নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেরিনার
নেটওয়ার্ক ছাড়া জাহাজের দিনগুলি কেমন কাটে?
জগৎ সংসার সভ্যতা থেকে ছুটি। পুরো দুনিয়া থেকে ছুট্টি। ভ্যাকেশনের মতো লাগে কি?
প্রতি রাতে একবার বউয়ের সাথে টেলিগ্রাফের টরেটক্কায় কুশল বিনিময়। ব্যাস। মাঝে মাঝে বউ উতালা হয়ে স্বরুপের প্রকাশ ঘটানো শুরু করে। আমি থামিয়ে দিই। স্যাটেলাইট ফোনের মাসিক বিল আমার আর বউয়ের স্বাচ্ছন্দে কথা বলার ইচ্ছার টুটি চেপে ধরে। বউ এখন সংসারি হচ্ছে তাই সে নিজেই মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেই আমরা ভাইবারে(Viber) কথা বলছিনা।
তারপর কি করি? তাঁরা দেখি। রাতের ওয়াচে আমার প্রিয় কাজ তাঁরা খোঁজা। সিঙ্গাপুরের দিকে হেডিং করলে পাইলট চেয়ারে বসলেই সাউদার্ন ক্রুশ দেখা যায়। শেষ রাতের দিকে রিজিল কেন্ট(regil kent) একেবারে হরাইজোনের সাথে মিলে মিলে ভাব। ভালোমতো খেয়াল না করলে জাহাজের লাইট বলেই ভুল হয়। আর দেখি স্কোর্পিও। বৃশ্চিক। আমার বউ রাশিফলের ফ্যান। মি. কাউসারের কিছ গতানুগতিক ভকোবাস কথার জন্য শনিবারের ছুটিরদিনে তার চাইই চাই। কিন্তু আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই রাশিচক্র নিয়ে তবু আমি স্কোরপিও দেখি। পরিষ্কার আকাশের গায়ে একটা জ্বলজ্বলে বিছা (বৃশ্চিক) হেটে বেড়াতে দেখতে খারাপ লাগে না। বৃশ্চিক দেখার এই নেশার আর একটা কারণ আছে। আমার বউ স্যাজেটেরিয়াস(ধনু)। স্কোর্পিও অলয়েজ স্যাজেটেরিয়াসের পাশাপাশি থাকে। ধনুর তিরের নিশানা ঠিক বৃশ্চিকের হার্ট বরারর।
ব্রীজ ওয়াচে কাজের ফাঁকে রিলাক্সের জন্য ট্যাম্পল রান খেলি। নিজের জীবনের লাইফ গেম। দৌড়াতে দৌড়াতে কোথায় যে শেষমেষ পৌছাবো কে জানে।
এবার সিঙ্গাপুর থেকে দশজনের সাইনঅফ হচ্ছে। জাহাজে কারো যখন সাইনঅফ হয় তখন ভালো লাগে। ক্ষুধার্ত কালেভদ্রে অপরের খানা দেখিয়া শান্তি পায়।
যে কথা বলতে চাইছিলাম সেটাই বলা হলনা। কেমন সব আঁতেল আঁতেল কথাবার্তা বলে টাইম নষ্ট করলাম। কিন্তু আসল কথা আর কি কমু। জাহাজে কাজ বলতে তো ডিউটি খাওয়া আর ঘুম। আর মুভি দেখা। এইডা আর বিস্তারিত করে কিভাবে বলা যাই?
যদি বলি জাহাজে কোন সমাজ নেই ,সভ্যতা নেই তবে আজাহাজীরা খুব অবেক হবেন। হ্যা আসলেই সত্যি। এই ইন্টারনেটের যুগে যখন আপনার হাতের মুঠোয় দুনিয়া, যখন আপনার ড্রয়িং রুমের বোকা বাক্সতে দুনিয়া তখন আমাদের দুনিয়া ছোট্ট একটা জাহাজের বাইশ জন মানুষের মাঝে বন্দী। আমরা বর্তমান পৃথিবীর আপডেট জানি না। জানি না আমাদের পৃথিবীতে কিছু মানুষকে বিহারী নামে আখ্যয়িত করে পুড়িয়ে মারার অধিকার পাওয়া যায়। জানি না ব্রাজিল মেক্সিকোর ম্যাচ ড্র হলে ব্রাজিল ভক্তদের আজাহারি কোন পর্যায়ে যেতে পারে। জানিনা বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ করে দেয়া হলে কেউ কেউ আত্মহত্যার প্লান করছে কিনা।
হ্যা আমাদের অপেক্ষা করতে পৃথিবীর ঘূর্ণনে কোথাকার জল কোথায় গড়ালো দেখার জন্য। আমার আমাদের দুনিয়ায় দেশ থেকে আসার সময় পুঁজি করে আনা সম্পদগুলো নিয়ে বারবার নাড়াচাড়া করি। একই কথা নিয়ে বারবার কচলাতে থাকি। এর মধ্যে যদি কেউ একটা নতুন কোন খবর দিতে পারে তবে সেটা নিয়ে শুরু হয় গসিপ। শেষে এই খবরটা কে সর্বপ্রথম দিয়েছে সেই কৃতিত্ব নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে।
জাহাজে আর একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল গ্যালি নিউজ। এটা কোন সংবাদ মাধ্যম বা টিভি মিডিয়া নয়। গ্যালি হল জাহাজের কিচেন। এখান থেকে এক এক সময় একএকটা নিউজ ছড়ানো হয়। হাস্যকর হলেও এই নিউজ নিয়ে পরবর্তি কোন নিউজ না আসা পর্যন্ত আমাদের আলোচনা চলতে থাকে।
তবে এই সমস্ত মেকি ব্যস্ততা সবার মাঝ থেকে একাকিত্বের ছায়া আড়াল করতে পারে না। সবার হৃদয়ের তোলপাড় সদা সাগরের মতোই উত্তাল থাকে।
তবে জাহাজে আমি মনে মনে সবসময় একটা গান গাই। “তোমায় নতুন করে পাবো বলে হারায় ক্ষনে ক্ষনে”। কবিগুরুর এই চেতনা আমার মাঝে দুঃসাহস যোগায়। আমি জানি আমি যা হারাচ্ছি তা আমি নতুন করে পাবো। তাই আমি হারাতে ভয় পাই না। আমার হারাতে দ্বিধা নাই। প্রতিবার জাহাজে আসি আর আমার স্বপ্নের দুনিয়া আমার জগৎ আমার সভ্যতা সব কিছু আমার জন্য থেমে থাকে। আমি জাহাজ থেকে নামি, তাকে গ্রহন করি। আমার দুনিয়া আবার সচল হয়। রঙ মাখে। যেদিন থেকে আমি জাহাজে পা রাখি সেদিন থেক শুরু হয় আমার সেই রাঙানো দিনগুলোর স্বপ্ন। জাহাজের এক একটা দিন পার হয় আমি সেই রঙিন দিনের দিকে একটু করে এগিয়ে যাই।
২| ২২ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০৩
এইচ তালুকদার বলেছেন: জাহাজ,সমুদ্র এগুলো এক সময় কতটা আকর্ষন করতো বলে বোঝাতে পারবো না।লেখার ভেতর একাকিত্বের ছাপ ।
২২ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১৬
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
ঠিক জায়গামতো চোখ গেছে আপনার।
৩| ২২ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১৫
শেরজা তপন বলেছেন: বেশ আগ্রহ নিয়ে আপনার লেখাটা পড়তে এসেছিলাম। লেখার ছন্নছাড়া ভাবের জন্য খানিকটা হতাশ! নিঃসন্দেহে আরো ভাল করে গুছিয়ে লিখতে পারেন আপনি। জাহাজে বসে যদি প্রায় কর্মহীন দিন রাত্রি-ই কাটাচ্ছেন তবে,মন খুলে আরেকটু গুছিয়ে লিখুননা।
গায়ে পড়ে উপদেশ দেবার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আপনার কথা শুনে হিংসে হচ্ছিল-তাই দিলাম খানিকটা। আহা! কত অখন্ড অবসর আপনার।
তবে বলছি, মন্তব্যটা পছন্দ না হলে মুছে ফেলতে পারেন নির্দ্বিধায়।
২২ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:২২
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আসলে যান্ত্রিক ট্রুটির কারনে খন্ডাকারে লেখাটা পোষ্ট হয়ে গেছে। ঠিক করে দিচ্ছি। আবারো পড়ার অনুরোধ রইলো। জানিনা তারপরও ভালো লাগবে কিনা।
৪| ২২ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫
অদীত বলেছেন: আরেকটু বিস্তারিত ও ছবিসহ লেখা চাই।
২২ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৩১
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: সঙ্গে থাকুন। চেষ্টা করবো।
৫| ২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩
আমি দিহান বলেছেন: আমি সেই রঙিন দিনের দিকে একটু
করে এগিয়ে যাই।
আসলেও কি জাহাজের দিনগুলো রঙিন?
২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১১
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
দিহান ভাই আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো।
কিন্তু আপনি মনে হয় কিছু একটা মিস করে গেছেন। লেখাটিতে জাহাজ থেকে নেমে দেশে আসার দিনগুলোকে রঙিন উল্লেখ করা হয়েছে। আমার জাহাজের দিনগুলি সাদাকালো। আমি জাহাজের এক এক্টা সাদাকালো দিন পার করি আর অপেক্ষা নেমের আসার পরের রঙিন দিনগুলোর জন্য।
৬| ২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৬
নীল ভোমরা বলেছেন: পড়তে ভাল লাগলো...দু'একটা ছবি থাকলে আরও ভাল হতো! শুভকামনা!
২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ২:৪৫
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
পরবর্তীতে অবশ্যই ছবি সহ দেবার চেষ্টা করবো।
ধন্যবাদ।
৭| ২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৭
মূহুর্ত বলেছেন: ভাইজান , আরো লেখা চাই.....
২২ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:১৯
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: ধন্যবাদ মূহুর্ত। অবশ্যই লিখবো।
৮| ২২ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৭
প্রবাসী পাঠক বলেছেন: অদীত বলেছেন: আরেকটু বিস্তারিত ও ছবিসহ লেখা চাই।
ব্লগার অদীত এর সাথে সহমত পোষণ করছি। ছবি সহ আরও বিস্তারিত লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
২২ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:০২
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
আপনাদের আগ্রহ দেখে ভালো লাগছে।
খুব শীগ্রই আসছি আপনাদের মাঝে। সঙ্গে থাকুন।
৯| ২২ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২০
অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: আহ্ ! কত না বেদনার!
২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ২:৩২
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: সমবেদনার জন্য ধন্যবাদ।
১০| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১:১৮
কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: ছবি চাই। গুগলের না আপনার তোলা। আপনার জাহাজের ছবি। পরের পোষ্টের অপেক্ষায়।
২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ২:৩৯
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
দিলে আমার তোলাই দিমু। তয় বর্তমানে জাহাজে নেটওয়ার্ক এর বেশী ভালা অবস্থা না। তাই পিক দিতে পারি নাইক্যা।
১১| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১:৪০
আহসানের ব্লগ বলেছেন: আহারে
২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ৩:৩০
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: কত মজা.....? এইডা কইতে চাইছিলেন?
১২| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ৩:১২
বাবুই পািখ বলেছেন: আপনার শুভ কামনা করছি।
২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ৩:৪৪
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ।
১৩| ২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৩৭
মামুন রশিদ বলেছেন: শেষের কথাটা খুব ভালো লেগেছে । এই রঙিন স্বপ্নকে বাঁচিয়ে না রাখতে পারলে নিঃসঙ্গতাকে জয় করা সম্ভব নয় । ভালো লেগেছে লেখাটি ।
২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৫২
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: মামুন ভাই আপনার লেখা আমার ভালো লাগে। আমি ছাইপাশ লিখি। আপনার ভালো লেগেছে শুনে গর্বিত হলাম।
যেটা বলেছেন সত্যি। স্বপ্নই বাঁচিয়ে রাখে আমাদের্।
১৪| ২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৫০
মাহবু১৫৪ বলেছেন: আপনার কষ্টগুলো বেশ বুঝতে পারছি।
কষ্টগুলোর বিনিময়ে যেন সুখের দেখা পান সেই দোয়াই করছি
ভাল থাকবেন সবসময়
২৩ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:০২
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: এই সুখের আনন্দটা কিন্তু একটু বেশী। একটু অন্যরকম।
দোয়ার জন্য ধন্যবাদ।
১৫| ২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১১:০১
সুদিন বলেছেন: হুম আসলেই এক অন্যরকম জীবন। মুক্ত থেকেও কেমন যেন বন্দী, স্যাটেলাইট থাকলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
তবে আপনাদের নিরলস পরিশ্রমের কারণেই আমরা স্থলে থেকে দৈনন্দিন জীবনে অনেক পণ্য ব্যবহার করতে পারছি যা আপনাদের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
আমার সহপাঠিও এক বন্ধু বর্তমানে ২য় ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পথে।
আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০১
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই...