নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিরাপত্তা ও জনসম্পৃক্ততা

৩০ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৫২

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যে নিরাপত্তা এবং জনসম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের সুযোগ্য উত্তরাধিকার কন্যা শেখ হাসিনার মধ্যে জনসম্পৃক্ততার এই মহান গুণ প্রবাহিত। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২০০৪ সালের ২১ আগস্টসহ কমপক্ষে উনিশবার হত্যা প্রচেষ্টার প্রেক্ষিতে জননেত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই সতর্ক এবং কখনো কখনো শঙ্কিত। পাশাপাশি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার মূল প্রেরণা জনসম্পৃক্ততার বিষয়টিও প্রণিধানযোগ্য। এই অবস্থায় নিরাপত্তা ও জনসম্পৃক্ততা অথবা জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করার বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য। প্রধানমন্ত্রী জনসম্পৃক্ততার ওপরই বেশি গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেছেন। গত ১৫ জুলাই, শনিবার এসএসএফের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দরবারে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকেই তার মূল শক্তি এবং অনুপ্রেরণার উৎস উল্লেখ করে নিরাপত্তার নামে তাকে যেন জনবিচ্ছিন্ন করা না হয় সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকার জন্য এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এসএসএফের সদস্যরা যারা আমাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত তাদের এটুকুই বলব_ আমাদের মানুষ নিয়েই কাজ। সেই মানুষ থেকে যেন আমরা বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই সেই দিকটায় একটু ভালোভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রাজনীতি করি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আর আমাদের যদি জনগণ থেকে আলাদা করে ফেলা হয় তাহলে ওই যে বলে না জলের মাছকে যদি ডাঙায় তুলে ফেলে দেয়া হয় তাহলে কিন্তু তারা দাবড়িয়ে দাবড়িয়ে মরে যায়। আমাদের অবস্থাও কিন্তু সেরকম হয়।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যটি তিনটি প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করা সমীচীন। এগুলো হচ্ছে_ (১) বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পথ ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মতাদর্শগত ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য জনসম্পৃক্ততা প্রয়োজন। (২) উন্নয়নের মহাসড়কে বর্তমান বাংলাদেশের অবস্থান বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের থাকা প্রয়োজন, এবং (৩) বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত অবস্থানের গুরুত্বকে দেশের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য নেতৃত্ব প্রদানের জন্যও বর্তমান নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেতৃত্বে সৃষ্ট ধর্মীয় উপনিবেশ পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্লাটফর্ম ছিল মুসলিম লীগ। মুসলিম লীগ ছিল মূলত সমাজের ওপরের তলায় অবস্থিত ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক দল। কেউ কেউ এটিকে নবাবদের বৈঠকখানার রাজনৈতিক দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মুসলিম লীগের সেই অভিজাত শ্রেণিনির্ভর রাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা। শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভিত্তি হচ্ছে সমাজের সব শ্রেণি পেশার মানুষ। মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা জাগ্রত করার পিছনের রাজনৈতিক শক্তি হচ্ছে আওয়ামী লীগ। কারও কারও দৃষ্টিতে ভিন্ন কিছু ধরা পড়লেও আওয়ামী লীগ মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণিনির্ভর একটি রাজনৈতিক দল। আর কেনা জানে গণতন্ত্রের সফলতা নির্ভর করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর। মধ্যবিত্ত শ্রেণিভুক্ত জনগোষ্ঠী বেশি হলে গণতন্ত্র সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বেরিংটন ম্যুরের (১৯৬৬) সোশ্যাল অরিজিনস অব ডিক্টেটরশিপ অ্যান্ড ডেমোক্রেসি : লর্ড অ্যান্ড পিজ্যান্ট ইন দ্য মেকিং অব দ্য মডার্ন ওয়ার্ল্ড-শীর্ষক গ্রন্থে এ বিষয়ে সুগভীর গবেষণামূলক বিশ্লেষণ সনি্নবেশিত হয়েছে। যদিও তার সোশ্যাল অরিজিনস অব ডিক্টেটরশিপ অ্যান্ড ডেমোক্রেসি গ্রন্থে কৃষি সমাজ থেকে আধুনিক শিল্পায়িত সমাজে উত্তরণে ভূ-স্বামী উপরের শ্রেণি এবং কৃষক সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে চাওয়া হয়েছে, তবে এই গ্রন্থটিতে লেখক বেরিংটন ম্যুর গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপস্থিতি চূড়ান্ত পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ম্যুরের মতে মধ্যবিত্ত ছাড়া গণতন্ত্র হতে পারে না (ঢ়. ৪১৮). তার যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ম্যুর ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীন, ভারত এবং কখনো কখনো জার্মানি ও রাশিয়ার উদাহরণ তুলে ধরেছেন। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুহূর্তে এসব দেশের রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা যে কাজ হয়েছিল সেসবের ভিত্তিতেই ম্যুর এসব দেশকে তার গবেষণায় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সামগ্রিক বিবেচনায় গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে জনগণের সার্বভৌমত্ব। ঐতিহাসিকভাবে এ দেশে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বদানকারী সংগঠন হচ্ছে আওয়ামী লীগ। অতএব, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে পরিচর্যা করাও এই দলটির অন্যতম দায়িত্ব। ২০২০ সালে জাতিরপিতার শততম জন্মজয়ন্তী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপিত হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অনুযায়ী গণতন্ত্র সংহতকরণ প্রচেষ্টার সফলতার জন্য সংশ্লিষ্ট মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আওয়ামী লীগের থাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবধান দূর করে জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততার কোনো বিকল্প নেই। এসব বিবেচনায় নিরাপত্তার চেয়ে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে শেখ হাসিনা জনগণের স্বার্থে সঠিক বক্তব্যটিই দিয়েছেন।
উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে চলমান বর্তমান বাংলাদেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রমকারী একটি দেশ। স্বল্প আয়ের দেশগুলোর মধ্যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সূচকে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি লাভ করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ফিরিয়ে নেয়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে নিজস্ব অর্থায়নের পদ্মা সেতু নির্মাণ, হাতির ঝিলকে যান চলাচল ও নাগরিকদের চিত্তবিনোদনের একটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত করাসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ সমাধা করা এবং আরও উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেয়া।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার করা। আন্তর্জাতিক ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) গঠন করে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করা। এমনিভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ এখন বাংলাদেশে হচ্ছে। জাতিরপিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন বলেই এসবই সম্ভব হচ্ছে। এভাবে দেখলে দেখা যাবে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের সামনে অনেক সুযোগ আছে একই সঙ্গে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ। সরকারি-বেসরকারি প্রচেষ্টায় দারিদ্র্য কমলেও এখনো তা ব্যাপক বিস্তৃত। অধিক জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ দেশটির সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, গভর্ন্যান্স পরিস্থিতি খুবই করুণ। দেশে বিদ্যমান অবকাঠামো অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। সাম্প্রতিককালে, বিশেষত বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতি লক্ষণীয়ভাবে কমেছে। দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন খুবই তৎপর। তবে এ ক্ষেত্রে আরও অনেক কিছুই করণীয় আছে, কারণ ধূর্ত দুর্নীতিবাজরা নানা ফন্দিফিকির করে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এসব অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা এবং উন্নয়নের পথে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বর্তমান বাংলাদেশের যোগ্যতম নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য বর্তমান সরকার নিজস্ব তহবিল গঠন করেছে। এ ছাড়া গার্মেন্ট ও অন্যান্য সেক্টরে শ্রমিক অসন্তোষ লেগেই আছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। পরবর্তী ১১টি উন্নত দেশের অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ। চারদিকে এত এত সমস্যা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে চলাকে অব্যাহত রাখা তাই প্রয়োজন।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগ সেতুর মতো কাজ করছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের ব্যাপারে ১২টি বিষয়ে আলোকপাত করেছে। এর একটিতে বলা হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বৃহত্তর আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য থেকে লাভবান হওয়ার ক্ষেত্রে দেশটির জন্য একটি অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলার সময়েই আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অতএব, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযুক্ত থেকে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক উলি্লখিত সুযাগ কাজে লাগানোর জন্যও বাংলাদেশের জন্য যে নেতৃত্ব দরকার তাও শেখ হাসিনার দ্বারা সফলতার সঙ্গে পূরণ করা হচ্ছে। ১৯৭৫ পরবর্তীকাল থেকে এ পর্যন্ত যা আর কারও পক্ষে সম্ভব হয়নি।
এসএসএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণে শেখ হাসিনা বিপদের সময় এবং দৈনন্দিন জীবনে তার প্রতি জনগণের ভালোবাসা ও আস্থার কিছু ঐতিহাসিক উদাহরণ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ এ বাবা-মা-ভাইদের হারিয়ে যখন একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ি তখন এই জনগণের ভালোবাসাই আমাকে শক্তি জোগায় নতুন করে বাঁচার প্রেরণা দেয়। এটা সবসময় কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষের জন্যই কিন্তু কাজ করি। আমার ওপর যখন গ্রেনেড হামলা হয়েছে আমার সঙ্গে থাকা মানুষ সেই মানব ঢাল রচনা করেই কিন্তু আমাকে রক্ষা করেছে। তবে আমি সব সময় এটাই বিশ্বাস করেছি আল্লাহ মানুষকে সবসময় কিছু কাজ দেন সেই কাজটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বোধ হয় আল্লাহই রক্ষা করে যান। নইলে একবারে মুখোমুখি আমি দেখেছি-গুলি চলছে। একবার দুবার নয়, বার বার। আমার গাড়ির ওপর বোমা মারা হয়েছে। আর গ্রেনেড হামলা তো প্রকাশ্য দিবালোকে হয়েছে, সবাই দেখেছে। ট্রেনে গেছি সেখানে হামলা এবং গুলি এমন কি পাথর পর্যন্ত ছুড়ে মারা হয়েছে। এভাবে বহুবার বহু ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যদিয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে। আল্লাহ যেভাবেই হোক প্রতিবার আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার নিজের জন্য যতটা না চিন্তা হয় এ জন্য আমার নিরাপত্তার জন্য যারা থাকেন তাদের জন্য সব থেকে বেশি চিন্তা হয়। যে কারণে আমি প্রতিদিন প্রতিবার নামাজ পড়ে যখন দোয়া করি-আমার ছেলেমেয়ে-সন্তানের জন্য যেমন দোয়া করি দেশবাসীর জন্য দোয়া করি, সেই সঙ্গে সঙ্গে আমার জন্য যারা নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন তাদের জন্যও আমি সব থেকে বেশি দোয়া করি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এটুকুই চাই ক্ষমতাটা আমার ভোগের নয়, ক্ষমতাটা হলো দেশের কাজের। আমি যেন সঠিকভাবে সঠিক চিন্তা করে দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে পারি। খোদা যেন আমাকে সেই শক্তি দেন। আর আমার সঙ্গে যারা কর্মরত শুধু আমার নিরাপত্তার জন্য নয়, আমার সঙ্গে যারা কাজ করেন সবাইকে যেন আল্লাহ নিরাপদ রাখেন এবং সবাইকে যেন সঠিকভাবে কাজ করার সুযোগ দেন এবং সবার আশা-আকাঙ্ক্ষাই যেন পূরণ হয় এই দোয়া আমি প্রতিদিন সবার জন্যই করে থাকি। তিনি বলেন, আমি অনেক সময় অনেক কিছু মেনে চলি কারণ যখন চিন্তা করি আমি হয়তো বেঁচে যাব_ আমাকে আল্লাহ যেটুকু কাজ দিয়েছেন সেটুকু হয়তো করব কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে যারা থাকে (নিরাপত্তায়) তারা যেন বিপদে না পড়ে। নইলে আমি সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরেছি। আর বিরোধী দলে থাকতে আমাকে এতটা নিরাপত্তা কে দেবে। যেটুকু নিরাপত্তা ছিল তা যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা তো কেড়ে নেয়। কাজেই আমি আমার পার্টির মানুষ, গ্রামের লোকজন তাদের নিয়ে চলেছি। গ্রামের সাধারণ মানুষের অবস্থা আমার জানা আছে। বার বার যখন আঘাত এসেছে দেখছি, কিছু না কিছু মানুষের জীবন চলে গেছে। কাজেই সে জন্যই সবসময় এটা মনে হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠন করি তখন সংবিধানকে অনুসরণ করেই আমরা সরকার পরিচালনা করি। ফলটা দেশের মানুষ ও জনগণ পাচ্ছে। তিনি বলেন, কারণ আমরা ওয়াদাবদ্ধ জনগণের কাছে, আমাদের রাজনীতিটাই এ দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা। তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা, উন্নত জীবন দেয়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের অধিকারের কথা বলেই জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই তিনি এ দেশের মানুষের দুর্দশা নিজের চোখে দেখে দেখে সংগঠন করে মুষ্টিবদ্ধ চাল ভিক্ষা করেও এ দেশের মানুষের অন্ন যোগের চেষ্টা করেছেন। নিজের গোলার ধান, পরনের কাপড়, বই-খাতা তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫৪ সালে তিনি মন্ত্রীর মেয়ে ছিলেন। তার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি রাষ্ট্রপতির মেয়ে ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ছিলেন তিনি নিজে দুবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন_ কাজেই দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়ার থাকলে বহু আগেই করতে পারতেন। যা তিনি করেননি। তিনি বলেন, অন্তত বাংলাদেশের মানুষের মাথা হেঁট করিনি। এটুকু অন্তত গর্বভরে বলতে পারি। বরং মাথা উঁচু হয়েছে।
বাংলাদেশ আজকে সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। যারা বাংলাদেশকে এক সময় অবহেলার চোখে দেখতো তারাও এখন সম্মানের চোখে দেখে। এটাই বাঙালির প্রাপ্য ছিল যেটা আমরা আবার তাদের জন্য অর্জন করতে পেরেছি। এসব অর্জনের মূল প্রেরণা হচ্ছে জনসম্পৃক্ততা। দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনার কথা অনুভব করতে পারা, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা ও বাস্তবায়ন করতে পারা একজন মহান জনপ্রিয় নেতার পক্ষেই সম্ভব।

প্রফেসর ড. অরুণ কুমার গোস্বামী: পরিচালক, সাউথ এশিয়ান স্টাডি সার্কেল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.