নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসি আশ্চর্য মেঘদল...

আমাকে তারা খুঁজেছিলো সম্ভাবনার নিচে..

মোহিত সোহাগ

না-মানুষ

মোহিত সোহাগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাপুরুষের অর্গাজমঃ আমার হাতেও রাজনের রক্ত!

১৪ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:১০

আমরা সবাই, প্রতিটি মানুষ, নিজেদের অজান্তেই অমানবিক, দানব হয়ে উঠছি। প্রতিহিংসা আর জিঘাংসা দখল করে নিচ্ছে আমাদের হৃদয় মন। নিজের ভেতরে ডাস্টবিন বসিয়ে আবর্জনায় ভরে তুলছি সমগ্র সত্ত্বা! নিজেরই ময়লা আর দুর্গন্ধে নোংরা করে চলেছি চারপাশ। আবার নিজের নাকই সিঁটকাই তুমুল ঘৃণায়! হয়ে উঠি পাশবিক, জান্তব! নিজের দোষের প্রতি উদাসিন; অন্যের ন্যুনতম ত্রুটিতে হয়ে উঠি নির্দয় বিচারক। প্রতিটি মানুষের মধ্যে 'নিজেই বিচারক' হয়ে ওঠার এই দুর্দমনীয় অভিলাস খুনি করে তুলছে আমাদের! মনে হয় আমিই খুন করেছি রাজনকে!

আমাদের সবার ভেতরই একজন করে কামরুল বাস করে। আমরা এটা টের পাই না, অথবা নিজের এমন চরিত্রের কথা নিজেরই কাছে অস্বীকার করি। কিন্তু উপযুক্ত সময় ও সুযোগে ঠিকই আমাদের এই চেহারা বেরিয়ে আসে। রাজনের এমন নৃশংস হত্যাকান্ড দেখে আমিই বলেছিলাম- কামরুলকে ধরে এনে মিরপুর স্টেডিয়ামে উন্মত্ত জনতার হাতে ছেড়ে দেয়া হোক; জনতা তাকে বারবিকিউ করে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে খেলায় অর্জিত জয় উদযাপন করুক।

এই যে চোর-ছেঁচর-গুন্ডা-বদমাসকে নিজ হাতে ও নিজ সমর্থনে গণপিটুনি দেয়ার পৈশাচিক আনন্দ ভোগ করার মানসিকতা, চোর পিটিয়ে 'হিরো' হওয়ার প্রবণতা, নিজ হাতে বিচার করে 'উপযুক্ত শাস্তি' দেয়ার তৃপ্তির আকাঙ্ক্ষা, এই মানসিকতাই সুযোগের দিনে আমাদেরকে খুনি করে তোলে। ফেসবুকীয় গণমাধ্যমে নিজের বীরোচিত কর্মকান্ডের নায়কোচিত ছবি দেখানোর সুযোগ ও চর্চা, এই মানসিকতাকে উদগ্র করে তুলেছে। এই পাশবিক তৃপ্তিকে 'কাপুরুষের অর্গাজম' বলে অভিহিত করেছেন কেউ কেউ। রাজনকে হত্যার মধ্য দিয়ে কামরুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এই অর্গাজম লাভ করেছে।

ঠিক একই 'তৃপ্তি' আমি দেখেছি দেলোয়ার হোসেনদের চোখেও, যারা সৌদি আরবে কামরুলকে পাকড়াও করেছে। তারাও 'ডাকাত ধরার তৃপ্তি' লাভ করেছে। তারাও সদলবলে কামরুলকে হাত-পা বেঁধে মেঝেতে ফেলে, কামরুলের চুলের মুঠি ধরে সেলফি তুলেছে; সেই সেলফি ফেসবুকে আপলোড করেছে। 'হিরো' হওয়ার এইতো সুবর্ণ সুযোগ! -'সারা বাংলাদেশ যাকে খুঁজছে আমি তাকে ধরিয়ে দিলাম! দেখো বাংলাদেশ দেখো'। কোরবানীর ঈদে গরু কোরবানী দেয়ার সময় গরুকে চারদিক থেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মাটিতে ফেলে সেই গরুর চারদিকে বসে আমরা এরকম বীরত্বের সেলফি তুলেছি বহুবার।

রাজনকে মারার সময়ও কামরুল ও সাঙ্গপাঙ্গরাও ঠিক এইভাবেই, ঠিক এইকাজটাই করেছিল। উপরের প্যারাটিতে 'কামরুল'এর জায়গায় 'রাজন' বসিয়ে দিলেই হয়, আর কিছু বলতে হয় না। সেখানে রাজন ছিল 'চোর' ও 'একা' কামরুলরা ছিল 'দল'; এখানে পাশার দানা উল্টো ঘুরে কামরুল 'খুনি' ও যথারীতি 'একা'! দেলোয়ার হোসেনরা 'দল'।

কেউ হয়তো এই অভিযোগ করতে পারেন- আমি দেলোয়ার ও কামরুলকে এক করে ফেলেছি। তাহলে আমি অনুরোধ করবো- দেলোয়ারের জায়গায় আমার নাম বসিয়ে দিন। কারন সেখানে আমি থাকলে হয়তো আমিও একই কাজ করতাম। আর বলি, আমি আমার আর কামরুলের মধ্যেও পার্থক্য দেখছি না। আমি রাজনের মধ্যে নিজেকে দেখতে পাই, কামরুলের মধ্যেও নিজেকে দেখতে পাই; এবং, দেলোয়ার হোসেনের মধ্যেও নিজেকে দেখতে পাই! রাজন-কামরুল-দেলোয়ার ও আমি; এই হলাম 'আমরা'।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: ভুল বলেন নি!

০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৯

মোহিত সোহাগ বলেছেন: ধন্যবাদ, মাঘের নীল আকাশ! তবে সব কথা, যা মনে আছে, বলতে পারিনি। এই বিষয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ লেখা লেখার আশা আছে। আমার ব্লগে আসার জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.