নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ডায়রি

ইব্রাহীম সাজ্জাদ

নিজের সম্পর্কে বলার মতো তেমন কিছুই নাই

ইব্রাহীম সাজ্জাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

লড়াকু মানুষের পরিবহন লোকাল বাস

২৪ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৩



নজরুলের একটা গান আছে, ' আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি আমি তারে। '
আমাদের অবস্থাও তাই। সকাল-সন্ধ্যা প্রিয়তম লোকাল বাসকে আমরা যেন খুঁজে ফিরি। মানুষের তুলনায় বাস অপ্রতুল। তাই কাজে যেতে কিংবা ফিরতে উঠতে হয় ধাক্কাধাক্কি করে। এই শক্তি প্রয়োগই শেষ নয় ! ড্রাইভার বাসটি থামায় না ইচ্ছে করেই। ফলে অনেকেই পড়ে যায়।
আর এই নিষ্ঠুর পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশী বিপদগ্রস্থ হয় মেয়েরা। তারা অনেকেই বাসে ওঠার শেষ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এরপর বাস আসে আবার উঠার চেষ্টা করে। কিন্তু হেলপার ব্যাঘ্রকণ্ঠে জানায় ' লেডিস সিট নাই ' 'মহিলা নাই ' এই ধরনের বাক্য শুনে আবারও প্রতীক্ষা। তারপর কোন বাসে উঠতে পারে কিংবা অন্যভাবে যাওয়া-আসা করতে হয়।

সকাল-বিকেল কাজে যাওয়া-আসা করতে কর্মজীবী মেয়েদের প্রকৃত চিত্র দেখা যায়। এই যখন অবস্থা তখন দেশের কোন নারী কোন পদে ডিসি,সচিব হন তাতে হতভাগা নারীদের জীবন-মানের কোন উন্নতি হয় না। নারীদের অগ্রযাত্রার এই সব হওয়া- না হওয়া কোন মানদন্ডও নয়। গত পঁয়তাল্লিশ বছরে বহু নারী এটা-ওটা হয়েছেন তাতে মেহনতী নারীদের জীবন-মানের কোন উন্নতি হয় নি। হওয়ার কোন লক্ষণও নেই।

ধাক্কাধাক্কি করে বাসে ওঠার পর কার পায়ে কে পাড়া দেয়, সেটা নিয়ে চলে জ্ঞানবিনিময়। তারপর শুরু হয় গরমে জামা-কাপড় ভেজা । কারণ বাসের ভিতর মানুষকে শুধু একজনের উপর আরেকজনকে ফেলে রাখাই হয় না। বাকী ঠাসাঠাসি যতটা করা যায় মহামান্য হেলপার তা করে। মধ্যবিত্ত ছাপোষা মানুষ একে-অপরের সাথে সিটে বসা নিয়ে তর্কাতর্কি অথবা গা-বাঁচিয়ে কতক্ষণে কাজের জায়গায় যেতে পারবে সেই চিন্তায় ব্যস্ত। ফলে কয়জন উঠছে না উঠছে এ নিয়ে কারো মাথা-ব্যথা নেই। এইসব ব্যাপার দার্শনিক হেলপাররা আবার সব জানেও।

এর মধ্যে কারো কারো সাথে ভাড়া নিয়ে কন্ডাক্টরের চিল্লাচিল্লি, ধাক্কাধাক্কি এসব রুটিন করা । যে মুড নিয়েই বাসা থেকে বের হন না কেন রাস্তায় আসলে শুরু হয় অন্য লড়াই। খেটে খাওয়া এই মানুষ প্রতিদিন বেঁচে থাকার জন্য যে পরিমাণ লড়াই-সংগ্রাম করে তার সিকিভাগও যদি সমাজ-বদলের কাজে লাগানো যেত তাহলে অনেক আগেই রাষ্ট হতো শোষণমুক্ত। এক শোষণ থেকে মুক্ত হয়ে দেশীয় আরেক শ্রেণির পুঁজিপতিদের এই নিপীড়ণ সইতে হতো না।

ভালো থাকা যা বোঝায় তা লোকাল বাসে চলাফেরা করলে সম্ভব হয় না । কিন্তু অন্যের আন্ডারে দিনমজুর খাটলে উপায় নেই, ওই বাসে উঠতেই হয় । ড্রাইভার রেখে প্রাইভেট কার চালানো মধ্যযুগীয় নবাবী সবার আয়ে সম্ভব হয় না। আর গায়ে-মাথায় খেটে ওই নবাবী সবাই করেও না। বিবেকহীন ঘৃণিত প্রাণী হয়েই বেশীরভাগরা এই নবাবী করে।

দুনিয়া বহুভাবে বদলে যায় কিন্তু আমাদের দেশের লোকাল বাসের কোন পরিবর্তন হয় না। হবেও না। তার অনেক কারণ আছে !

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.