নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তিন দশক যাবত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে প্রবাসী। \nতবুও আমি বাংলায় গান গাই

মোঃমোজাম হক

ভাল লাগে জোছনা রাতে মেঘ হয়ে আকাশে ভাসতে।

মোঃমোজাম হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেখে এলাম পর্বতের শহর আল-আবহা পর্ব -৩

২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:২৭


এরপর আমরা দেখতে বের হলাম আল-আবহা তথা সৌদি আরবের সর্বোচ্চ টিলা সোঁদা পাহাড়।শহর থেকে আঁকাবাঁকা পিচঢালা পথে রওয়ানা দিলাম।পাহাড়ী রাস্তায় কোথাও গাড়ী নিচে নেমে যাচ্ছে কোথাও বা উপড়ে।চলতে চলতে আমরা গিরিপথের এক স্থানে গাড়ী থামাতেই এক বিশাল আকারের আরবিয়ান বেবুন লাফ দিয়ে এসে গাড়ীর বনেটে বসে পড়লো। আমরা ভয়ে বেশ কিছুক্ষণ গাড়ীতেই বসে রইলাম।একটু পর নিজ থেকেই লাফিয়ে নেমে গেল। আমি তখন ভয়ে ভয়ে গাড়ী থেকে বের হয়ে দেখি বেবুন অর্থাৎ বানরের মেলা,রাস্তার আসে পাশে এবং পাহাড়ের গায়ে গায়ে।আমিতো ভয়ে কাপছি,সঙ্গী মধুমিতা ভাইও।

আমরা যেখানে নেমেছি সেখান থেকে বেশ ভালবাবে দেখা যায় থিরা পাহাড়ের চুড়া থেকে নিচে রিজ আল-আলমা গ্রামে নামার সর্পিল পথ।এতো ঊচূ থেকে নেমে আসার রাস্তা দেখে যেকোন লোকেরই ভয় লাগার কথা।আমার আগের অভিজ্ঞতায় নিচে নেমে যাওয়া সহজ হলেও ঊপড়ে ফিরে আসা হবে ভয়াবহ।তাই সবিনয়ে আমরা ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম।
নিচে নেমে পাহাড়ের পাদদেশে রিজ আল আলমা গ্রাম সমতল ভুমিতে ৪০০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী প্রাচীন প্রসাদ আল-আলোয়ান সম্পর্কে জেনেছিলাম এই মধুমিতা ভাইয়ের পোষ্ট থেকে।এখান থেকে পড়ে নিতে পারেন

একটু এগিয়ে গিয়েই রাস্তার বাকে ল্যান্ডিং এড়িয়াতে বেশকিছু পিকাপ ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নেমে পড়লাম।সেখানে পাহাড়ি বেদুরা তাদের রংবেরঙের পোষাক গায়ে পাহাড়ী মধু ,নানান রকমের মশল্লা এবং ধুপ বিক্রির জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের প্রত্যেকেরই কোমড়ে রয়েছে জাম্বিয়াহ(বিশেষ রকমের ড্যাগার)। এই ছুরি নিয়ে একটি যুবকের সঙ্গে আমরা বেশ মজাও করে নিলাম।

এরপর চলে এলাম রোপকার বা কেবলকার ষ্টেশনে,এখান থেকে ১৪টি গাড়ী তিনটি স্থানে যাত্রীদের নিয়ে যায় যা সৌদি আরবের মধ্যে সবচে বেশী দূরত্বের কেবল রাস্তা।আমার খুঊব ইচ্ছে ছিল এই ঝুলন্ত গাড়ীতে করে আল-হাবালা গ্রামে যাওয়ার।

এই হাবালা গ্রামটি সম্পর্কে অনেকদিন আগেই জেনেছিলাম।হাবল আরবী শব্দার্থ হচ্ছে দড়ি।এই গ্রামের বাসিন্দারা বিখ্যাত কাহতানী বংসের একটা ক্ষুদ্র অংশ এবং এরা বহু বছর আগে তুর্কি রাজার ভয়ে পালিয়ে এসে ৪০০মিটার খাড়া পাহারের গায়ে অবস্থান নেয়।সেখানে যেতে হলে একমাত্র দড়ি বেয়ে যেতে হতো। এই জাতি যুগের পর যুগ এই ভুতুরে স্থানেই লোক চক্ষুর আড়ালে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করে যাচ্ছিল।কিন্তু খনি গভেষনার জন্য একটি দল যখন সেদিকে হেলিকপ্টারে নিয়ে ঘুড়ছিল তখন তাদের নজরে আসে এই গ্রামটি। পরবর্তিতে বাদশা ফয়সাল তাদেরকে উদ্ধার করে অন্যত্র স্থানান্তর করেন।

এছাড়াও কেবলকারে করে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ পাহাড় (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ কিঃমিঃ উপর) সোঁদা পাহাড়ের সৌন্দর্যও উপভোগ করা যায়। বছরের বেশিরভাগ সময়ই এই সোঁদা পাহাড় মেঘে ঢাকা বা কুয়াসাছন্ন থাকে।আমার ক্যামেরায়তো ছবিই আসছিলনা।

আবার এই পাহাড়ের ফাকেই আসির পাদদেশে ১৫কিঃমিঃ দীর্ঘ একটি বিশাল হ্রদ রয়েছে,যা নাকি ঝরনাকারে ছরিয়ে পড়ে।

আমার এসবের কিছুই দেখা হলোনা , কারন সেদিন কেবল কার বন্ধ ছিল।সম্ভবতঃ ছুটির দিনে পর্যটকদের জন্যই এরা বেশী ব্যবহৃত হয়।তাই দূর থেকেই কুয়াচ্ছন্ন পাহাড়ের দৃশ্য দেখে দুধের স্বাধ ঘোলে মিটিয়ে এলাম।

আর হ্যা,এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্যের কাছে হয়তো এটা নস্যি।কিন্তু দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থেকে আমি বালু আর সমুদ্রের পানি ছাড়া কিছুই দেখিনি।এখানে সবুজ পাহাড় /ঠান্ডা আবহাওয়া দেখে আমি সত্যিই অবাক।
আপাততঃ এটাই শেষ পর্ব।
যদি আবারো কখনো আল-আবহা যাই এবং কেবল কারে চড়ে প্রাচীন প্রসাদ আল-আলোয়ান, মালহা গ্রামে বা রিজ আল আলমা অথবা থিরা পাহাড়ের সর্পিল রাস্তা ভ্রমন করি তবে কথা দিচ্ছি, আবারো লিখবো।

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: মোঃমোজাম হক ,




ঝকঝকে ছবিতে আল-আবহা ভ্রমনের আবহাওয়ায় মজিয়ে রাখছেন ।
সাথে আছি নতুন ভ্রমনের কাহিনী শুনতে ।

২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪

মোঃমোজাম হক বলেছেন: সাথে থাকার প্রতিশ্রূতিতে ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ

২| ২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:১৭

তুষার কাব্য বলেছেন: বাহ ! সাবলীল বর্ণনার সাথে চমৎকার সব ছবি ।আপনার সাথে সাথে আমিও ঘুরে আসলাম :)

শুভেচ্ছা ।

২৭ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭

মোঃমোজাম হক বলেছেন: আপনার মতো ভ্রমন রসিকের জন্য ভাল লাগারই কথা :)

ধন্যবাদ

৩| ২৭ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫০

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।

২৭ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৪

মোঃমোজাম হক বলেছেন: সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ :)

৪| ২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:২১

জুন বলেছেন: লেখার সাথে সাথে ছবিতেও অভিনবত্ব মোজাম ভাই :)
প্রথম ছবিতে ছুরি ধরা হাতটি মনে হচ্ছে আপনার হাত ।
জানলাম আল আবহা সম্পর্কে ।
+

২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫

মোঃমোজাম হক বলেছেন: হা হা , আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য আমি খূশ ;)

অনেক ধন্যবাদ

৫| ২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৩৪

জুন বলেছেন: কিন্ত আপনার উত্তরটা মন্তব্যের ঘরে হইছে মোজাম ভাই #:-S

২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৩৭

মোঃমোজাম হক বলেছেন: স্যরি ঠিক করে দিলাম জুন আপা B-)

৬| ২৮ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

মধুমিতা বলেছেন: ++++++ সময় করে আবার ঘুরে যান।

২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

মোঃমোজাম হক বলেছেন: ইনশাল্লাহ আবার আসিবো :)

৭| ২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১:২৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আপনার ড্যাগারআলা লোকটি কি ইয়েমেনী?? সাধারনতঃ ওরাই এভাবে চলে।। এখানে যা দেখেছি বা ওদের মুখ থেকে যা শুনেছি।। তবে কুয়েতে থেকে পাশের দেশ সৌদি আরবকে দেখার সৌভাগ্য কয়জনের হয়(হজ্জ ও ওমরাহ্ ছাড়া)??
ছবি কিন্তু লেখার চেয়েও ব্যাপক ভাবে মনে ধরে।। ভাল থাকবেন আর লিখে যাবেন,এই কামনায়।।

২৯ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৬

মোঃমোজাম হক বলেছেন: না ভাই সে সৌদি বেদুঈন।আবহা ইয়ামেনের বর্ডারে,তাই তাদের চাল চলন ও চেহারা ওদের মতোই।
আর নাজরানসহ এই এলাকা একদিন ইয়েমেনেরই ছিল।সে অন্যকাহিনী :)
তাহলে এখন ত্থেকে ছবি ব্লগেই আকৃষ্ট হব।
আপনাকেও ধন্যবাদ

৮| ২৯ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩২

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: জানবেন সে গল্প তবে পরিস্থিতির উপর নজর দিয়ে,বুঝেছেন??

২৯ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯

মোঃমোজাম হক বলেছেন: হুম বুঝলাম ভাই :)

৯| ২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩১

ইমরান আশফাক বলেছেন: মধুমিতা ভাইয়ের জন্য কিন্চিত দূ:চিন্তা হচ্ছে সাম্প্রতিক ইয়েমেনী হুতিদের হামলায় আভা এলাকায় ২জন বাংগালী নিহত হওয়ার খবরে, কারন আভা তো ইয়েমেনের পাশেই। গন্ডোগোল তো কমার লক্ষন দেখছি না।

পোস্ট টা ভালো লাগছিলো কিন্তু আপাততঃ এটাই শেষ পর্ব। এই কথাটা মানতে ইচ্ছে করছে না। আমি অপেক্ষায় থাকলাম আপনার অন্য কোন পোস্টের জন্য।

৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ৩:১২

মোঃমোজাম হক বলেছেন: আমাদের এখানেও পর পর দুই সপ্তাহ শিয়া মসজিদে বোমা হামলা হলো।
আজ সারা পৃথিবীই অস্থির।শান্তি নেই কোথাও।

ধন্যবাদ আপনাকে

১০| ০১ লা জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

দীপান্বিতা বলেছেন:
আল-আবহা শহর ভাল লাগল ...

০১ লা জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:২৬

মোঃমোজাম হক বলেছেন: ধন্যবাদ দিদি

১১| ০২ রা জুন, ২০১৫ ভোর ৬:৪৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার বর্ণনার সাথে ততোধিক চমৎকার ছবি!!!!
আল-আবহ শহরের সবুজ পাহাড় ঘেরা প্রকৃতি আপনাকে যেমন মুগ্ধ করেছে, তেমনি সবুজ বাংলাদেশের এক পাঠকেরও মন ছুঁয়েছে।
পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ভাল থাকুন, সব সময়, যেখানেই থাকুন।

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

মোঃমোজাম হক বলেছেন: আপনার উচ্ছসিত প্রশংসা শুনে খুশী হলাম।
লেখার চেষ্টা চালিয়ে যাবো।

অনেক ধন্যবাদ ভাই

১২| ২৪ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৫২

মিজান ঢাকা ব্লগ বলেছেন: মোজাম ভাই এগিয়ে চলুন, আমরা আছি আপনার সাথে.।.।.।.।.।.।

এতদিন কই ছিলেন ভাই? নতুন নতুন লেখা চাই। আসলে আপনাদের মত কিছু ব্লগারদের জন্যই সামুতে ফিরে ফিরে আসি। আমরা আসলে গুপ্ত পাঠক কুল। নিজেদের লেখা নেই। শুধু পড়ি আর পড়ি। পাঠক বলিয়া অবহেলা করিবেন না।

আপনার নতুন নতুন লেখার অপেক্ষা তে রইলাম।

২৬ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৪:০৭

মোঃমোজাম হক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ গুপ্ত পাঠক মিজান ভাই :)

১৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর বর্ণনা ! চমৎকার ছবি ।

২১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬

মোঃমোজাম হক বলেছেন: ঈদ মোবারক।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

১৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৯

কালীদাস বলেছেন: ছবি আর বর্ণনা ভাল হয়েছে :)
আমার শহরে এক আরব প্রিন্স থাকে, ঈদের নামাজে গেলে দেখা হয়। বডিগার্ড নিয়ে আসে, সহীহ এরাবিয়ান ড্রেস পড়ে আসে কোমরে থাকে ট্রাডিশনাল ড্যাগার :| দেখি :(
আচ্ছা শীতকালে আপনাদের দিনে আর রাতে টেম্পরেচার কেমন থাকে?

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৩

মোঃমোজাম হক বলেছেন: ধন্যবাদ,
মনেহচ্ছে আপনাকে আগেও দেখেছি,এবং বেশ পুরানো ব্লগার।
যানিনা আপনি কোন দেশে আছেন,শুনেছি সৌদিরা এখন বিদেশে নিরাপত্তার জন্য তাদের ট্রাডিশনাল ড্রেস পড়ে বের হয়না।
আর সৌদি আরব বিশাল বড়,আমি পুর্বাঞ্চলে আছি এখানে শীতের সময় ৭ থেকে ২০ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে।আবার উত্ত্রাঞ্চলে ০ ডিগ্রিতে বরফ পড়ে :)

১৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৮

কালীদাস বলেছেন: ব্লগেই দেখেছেন, এককালে ব্যাপক ক্যাঁচালবাজ ছিলাম একটা বিশেষ গুষ্ঠি খেদানোর জন্য; এখন পুরাই অলস এবং প্রায় ইন্যাক্টিভ :)

আপনি ঠিকই বলেছেন, সাধারণত পড়ে না ওদের ট্রাডিশনাল ড্রেস। ঈদের সময়ই দেখি কেবল :)
সৌদিতে বরফ পড়ে শুনে সত্যিই তাজ্জব হলাম :|
ভাল থাকবেন :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.