নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিজিটাল বাংলাদেশ ও সরকার বিরোধী অপপ্রচার

১৪ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:০৩

বাস্তব কথা হচ্ছে এখন প্রচারের যুগ। নিজেদের ভালো কাজের প্রচারের মাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে। সরকারবিরোধী অপপ্রচার রুখতে এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরে তরুণদের কাছে টানতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।ড. অরুণ কুমার গোস্বামী ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর শুধু স্বপ্ন নয় এটি এখন একটি বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্ভাবনী চিন্তা অনুযায়ী তাৎপর্যপূর্ণ গতিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। কৃষি যুগের পর যেমন শিল্প যুগে মানব সভ্যতা প্রবেশ করেছিল, তেমনি বর্তমানে শিল্প যুগ থেকে বিশ্ব অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে 'জ্ঞান অর্থনীতি'র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে এবং ক্রমান্বয়ে একটি 'জ্ঞান অর্থনীতিতে' পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে 'ডিজিটাল নেটিভ্স এবং ডিজিটাল নেটভ্্স' এর ধারণার প্রাসঙ্গিকতা অনস্বীকার্য। ওয়াশিংটনে কাজ করা তরুণ কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে সম্প্রতি বলেছেন, 'জানি, টেকনোলজি ব্যবহার করাটা অনেকের জন্য মাঝে মধ্যে একটু কঠিন হয়। আপনারা চেষ্টা করবেন, আপনাদের যতটুকু সম্ভব আমরা সহযোগিতা করব। আর আপনারা নিজেরা সম্ভব না হলে একজন পিএস নিয়ে নেন, যার কাজ থাকবে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেয়া।' দৃশ্যতই বাস্তবতা উপলব্ধি করে সজীব ওয়াজেদ জয় এ কথা বলেন। আর তিনি যাদের উদ্দেশে এই কথাগুলো বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর একজন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মার্ক প্রেন্সকির ভাষায় সেইসব সিনিয়র নেতা ও সংসদ সদস্যরা হচ্ছেন 'ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট'। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ নেতাদের যে পিএস রাখার কথা বললেন, মার্ক প্রেন্সকির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী তারা (পিএসরা) নিশ্চই 'ডিজিটাল নেটিভ'। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শেখার জগতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে যেয়ে প্রেন্সকি ডিজিটাল নেটিভ এবং ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট ধারণা দুটির অবতারণা করেছেন। কারণ হচ্ছে বিশ্ব আর কখনো এনালগের জগতে ফিরে যাবে না। অতএব, যে প্রজন্ম মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কর্মকা- প্রত্যক্ষ করছেন (ডিজিটাল নেটিভ) এবং যে প্রজন্ম অনেক আগে পৃথিবীতে আসার কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোনোকিছুই তাদের নিজেদের শিক্ষা জীবন চলাকালে দেখেননি বা শেখেননি প্রেন্সকি তাদেরকেই বলছেন ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা তাদেরকে বলেছেন 'পিএস' রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বা টুইটারে পোস্ট দিয়ে সক্রিয় থাকতে।
'ডিজিটাল নেটিভ, ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট' ধারণাটি মার্ক প্রেন্সকির একটি নিবন্ধে লক্ষ করা যায়। এমসিবি ইউনিভার্সিটি কর্তৃক প্রকাশিত 'অন দ্য হরাইজন'-এর ভলিউম ৯, সংখ্যা ৫, অক্টোবর ২০০১ সংখ্যায় মার্ক প্রেন্সকি'র 'ডিজিটাল নেটিভ্স, ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্টস' নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল। শিক্ষা এবং শেখার জগতে প্রেন্সকি হচ্ছেন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিন্তা-নেতা, বক্তা, লেখক, কনসালটেন্ট এবং গেইম ডিজাইনার। তিনি 'ডিজিটাল গেইম-বেইজ্ড লার্নিং' শীর্ষক বইয়ের লেখক, খেলাভিত্তিক শেখার কোম্পানি 'গেইমসটুট্রেন'-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও এবং বিশ্বব্যাপী শিক্ষার ক্ষেত্রে ডিজিটাল বিভক্তি (ডিজিটাল ডিভাইড) নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে উৎসর্গীকৃত একটি সংগঠন 'দ্য ডিজিটাল মাল্টিপ্লাইয়ার' এর প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও অনেক কিছুর সঙ্গে প্রেন্সকি জড়িত।
আজকের শিক্ষার্থীরা-কলেজের শুরুর বছর থেকে_ এই নতুন প্রযুক্তিতে বেড়ে ওঠা প্রথম প্রজন্মকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। তারা কম্পিউটার, ভিডিওগেইমস, ডিজিটাল মিউজিক প্লেয়ার্স, ভিডিও ক্যামেরা, সেল ফোন এবং ডিজিটাল যুগের সব খেলনা ও যন্ত্রপাতির দ্বারা পরিবেষ্টিত থেকে ও সেগুলো ব্যবহার করে তাদের সমগ্র জীবন অতিবাহিত করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক জরিপে দেখা গিয়েছে, আজকের কলেজ গ্রাজুয়েটগণ গড়ে তাদের জীবনের ৫,০০০ ঘণ্টারও কম সময় পড়ে থাকে, তবে ১০,০০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ভিডিও গেম খেলে অতিবাহিত করে থাকে, আর ২০,০০০ ঘণ্টারও বেশি সময় টেলিভশন দেখে থাকে। কম্পিউটার গেমস্, ই-মেইল, ইন্টারনেট, সেল ফোন এবং ইনসট্যান্ট মেসেজিং তাদের জীবনের অবিভাজ্য অংশ।
এটি এখন স্পষ্ট যে এই সর্বব্যাপী পরিবেশের ফলশ্রুতিতে এবং এগুলোর সঙ্গে তাদের নিছক মিথস্ক্রিয়ার ফলে, আজকের শিক্ষার্থীরা মৌলিকভাবেই তাদের পূর্বপুরুষদের থেকে তথ্যকে ভিন্নভাবে 'চিন্তা ও প্রক্রিয়া' করে থাকে। বেশির ভাগ শিক্ষাবিদ্গণ যা সন্দেহ করে ও ধারণা করে তা থেকেও অনেক দূরে ও গভীরে এই পার্থক্যগুলোর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এক্ষেত্রে বেইলর কলেজ অব মেডিসিন এর ডা. ব্রুস ডি. পেরী'র পর্যবেক্ষণ প্রণিধানযোগ্য। ডা. ব্রুস বলছেন, 'বিভিন্ন প্রকারের অভিজ্ঞতা বিভিন্ন ব্রেইন কাঠামোর দিকে নিয়ে যায়'। তাদের বেড়ে ওঠার পদ্ধতির কারণে আমাদের থেকে তারা (নতুন প্রজন্ম) সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে এগুলো আক্ষরিক অর্থেই সত্য কিনা। আমরা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি যে তাদের (নতুন প্রজন্মের) চিন্তন প্যাটার্ন পরিবর্তিত হয়েছে। আজকের এই 'নতুন' শিক্ষার্থীদেরকে আমরা কি বলব? কেউ কেউ তাদেরকে এন-[নেট-এ থেকে এন] প্রজন্ম অথবা ডি [ডিজিটাল-এর ডি]-প্রজন্ম বলে থাকেন। তবে প্রেন্সকি এই প্রজন্মকে 'ডিজিটাল নেটিভ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কম্পিউটার, ভিডিও গেমস এবং ইন্টারনেটের ভাষা বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীরা আজ 'নেটিভ স্পিকার্স'। সুতরাং এটি আমাদের অবশিষ্টদের জন্য কী তৈরি করে? আমাদের যারা এই ডিজিটাল বিশ্বে জন্মগ্রহণ করি নাই, পরবর্তীকালে আমাদের জীবনে এটিতে আসক্ত হয়ে এবং কাজে লাগিয়ে অথবা সামঞ্জস্যবিধান করে নতুন প্রযুক্তির অনেক অথবা অধিকাংশ বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছি, এবং সবসময় তাদের (নতুন প্রজন্মের) সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছি, তাদের (নতুন প্রজন্মের) সঙ্গে তুলনা করলে, আমরা সবসময়েই 'ডিজিটাল ইমিগ্রান্টস'।
এই পার্থক্যের গুরুত্ব হচ্ছে: একজন ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট শেখে_ যেমনটি অন্যান্য শিক্ষার্থীও শিখে থাকেন। কেউ কেউ অন্যদের চেয়ে ভালোভাবে শিখতে পারেন, পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করতে পারেন, কিছু মাত্রায় তারা সবসময় চলমান থাকতে পারেন, তাদের 'গুরুত্ব', অর্থাৎ, তাদের পা অতীতে রেখে। 'ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট প্রজন্ম'-এর কাছে তথ্যের জন্য ইন্টারনেটের অবস্থান সবসময় 'দ্বিতীয়' এবং কোনো সময়েই 'প্রথম' নয়! অথবা প্রোগ্রাম নিজেই আমাদেরকে এর ব্যবহার শিখিয়ে নেয় এটি অনুধাবনের পরিবর্তে প্রোগ্রামের জন্য ম্যানুয়েল পড়া। আজকের অধিকতর বয়স্ক ব্যক্তিরা তাদের ছেলেমেয়েদের চেয়ে ভিন্নভাবে 'সামাজিকীকৃত' হয়ে থাকেন এবং এখন একটি নতুন ভাষা শেখার প্রক্রিয়ায় আছেন। আর জীবনের পরবর্তীকালে একটি ভাষা শেখার অর্থ হচ্ছে, বৈজ্ঞানিকরা বলেন, ব্রেইনের ভিন্ন একটি অংশে যায়।
ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট কাজের শত শত উদাহরণ আছে। এগুলোর মধ্যে আছে আপনার ই-মেইলের প্রিন্টিং আউট (অথবা আপনার ই-মেইলটি প্রিন্ট করার জন্য সেক্রেটারিকে বলুন অথবা এর চেয়েও বেমানান ধরনের কথাবার্তা); এডিট করার জন্য কম্পিউটারে লিখিত একটি ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা প্রয়োজন (শুধু স্ক্রিনে এডিট করার পরিবর্তে); এবং একটি ইন্টারেস্টিং ওয়েবসাইট পড়ার জন্য শারীরিকভাবে লোকজনকে অফিসে নিয়ে আসা (তাদের কাছে ইউআরএল পাঠিয়ে দেয়ার পরিবর্তে)। প্রেন্সকি বলছেন, 'আমি নিশ্চিত তেমন কোনো প্রচেষ্টা ছাড়াই এ ধরনের দু-একটি উদাহরণ আপনি চিন্তা করতে পারবেন।' এক্ষেত্রে প্রেন্সকির নিজের পছন্দের উদাহরণ হচ্ছে, 'আপনি কি আমার ই-মেইলটি পেয়েছেন?' কোনো ধরনের ফোন কল। আমাদের মধ্যে যারা 'ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট' তারা হাসতে পারে অথবা নিজেদের কাজের জন্যই তারা নিজেদের 'গুরুত্ব' চিন্তা করে হাসতে পারেন।
তবে এটি শুধু কৌতুক নয়। এটি একটি খুব সিরিয়াস ব্যাপার, কারণ আজকের 'শিক্ষা'র সবচেয়ে বড় একক সমস্যা হচ্ছে আমাদের ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট শিক্ষকগণ, যারা আউটডেটেড ভাষায় কথা বলেন (প্রাক্-ডিজিটাল যুগের), এমন একটি প্রজন্মকে শিক্ষাদানের জন্য চেষ্টা করছেন, যারা পুরোপুরিভাবে একটি নতুন ভাষায় কথা বলে থাকে। এটি স্পষ্টত 'ডিজিটাল নেটিভ'-দের জন্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এমনসব ভারি গুরুত্বসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গকে নিয়োগদান করে সন্তুষ্ট থাকে একথা মনে করে যে তারা একটা খুব ভালো কাজ করেছে। কিন্তু বাস্তবে 'ডিজিটাল নেটিভদের' উদ্দেশে বক্তৃতা করার লক্ষ্যে নির্বোধ বিদেশিদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। 'ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্টরা' কী বলছেন 'ডিজিটাল নেটিভরা' তা প্রায়শ বুঝতে পারেন না।
কোন ধরনের হৈহুল্লোড় ছাড়াই মানবসমাজে 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি' খাতের প্রাধান্য সূচিত হয়েছিল। ১৯৯১ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প যুগের পণ্যাদি_ যেমন কৃষি, খনি, নির্মাণ, ম্যানুফ্যাকাচারিং, পরিবহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং এ ধরনের পণ্যাদি উৎপাদনের জন্য মোট ব্যয়িত অর্থের চেয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, যেমন কম্পিউটার, সার্ভার্স, প্রিন্টার্স, সফ্টঅয়্যার, ফোন, নেটওয়ার্কিং ডিভাউস ও সিস্টেমস্ এবং এ ধরনের পণ্যাদি উৎপাদনের পিছনে বেশি অর্থ ব্যয়িত হয়েছিল। আর এর ফলে, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জ্ঞান যুগের ব্যয় শিল্প যুগের ব্যয়কে ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায় ( ১১২ বিলিয়ন বনাম ১০৭ বিলিয়ন ডলার)। সেই বছরটিকে (অর্থাৎ ১৯৯১ সালকে) তথ্য, জ্ঞান ও উদ্ভাবনের নতুন যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তখন থেকে, বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রগুলো বস্তুগত বিশ্বের অণু ও মলিকিউল-এর ব্যবস্থাপনার চেয়ে ক্রমবর্ধমান হারে তথ্যের বিট্স ও বাইট্স তৈরি, ম্যানিপ্যুলেটিং, ব্যবস্থাপনা এবং স্থানান্তরের জন্য ব্যয় করছে। শিল্প যুগের উৎপাদন থেকে জ্ঞান যুগের অর্থনীতিতে এই বিশাল বদল_ তথ্য-চালিত, বৈশ্বিক নেটওয়ার্ককৃত_ প্রায় চারশ' বছর আগে কৃষি যুগ থেকে শিল্প যুগে বদলের মতো বিশ্ব-পরিবর্তনীয় এবং জীবন-পরিবর্তনীয়ের মতো ছিল। প্রাথমিকভাবে একটি নাট-বোল্ট কারখানা এবং ম্যানুফ্যাকচারিং অর্থনীতি হতে উপাত্ত, তথ্য, জ্ঞান, এবং দক্ষতাভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হওয়া বিশ্ব অর্থনীতি ও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিরাট প্রভাব বিস্তার করে থাকে। একটি পণ্য অথবা সেবা উৎপন্ন করার পদক্ষেপগুলোর অণুক্রম, অর্থাৎ কাজের মূল্য পরম্পরা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।
শিল্প অর্থনীতিগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে লোহা এবং ক্রুড তেলের মতো প্রাকৃতিক সম্পদগুলোকে_ অটোমোবাইল এবং গ্যাসোলিনে রূপান্তরিত করার দিকে। অপর দিকে, জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির লক্ষ্য হচ্ছে তথ্য, দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনগুলোকে সেবায় রূপান্তরিত করা। যেমন চিকিৎসা সেবা এবং সেলফোন কভারেজের জন্য তথ্য ভা-ারকে ব্যবহার করা। এর অর্থ এই নয় যে শিল্প যুগ, জ্ঞানভিত্তিক যুগের সঙ্গে মিলে যাবে। এটি কিন্তু মোটেই তা নয়। কারণ আমাদের ম্যানুফ্যাকচারিং পণ্য সবসময়েই প্রয়োজন। এর অর্থ হচ্ছে ক্রমবর্ধমান অটোমেশন এবং ম্যানুফ্যাকচারিং (এবং পরিবেশগত প্রভাব) হতে স্বল্প মজুরি, শিল্প-সমৃদ্ধ দেশ যেমন_ চীন, ভারত এবং ব্রাজিল প্রভৃতি দেশের শিল্প অর্থনীতির কাজ জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির সঙ্গে কাজ করতে থাকবে।
বাংলাদেশও ইতোমধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মহাসড়কে সংযুক্ত হয়েছে। দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে দেড় হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সুবিধাসহ নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট নিয়ে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে গোটা দেশ। কক্সবাজারে প্রথম স্থাপিত সাবমেরিন স্টেশনের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন হবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় নির্মাণাধীন এই সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনটি। এটি চালু হলে সারাদেশের মানুষ দ্রুত গতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পাবেন। শুধু তাই নয়, এ প্রকল্পটি চালু হলে এর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নেটওয়ার্কের কারণে দেশের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের এমডি ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসেন। তিনি আরও জানান ২০১৮ সালের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্বিগুণ হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তখনো ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট প্রজন্মের জনগোষ্ঠী কর্তৃক ইন্টারনেটের ব্যবহার শেখার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা দরকার হবে। কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে যা বলেছেন তা প্রকৃত পক্ষে 'ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট' প্রজন্মের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রযোজ্য।
একটি জাতির উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ভা-ারে সহজ প্রবেশের সুযোগ এনে দিতে পারে তথ্যপ্রযুক্তি । সমগ্র বিশ্বব্যাপী বর্তমানে বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি খোলা হচ্ছে। এবং বিভিন্ন দেশ তথ্যপ্রযুক্তি প্লাটফর্ম খুলছে এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিকাশ ও উন্নতির জন্য কাজ করছে। ইতোমধ্যে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' বিনির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়েছে। আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। আধুনিক অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশ্ব যখন প্রযুক্তিগত বিপ্লব অতিক্রম করছে সেই সময় শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই ক্ষেত্রে 'ডিজিটাল ইমিগ্র্যান্ট' শিক্ষক যদি 'ডিজিটাল নেটিভ' শিক্ষার্থীদের কাছে চায় তাহলে (ইমিগ্র্যান্ট) শিক্ষকদের প্রধান কাজ হবে নিজেদেরকে পরিবর্তন করা।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী ও দলীয় সংসদ সদস্যদের কম্পিউটারবান্ধব হতে বলেছিলেন। শেখার কোনো বয়স নেই_ মন্ত্রী-এমপিদের এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তার কম্পিউটার শিক্ষক। শেখ হাসিনার কম্পিউটারে হাতেখড়ি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের অনুরোধ মন্ত্রী ও দলীয় এমপিরা খুব একটা আমলে নিয়েছেন বলে দৃশ্যমান হয়নি। এমনও দেখা গেছে কোনো একজন মন্ত্রীর নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই; কিন্তু মন্ত্রীর নামে ফেইক অ্যাকাউন্ট আছে একাধিক। সেসব ফেইক অ্যাকাউন্টে মন্ত্রীর কার্যক্রমের নেতিবাচক দিকগুলোই তুলে ধরা হয়। অথচ মন্ত্রীর কার্যক্রমের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার জন্য মন্ত্রীর নিজস্ব একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। এজন্যই কর্মশালায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আপনাদের (মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও দলীয় এমপি) পক্ষে যদি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা ও তাতে সবসময় সক্রিয় থাকা সম্ভব না হয়, তাহলে একজন পিএস (প্রাইভেট সেক্রেটারি) নিয়ে নেন, যার কাজ হবে ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেয়া।
বাস্তব কথা হচ্ছে এখন প্রচারের যুগ। নিজেদের ভালো কাজের প্রচারের মাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে। সরকারবিরোধী অপপ্রচার রুখতে এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরে তরুণদের কাছে টানতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কিভাবে কার্যকরভাবে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করা যায়, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের সামনে গত ০৭ মে, ২০১৭ তারিখে আওয়ামী লীগের নতুন নির্বাচনি কার্যালয়ে তা' উপস্থাপন করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা' শীর্ষক এই কর্মশালাটি সঞ্চালন করেছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কর্মশালায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে বলেন, 'পঁচাত্তরের পর থেকে ধারাবহিকভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এত কাজ করার পরও সরকারকে অপপ্রচার সহ্য করতে হয়। এই অপপ্রচার মোকাবিলার জন্য আমাদেরও প্রচার চালিয়ে যেতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুকের সহযোগিতা নিয়ে তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে হবে।' বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করার স্বপ্নদ্রষ্টা কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'আমরা দেশের জন্য কাজ তো করছি। এসব যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারে তুলে ধরতে পারি, তাহলে কেবল আজকের ভোটাররা নয়, ভবিষ্যতের ভোটাররাও আওয়ামী লীগের ভোটার হয়ে থাকবে।' দলের সিনিয়র নেতা ও সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে জয় বলেন, সিনিয়ররা অনেকে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা করতে চান না। তাদেরকেও প্রচার করতে হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৮:১৬

চরিত্রহীন মোড়ল বলেছেন: ভাই আপনি মন্ত্রক,তালপাতার সেপাই, আমিই মেঘদূত,দরবেশ ্‌কতোটাকার বেতনে এই লিখা লিখেন.।।আগে শুনতাম পেইড ব্লগার।।এখন আপনাদের দেখে বিশ্বাস করতে হয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.