নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্যাথিত হৃদয় বিষে ভরা আজ স্বপ্ন ভাঙ্গা এক ফসল বুনা জমিন চষে

মাহমুদুর রহমান সুজন

ব্যাথিত হৃদয় বীষে ভরা আজ স্বপ্ন ট্রুটির এক ফসল বুনা জমিন চাষে...

মাহমুদুর রহমান সুজন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধু যামিনী

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩



কিছু কিছু স্মৃতি থাকে যা কিনা অাপন মহিমায় বিরাজিত। হৃদয় এমন কিছু বহন করে চলে নিরবদি যা মনের অজান্তেই চিল্লিকোঠরে বাসা বাঁধে।তেমনি কিছু স্মৃতি ফেলে আসা অতীতকে দৃশ্যায়িত করে চোখের সামনে, মনে হয় এইতো সে বেলা । ক্ষণিকের তরে মিলিয়ে যায় সে সব যা কিছু সুখ বা দু:খ হয়ে এসেছিল জীবনে।অজানা কিছু কথা যখন মধুর হয়ে মনের ভিতর প্রশান্তি দেয় তাকেই আমরা সুখ বলি আবার যখন কষ্ট দেয় তাকে বলি দু:খ । আমরা যামিনী কাহাকে বলি ,মধুর যামিনী?
সালটি ১৯৯৮, একদিন মহিলা সমিতির গেইটের সামনে টিকিট বিক্রি করার জন্য চেয়ার টেবিল বসাচ্ছি। টিকেট নিয়ে বসে গেছি, কেননা সময় কম এই সময়ে যা দর্শক আসবে সবাই টিকেট নিয়ে হলে ঢুকে পড়বে।শো শুরু হবে সন্ধ্য ৭টা। এমনিতে গুটি কয়ে টিকেট বিক্রিত ছিল আগে থেকেই। পরিবর্তন নাট্যগোষ্টির নাটক তাও আবার হাসির নাটক "বজা চাচা" দর্শক হতো বেশ। আমি দলে তখন নতুন। ততো বেশি কিছু জানতামনা। রায়হান আনসারী ভাই, যে কিনা আমাদের প্ররিচালক ও দলের চেয়ারম্যান ছিলেন ওনার এক্টু সু-দৃষ্টি ছিল আমার উপর। তার কারণ ও ছিল বটে। আমি স্কৃপ্ট টাইপ করে দিয়েছি বেশ কয়েক , টিকেট ডিজাইন থেকে প্রিন্টও আমিই করতাম। দলের কো- আর্টিশদের সাথে কিছুদিনের মধ্যে সখ্যতাও জমিয়ে ফেলেছিলাম বেশ। তাই দলের ভবিষ্যত বলতে আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো।

কিন্তু এই লোকটিকে যত একটিভ দেখতে দেখায় আসলে কাজের কিছুইনা। এইজন্য নিজের ঢোল নিজে বাজালে আওয়াজ তেমন ভালোশুনায়না।

টিকেট বিক্রির সময় আমার পার্শ্বের মেয়েটি ,আামর কো-সদস্য ,যার কিনা অনেক গুন; হারমোনিয়াম ,তবলা -গানের গলা অভিনয়ে ও নাকি বেশ। আমার থেকে কয়েক বছর আগ থেকে দলের সাথে।আবার ভিবিন্ন চরিত্র দিয়েছে নাটকে।এই ভজা চাচা নাটকটি হাসির নাটক হিসেবে অন্যতম খোরাক ছিল । মেয়েটিকে আগথেকেই চিনতাম দলের একজন হিসেবে কিন্তু তার বহুমুখি প্রতিভা কথা জানতাম না তার কারণ হলো আমি দলে একে বারে নতুন ছিলাম ।আর কাজ নিয়েই ব্যাস্ত থাকতাম সবসময়। হিসাব আর প্রচার মাধ্যম এই ছিল আমার সেটের কাজ।প্রতিটি প্র্যাকটিস ক্লাস ছিল বাধ্যতামুলক মঞ্চে উ্ঠতে হলে কঠিন সাধনা চাই -পরিচালকের কথা। না হলে মঞ্চে দাড়িয়ে দর্শকদের হাসির কারণ হতে পারি। অনেক জরতার পরও একটা সাহস কাজ করত -পারব। আগেও অনেক নাটকের চরিত্র করেছি ,স্কুল জীবনে ।এখানেও পারব এই বিশ্বাসটা ছিল অটুট। কিন্তু ভয় ও যে কমছিল তা না।

টিকিট বিক্রি করছি আর নিতুকে বলছি আজতো আমার প্রথম বারের মতো একটি সর্ট চরিত্র করার কথা , পারব কি?

- কেন পারবে না । পারবে সবাই একটু আধটুকু ভুল করেই পারফেক্ট হয়। আমিও অনেক ভুল করেছি শুরুতে।
- তাই বুঝি আপনিও ভুল করেছিলেন, বলেন কি? আমি যতটুকু জানি আপনি একজন গুনি শিল্পী।
- হুম কে বলেছে আমি শিল্পী, আমিত শিখছি মাত্র।
- না সবাইতো দেখছি আপনার প্রসংশা করে ।
-দ্যাৎ তুমি শুধু আমাকে আপনি আপনি করে যাচ্ছ, আমরা একিদলে কাজ করি , আবার কো -আর্টিশ ও বটে । কিন্তু তুমি আমাকে বড় বোনের মতো বলে যাচ্ছ।এসব ন্যাকামি আমার পচ্ছন্দ না।
- তা হলে আমি আপনাকে কি বলবো ।
- বন্ধু আমরা , বন্ধুকে কি বলে মানুষ?
-তাই বুঝি !

নিতুর চোখের চাহনিটা বেশ দেখাচ্ছিল তখন ।একটু কর্কশ তার পরে একটু মৃদু হাসির ছাপ এনে বন্ধুত্বের নিবেদন দারুন একটি সন্ধ্যা আতিবাহিত হচ্ছিল, মন চাইছিল এমন করে যদি জীবনটা অতিবাহিত হয়ে যেত । দর্শক কম থাকাতে আমরা একে অপরের সাথে চুটিয়ে আড্ডা দিতে পারছিলাম। ভাবছিলাম দর্শক/ক্রেতা কম হউক ।ভাল, ডিস্ট্রাব হবে না আমাদের আড্ডাতে। কিন্তু শুকনের দোয়াতে কি আর গরু মারা যায়! যা হবার হতেই ছিল। শেষ সময় মনে করে সব ক্রেতার ভীড় ঠেলতে হলো। এই শোতে অনেক টিকেট বিক্রি হয়েছিল। টিকেট বিক্রি শেষ এখন আমাকে গেটে দাড়াতে হবে। নিতু সাজ ঘরে চলে গেল, আমি গেটে থাকলাম দর্শকদের টিকেট চ্যাক করতে।
এবার হল রোমের আলো নিভে গেল। ভাবছি আমি সাজ ঘরে হালকা এক্টু সাজ নিব।আমার চরিত্র ছিল এক্টু বয়ষ্ক লোকের চরিত্র। সাজ ম্যান আমাদের দুলাল ভাই। যে কিনা অনেক বছর থেকে বিটিভির নিয়মিত ম্যাকাপ ম্যান।দুলাল ভাই কি, কি পাউডার মেখে আমাকে প্রায় সং সাজিয়ে দিয়েছিল।বয়সটা তখন প্রায় আধবড়ু হয়ে গিয়েছিল।
তারপর যা হল। নাটক শুরু হল । একের পর এক চরিত্র আসা যাওয়া মঞ্চে আলো আর আধারের খেলাতে যার যার নৈপুনাতে দর্শকদের মনরঞ্জন হাসি আর হাসি । আমি স্কৃপ্ট পাঠকের কাছে বসে পর্দা ফাক দিয়ে নাটক উপভোগ করছি। আমার খেয়াল নেই আমিও এই মঞ্চের একজন অভিনেতা। চলে এল আমার পালা। মঞ্চে আমি নিথর দাড়িয়ে আছি , সংলাপ কিছুই আমার মনে নেই , চুপটি দাড়িয়ে আছি এমন সময় আমার পরিচালক, কো -আর্টিশ ওনার সংলাপ নিয়ে এলেন দর্শক সবাই হাসতে -হাসতে শেষ, আমার ও হাসি পেয়ে গেল। রায়হান ভাই বললেন হাসো- হাসো , যা কিনা স্কৃপ্টে নেই।-- দাড়িয়ে আছ কেন হাসতে থাক , ওই খানটাতে দেখ কে বসে আছে? তোমার জন্য ফুল হাতে নিয়ে । এমন সময় নিতু এলো হাতে একটি ঝাড়ু -- কি! তুমি কোথায় ,তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে আমি সারা বাড়ি পাগল পারা। কথা ছিল রেল গাড়িতে চড়াইবা , কত্থদিনের শখ রেল গাড়ি চড়ব। বিয়ার ৭ বছর হল একদিনও কি চড়াইছ?
তখনো আমি মনে করতে পারছিনা আমার সংলাপ। পর্দার কাছে যেত্ই স্কৃপ পাঠক মনে করিয়ে দিলেন সংলাপটুকু দিতে গেলাম হাটু কাপা কাপি হায়রে কি অবস্থা আমার! শরির ঠান্ডা হয়ে আসছে। নিতু এল আমার অনেক কাছে এল ,হাত দরল তার সংলাপ দিল। ওম্মা তোমার দেখি জ্বরে সইলড়া পইড়া যাচ্ছে! হায় আ্ল্লাহ আমি আছি রেল গাড়ি নিয়া- বইয়া পর, আমি পানি দিয়া দেই।
আমাকে দাক্কা দিয়া বসাইয়ে নিতু তার পানি ঢালার দৃশ্যায়নটা শেষ করল। আমরা প্রস্তান করলাম।
সাজ রোমে সবাই আমার অবস্থার অবগতিতে হাসা হাসি শুরু করল।
নিতু বলছে- এমন সবার বেলাই হয়। এবার আরেকটি সংলাপ নিয়ে যেতে হবে মঞ্চে ,সাহস এখন অনেক ,পারব , আমাকে পারতেই হবে । ঠিকি আমি সুন্দর করে আমার সংলাপ ও দৃশ্যায়ন শেষ করলাম। দর্শক সবাই হাত তালি দিল। বুঝতে পারলাম এবারের মত বেঁচে গেলাম।এমন আরো কয়েক বার আসা যাওয়ার পালা শেষে একসময় হল রোম আলোকিত হয়ে গেল।আমরা সবাই মঞ্চে এসে একে একে দাড়ালাম, দর্শকদের কাছ থেকে সৌজন্য বিদায়ে জানাচ্ছি আমাদের নাটক শেষ।তখন রাত ৯টা বেঝে গেছে।তার পর সব শেষে আমরা সবাই গাল গল্প করে ৩০ মিনিটের মধ্য যে যার বাসায় চলে গেলাম।কিন্তু কি যেন রেখে গেলাম বু্ঝতে আর বাকি রইলানা। এক শুন্যতায় ছেয়ে যাছে হৃদয় মন।
এর পর থেকে বেশ কয়টা শো করেছি নিতু সহ আরো কয়েকজন কো-আর্টিশ হয়েছিল ।বেশ কয়েকটা মেয়ের সাথে বসে টিকেট বিক্রি করেছি , গল্প করেছি । সবাই বন্ধুর মতোই ছিল তাদের মধ্যে যে ব্ন্ধু ছিল সে কি শুধু নিতুই ছিল? হ্যা নিতুই ছিল বন্ধু যে বন্ধুত্বের আহ্বান করেছিল। তার সাথে অনেক গল্প জমতো।বেশ কছিুদিন পর নিতু ইচ্ছা করেই আর কথা বলতে চায়না। সে এখন দলের মূল নারী চরিত্রটিতে চরিত্রদান করবে।পদউন্নতি যাকে বলে। নায়কের সাথে তার এখন অনেক ভাব। সে মনে করতো আমার সাথে মিশলে কোন রটনা হতে পারে । তার ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।দেখা হতো কথা হতো না।

রবি দাদার সেই গানটির কথার মতো --
"দুজনে দেখা হলো কেন কথা কহিল না সে চলিয়া গেল ধিরে।।"

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৯

নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন: মিতুর চোখের চাহনিটা বেশ দেখাচ্ছিল তখন ।একটু কর্কশ তার পরে একটু মৃদু হাসির ছাপ এনে বন্ধুত্বের নিবেদন দারুন একটি সন্ধ্যা আতিবাহিত হচ্ছিল । দর্শক কম থাকাতে আমরা একে অপরের সাথে চুটিয়ে আড্ডা দিতে পারছিলাম। ভাবছিলাম দর্শক/ক্রেতা কম হউক ভাল, ডিস্ট্রাব হবে না আমাদের আড্ডাতে। কিন্তু শুকনের দোয়াতে কি আর গরু মারা যায়! যা হবার হতেই ছিল। শেষ সময় মনে করে সব ক্রেতার ভীড় ঠেলতে হলো। এই শোতে অনেক টিকেট বিক্রি হয়েছিল। টিকেট বিক্রি শেষ এখন আমাকে গেটে দাড়াতে হবে। নিতু সাজ ঘরে চলে গেল, আমি গেটে থাকলাম দর্শকদের টিকেট চ্যাক করতে।

সুন্দর বচন ভঙ্গি
সুন্দর কথা মালা
সুন্দর আবেগ
সব মিলে অসাধারণ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: নিজের কথা কিছু বলা মাত্র। ধন্যবাদ ভাই মন্তব্যর জন্য।

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৬

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল লেখাটা। ধন্যবাদ

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্প আমাকে দিয়ে হয়না । নিজের কথা বলা শুধু । ভাল থাকবেন।

৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: মাহমুদুর রহমান সুজন ,



আপনাকে দিয়ে গল্প হবেনা , কে বলেছে ? সবাই একটু আধটুকু ভুল করেই পারফেক্ট হয়।
লিখতে লিখতে আপনিও পারফেক্ট হয়ে উঠবেন । তবে বানানগুলোর দিকে অনেক যত্নশীল হতে হবে ।

শুভেচ্ছান্তে ।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। চেষ্টা করব।

৪| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

প্রথমকথা বলেছেন: ভাল লাগল লেখাটা ,,

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনি হয়তো রাগ করবেন দেরী করে জবাব দেওয়াতে, আসলে ছুটিতে দেশে ছিলাম তাই তেমন ব্লগে আসা হয়নি । ধন্যবাদ আমার এই দুর্বল লেখাটি পড়ে মন্তব্যর জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.