নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জঙ্গিবাদের ভয়াবহতা

২০ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৫৮

১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে হিন্দুদের জন্য ভারত এবং মুসলমানদের জন্য পাকিস্তান— দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ১২০০ মাইলের মধ্যবর্তী ভারতীয় ভূমির দুই পাশে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে একটি অদ্ভুত রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানের দুই অংশকে সমন্বিত রাখতে ইসলামের আবেদনে ক্রমশ ভাটা পড়তে শুরু করে। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে এই অনুভূতি কাজ করতে শুরু করে যে এটি নেহায়েতই পশ্চিম পাকিস্তানের একটি উপনিবেশে পরিণত হচ্ছে। পাকিস্তানি শাসকরা ধর্মকে শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছিল। জিন্নাহ ও তার সংগঠন মুসলিম লীগের ধর্মভিত্তিক দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রস্তাব উপমহাদেশে মুসলমানদের জন্য পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি ত্বরান্বিত করে। জিন্নাহ রাষ্ট্রের যে রূপরেখা প্রদান করেন সেখানে উল্লেখ থাকে যে পাকিস্তান কখনো ইসলামি রাষ্ট্র হবে না এবং রাষ্ট্র ধর্ম থেকে নিজেকে দূরত্বে রাখবে। জিন্নাহর মৃত্যুর পর মওদুদীর মতো ইসলামি নেতারা কঠোর আরবীয় ধাঁচে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াস নেয়। জামায়াত নেতা আবুল আলা মওদুদী এবং তার সমসাময়িক মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা হাসান আল বান্না মধ্যযুগীয় রক্ষণশীল ইসলামি দার্শনিক ইবনে তাইমিয়া দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলামি রাজনীতির ধারণা প্রদান করেন—যেখানে রাষ্ট্রীয় নীতি ও প্রশাসন চালানোর জন্য মানুষ-সৃষ্ট আইন ও সংবিধান ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তাদের মতে, কোরআন ও শরিয়া আইন জীবনের একটি অব্যর্থ নির্দেশিকা—ইসলামের যেকোনো বিচ্যুতির জন্য জিহাদ অবশ্য কর্তব্য বলে ধরে নেওয়া হয়। রক্ষণশীল হানাবলী মতধারায় অনুগত ইবনে তাইমিয়া সালাফি বা মৌলবাদী ইসলামি ধারার লালনকারী হয়ে উঠেন, হয়ে ওঠেন রক্ষণশীল ইসলামি দর্শনের প্রবক্তা। এই উপমহাদেশে শরিয়াভিত্তিক রাষ্ট্রের প্রচারক ছিলেন সৈয়দ আবুল আলা মওদুদী। ১৯৪১ সালে ইসলামি মৌলবাদী দল জামায়াতে ইসলামি মওদুদী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। মওদুদীর মত ছিল, যদি পাকিস্তান রাষ্ট্র ইসলামের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে তাহলে আমাদের সর্বক্ষেত্রে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার অধিকার রয়েছে যা ছিল জিন্নাহর ধারণা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর জামায়াতে ইসলামি আমাদের স্বাধীনতার বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়। পাক সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে জামায়াতে ইসলামি রাজনৈতিক সক্রিয়তার পাশাপাশি জঙ্গিবাদের দ্বিমুখী কৌশল অবলম্বন করে। পূর্ব পাকিস্তান জামায়াত শাখার মাধ্যমে শান্তি কমিটি বা পিস কমিটি আত্মপ্রকাশ করে যাদের নিয়মিত কাজ ছিল মুক্তিবাহিনী সম্বন্ধে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে পাকবাহিনীকে সরবরাহ করা। তাছাড়া, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র সংঘ আলবদর নামে একটি আধা-সামরিক বাহিনী গঠন করতে কর্মী সরবরাহ করে। জামায়াত, মুসলিম লীগ আর নেজামে ইসলামির ছত্রচ্ছায়ায় গঠিত হয় আল শামস্্ এবং উর্দুভাষী বিহারীরা সংগঠিত হয় রাজাকার হিসেবে। জামায়াত, তার অঙ্গসংগঠন ও সহযোগী সংগঠন দ্বারা পরিচালিত সালাফি জিহাদ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে। এ সময় সালাফি জিহাদের লীলাভূমি আরব রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে অনৈসলামিক হিসেবে চিহ্নিত করে এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রে ইসলামি সংহতি বজায় রাখতে জিহাদের আশ্রয় নেওয়াকে বাধ্যতামূলক মনে করে। আরব বিশ্বের খদ্দেরতুল্য মুসলমান রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে পাকিস্তানের ইসলামি ঐক্য ও সংহতির প্রতি ক্ষতিকারক বলে মনে করে বাঙালি জনগণের স্বাধীনতা যুুদ্ধের বিরোধিতা করে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও মৌলবাদী জিহাদ কর্তৃক সূচিত গণহত্যার বিনিময়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকার ধর্মকে রাজনীতির বাইরে রাখে এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরমুহূর্তে দেশীয় রাজনীতি ইসলামি ধারায় প্রবাহিত হয় এবং তা লালিত হয় সামরিক শক্তির প্রত্যক্ষ সহায়তায়। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে যখন সংবিধান সংশোধন করে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” সংযোজিত হয় এবং ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে কার্যক্রম চালাতে অনুমতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশে সামরিক শাসকগোষ্ঠী রাজনীতির অঙ্গনে ধর্মকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠার পথ প্রশস্ত করেন। ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয় দফার সামরিক শাসকের দ্বারা আরোপিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চরিত্রকে ব্যাহত করে। সামরিক শাসকদের (প্রথম দুইজন—জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদ) ক্ষমতার লোভ বাংলাদেশে রাজনৈতিক মৌলবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতায় সালাফি জিহাদের বীজ বপন করে যার করুণ পরিণতিতে আজও দেশবাসীকে ভুগতে হচ্ছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর, বাংলাদেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে মৌলবাদী জঙ্গিরা দারুণ বিভীষিকা নিয়ে হাজির হয়। জামায়াতে ইসলামি রাজনৈতিকভাবে সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আরবীয় ভাবধারায় অসহনশীল একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামি ঐক্যজোটের উত্থানে চরম ইসলামি মৌলবাদী গোষ্ঠী ও ব্যক্তিরা শক্তি সঞ্চয় করে। বাংলাদেশে মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদের মূল নেতৃত্ব দেয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমজেবি ও জেএমবি নামক দুটি জঙ্গি সংগঠন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দেশীয় জঙ্গিদের দ্বারা ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়। এই ঘটনা দেশের প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক জনসভায় সংঘটিত হয় এবং এই হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করা। জঙ্গিরা ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট সারাদেশে একই সঙ্গে প্রায় ৫০০ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে তাদের জিহাদি দক্ষতা প্রদর্শন করে জাতিকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে। ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে দুইজন বিচারক হত্যা ছিল একই ধারাবাহিকতার চতুর্থ হামলা। ধর্মীয় জঙ্গিবাদের ভয়ঙ্কর থাবা বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনকে দু-দুবার বিধ্বস্ত করেছে—১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং ১৯৭৫-১৯৯০ সময়কালে সামরিক ধর্মীয় জোটের শাসনামলে। উভয়ক্ষেত্রে, সালাফি জিহাদের (জিহাদ তত্ত্বের) আদর্শিক গুরু আবুল আলা মওদুদী ও তার সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ধর্মীয় উগ্রবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মৌলবাদীদের মধ্যে নিঃসন্দেহে উন্মত্ততার সৃষ্টি করেছে এবং তারা সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে জামায়াত নেতারা অপরাধ সংঘটনে যে হিংস্রতার আশ্রয় নিয়েছিল তার স্বরূপ উন্মোচন করেন। এসব যুদ্ধাপরাধীকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের সম্মুখীন করা হয়। অনেকেই দোষী প্রমাণিত হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি পেয়েছে। ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধের কারণে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের সমালোচনা করেছে এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটনের জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ৬টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার সুপারিশ করেছে। তা ছাড়া বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে। কারণ জামায়াতের স্বীকৃত নীতি দেশের সংবিধানবিরোধী। ২০০৭ সালে শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইসহ জেএমবি এর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ফাঁসির পর সংগঠনটি স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল। তারা শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল আকারে হানা দিয়েছে। গত বছরের ১লা জুলাই রাতে গুলশানে হলি আর্টিজান ক্যাফেতে সংঘটিত জঙ্গি হামলার ফলে ২০ জন বিদেশি নাগরিক (জাপান, ইতালি, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের) হত্যাকাণ্ডের মতো মর্মান্তিক ঘটনা তার প্রমাণ। বাংলাদেশের এই সংকটকালে বিশ্ব সম্প্রদায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। জঙ্গি হামলা মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশ সার্থকভাবে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করতে পেরেছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির সফলতা অর্জিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের আন্তরিকতায় সমাজের সব মানুষ একাত্ম হয়েছে। প্রচার মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে ছাত্র, যুবদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে; স্কুল, কলেজের শিক্ষকদের কাজে লাগানো হয়েছে; বাবা-মাদের সচেতন করা হয়েছে; দেশের আলেম সমাজ (ধর্মীয় ব্যক্তিগণ) জঙ্গি প্রতিরোধে সমর্থন দিয়েছে, ধর্মের নামে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে এক লাখ আলেম “ফতওয়া” জারি করেছেন। উগ্রবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশ মডেল প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য মনে হওয়ায় অনুকরণের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
তবে জঙ্গিদের তত্পরতায় ভাটা পড়ায় আমাদের আত্মতৃপ্তির পরিধি সীমিত রাখতে হবে। বাংলাদেশে জঙ্গি/সন্ত্রাসী আছে—এটা সত্য। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আরো ঘটতে পারে। তাদের পেছনে অস্ত্র ও অর্থ আছে। তাদের ট্রেনিং ও রিক্রুটমেন্ট চলবে। জামায়াতিরা তাদের কট্টর ওয়াহাবি মতবাদভিত্তিক মধ্যযুগীয় সরকার চায়; গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক সরকার তাদের পছন্দের নয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদীদের অর্থ ও অস্ত্রের জোগান বন্ধ করার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপকতা সমাজে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে এবং দেশে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেয়। জঙ্গিবাদের ভয়াবহতা গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে ভীতির ফাঁদে সংকুচিত করে ফেলে। গণতন্ত্রের ফল্গুধারার অবাধ গতি চরমভাবে ব্যাহত হওয়ার কারণে রাজনীতিতে কর্তৃত্ববাদের জন্ম হয়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের বহমান ধারা ব্যাহত হয়। ধর্মীয় উন্মাদনা থেকে উত্থিত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে পরাস্ত করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায়। তাই গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নতশীল দেশে পরিণত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.