নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই নাবিকঃ হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা

নিজের সম্পর্কে গুছিয়ে কিছু লেখা আমার কাছে খুবই কঠিন গদ্য। আমি এক এলেবেলে মানুষ। লেখালেখির কিচ্ছু জানি না। গায়ের জোরে লিখে যাই। তবে ছোটকালে ভালো লিখতাম। বড় হয়ে মনে হয় নষ্টদের অধিকারে চলে গেছি।

মৃদুল শ্রাবন

মেরিনার

মৃদুল শ্রাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পদ্মা মেঘনা যমুনা

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৪১

আমরা রাশিয়ার নাখোদকা পোর্টে ছিলাম। সন্ধ্যা বেলা ডিউটি শেষ করে হাটতে হাটতে বাইরে যাচ্ছি। আমাদের সামনে একটা ছোট জাহাজ ছিল। রাশিয়ান ফ্লাগের জাহাজ। ঐ জাহাজের পাশ দিয়ে যাবার সময় গ্যাংওয়েতে দাড়িয়ে থাকা কিছু ক্রুদের সাথে চোখাচোখি হল। একজন আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, ইন্ডিয়ান? আমি রাগ করলাম না। সবাই এরকমই মনে করে। আমি বললাম, নো বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে থেকে একজন বেরিয়ে এসে আমাকে সোজা বাংলায় জিজ্ঞাসা করলো বাড়ি কোন ডিস্ট্রিক্ট?



আমি বেশ অবাক হলাম। জাহাজটি খুব বেশী বড না। ১২০/১২৫ মিটার হবে। পুরোপুরি ওশান গোয়িং জাহাজ বলে মনে হল না। এই রকম একটা জাহাজে বাঙ্গালী? ভালো তো। সে নিজেকে পরিচয় দিল ঐ জাহাজের চীফ অফিসার হিসেবে। কিন্তু তার কথা-বার্তা বা বেশ ভুষায় আমার মনে হচ্ছিল না সে একটা চীফ অফিসার হতে পারে।



সে আমাকে জিজ্জাসা করল "পদ্মা মেঘনা যমুনা" কার জাহাজ? প্রশ্নটা আমার জন্য টাস্কিত হবার মতো ছিল। "পদ্মা মেঘনা যমুনা" একটা কোড। আমরা বাঙালী মেরিনাররা বিশ্বের যে কোন প্রান্তে VHF এ যখন পদ্মা মেঘনা যমুনা বলে ডাক দিই তখন যদি অন্য কোন জাহাজে বাঙালি থাকে তবে রিপ্লে দেয়। এই ভাবে আমরা দুর দেশে স্বদেশীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করি। এই ব্যপারটা সকল বাংলাদেশী মেরিন অফিসার জানে। কিন্তু এখানে যে লোকটা আমাকে আমাকে একজন চীফ অফিসার হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে সে "পদ্মা মেঘনা যমুনা" কে কোন জাহাজের নাম বলে ভাবছে। রিডিকুলাস ব্যাপার।



আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কোন মিনিং এজেন্টের মাধ্যমে এসেছেন? সে জানাল, হানিফের মাধ্যমে।



এই হানিফ নামের লোকটা ব্রাদার্স শিপিংএর বলে আমি জানি। ব্রাদার্স শিপিংএর কথা আগে শুনেছি। শুনেছি সিওসি তো দুরে থাক সিডিসি বিহীন লোকদের কেও তারা নকল সিডিসি , সিওসি বানিয়ে বিদেশী জাহাজে পাঠিয়ে দেয়।



এই সমস্থ লোকগুলো জাহাজে এসে কি করবে? জাহাজ মিডিল ইষ্টের কোন দুম্বার খামার না কিংবা মালায়েশিয়ার পাম বাগান না যে এই শ্রেনির লোকদের কে দিয়ে জাহাজ চালানো যায়।



এই হল অবস্থা।



বাংলাদেশী মেরিনারদের বর্তমান দুরাবস্থার অন্যতম কারণ হিসেবে বিদেশী জাহাজে বাংলাদেশীদের মার্কেট খারাপ হওয়াটা বিবেচনা করা যায়। আমরা যতই বেশী বেশী ক্যাডেট নিয়োগটাকে ফোকাস করি কিন্তু আসল ব্যপার সেটা না। আগের মতো যদি বাইরের কোম্পানিতে আমাদের জবের গ্রহনযোগ্যতা থাকতো তবে যতো অফিসারই প্রডিউচ হোক না কেন এই বাজে অবস্থার সৃষ্টি হতো না। আজ ফিলিপিনের এতো বেশী মেরিনার হওয়ার পরেও তাদের চাকরীর মার্কেট খারাপ হয়নি। কারন বিশ্বজুড়ে তাদের গ্রহনযোগ্যতা।



আমাদের দূর্নিতীর কারনে আমরা আমাদের গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছি। বাইরে আমাদের চাকরির বাজার খারাপ হচ্ছে কেন খতিয়ে দেখার কেউ নেই। না সরকার না আমরা নিজেরা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:২১

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: খুবই জরুরীর একটা প্রসঙ্গে তুলে এনেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.