নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই নাবিকঃ হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা

নিজের সম্পর্কে গুছিয়ে কিছু লেখা আমার কাছে খুবই কঠিন গদ্য। আমি এক এলেবেলে মানুষ। লেখালেখির কিচ্ছু জানি না। গায়ের জোরে লিখে যাই। তবে ছোটকালে ভালো লিখতাম। বড় হয়ে মনে হয় নষ্টদের অধিকারে চলে গেছি।

মৃদুল শ্রাবন

মেরিনার

মৃদুল শ্রাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিপন্ন মানবতা ও ব্লগার সেতু আশরাফুল হকের প্রস্থান

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৪

"এখানে জলাভূমি, উপত্যাকা আর বৃক্ষের পাতায় ঝিকিয়ে উঠে রোদ; সেখানে রক্তের ছোঁয়া লেগে থাকে, আর পড়ে থাকে আমার পালক।"



কে জানতো এই লাইন দুটি এভাবে আমাকে পড়তে হবে? মাঝে মাঝে ভাবি মানুষ কিভাবে টের পাই যে তার প্রস্থানের সময় হয়ে এসেছে? আজ সারাদিন বাইরে বেরোয়নি। কেন জানি গায়ে রোদ লাগাতে খুব লজ্জা লাগছে। যদি রোদে গিয়ে দাঁড়াই তবে যেন সেতু ভাই ওপর থেকে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসবে। তার সে হাসির জবাব দেবার কোন ভাষা আমার জানা নেই।



গতকাল থেকেই এমনিতে আমাদের মানবতা নিয়ে ভাবছিলাম। বেঙ্গল মিউজিক ফেস্টিবলের মঞ্চে দেশের একজন কৃতি সন্তান কাইয়ুম চৌধুরী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন কিন্তু আমাদের মধ্যে মানবতা জেগে উঠলো না। কর্তৃপক্ষ অনুষ্টানের ধারাবাহিকতা থামাতে পারলো না। এবং দর্শকের মাঝেও কোন ভাবান্তর ছিল না। যেখানে হিউজের মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপি সকল টেষ্ট খেলা স্থগিত করা হয়েছিল। এখানেই আমাদের মানবতা।



সেতুভাইয়ের ব্লগ পোষ্ট গুলো ঘাটতে ঘাটতে নিজেকে অনেক অপরাধী লাগছিল। মাঝে মাঝে হৃদয়ের একেবারে ভেতর থেকে কান্না বেরিয়ে আসে। মুখ চাপা দিয়েও সেই কান্না ধরে রাখা যায় না। আজ এমনটিই হচ্ছিল।



"দেশে ফিরলাম ৭ই আগস্ট। দুঃস্বপ্নের ঘোর কাটছে না কোন ক্রমেই। বিভ্রান্ত সমস্ত পরিকল্পনা, নিজের স্বাভাবিক চলাফেরাও দুর্বিসহ হয়ে উঠছে মানসিক অস্থিরতায়। কি করবো? কিভাবে এতো টাকা জোগার করবো? সিএমসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৫ লক্ষ রুপির হিসাব দিয়েছে, সেটা বাংলাদেশি টাকার হিসেবে আরও অনেক। এ কয়েকদিন থম ধরে বসে ছিলাম, মাথায় কিছুই আসছিল না। ভেল্যুর থাকতে ফেসবুকে প্রথম ধাক্কার অনুভূতি লিখেছিলাম, ডাক্তারের কাছে কিভাবে নিরাশার কথা শুনতে হয়েছে সেই ধাক্কা। খুব কাছের (যাদের দীর্ঘনিন যাবত চিনি) বন্ধুদের কয়েক জন ইনবক্স ও আউটক্সে মন্তব্য করেছেন এভাবে,



''এইবার আল্লা-খোদার নাম নে''

''হমিওপ্যাথির চিকিৎসা করান, ভাল হয়ে যাবে; পয়সাও কম খরচ হবে।''

''লেখায় বানান ভুল। 'দারিদ্রতা' হবে না, হয় 'দারিদ্র' হবে নয় 'দরিদ্রতা' হবে। বাংলায় স্নাতকত্তোর সেতুর কাছে এটা প্রত্যাশা করি না।''

''নামাজ পড় বেটা, দেখবি সব অসুখ ভাল হয়া যাবে।'

''ইন্ডিয়া ছাড়া কি দেশ ছিল না ! ডাক্তার দেখাইতে ইন্ডিয়া যাওয়া লাগে?''

''ইন্ডিয়ায় গেলি তো গেলি একবারে শেষ সময়ে, ক্যান আগে যাওয়া গেল না?''

''ডাক্তার তোর লাইফটাইম কয়দিন দিছে?'





এইসব মন্তব্য করেছেন কয়েকজন কাছের মানুষ বলে ভাবি যাদের। আত্মীয়-স্বজন ঘটনা জানার পর আর যোগাযোগ করছে না, ফোন দিলেও অনেকে ফোন ধরছেন না।



আমার বন্ধুদের কেউ যদি কোন পরিকল্পনা, তথ্য বা সংযোগ দিয়ে সাহায্য করতে চান তবে কৃতজ্ঞ থাকবো।

আমার মোবাইল নম্বর: ০১৭১৮৫৪২০৫১"






১২ই আগষ্ট ২০১৪ তে তাই এই ব্লগ পোষ্টে একটিও মন্তব্য আসেনি। কিন্তু তার মধ্যে তখনো হতাশা দেখিনি। নিজেই নিজেকে বাঁচাবার জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য "তাহারা এবং হাজার সরীসৃপ" বইটিকে বর্ধিত সংস্কারে প্রকাশ করেন। আমার বিপুল পরিমান চিকিৎসা ব্যয়ের কিছুটা এ বইটির মাধ্যমে সংগ্রহ করা যাবে বলে আশা করছি। বেঁচে থাকার জন্য তিনি কারো কাছে খালি হাত পাতেননি। কিন্তু কিছুর বিনিময়ের মাধ্যমেও আমরা তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে পারিনি ঠিকভাবে।



"মনে হয় দুঃস্বপ্ন দেখছি। জীবন কি এটুকুতেই থেমে যাবে? ডাক্তার কোন আশার বানী শোনালো না, খুব নিরেট সত্যকে তিনি সহজেই প্রকাশ করে দিলেন।"



যে মানুষটি জন্ম থেকে একটি মাত্র কিডনি নেয়ে বেঁচে ছিল, যে মানুষটি কাছের মানুষদের কাছ থেকে সাহায্য পায়নি কিছুমাত্র, সেই মানুষটি তবু হাসপাতালের বিছানায় বসে দেশ নিয়ে ভেবেছেন। ২১ শে নভেম্বর ও তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বিক্রির জন্য সরকার কর্তৃক নিলামে তোলা নিয়ে প্রতিবাদী পোষ্ট দিয়েছেন। লিখেছেন রাজাকারের বিরুদ্ধে। অথচ আমরা তাকে নিয়ে কতটা ভেবেছি?? একেবারে শেষের দিকে ব্লগ ও ফেসবুকের বন্ধুরা মাত্র ৩০০ টাকায় একটি বই ক্রয় করে একজন মানুষকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন কার্যক্রমের মাধ্যেম তার সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আজ সকাল ৫ টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।



তার আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করে কিছু বলতে পারছি না। চোখে পানি চলে আসছে।



"একজন অসুস্থ্য মানুষকে জেনে শুনে ভালবেসে যে কাছে এসেছে, যে আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু, যে আমার প্রেমিকা যে আমার স্ত্রী সে শুধু রয়ে গেছে। ভালবাসা দিয়ে যেন বাঁচিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু জগৎ কি সেটুকু বুঝবে?"



কিছুই বলার নেই। আল্লাহ ভাবীকে ধৈর্য্য ধারণ করার শক্তি দিন।



=================================



সেতু ভাইকে আমরা শেষ রক্ষা করতে পারলাম না। তার পাশে সময়মতো দাঁড়াতে পারিনি। কিন্তু আমরা জানি এই ধরনের রোগীর চিকিৎসা করতে যেয়ে তার পরিবার কতটা অসহায় হয়ে যায়। সেতু ভাইয়ের একটা পোষ্টের মাধ্যেম জানতে পারি,



বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসেছিলাম আট বছর আগে। নিজের পছন্দে বিয়ে করেছি বলে সন্তুষ্ট হননি বাবা-মা; যৌতুকের কথা মুখ ফুটে বলেন নি বটে কিন্তু কথার ধারে বুঝিয়েছেন শতেক বার। স্ত্রীর মর্যাদা রক্ষার জন্য শেষ পর্যন্ত ঘর ছেড়েছি, অন্যভাবে সরাসরি বলা যায় ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। ফল কিছুমাত্র মানবিক ছিল না, উত্তরাধিকার হারিয়েছি পুরোপুরি। এখন উপায়?



বোঝাই যাচ্ছে ভাবীর পাশে দাড়াবার তো কেউ নেই এখন। তাই আমরা কি আমাদের সাহায্যের কর্যক্রমটা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারি না? এই ব্যাপারটি কি আমাদের মানবতা কে একটু ছুয়ে দেবে না?? নাকি আমরা নিশ্চুপ দর্শকের মতো তার চলে যাওয়াটা তাচ্ছিল্যভরে দেখবো? তার লাশ মাটি দেবার সাথে সাথে সাথে কি আমাদের আবেগ/ অনুভূতিগুলোও মাটি হয়ে যাবে?

মন্তব্য ৩৭ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: তাহারা ছিলো কিন্তু হাজার সরীসৃপরা সাড়া দেয়নি।

ওনার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি । মহান আল্লাহতা'আলা ওনাকে বেহেশত নসীব করুন ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৮

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
এক বিকেলে খেলার মাঠ থেকে শিশুরা হারিয়ে গেছে; তাদের শৈশবগুলো আতঙ্কিত হয়ে রূপ নিয়েছে ভীরু ছাগশিশুতে।
বিষন্ন শহরে এখন শুধু ছাগশিশুর খোয়াড়; তাতে বুড়ো পাঠারা অলৌকিক এক মুর্খতা শেখায়।

এমন নিসীম মুর্খতার চাদরে ঢেকে যায় আমাদের মহল্লাগুলো। সেখানে বুড়ো হাবড়া মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে, আর কিশোরেরা থাকে অপেক্ষায়।


এটি সেতু ভাইয়ের সর্বশেষ খোয়াড় কবিতা। মৃত্যুকে আলিঙ্গনের অপেক্ষা করছেন এটা মনে হয় বুঝে গেছিলেন উনি। উনি তার ইনফোতে লিখেছেন, অল টাইম ইয়াং। হ্যা আসলেই তিনি অল টাইম ইয়াং। কারণ মানুষ মরে গেলে তার বয়স থেমে যায়।

২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ঐ সময়টাতে আমি ব্লগে একটিভ ছিলাম না :( খুব খারাপ লাগছে ।

৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০২

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: উনার আত্মার শান্তি কামনা করি । ব্লগার জুবায়ের ভাইয়ের প্রস্থানের সময় ব্লগে আসা হতোনা তবে সবার মধ্যেই তাকে হারানোর বেদনা দেখেছি । সেতু ভাইও খুব অসময়ে চলে গেলেন ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

বাঁধনের জুতা জোড়া সোনা দিয়ে মুড়িয়ে
যাদুঘরে রেখে দাও ঠিক করে সাজিয়ে'
আগামীর ছেলেরা বরাবর জানবে
ঘাতকের প্রতিরোধে ঘৃণা ভরে হানবে,
বাঁধনের নামটিও বেঁধে রাখ উঁচুতে
নতুনেরা শিখবে ক্ষমাহীন ঋজুতে,
ক্ষমতা ভাগাভাগি প্রতারণা কান্ড
দেখে দেখে আমরাও চিনে নেই ভন্ড;
চিনে নেবে ছেলেরা ঐ তারা আসছে
সবুজের তাড়নায় প্রকৃতিও হাসছে।


আমরা কি আমাদের মনের মন্দিরে তাকে ঠাই দিতে পারবো? মৃত্যর শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দেশ নিয়ে ভেবেছেন, অন্যায় নিয়ে ভেবেছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে লিখেছেন, খবরের শিরোনাম যখন এমন, “চট্টগ্রামের কর্ণফুলিতে ১০ কোটি টাকার ইয়াবা আটক”-তখন আতঙ্ক লাগে। প্রশাসন এবং মিডিয়া কি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মাদকের বাজার মূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে? মাদক তা সে যে কোন মূল্যেই বিক্রি হোক না কেন, তা রাষ্ট্র এবং প্রশাসন দ্বারা স্বীকৃত হতে পারে না। কিন্তু তাই করা হচ্ছে। আমরা সুস্থ মানুষগুলো ও এভাবে ভাবতে পারছি???

৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৩

সুমন কর বলেছেন: উনার আত্মার শান্তি কামনা করি ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০২

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

সিক্ত বাসভূমে ডানা ঝাঁপটে যাই প্রতিবার। বাতাসে জলের ঘ্রাণ, রামধেনুর আবিরে সেজেছে ঈষাণ; আমার উড়ন্ত ডানায় তরঙ্গ তোলে স্বপ্নরা।

এই স্বপ্ন গুলো থেমে গেছে। আর কখনো বাতাসে জলের ঘ্রাণ নিতে আসবে না এই পৃথিবীতে। তার উড়ন্ত ডানার ঝটপটানি থেমে গেছে চিরতরে।

৫| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৯

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:



উনার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। :( :(

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

কত দীর্ঘ এই যাত্রা! চাইলেই কেউ আসে না সাথে। গ্রীষ্মে পুডেছি একা, বর্ষা আমাকে ভাসিয়েছে ক্রন্দনে; শরতের মেঘ উডিছে আমার হৃদয়ের সব আকাঙ্খা।


অনন্তের পথে তার দীর্ঘ যাত্রা শুরু। কেউ নেই সাথে। !!! কি নিদারুণ সত্যি কথা গুলো লিখে গেছেন উনি।

৬| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২

মামুন রশিদ বলেছেন: রেস্ট ইন পিস ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

বেচবি নাকি স্বপ্নগুলো
নগদ দামে সব?
এক লহমায় আমিই নিবো
নাইকো কলরব।
সত্যি করে বলছি দেখিস
ন্যয্য দামই পাবি,
নির্ঘুম রাতে দাড়িযে থেকে
কেবল খিস্তি খাবি।

দে বেচে দে, স্বপ্নগুলো
চোখ বুজে সব দিবি,
দিবা-নিশি যা দেখিস তুই
সবগুলোর দাম পাবি।

কিনবো আমি সূর্য কিরণ দিয়ে
চোখ বুজে এক আকাশ তারা নিয়ে

ফুল ঝড়ছে ফুল ঝড়ছে
দেখবি এসে তোরা
চলছে উড়ে আমায় নিয়ে
উড়ুক্কু এক ঘোড়া।



"চলছে উড়ে আমায় নিয়ে
উড়ুক্কু এক ঘোড়া। " এই কবি হারিয়ে গেছে ভাই। স্বপ্ন কেনার ফেরিওয়ালাকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

৭| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৪

তামীল০০৯৬ বলেছেন: উনার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি । মহান আল্লাহ তায়ালা যেন উনাকে বেহেশত্ নসিব করেন সেই দোয়াই করি ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪০

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

বর্ষনের শব্দ পেলাম; তোমার বাড়ি থেকে এই পাহাড়ের শান্ত উপত্যাকায় ছড়িয়ে গেছে যেন এক সুখানুভুতি। তোমার কবিতারা ঝড়ছে, সেই পরশ পেয়েছি আমি...
সমুদ্রের ঐ পাড়ে যেখানে ডুবেছে আজকের সূর্য়, যেদিক থেকে ফিরে এলো গাঙচিল, আমি মুগ্ধ হয়ে থেকেছি সেই সন্ধ্যার লালিমার দিকে। তোমাকে খুঁজেছি শুধু। এই আঁধারের জোনাকি হয়েছি আমি, যদি চেয়ে দেখ একবার-জ্বলে উঠেছি এই ভেবে।

তোমারে দেখার বাসনায় গিযেছি বহুদূর ; সেখানে রাতের অজস্র তারারা সকলেই তোমাকেই দেখে। আর আমি অবোধ স্বরে ডেকে ডেকে যাই কেবল গোলক ধাঁধার মাঝে।



এই লাইনগুলি হয়তো আর কেউ পড়বে না।

উনার বেদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

৮| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন !!!

স্তব্দ হয়ে আছি খবরটা জেনে অব্দি।

ওনার বইগুলো এখনো সাজানো আমার ক্যাফের সেলফে! ৫টার মধ্যে ২টা বিক্রি হয়েছিল। একটা নিজে রেখেছি।

অথচ উনি আমাদের ক্ষুদ্র অনুপ্রচেষ্টাকেও ফাকি দিয়ে যেন আমাদের মুক্তি দিতেই কি চলে গেলেন!!!!!

কেঁপে উঠল শরীর মন।

হে আল্লাহ তুমি তাঁকে মুক্তি দাও। শান্তি দাও । চিরশান্তির স্থানে তাঁকে ঠাই দাও।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

পৃথিবী ধূসর হয়ে যায়, রঙলেগে থাকে শুধু স্মৃতিতে। সবুজেরা আন্দোলিত হয়, চারপাশের আনন্দরা বিরক্ত করে নিয়ত। ওদের হাসিগুলো যেন বোকামিতে ভরা।

এই লাইন দুটি সেতু ভাইয়ের লেখা। আপনার কমেন্টের সাথে মিল রেখে বলি, আসলেই আমরা বড় বোকা হয়ে গেলাম। আমাদের অনুপ্রচেষ্টাকে ফাঁকি দিয়ে উনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

৯| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: মৃদুল শ্রাবন ,




যে সাহায্যের হাত আমরা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম তা শেষ রক্ষা করতে পারেনি হয়তো কিন্তু সে হাত তো বাড়ানোই আছে । যারা যারা এই কাজের সাথে নিরলস জড়িয়ে ছিলেন তাদের কাছে নিবেদন রইলো -
আমাদের সাহায্যের হাত যেন গুটিয়ে না যায় ।

একজন অসুস্থ্য মানুষকে জেনে শুনে ভালবেসে যে কাছে এসেছে, যে আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু, যে আমার প্রেমিকা যে আমার স্ত্রী সে শুধু রয়ে গেছে। ভালবাসা দিয়ে যেন বাঁচিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু জগৎ কি সেটুকু বুঝবে?"


আপনার শেষের আবেদনটি পূর্ণ করে আমরা কি দেখাতে পারিনে, বিশ্বজগৎ না বুঝলেও আমরা ব্লগাররা তা বুঝি ?

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৪

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

অভিমানী ভালবাসা
আমার বুকের জন্য নরকের সমস্ত উত্তাপ,
বোদনাবোধের যতো আবহবিদ্যার প্রবনতা
দিয়েছ অপার, সুনিশ্চিত।


এই ভাবে আমি বলতে পারতাম না। তার লেখনি গুলো পড়ছি আর আশ্চার্য হচ্ছি।



আপনার মন্তব্যে আশাবাদি হলাম আহমেদ জী এস ভাই।যারা যারা এই কাজের সাথে নিরলস জড়িয়ে ছিলেন তাদের কাছে নিবেদন রইলো -
আমাদের সাহায্যের হাত যেন গুটিয়ে না যায় ।
। আশা করছি এই হাত গুটিয়ে যাবে না। সাময়িক ধাক্কাটা কাটিয়ে উঠলে তারপর ভাবীর সাথে আলাপ করে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম ঠিক করা হবে।

১০| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৭

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: মনটা এমনিতেই খারাপ , এখানে এক ভাবী'র মা বাংলাদেশে মারা গেলেন মাত্র ওনাদের বাসা থেকে আসলাম। ব্লগে এসেই এমন খবরটা পেলাম।

আল্লাহ ওনার আত্মার শান্তি দিক।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৪

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

জান্তব সিংহ যেন হালুম দিয়ে ওঠে, আমাকে দেখে; এক আফ্রিকা করে গর্জন।
তবু আমি হরিণ শাবক, তবু নিরুপায়।



এই উপলব্ধি তার ছিল। আপনি যদি তার ব্লগটা একটু ঘুরে দেখেন তাহলে তার লেখা গুলো পড়ে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। কি অসম্ভব সুন্দর কবিতা লিখতেন তিনি।

১১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৩

আমিনুর রহমান বলেছেন:




কয়েকটা দিন যাক ! ভাবীর সাথে কথা বলে আমাদের করনীয় কি হতে পারে তা বিস্তারিত জানবো।


"একজন অসুস্থ্য মানুষকে জেনে শুনে ভালবেসে যে কাছে এসেছে, যে আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু, যে আমার প্রেমিকা যে আমার স্ত্রী সে শুধু রয়ে গেছে। ভালবাসা দিয়ে যেন বাঁচিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু জগৎ কি সেটুকু বুঝবে?"


ভাবীর কথা একটু বলি, এই ভদ্রমহিলার সাথে আমার শুধুমাত্র ফোনেই কথা হয়েছে। তার সাথে কথা বলে এতটুকু বুঝেছি ভীষণ মায়া এই মানুষটার মধ্যে। উনি একা একটা মানুষ অনেক করেছেন সেতু ভাইয়ের জন্য। জগত বুঝবে কিনা জানি না আমি মনে হয় বুঝছি সেতু ভাইয়ের প্রতি তার অসীম ভালোবাসা।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৩

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: ভাবীর সাথে কথা বলে আমাদের অবশ্যই একটা কিছু পদক্ষেপ নেয়া দরকার। আমি অবশ্য জানিনা আসলেই ব্যপারটি ভাবী কিভাবে নিবে, ভাবীর সাথে আমার সরাসরি কথা হয় নি, আমিন ভাই আপনিই ভালো বলতে পারবেন। যদি সে রকম কিছু মনে করেন তবে আমরা আপনার নির্দেশনার অপেক্ষায় রইলাম।

১২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩৭

অন্তরন্তর বলেছেন:

আল্লাহ্‌ পাক উনাকে জান্নাতবাসী করুন। উনার পরিবারের কাছে সমবেদনা
জানানো ছাড়া আর কিছু বলার ভাষা নেই। মন খারাপ হয়ে গেল ভাই।
ভাল থাকুন এবং এভাবেই মানুষের সেবা করুন। আপনাদের সকলকে
আমার স্যালুট।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪০

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: দাফনের নোটিশও পেয়েছি প্রিয়তমা
প্রতিদিনের স্পর্শগুলো ফেলেগেছ শুধু
তার উপর প্রলেপ জমেছে দেখি,
রাতে খোলস ছেড়ে বেড়িয়েই
অপূর্ণতার দাগ।


১লা জানুয়ারী ২০১৪ তে সেতু ভাইয়ের লেখা কবিতা এটি। এটা নিছক একটা কবিতা হিসেবেই উনি লিখেছিলেন, পোষ্ট করেছিলেন কিন্তু এখন পড়তে গিয়ে বুকের ভেতরে কষ্ট হচ্ছে অনেক।

আপনাকে ও স্যালুট অন্তরন্তর।

১৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৪৯

সোহানী বলেছেন: হাঁ এ সাহায্যের হাত যেন বন্ধ না হয়.... আছি সবসময়।

এ কয়দিন কয়েকটি মৃত্যু যেন থমকে দিয়েছে জীবনের গতিকে..... বছর তার শেষ কয়টা দিন আমাদের নিংড়ে নিচ্ছে আমাদের জীবনি শক্তি।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৬

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:
তাঁর সাথে দেখা করে
পেছনে ফেলে এসেছি হেলেপড়া সূর্যকে;
ছেলেবেলার সেই স্কুল, চন্ডির মেলা
প্রতিরাতে ফিরে আসে।

রাতে বাড়ি ফিরি আমি,
তে মাথার কাঠুরিয়া, হোসেন মাস্টার,
গলির রিক্সাওয়ালা ফিরে আসে বাড়িতে।

সে বাড়ি ফেরে না...



এই অপেক্ষার কোন শেষ নেই। সে আর বাড়ী ফিরবে না আপু।

১৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৭

তুষার কাব্য বলেছেন: উনার আত্মার শান্তি কামনা করি ।
এত মৃত্যুর মিছিল আর সইতে পারছিনা...

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৬

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন:

সে যেন অদ্ভুত এক সরীসৃপ; কপালে ঠিকরে পড়া আলোয় খুঁজে নিচ্ছে বহমান সময়। অতীতের সেই জগতের কথা তার মনে পড়ে, খোলস ছেড়ে নতুন এক শব্দের উৎসে সে একবার পৌছেছিল, আর সেখানেই পেয়ে যায় বিভ্রমের এক গোপন সুগন্ধি।



তিনিও কি আসবেন আবার নতুন কোন খোলসে আমাদের মাঝে? হয়তো না। এমনটি হয় না। কিন্তু তিনি টিকে থাকবেন তার কাজের মাধ্যমে।

১৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫০

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: খুব খারাপ লাগছে

১৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭

জুন বলেছেন: তার অসহায় স্ত্রীর জন্য আমাদের সহমর্মিতার হাত প্রসারিত থাকুক
+

১৭| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: খুব কষ্ট লাগছে। আপনার লেখাটি পড়ে চোখের কোন বেয়ে কখন যে পানি চলে এসেছে জানিনা ..................................।

১৮| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:






আফসোস থেকে গেলো.... :(

১৯| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২১

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: কিছুই করা হল না!




:(

২০| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৩

আবু শাকিল বলেছেন: সেতু ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগছে।

আল্লাহ তার আত্নাকে শান্তি দান করুক।আমীন।

২১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৪০

নীল জানালা বলেছেন: যাঁর যাবার তিনিতো চলেই গেছেন। কায়মনে উনার রূহের মাগফেরাত কামনা করা ছারা এখন আর তার জন্য কারো তেমন কিছু করার নেই। খারাপ লাগলো এটা দেখে যে মানুষ কতটুকু মানবিক অনুভুতিবিহীন হয়ে গেছে। ফেসবুক/ব্লগে করা কিছু উক্তি, যা আপনার পোস্টে তুলে ধরেছেন তা ভয়াবহ।
আপনারা যারা উনাকে এবং উনার স্ত্রীকে কাছে থেকে চিনতেন তারা অনুগ্রহপূর্বক উনার স্ত্রীর পাশে দাঁড়ান।

২২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০

কলমের কালি শেষ বলেছেন: অতি অল্প বয়সে মৃত্যুর স্বাদ নিল । উনার জন্য দোয়া রইল যেন পরকালে শান্তি পায় এবং উনার স্ত্রীকে ধর্য্য ধারন করার শক্তি যেন পায় ।

২৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৯

দীপংকর চন্দ বলেছেন: কিছু বিশেষ মুহূর্তে পৃথিবীর সমস্ত স্বান্তনাবাক্য অসাড় মনে হয়!

প্রার্থণা করি, যেখানে যে অবস্থায় থাকুক, ভালো থাকুক সবাই।

২৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:০৮

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: ভাবী মানে সেতু ভাইয়ের ওয়াইফের সাথে আমার যখন কথা হয় তখন জানতে পারলাম মাঝ রাতে সেতু ভাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় উনাকে একটি প্রাইভেট হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে সেদিন আর যোগাযোগ করা পরদিন ফোন করে কুশলাদি জানবো তার আগেই শুনি সেতু ভাই আর নেই।

Any man's death diminishes me,
Because I am involved in mankind,
And therefore never send to know for whom the bell tolls
It tolls for thee.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.