নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রধানমন্ত্রীর ৬ দফা

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২১

চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মুসলিম দেশগুলোর সংস্থা ওআইসির কনট্যাক্ট গ্রুপের বৈঠকে প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা প্রকট হওয়ার আগেই সমাধানের জন্য ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এক হয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। সেই সঙ্গে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
কনট্যাক্ট গ্রুপের ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ আল ওথাইমেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন।
বৈঠকের শুরুতেই শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে মুসলিম ভাই-বোনেরা জাতিগত নির্মূল অভিযানের মুখোমুখি হয়েছে। রাখাইনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের চালানো সামরিক অভিযান বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। এ ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযানের আমরা অবসান দেখতে চাই। মুসলমান ভাইদের এ দুর্দশার অবসান চাই। এ সংকটের সূচনা হয়েছে মিয়ানমারে এবং সেখানেই এর সমাধান হতে হবে।
শেখ হাসিনার ছয় দফা প্রস্তাবনায় বলা হয় এ মুহূর্তে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে; নিরপরাধ বেসামরিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি করা যেতে পারে, যেখানে সুরক্ষা দেওয়া হবে; বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত সব রোহিঙ্গা যেন নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে; রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কফি আনান কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে; রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে চিহ্নিত করার যে রাষ্ট্রীয় প্রপাগান্ডা মিয়ানমার চালাচ্ছে, তা অবশ্যই বন্ধ এবং রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে না ফেরা পর্যন্ত তাদের জরুরি মানবিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে হবে ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশগুলোকে।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা ‘বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী’ বলে দাবি করছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। অথচ ঐতিহাসিক নথিপত্র বলছে, রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যে বসবাস করে আসছে শত শত বছর ধরে। ২৫ আগস্ট থেকে চার লাখের বেশি মানুষ মিয়ানমার থেকে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এ শরণার্থীদের ৬০ শতাংশই শিশু। আপনারা হয়তো মিডিয়ায় দেখেছেন, রোহিঙ্গারা যেন তাদের নিজের দেশে ফিরতে না পারে সেজন্য সীমান্তজুড়ে ভূমি মাইন পেতে রাখছে মিয়ানমার।
শেখ হাসিনা বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এ সংখ্যা ১০ লাখে ঠেকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এটা এক অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয়। আমি নিজে তাদের কাছে গিয়েছি, তাদের মুখ থেকে, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ভয়াবহ দুর্ভোগের বিবরণ শুনেছি। আমি বলব, আপনারা সবাই আসুন, এ শরণার্থীদের মুখ থেকে শুনে যান, মিয়ানমারে কী রকম নির্মমতা চলছে।
রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে গেলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দিচ্ছে না বলে মুসলিম দেশের নেতাদের জানান শেখ হাসিনা। সে সময় রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় ওআইসির সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে ওআইসির যে কোনো উদ্যোগে অংশ নিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে।
অন্যদিকে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মিয়ানমারকে বলছি, আপনাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে হবে। তাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আজকে যারা বিপদে পড়েছে তাদের সাহায্য দেওয়া জরুরি। ১৬ কোটি মানুষকে যদি খাওয়াতে পারি, তবে ওদের পারব না? বাংলাদেশের মানুষ অনেক উদার। তারা একবেলা না খেয়ে ওদের খাওয়াবে।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, মিয়ানমারে যে ঘটনা ঘটেছে দলে দলে মানুষ বাংলাদেশে এসেছে। মানবিক কারণে নির্যাতিত মানুষকে আশ্রয় দিতে হয়েছে। আমরাও তো পাকিস্তানের আক্রমণে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলাম। আমাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওআইসির মিটিংয়েও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারাও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। আমি বলেছি বিশ্বে মুসলমানরাই কেন শরণার্থী হবে? তারাও আমার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। বাংলাদেশের নাগরিকদের শরণার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত থেকে সব শরণার্থী ফেরত এনেছিলেন। আর কোনো দেশ এত দ্রুত ফেরত আনতে পারেনি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আয়োজিত পরিবেশবিষয়ক বৈশ্বিক চুক্তিসংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন প্রশ্নে আইনগতভাবে সম্পাদিত দৃঢ় ও কার্যকর বৈশ্বিক চুক্তিগুলোকে সামনে এনে সুবিচার নিশ্চিত এবং ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে উন্নত দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দায়ীদের স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত চিহ্নিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণ এবং দেশগুলোকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক বাধ্যবাধকতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, পরিবেশ সম্পর্কিত বৈশ্বিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময় ক্ষতিগ্রস্ত ও দরিদ্র দেশগুলোকে বিবেচনায় নিতে হবে। শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে পরিবেশ সম্পর্কিত ওই বৈশ্বিক চুক্তি সচল রাখতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ অন্যতম অধিক ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশ। এ ইস্যু সমাজে শান্তি-স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ ও বৈষম্য নিরসনের বৃহত্তর পরিসরে বিবেচনা করতে হবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


মানুষ অনেক কস্টে শেখ সাহেবের মুলা, ৬ দফা ভুলেছে, সেই মুলার চাষ আবারো শুরু হচ্ছে?

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৪০

নিরাপদ দেশ চাই বলেছেন: বাংলাদেশের স্বাধীনতার মতই আরাকানের স্বাধীনতাও এই সমস্যার একমাত্র সমাধান।

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫

নিরাপদ দেশ চাই বলেছেন: বার্মাকে এখনই যদি টাইট না দেয়া হয় তবে ভবিষ্যতে তারা আরেক উত্তর কোড়িয়ায় পরিনত হবে। বার্মার সামরিক জান্তাদের যেসব কার্যকলাপ প্রতিদিন অনলাইনে আসছে তার সাথে উত্তর কোড়ীয়ার শাশকদের যথেষ্ট মিল আছে। জাতিসংঘের এইসব নাক বোচাদের নিয়ে ভাববার সময় হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.