নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ ভাল নয় কিন্তু মন ভাল।

মোস্তফা সোহেল

আমি আমার মত করে অন্যদের যতটুকু ভালবাসি অন্যরা আমাকে ততটুকু ভালবাসে না।

মোস্তফা সোহেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প ** বুকের ব্যাথা

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:০০




মৃত্যু এক আশ্চর্য জিনিস,কত সহজেই সে মানুষের বয়সকে থামিয়ে দেয়।রাহাতের ছবিটার দিকে তাকিয়ে এই কথাটাই ভাবছিলেন সেলিনা বেগম।
স্মৃতিচারনের সময় সেলিনা বেগমের মনে হয় এই তো সে দিন অথচ ছত্রিশটি বছর পার হয়ে গেছে!রাহাতের বয়স সেই আঠারোতেই থেমে আছে।
সেই মায়া ভরা দু চোঁখ ঝাকড়া চুল সব একই রকম আছে একটুও পরিবর্তন হয়নি।সারা দিনই সেলিনা বেগমের মাথায় রাহাতের কথায় ঘুর পাক খায়।
রাহাতের জন্য কেঁদে কেঁদে এখন আর চোঁখের জলও অবশিষ্ট নেই।যখন খুব বেশি ছেলেটার কথা মনে পড়ে তখন রাহাতের এই ছবিটা বের করে দেখেন সেলিনা বেগম।ছেলেটা বেঁচে থাকলে নিশ্চয় বিয়ে করত,নাতি পুতিরও মূখ দেখতেন তিনি।তা আর হল কই,কিছু নরপিচাশের দল তার ছেলেটাকে বাঁচতে দেয়নি।
শকুনের মত খুবলে খেয়েছে তাকে।সেলিনা বেগম মনে মনে ফিরে যান ছত্রিশ বছর আগে।কোন এক বর্ষার দিনে তার কোল জুড়ে এসেছিল রাহাত।
তারপর হাসতে খেলতে একদিন বড়ও হয়ে গেল।মা ছাড়া কিছুই বুঝত না ছেলেটা।মায়ের হাতের পুই রান্না খুবই পছন্দ করত রাহাত।
সেলিনা বেগম তাই আজও ঘরের পেছনে পুই চারা রোপন করেন।মাচায় লকলকিয়ে বেড়ে ওঠে পুই গাছ গুলি।
এক সময় আবার শুকিয়েও যায়।ছেলে না থাকায় পুই মাচা থেকে কচি পুই ডাটা গুলো কেটে আর রান্না করা হয় না তার।

সেবার কেবল এইচ এসসি পরীক্ষা দিয়েছে রাহাত।একদিন মায়ের কাছে বায়না ধরল ভারতে যাবে খালা বাড়ি বেড়াতে।মা বললেন,এখন সীমান্তে খুব কড়াকড়ি চলছে তোর যাওয়ার দরকার নেই।কিন্তু কে শোনে কার কথা ছেলে যাবেই।একদিন গুছিয়ে বেরিয়েও পড়ল রাহাত।সেলিনা বেগম কি আর জানত এই যাওয়াই তার ছেলের শেষ যাওয়া হবে।একদিন পরেই খবর এলো রাহাত আর এই পৃথিবীতে নেই।সীমান্তে বি সি এফের গুলিতে মারা গেছে সে।কত সহজেই বলা হয়ে গেল কথা গুলি।সন্তান হারানোর যে কি ব্যাথা তা আজও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন সেলিনা বেগম।সীমান্তে এই বি সি এফরা কত মায়ের বুক খালি করেছে তার ঠিক নেই।একটা পিপড়া মারতে গেলেও মানুষের বুক কাঁপে।অথচ সীমান্তে তারা মানুষ মারে পাখির মত।সেলিনা বেগম মাঝে-মাঝে ভাবেন এই যে সীমান্তে বি সি এফরা গুলি করে নিরীহ মানুষ মারে এদের বুক কি এতটুকুও কাঁপে না?ওদের কি ঘরে মা-বাবা সন্তান নেই।এভাবে আর কত মায়ের বুক খালি করবে ওরা?উত্তর গুলো সেলিনা বেগমের জানা নেই।রাহাত মরে গিয়ে ওর একটা লাভই হয়েছে,ও আর বুড়ো হবে না।রাহাতের বয়স সেই আঠারোতেই থেমে থাকবে।কিন্তু ছেলেটার মৃত্যুতে সেলিনা বেগমের তো কোন লাভ হয়নি।বরং প্রচন্ড একটা ব্যাথা বুকের ভেতরে তাকে বয়ে বেড়াতে হয় সব সময়।এ ব্যাথাটা তাকে বয়ে বেড়াতে হবে আমৃত্যু পর্যন্ত।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:০৭

বিজন রয় বলেছেন: এটা কি গল্প? না কোন অনুভূতির প্রকাশ?

যে যাই হোক আন্তরিকতার ছোঁয়া আছে।
+++

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: শিরোনামেই তো দিয়েছি গল্প।ধন্যবাদ দাদা

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৩

অমিত অমি বলেছেন: সজনে ডাটা গুকিয়ে গেছে
ঝড়ে পড়েছে লতাটাও।
খোকা তুই কবে আসবি???

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৪

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খোকা হয়তো আর কখনই আসবে না

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫

সত্যের ছায়া বলেছেন: শালার আমরাই মরি ওরা মরে না? সীমান্তে এত মদ, চোরাচালান কিভাবে আসে?
ও আচ্ছা ওরা আমাদের দাদা! ওদের খ্যাপাতে নেই। শুধুই জি হুজুর করব!! না হলে ত, দেশ চলবে না, দল চলবে না আর ক্ষমতা?

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:১১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ঠিক কথা বলেছেন ভাই কিন্তু যাদের বোঝার কথা তারাই তো বোঝে না

৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৩

মোঃ সাইফুল্লাহ শামীম বলেছেন: কষ্ট লাগলো। সন্তান হারানো মায়ের জন্য ভীষণ কষ্টের।

৫| ০৩ রা মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৫

এম এস আরেফীন ভুঁইয়া বলেছেন: খুব সুন্দর উপস্থাপন করেছেন,
"একদিন পরেই খবর এলো রাহাত আর এই পৃথিবীতে নেই।সীমান্তে বি সি এফের গুলিতে মারা গেছে সে"। সন্তান হারা মায়ের কষ্টের গল্প, খুব বেদনাদায়ক।

০৫ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:০০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ধন্যবাদ আরেফিন ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.