নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ ভাল নয় কিন্তু মন ভাল।

মোস্তফা সোহেল

আমি আমার মত করে অন্যদের যতটুকু ভালবাসি অন্যরা আমাকে ততটুকু ভালবাসে না।

মোস্তফা সোহেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

থাকলে একটা সুন্দর মন ঘুরে আসুন সুন্দর বন

২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৫৯


করমজলের ভেতরে কাঠের রাস্তা।

নতুন জামা কাপড় পড়ে পুরা দুই ঘন্টা অপেক্ষা করার পরে এলো আমার সুন্দর বনে যাওয়ার পিকনিকের গাড়ি।অপেক্ষা যে বড়ই বিব্রতকার তা আরেকবার হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। ভ্রমন বিষয়ে আমি কখনও লিখিনি। গত বছরে কুয়াকাটায় গিয়েছিলাম সেটা নিয়ে লিখব লিখব করে এই যে বছর পার করে দিলাম। তবুও লেখা হয়নি। ৯টায় আমাদের বাস ছাড়ল মংলা সুন্দর বনের উদ্দেশ্য। অফিস কলিকদের সাথে এটি আমার দ্বিতীয় আনন্দ ভ্রমান। যাই হোক প্রিয় তপুদার পাশেই একটি সিট পেয়ে আমার যাত্রার আনন্দ আরও বেড়ে গেল।
বাসের সিটে বসতে না বসতেই ইব্রাহীম ভাই আমার কাছে হাজির। লটারি হবে তার জন্য আমাকে টিকিট কিনতে হবে। যদিও আমি লটারি কাটা পছন্দ করি না তবুও ইব্রাহীম ভাইকে না করতে পারলাম না। বলাম ভাই আপনার অনারে তিনটি টিকিট কাটলাম। টিকিট তিনটি তপুদার কাছে দিয়ে দিলাম। আমার কপালে কখনও লটারি ভাগ্য ভাল নাই। তাই নিজের ভাগ্য আর পরীক্ষা না করার জন্যই টিকিট গুলি হস্তান্তর করে দিলাম।
চারপাশের প্রকৃতি দেখতে দেখতে আর তপুদার সাথে গল্প করতে করতে ঘন্টা দুই পরেই আমরা মংলাতে প‌ৌছে গেলাম।
বাস থেকে নেমে দেখি আরও অনেক পিকনিকের বাস চারিদিকে । অনেক দূর থেকে লোকজন এসেছে । একটি বাসের সামনে ব্যানার দেখলাম তারা বগুড়া থেকে এসেছে। মনে মনে ভাবলাম যাক আমাদের ওদের মত এত জার্নি করা লাগে নি। পিকনিকে মংলা সুন্দর বন যাচ্ছি এতটুকুই জানা ছিল। ওখানে গিয়ে জানলাম আমরা সুন্দরবন কমরজলে যাচ্ছি।করম জলের কথা আগেই কামাল ভাই ওরফে সাদা মনের মানুষের লেখার মাধ্যমে জেনেছিলাম।
করমজলের কথা শুনেই আমার কামাল ভাইয়ের কথা মনে পড়ে গেল।
আমার কাছে কোন ক্যামেরাও ছিল না ছিলনা কোন ভাল মোবাইল যার মাধ্যমে আমি ছবি তুলব। সুন্দর স্থানে বেড়াতে গিয়ে ছবি না তুললে খারাপই লাগে।
টলার আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। আমরা সকলেই টলারে উঠলাম করমজলের উদ্দেশ্য রওনা হওয়ার জন্য। সবাই টলারের ছাদে উঠতে চাইছে ভেতরের দিকে কেউ বসতে চাইছে না। আমি ভেতরেই বসে বাইরের প্রকৃতি দেখছিলাম। ২৫-৩০ মিনিট পরে আমরা করমজলে প‌ৌছে গেলাম। এর মধ্যে আহাদ ভাইয়ের মোবাইল নিয়ে নেমে পড়লাম ছবি তুলতে। আহাদ ভাইকে বললাম আমকে যেন ছবি গুলি ফেসবুকের ইনবক্সে দেয় কিন্তু তিনি আজ পর্যন্ত তা দিতে পারেন নি। তিনি নাকি ফেসবুকের ইনবক্সে কি ভাবে ছবি দিতে হয় জানেন না!


করমজলের ভেতরে প্রথমে ঢোকার রাস্তা।

টলারে উঠেই আমাদের সকলের খুব ক্ষিদে পেয়েছিল। তাই প‌্যাকেট করে আনা বিরিয়ানি সবাইকে দিতেই আমিও সবার মত খেতে বসে গেলাম। খাওয়া শেষে খাবারে প‌্যাকেট নদীটাকে ডাষ্টবিন মনে করে তার মধ্য সকলে ছুড়ে ফেলছিল। আমার খাওয়া শেষে আহাদ ভাইকে বললাম ভাই কি করব? আহাদ ভাই বলে কি আর করবেন সকলে যা করছে তাই করুন। শেষে আমিও খাবারের খালি প‌্যাকেট নদীর জলে ভাসিয়ে দিলাম। পেছনে তাকিয়ে দেখি সাদা প‌্যাকেট গুলি সব নদীতে ভাসছে। আমাদের পরিবেশ সচেতনাতা দেখে সত্যি অবাক লাগছিল।


প্রিয় তপু দা।

করমজলে নেমে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। চারিদিকে মানুষ আর মানুষ। বেশির ভাগ দেখি ছবি তোলায় ব্যাস্ত। মনে হচ্ছে এরা সুন্দর বনে শুধু ছবি তোলার জন্যই এসেছে।সামনে এগিয়ে যেতেই হরিন আর কুমিরের বাচ্চা দেখলাম। এখানে কুমিরের চাষ হয়।একটা পুকুর পাচিল দিয়ে ঘেরা তার মধ্যে একটি বড় কুমিরকে ঘুরে বেড়াতে দেখলাম।
আরেকটু সামনে এগিয়ে যেতেই কাঠের সেতু দেখালম বনের ভেতরে ঢুকে গেছে।আমি আর তপু দা সেই সেতু দিয়ে হাটতে লাগলাম। প্রচুর মানুষ সবখানেই। আমাদের দলের সবাই যে যার মত ঘুরতে লাগল। কাঠের সেতু দিয়ে হাটছি তো হাটছি ফুরাচ্ছেই না। তপু দা বলল, কি জন্য আসলাম কি আছে এখানে দেখার খালি গাছ ছাড়া। আমি তপু দাকে বললাম একটি বিষয় খেয়াল করেছেন আমরা অনেকক্ষণ ধরে হাটছি অথচ এই কাঠের সেতু শেষই হচ্ছে না আমার মনে হয় এটিই পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় কাঠের সেতু। তপু দা বলল আমারও তাই মনে হয়। তাহলে মনকে এই বলে শান্তনা দিন যে সুন্দর বনে এসে আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাঠের সেতুটি দেখে গেলেন। আমরা সামনে এগিয়ে গেলাম। এই প্রথম বনে একটি বাদর দেখলাম।বাদটিকে দেখে খুবই অসহায় মনে হচ্ছিল। এক সময় আমরা ওয়াচ টাওয়ারের কাছে প‌ৌছে গেলাম। এখানেও প্রচুর মানুষ।ভিড় ঠেলে আমরা উপরে উঠলাম। চারিদিকে তাকিয়ে সবুজ অরন্য ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ল না।আমরা ফিরতি পথ ধরলাম। তিনটার দিকে আমরা রওনা দিলাম করমজল থেকে।


করমজলের হরিন।


হরিনকে খাবার খাওয়াচ্ছে দর্শনার্থীরা।


শান্তনু দার সাথে আমি তবে আমি কোনটা কইতাছি না পারলে বুইঝা লন।


ফেরার সময় পথের ধারে ফুটে থাকা নাম না জানা ফুল।


ফুলের ছবি কিন্তু আমি তুলছি হু।

যে ভাবে মানুষ করমজলে যাচ্ছে আর আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করছে তাতে করে সুন্দর বনের কি পরিমান ক্ষতি হচ্ছে তা আমরা হয়তো আচ করতে পারব না। তবে ভবিষ্যতে যে এ কু প্রভাব সুন্দর বনের উপর পড়বে না তা বলা যাবেনা।
সুন্দর বনে যারা বেড়াতে যায় তাদের উপর কড়া নজর দারি করতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা নিষেধ করা ছাড়াও সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নানান উদ্যেগ সরকারকেই নিতে হবে।
আমরা যারা সুন্দর বনে যায় তারা সকলেই একটি সুন্দর মন নিয়েই ঘুরতে যায়। কিন্তু আমরা সেই সুন্দর মনের পরিচয় সুন্দর বনের সাথে দেখাতে পারিনা।
আপনারাও সুন্দর বনে ঘুরে আসুন। আমাদের সুন্দর বন আসলেই একটি সুন্দর বন।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:৪৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ছবি ও বিবরণ খুব সুন্দর হয়েছে ।
নাম না জানা ফুলটি ল্যান্টিনা ।
সুন্দর বনের প্রধার আকর্ষন
উনার সাক্ষাত পান নাই ?


শুভেচ্ছা রইল

২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:৪৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাইয়া ধন্যবাদ। ফুলের নামটি জেনে ভাল লাগল।
আর বাঘ মামার দেখা পাইলে তো আর এই লেখা লিখতে পারতাম না।

২| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



সুন্দর বন নিয়ে সেরকম মান সম্মত কোন পোস্ট চোখে পড়ে না।

ভ্রমন বৃত্তান্ত জানানোয় অনেক ধন্যবাদ।

২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:০৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ নকিব ভাই।

৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:০৭

জুন বলেছেন: সুন্দরবন তো হবে এমন মোস্তফা সোহেল, আমার ক্যামেরায় তোলা দেখুন জ্যান্ত একটা ঢাউশ কুমির কেমন তীরে উঠে রোদ পোহাচ্ছে :)


তবে আপনার ছবিগুলোও অনেক অনেক ভালোলাগলো ।
হায় সুন্দরবন :(
+

২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:১৪

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: জুন আপু,আমি কিন্তু বলেছি আমার ক্যামেরা নাই। আর আমরা সুন্দর বন বলতে করমজলের একটি নির্দিষ্ট জায়গাতেই গেছি। টলারে করে গভীর সুন্দর বনে যাওয়া হয়নি।
আপনার তোলা ছবিটি আসলেই খুব সুন্দর ।

৪| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৩৩

সঞ্জয় নিপু বলেছেন: ছোট বেলার কবিতার কথা মনে পড়ে গেল,
১০ জনে করে যাহা, আমি ও করিব তাহা, নদীতে প্যকেট ফেলে ভাল করেছেন, মাছেদের খাদ্যের যোগান হইল। তবে এই সব উদ্যোগ সরকার নিবে না আমাদের মধ্য থেকেই সচেতনতা জাগ্রত করতে হবে, তা না হলে সরকারের বাপের ও সাধ্য নাই কিছু করার। আমরা ভাবি সবাই করে তাই আমি ও করি ! আমি একা কি করব ? তাই না? এই ভাবনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
এটা আমাদের দেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ত্ব কে করল না সেটা না দেখে বরং উনাকে ও সচেতন করতে হবে।
যাহা হউক, ভ্রমন পোষ্ট আমার পছন্দ পড়লাম।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৪১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা।

৫| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫৩

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: অসাধারণ বর্ণনা। অনেক ভালো লেগেছে।

২০ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৫১

সুমন কর বলেছেন: খাবারের প‌্যাকেটগুলো জলে ফেলে ভালো করেন নি........হাহহাহাহা


পোস্ট ভাল লাগল। কবে যাবো,,,,আহা রে !!

২০ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:১৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: যাবেন নিশ্চয় একদিন।

৭| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভাললাগা +++

২১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:১৪

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ধন্যবাদ আপু

৮| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: খুব চমৎকার বর্ণনা ও ছবি।

ধন্যবাদ ভাই মোস্তফা সোহেল।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:১৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ হেনা ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.