নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ল্যাম্পপোস্ট- প্রথম অংশ
দ্রুতই খাওয়া শেষ। পাঁচটা কুকুর আস্তে আস্তে সরে গেল ল্যাম্পপোস্টটির কাছ থেকে। একটু আড়ালে যেয়ে আবার আগের মতই আয়েসে শুয়ে পড়ল। এবার একটু বেশিই আয়েশী মনে হলো, পেট ভরা বলে কথা। নিভে যাওয়া ল্যাম্পপোস্টের নিচে তখনও অন্য কুকুরটি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। হয়তো ভাবছে খাওয়া শেষ, কোন কথা-বার্তা নেই, যেমন একমনে খেল, তেমন একমনেই চলে গেল অন্য কুকুরগুলি! হয়তো এমন সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই একা কুকুরটি হঠাত হাঁটতে শুরু করল। প্রতিটা পদক্ষেপ ওর মাপা মাপা, ঠিক ছন্দে ছন্দে এগিয়ে চলতে লাগল সে। একটা একটা করে ল্যাম্পপোস্ট পাড় হয়ে সরে যাচ্ছে সে। পেছনে নিভে যাওয়া ল্যাম্পপোস্টা স্থির। অন্ধকার জায়গাটায় কেমন যেন একটা ভৌতিক আবহের সৃষ্টি করেছে।
(২)
শহরে শীত ভালোই পড়েছে। সেলসিয়াস স্কেলে ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রা। ভালোই ঠান্ডা। সকাল সকাল মনে হয় যেন তাপমাত্রা শূণ্যের কোঠায় পৌঁছায়। নরম বিছানার গরম ছেড়ে কারোও উঠতে মনে চায় না।
সকাল ৬ টার মত। জানালায় পর্দা নেই। কাঁচের ওপাশে ঘন কুয়াশার আস্তরণ। ছেলেটি চোখ খুলে বাইরে তাকালো। কুয়াশার চাদরে চোখ পড়তেই ছেলেটির মনে হলো, আরেকটু ঘুমিয়ে নেই। এমন শীতের সকালে বিছানার বাইরে শরীর বের করাটা বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। কম্বলে মাথাটা জড়িয়ে আরেকটু ঘুমিয়ে নেয়াই শ্রেয়। তার ওপর আগের রাতে বাসায় ফিরতে দেরি করেছে। বাসা বলতে ছাদের ওপর এক রুমের একটা ঘর। আর কেউ নেই। তাই এর বেশি লাগেও না। ছেলেটির চোখ জড়িয়ে আসতে না আসতেই ঘড়িতে অ্যালার্ম বেজে উঠল। ৭ টা বেযে গিয়েছে। এই মোবাইলের যুগে আজও কেউ অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করে! হ্যা এই ছেলেটি করে।
অনিচ্ছা সত্বেও উঠতে হয়। কাজ আছে, কাজ না করলে টাকা আসবে না, আর টাকা না আসলে খাবে কি? আর ওর বন্ধুগুলোও ওর অপেক্ষায় থাকবে।
৮ টার দিকে ঘরে তালা দিয়ে বের হয় ছেলেটি। ৯ টার মধ্যে ওর কাজ শুরু করতে হবে। শহরের ব্যস্ততম এক শপিং মলের এক পোশাকের শো-রুমে সেলস পার্সন হিসেবে ওর কাজ চলবে রাত সেই প্রায় ৯ টা পর্যন্ত। সারাদিন অনেক লোক দেখে ও। শো-রুমে কেনার লোকের চেয়ে ঘোরাঘুরি করতেই যেন বেশি লোক আসে। মেজাজ খারাপ হয়, তবু হাসিমুখে সবাইকে স্যার-ম্যাডাম সম্বোধন করতে হয়।প্রতিদিন ছেলেটি একই রুটিনে চলে। কাজ শেষে বাসায় যাবে। বাসা বলতে ওর একরুমের সেই বাসা। কি শীত, কি বর্ষা- ওর কাজ একভাবে চলবে। বাসায় যেয়ে ওর কিছু নিজের কাজ করতে হবে। নইলে কিছুতেই হবে না। ওর অপেক্ষায় থাকবে কয়েকজন। তাদের সাথে দেখা করতে যেতে হবে। কিছু না নিয়ে গেলে কারো দেখাই যে পাবে না।
রাত ১০ টা বেজে যায়- বাসায় ফিরতে ফিরতে। এসেই কিছু খাবার প্যাকেট করতে হয়। কিছু খাবার একটা প্যাকেট, এর বেশি যে ছেলেটি পারে না। বেতন অল্প। ঘর ভাড়া, সারাদিনের খাওয়ায় চলে যায় সব। তবু প্রতিরাতে এক প্যাকেট খাবার নিয়ে বের হতে হবে ছেলেটিকে। কি শীত, কি বর্ষা! ছেলেটি বের হবেই।
[চলবে]
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৮
মুচি বলেছেন: আমিও আশা করছি। ধন্যবাদ।
২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লেখা। কিছুটা টাচি।
চলুক।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৮
মুচি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। দেখি চলতে চলতে কোথায় যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:২২
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কোন চমক নেই, আশাকরি পরের পর্বে থাকবে।