নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নির্বাচন আসছে, সবাই প্রস্তুত তো?

১২ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:১৮

সময়ের হিসাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যদিও এখনও বছর দেড়েক বাকি আছে, এটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা জানি, ইতিমধ্যে নির্বাচনী 'কাউন্টডাউন' শুরু হয়ে গেছে। আমরা দেখছি, রাজনৈতিক দলগুলোর কথাবার্তা, বক্তৃতা-বিবৃতিতে নির্বাচনী আমেজ ফুটে উঠছে। নেতারা আগের চেয়ে ঘন ঘন এলাকায় যাচ্ছেন। কারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন, সেটা নিয়েও অন্তত প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আভাস মিলছে।

বস্তুত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ গণনা সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে, যেদিন থেকে নবগঠিত নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করে। আমরা দেখছি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারগণ শপথ গ্রহণ করার দিন থেকেই সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। যদিও তাদের কাজের শুরু হয়েছিল একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন হাতে-কলমে কাজ শুরু করে। এরপর আরেকটি বড় মাপের নির্বাচন পরিচালনা করেছেন তারা। সেটা হচ্ছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ই বলা হচ্ছিল, ওই নির্বাচন ছিল নতুন কমিশনের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের 'ট্রায়াল'। প্রসঙ্গত, নির্বাচনটি কিন্তু দলীয়ভাবেই হয়েছিল। প্রধান দুই প্রার্থী নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। আমরা দেখেছি, বিরোধী দল বিএনপির পক্ষে নানা আশঙ্কার কথা বাতাসে ভাসিয়ে দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। বিজয়ী হয়েছেন বিরোধীদলীয় প্রার্থী।

আমার পর্যবেক্ষণমতে, নতুন নির্বাচন কমিশন যদিও স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ বিভিন্ন রুটিন ওয়ার্ক করে যাচ্ছে, তাদের সামনে রয়েছে আসলে একাদশ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির কাজ। ইতিমধ্যে এটি তৈরি হয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হবে আশা করা যায়। রোডম্যাপ প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করবে বলে জানা যাচ্ছে। আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বক্তব্য দিচ্ছে, সেগুলো তারা আমলে নিচ্ছে ধরে নেওয়া যায়। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের যে কথাবার্তা চলছিল, রাজনৈতিক দলগুলোর পর্যবেক্ষণ আমলে নিয়ে সেই পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোও যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, সে কথা আগেই বলেছি। আমরা দেখছি, মাঠের প্রধান বিরোধী দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, যারা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেবল বয়কট নয়, প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছিল; তারাও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যে দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে 'ভিশন ২০৩০' প্রকাশ করেছে। এটা নিয়ে প্রেসমিট করেছে। সেখানে বলা হয়েছ, ক্ষমতায় গেলে তারা কী কী করবে। যদিও সমালোচনা রয়েছে যে, ওই ভিশনে নতুন কোনো কথা নেই। আওয়ামী লীগের ভিশনেরই পুনরাবৃত্তি। যদি পুনরাবৃত্তিই থাকে, তাহলে মানুষ তাদের ভোট দেবে কেন, সেই প্রশ্ন রয়ে গেছে। যাহোক, বিএনপি তাদের ভিশন প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন ইস্যুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। তার মানে, বিএনপি নির্বাচনে আসবে_ এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। তারা যে সিরিয়াস, সেটা প্রমাণ করতেও কোনো খাদ রাখছে না।

বিএনপি নির্বাচনে আসা মানে, তাদের জোটের অন্তর্ভুক্ত দলগুলোও নির্বাচনে আসবে। অবশ্য যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো, আদালতের রায়ে নির্বাচনী প্রতীক হারানো রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী কীভাবে নির্বাচনে আসবে, সেই প্রশ্ন রয়েই গেছে। তবে, জামায়াতের জন্য যে নির্বাচন আটকে থাকার প্রশ্নই নেই, বলা বাহুল্য। এ কথা এখন নিদ্বর্িধায় বলা যায়, আগামী নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণমূলক হতে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচন ২০১৪ সালের মতো হবে না।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে বিষয়টিতে এখনও বিএনপি খানিকটা ধোঁয়াশা তৈরি করতে চাইছে, তা হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার। দৃশ্যত তারা 'তত্ত্বাবধায়ক সরকার' ধারণা থেকে সরে এলেও এখন 'সহায়ক সরকার' নামে আরেকটি ধারণার কথা বলে যাচ্ছে। কিন্তু কথা হচ্ছে, সংবিধানের বর্তমান ব্যবস্থা অনুযায়ী এ ধরনের কোনো আয়োজনের সুযোগ নেই। সংবিধানমতে শাসক দলের অধীনেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। নির্বাচন কমিশনও সে অনুযায়ীই অগ্রসর হচ্ছে, মনে রাখতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আর আলোচনারও সুযোগ নেই। এখন কেবল আলোচনা হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ও সবার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান হতে পারে।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার সদিচ্ছার প্রমাণ নিয়ে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেছিলেন এবং সেখানে বিএনপিকে অংশগ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও বিএনপি সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি। এখনকার ভাবেসাবে মনে হচ্ছে, বিএনপি ওই ধরনেরই একটি সরকার চায় এবং সেখানে যোগও দিতে চায়। কিন্তু বিএনপিকে যে বিষয়টি মনে রাখা দরকার, ব্যক্তিজীবনের যেমন দুটি সময় কখনও এক হতে পারে না; একটি সময় পেরিয়ে গেলে ব্যক্তিরও পরিবর্তন হয়, পরিস্থিতিরও পরিবর্তন হয়। এই কথা সাংগঠনিকভাবেও সমান প্রযোজ্য। ২০১৪ আর ২০১৮-১৯ এক হতে পারে না। ওই সময় আওয়ামী লীগ উদারতার পরিচয় দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে ডেকেছিল বলে এখনও ডাকবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আবার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির সাংগঠনিক পরিস্থিতিতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে।

পরিস্থিতি পছন্দ হোক বা না হোক, বিএনপিকে এখন নির্বাচনে যেতেই হবে। নির্বাচন ছাড়া দলটির সামনে আর কোনো পথ নেই। নির্বাচনে যাওয়ার মাধ্যমেই দলটিকে তার মতাদর্শ ও অস্তিত্ব বজায় রাখতে হবে। যত কথাই বলুক না কেন, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে মুসলিম লীগের পরিণতি ঘটার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ১৯৪৭ সালে এই ভূখণ্ডে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল ছিল মুসলিম লীগ। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের মাথায় ১৯৫৪ সালে দলটি মুখ থুবড়ে পড়ে। তার সমর্থকদের মোহমুক্তি ঘটেছিল দলটির জনবিরোধী অবস্থানের কারণে। বিএনপিরও একই পরিস্থিতি। নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কারণে তার ভোটার ও সমর্থকরা ইতিমধ্যে হতোদ্যম। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে নেতাদের কতটা ধরে রাখতে পারবেন, সে ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। আর দল হিসেবে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ, মুসলিম লীগের মতো ব্র্যাকেটবন্দি হয়ে থাকতে হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলও তাদের আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যে ভূমিকা নিয়েছিল, সেই ভুল তারা আর করবে না। ইতিমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের প্রতিনিধিরা দফায় দফায় নির্বাচন কমিশনে হাজিরা দিচ্ছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হয়েই আছে। কিন্তু তাদের আরও প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিশেষ করে নির্বাচনে যারা প্রার্থী হতে চান, তাদের মনে রাখতে হবে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সব দিক থেকেই ব্যতিক্রম ছিল। সেবার অনেকেই ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারলেও এবার সেটা হবে না। জনসাধারণের আস্থা অর্জন ও ধরে রাখতে হবে। পত্র-পত্রিকায় দেখছি, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ইতিমধ্যে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের বাছাই করছে। কারণ আওয়ামী লীগকেও এবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে হবে প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১

নতুন বলেছেন: জনগন ভোট দিতে পারবে তো? নাকি সেই কস্টটুকু সরকারী দলের নেতা/কমী`রা করে দেবেন?

২| ১২ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভোটের পরদিন একটা পোস্ট দিয়ে জানাবেন, ভোট দিলেন কিনা, এবং কয়টা দিলেন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.