নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই নাবিকঃ হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা

নিজের সম্পর্কে গুছিয়ে কিছু লেখা আমার কাছে খুবই কঠিন গদ্য। আমি এক এলেবেলে মানুষ। লেখালেখির কিচ্ছু জানি না। গায়ের জোরে লিখে যাই। তবে ছোটকালে ভালো লিখতাম। বড় হয়ে মনে হয় নষ্টদের অধিকারে চলে গেছি।

মৃদুল শ্রাবন

মেরিনার

মৃদুল শ্রাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

দক্ষিনাঞ্চলের পরিবহন ধর্মঘটঃ সাধারন মানুষকে জিম্মি করে প্রশাসনের দিকে ছুড়ে দেয়া একটি বন্দী মুক্তি প্রহসন।

২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:২৬

সাধারণ শব্দের ইংরেজি করলে দাড়ায় অর্ডিনারী। কিন্তু এই সাধারণ শব্দটি যখন মানুষ শব্দটির প্রিফিক্স হিসেবে বসে তখন তার বাংলা করলে শব্দার্থ শুধু সাধারণ থাকে না। হয়ে যায় সকলের দ্বারা অত্যাচারিত হওয়া একটি গোষ্টী। যারা প্রতি পদে পদে শোষন ও নির্যাতনের স্বীকার হয়। সাধারণ মানুষের জীবনের মূল্য একটা মুরগীর ডিমের মতো। প্রগতিশীলরা ভেঙে ভেঙে প্রতিনিয়ত পোচ করে খাচ্ছে।

রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ গাড়ী চাপা পড়ে মরছে কোন সমস্যা নেই। সাধারণ মানুষকে বাস চাপা দিয়ে মারা, লঞ্চে চড়িয়ে ডুবিয়ে মারা, পুড়িয়ে মারার জন্য কেউ দায়ী নয়। তাদের জন্য কথা বলার কেউ নেই। কিন্তু একজন ড্রাইভারের নিঃশর্ত মুক্তির জন্য আজ পুরো দেশ অচল হয়ে যাবার যোগাড়। যে সমস্ত অনভিজ্ঞ লোকদের ধরে ধরে লাইসেন্স দিয়ে গাড়ী ভর্তি মানুষের জীবনের কর্নধার বানিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের জীবনের মূল্য আসলেই হয়তো অনেক বেশী। তা না হলে একটি ডাকাতির ঘটনায় গাড়ীভর্তি যাত্রীদের সাক্ষ্যর ভিত্তিতে একজন ড্রাইভার, একজন সুপারভাইজার ও একজন হেলপারকে পুলিশি আটকের ঘটনায় এভাবে পুরো দক্ষিনাঞ্চলের ১৮ টি রুটের গাড়ী চলাচল বন্ধ হয়ে যেত না।

আসলেই ঘটনাটি অবাক হবার মতো। পুলিশ সন্দেহের কারনে যে কাউকে আটক করছে এবং করতে পারে। কেউ আইনের উর্ধে নয়। আটকের পর দোষী এবং নির্দোষী প্রমানের একটা নির্দিষ্ট পন্থা আছে। কিন্তু কোনরুপ কোন আইনি প্রক্রিয়ার তোয়াক্কা না করে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে দেশ অচল করার মাধ্যমে হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে চরম দূর্ভোগে ফেলে দিয়ে পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ প্রশাসনের সাথে একটি বন্দীমুক্তি খেলা খেলছে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে তারা তাদের স্বার্থ হাসিল করছে। প্রশাসন এবং পরিবহন মালিক শ্রমিকের মধ্যকার মুক্তিপণে দরকষাকষিতে পণ্য হয়ে বলি হচ্ছে আমজনতা।

মুল ঘটনাটি শুরু হয় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মধুখাল উপজেলায় বেনাপোলগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটার পরে। ২৯ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী সোহাগ স্ক্যানিয়া পরিবহনের (ঢাকা-মেট্রো-ব ১৪-৬২২৭) একটি বাস রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে। ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় পার হলে যাত্রীবেশি সাত ডাকাত অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে তাদের সর্বস্ব লুটে নেয়। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তারা ঢাকা-খুলনা মহসড়কের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি-পরীক্ষিতপুর এলাকায় আলতু খান জুট মিলের কাছে নেমে যায়। ডাকাতের কবলে পড়া সাধারণ যাত্রীদের অধিকাংশই কলকাতাগামী ছিল।

ডাকাতরা তাদের কাছ থেকে ৭ হাজার ২শ’ মার্কিন ডলার, ২২ হাজার ভারতীয় রুপি ও ১৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ প্রায় ৪ লাখ টাকা এবং ২৫টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, ডাকাতির ঘটনায় বাসের চালক ও তার সহকারী জড়িত থাকতে পারে। কারণ ডাকাতির সময় তারা প্রতিরোধের কোনো চেষ্টাই করেননি। এবং পথিমধ্যে ড্রাইভারকে কয়েকবার ফোনে কথা বলতে শোনে তারা।

যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোহাগ পরিবহনের চালক আয়নাল হোসেন (৪০) ও তার সহকারী শাকিলকে (২৬) আটক করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়।

উপরোক্ত এই ঘটনার একটি আইনি সমাধান হতে পারে। আমরা জানি ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সকল গাড়ীর মধ্যে থেকে সকল যাত্রীর ছবি সংগ্রহ করে বাস কতৃপক্ষ। এবং সকলের মোবাইল নাম্বরও থাকে টিকেটের সাথে। মোট কথা ঘটনার তদন্ত পুলিশ কিভাবে করবে সেটা তাদের বিষয় এবং তার জন্য প্রয়োজনে যদি গাড়ীর ড্রাইভার সুপারভাইজারকে আটকেরও প্রয়োজন পড়ে সেটা তদন্তের স্বার্থেই। তার জন্য এভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে প্রশাসনের দিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করে ১৮ টি রুটে গাড়ী চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক। তাদের এই দাবী আদায়ের মাধ্যেমে রাস্তায় আপনাকে গাড়ী চাপা দিয়ে মারার লাইসেন্সের পাশাপাশি গাড়ীর ভেতরে আপনাকে কুপিয়ে আপনার সর্বস্ব কেড়ে নেবার লাইসেন্স পাবে।

সামান্য একটা ব্যাক্তিগত স্বার্থের জন্য তারা তাদের ঐক্য দেখিয়ে দিচ্ছে। গ্রেফতারকৃত একটা আসামীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার কিছু আইনি জটিলতা আছে নিশ্চয়। কিন্তু এই ব্যাপারটি নিয়ে প্রাশসনকে পরিবহন শ্রমিক-মালিকদের সাথে নেগোশিয়েশনের জন্য মিটিংয়ে বসতে হবে। কি ক্ষমতা (স্পর্ধা) তাদের !!! জাতীয় কোন স্বার্থের জন্য তারা এটা করছে না। দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কিংবা কোন সম্মিলিত নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্য নয় সামান্য একটা ড্রাইভারও সুপারভাইজারের মুক্তির জন্য আমরা সাধারণ মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছি। জয়তু শ্রমিক ইউনিয়ন, জয়তু আমাদের নাগরিক অধিকার।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ৩:১৮

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: কোন ভালো কাজের জন্য আমাদের ঐক্য না থাকলেও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে আমাদের একতা চোখে পরার মত। কিছুদিন আগেই তো ভেজাল ঔষধ বিক্রির দায়ে মিটফোর্ডের ওষুধের দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা করায়, ওষুধ বিক্রেতাদের সংগঠন ধর্মঘট ডাকে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক সব শ্রেনি পেশার লোকই সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে তাদের অনৈতিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করে। কিন্তু পজিটিভ কোন বিষয়ে তারা কখনোই এগিয়ে আসে না।

২৬ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: ঠিকই বলেছেন প্রবাসী ভাই। আমরা বাঙালী জাতি খুব সহজেই ম্যানুপুলেট হয়ে যাই। যেতে পছন্দ করি। এবং এই জন্য জাষ্ট প্রপার প্লানিং দরকার। একদল শ্রমিককে মিষ্টি কথায় তাদের সামান্য লাভ দেখিয়ে তাদের দিয়ে ঐক্যের কঠিন দেয়াল দিয়ে যে কোন দাবী আদায় করে আমাদের পুজিবাদী স্বার্থন্বেষী সমাজ। তাতে বলি হয় সাধারণ মানুষ। এবং আদতে কি ঐ শ্রমিক গোষ্ঠির কোন উন্নতি সাধন হয়?? হয় না। তারা চিরকালই থেকে যায় বঞ্চিত। না জানি তাদের হয়ে মালিক পক্ষের এই লড়াইয়ে পেছনে তাদের কতটা স্বার্থ লুকিয়ে আছে।

২| ২৪ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:০২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সরকারকে অবশ্যই জনগনের স্বার্থে এই ধরনের কর্মকান্ড শক্তহাতে প্রতিহত করতে হবে।

৩| ২৪ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:২৩

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: এটা গনতন্ত্রের ব্য্রর্থতা আর গনতন্ত্রের সাইড এফেক্ট। দেশে শ্রমিক অধিকার রক্ষায় ট্রেড ইউনিয়নের মত কিছু দরকার নাই। অনায্য কিছুতে পিঠ ঠেইকা গেলে মানুষ এমনি রাস্তায় নামে, ব্যানার লাগেনা।

৪| ২৪ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

জুন বলেছেন: আমরা যে বেচে আছি এটাই এক অবাক কান্ড

৫| ২৪ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪

চাঁপাডাঙার চান্দু বলেছেন: এইসব শ্রমিকদের দিয়ে খালেদা জিয়ার বাসা ঘেরাও করানো হয়েছে; মন্ত্রী, এমপি, বড় বড় ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার চোরাচালানি এরাই করে দেয়; প্রত্যেকটা থানার এসপি, ওসিকে ওদের ইনকামের ভাগ দেয়। এতো কিছুর পর এখন সামান্য ডাকাতির জন্য তাদের এরেস্ট করবে, বললেই হলো নাকি!! এমন যদি হতো যে ইন্টারপোলের হাতে এরেস্ট হইছে, তাও না হয় বুঝতাম; এরেস্ট তো করছে গোপালীরা, এই মামলা থাকলেই কি আর না থাকলেই কি!! এদের দ্রুত মুক্তি দিয়ে মানুষের ভোগান্তি দূর করা হোক।

৬| ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:২২

আহমেদ জী এস বলেছেন: মৃদুল শ্রাবন ,




খুব ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন , বেশীর ভাগ ঘেরাও , অবরোধ, হরতাল, আন্দোলন ইত্যাদি গোটা দুই শ্রমিক শ্রেনীর মানুষের ন্যায় বা আন্যায় কোনও কাজের বদলা নিতে সংগঠিত হয় । কারা সংগঠন করেন ? শ্রমিকদের কোনও না কোনও সংগঠন । আর তার ডাক দেন কারা ? এইসব খেটে খাওয়া শ্রমিকদের তথাকথিত নেতারা । ঘেরাও , অবরোধ, হরতাল থেকে ফায়দা লোটার এ্গুলোই তাদের পুঁজি । যেমন আপনার উল্লিখিত এই ঘটনাটি ।
যতোদিন "সাধারন মানুষ" অকাট মূর্খ , অশিক্ষিত থেকে যাবেন ততোদিন তাদের চেয়েও বেশী অকাট মূর্খ , অশিক্ষিত এই সব শ্রমিক সংগঠনের নেতারা "সাধারন মানুষ" এর মাথায় কাঠাল ভেঙে খাবে , "সাধারন মানুষ" কে জিম্মি করবে , যেমন করেছে ।

এই সব জ্বালাতন থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় এই সব "ট্রেড ইউনিয়ন"গুলো ( সব ধান্দাবাজ আর অকাট মূর্খের দল ) বেআইনি ঘোষনা করা চিরকালের জন্যে । কিন্তু কে করবে ? কেউ করবেনা । কারন তাতে ভোট ব্যাংক নষ্ট হবে ।

"ট্রেড ইউনিয়ন"গুলো নিষিদ্ধ করার কথা বলায় অনেকেই আমাকে গালাগাল দেবেন , জানি । কিন্তু "সাধারন মানুষ" কে এরকম জিম্মি করে রাখার জবাবে আজ না হোক কাল আপনাকেও আমার মতো বলতে হবে । কারন আপনি ভালো করেই জানেন , এই সব "ট্রেড ইউনিয়ন"গুলো এ পর্য্যন্ত বৃহত্তর শ্রমিকশ্রেনীর একফোঁটা ভাগ্যও পরিবর্তন করেনি বরং নিজেরাই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে ।
উদাহরন দিতে হবে ? প্রয়োজন আছে কি ??

৭| ২৭ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৯

তুষার কাব্য বলেছেন: নেতিবাচক কাজে আমরা আমাদের ঐক্য দেখাচ্ছি বুক ফুলিয়ে।হায়রে অভাগা দেশ আমার।শ্রমিক নেতাদের কাছে দেশ, পরিবহন ব্যাবস্থা এভাবে জিম্মি হয়ে পড়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয় ।মাঝে মাঝেই এই খবর গুলো আমরা দেখি । কিন্তু কি করছি ? অন্যায় কে প্রশ্রয় দিয়ে সমজোতার নামে ঐ ড্রাইভার কে দু'দিন পর ছেঁড়ে দিব।আর বাকিরা তাতে প্রবল উৎসাহিত হয়ে অন্যায় কর্ম সম্পাদন করে যাবে এভাবেই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.