

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৩৩

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৭

জাফরুল মবীন বলেছেন: আপনাকে অনাসায়ে সামুর কথা সাহিত্যিক উপাধি দেওয়া যায়।

কথাটা আমি সিরিয়াসলিই বলেছি।

বাংলা সাহিত্যে আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।

ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানবেন।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৩৬

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ধন্যবাদ শুভ কামনার জন্য। তবে কথাটা ঠিক নই। ব্লগে বেশিদিন আমি নই। সবার কাছে শিখছি এখন। যদি কিছুটা শিখে থাকি সে অর্থে সবার কাছে ঋণী বলা যায়।

দীর্ঘজীবী হোক সামু। দীর্ঘজীবী হোক লেখকেরা।
ভাল থাকবেন।

৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪৬

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৩৬

মহান অতন্দ্র বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

৮| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩

ভূতের কেচ্ছা বলেছেন: B-) =p~

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৩৬

মহান অতন্দ্র বলেছেন: =p~ =p~ =p~

৯| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭

সোহানী বলেছেন: আহারে দু:খ আপনার পড়ে যাওয়ায় আর ভালো লাগা শাড়ি কাহিনীতে ........++++

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৩৭

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু । ভাল থাকবেন ।

১০| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৪

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: :D :D

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৪৩

মহান অতন্দ্র বলেছেন: :D :D

১১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:১৪

অহন_৮০ বলেছেন: চমৎকার হইছে লেখটা

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৪৩

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

১২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৩

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনার লেখার সাবলীলতা আমার খুব পছন্দ। সামান্য কোন ঘটনাকেও আপনি চমৎকার করে উপস্থাপন করতে পারেন। কোমরের চেয়ে শাড়ীর মূল্য বেশী মনে হল। :P

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৪৪

মহান অতন্দ্র বলেছেন: হা হা হা হা। অনেক ধন্যবাদ বিদ্রোহী বাঙালি ।

১৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৪

আবু শাকিল বলেছেন: যাক শাড়ী পাওয়া গেল =p~ =p~ =p~

কোট করে রাখলাম-


পা ছেলার ব্যাথা তখন শাড়ি হারানোর ব্যাথার কাছে খুব সামান্য। বাঙালি ললনা মাত্রই জানে এ ব্যথার তীব্রতা কতখানি। =p~ =p~

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৪৪

মহান অতন্দ্র বলেছেন: হে হে হে =p~ =p~ =p~

১৪| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:০৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভাল লাগল আপনাদের দুজনের গল্প!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩১

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।

১৫| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬

যোগী বলেছেন:
শাড়ি কাহিনী চমৎকার, লাফ দিছেন হাড্ডি ভাঙ্গেনি আরো চমৎকার :)

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৯

মহান অতন্দ্র বলেছেন: হা হা হা । হাসালেন ভাই :)

১৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

ময়ূখ কিরীটি বলেছেন: হুম শাড়ি নিয়ে আপনার এই বাড়াবাড়ি বেশ গ্রহনযোগ্য আর এটার আবেগের তীব্রতা বোধকরি কান্না দিয়েও ঢাকা মুশকিল ;)
ভাল কথা আপনারা বাসার সামনের বরফ পরিস্কার করেন না? শুনেছি যে তা না করলে জরিমানা করে সরকার?

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০১

মহান অতন্দ্র বলেছেন: এটা ছিল আমাদের এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের ভেতর আর স্টেট অনুযায়ী নিয়ম গুলোও ভেরি করে।

১৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩৮

দীপংকর চন্দ বলেছেন: আপনার লেখার সাবলীলতা অসাধারণ!

অনিঃশেষ শুভকামনা জানবেন।

ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০২

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ দীপংকর দা। আমি নিজেই আপনার একজন গুণমুগ্ধ পাঠক ।

১৮| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:২৪

ইমরান আশফাক বলেছেন: অনেকদিন পর পড়লাম। এইরকম ঘটনাবহুল পোস্ট আমি খুব উপভোগ করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.