নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর উৎসবে আঁধারে আবদ্ধ ...!!!

মুচি

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে- অবাক বিস্ময়ে ....

মুচি › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি রিভিওঃ ডেডপুল (২০১৬) ও (২০১৮)

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ রাত ১:২৪

ডেডপুল (২০১৬)



২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। সদ্যই, তার দু'মাস পূর্বে চাকুরি থেকে ইস্তফা দিয়েছি। সাময়িক সার্টিফিকেট উত্তোলন করার কিছু কাজে
ডিপার্টমেন্ট- রেজিস্টার বিল্ডিং-জনতা ব্যাংক করতে হচ্ছে। এরকম এক দিন বিকেলের দিকে আমি ও আমার বন্ধু সাগর হাকিম চত্তর থেকে রিক্সা নিয়ে চলে এলাম বসুন্ধরা সিটি। স্টার সিনেপ্লেক্সে তখন চলছে ডেডপুল। মার্ভেলের মুভি। নতুন এক সুপারহিরো। এর পূর্বে পরিচয় ছিল না এর সাথে। তখন আমি সদ্য বেকার ও আমার বন্ধু, সহপাঠী ও প্রাক্তন সহকর্মী (একই ডিপার্টমেন্টে একসাথে পড়বার পর একই কোম্পানিতে একই সাথে চাকুরি শুরু করেছিলাম) সাগর মিলে টিকেট কেটে দেখে ফেললাম সেই ডেডপুল। বন্ধু চাকুরিজীবি বিধায় টিকেটের পয়সা চাপে সম্পূর্ন বন্ধুর ওপর।

ডেডপুল সম্পূর্ণ নতুন ধরনের সুপার হিরো। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ওয়েড উইলসন দিশেহারা হয়ে এক নতুন চিকিৎসার শরণাপন্ন হয় সে। ভালোবাসার মানুষ ভ্যানেসাকে না জানিয়েই। চিকিৎসা করতে গিয়ে সে জানতে পারে তাকে নিয়ে আসলে একটা এক্সপেরিমেন্ট চলছে। বন্দীদশায় দীর্ঘদিন চলে নানা প্রকার পরীক্ষা-নিরিক্ষা। এমন করেই সে একট নতুন শক্তি পেয়ে যায়। অমরত্ব! কিন্তু তার সমগ্র শরীর ক্ষতে ক্ষতে বিক্ষত- দগ্ধ। সে ভাঙুক, ছিঁড়ুক, জ্বলুক। কোন সমস্যা নেই। নতুন করে জোড়া লাগবেই। নতুন করে তার অঙ্গ গজাবেই। দু'-চারদিনেই আবার স্বাভাবিক। সাথে অসুরের শক্তি এসে যায় তার শরীরে। কিন্তু সমস্যা একটাই তার ত্বকের ক্ষত সাড়ে কিন্তু তার চিহ্ণ সাড়ে না। সে বন্দীদশা থেকে পালায়। এরপর নানান ঘটনা পরিক্রমায় তার প্রেমিকা যাকে কিনা সে সরিয়ে দিয়েছিল তার এরূপ রোগের কারণে, সেও তার কাছে ফিরে আসে ভালোবাসার টানে।

নতুন শক্তির মধ্যে সবচেয়ে যে দিকটি বেশি করে জেগে ওঠে, তা হলো অসম্ভব হিউমারের অধিকারী হয়ে ওঠা। সে খিস্তি খেউরে ওস্তাদ, মজা করতে সিদ্ধহস্ত। কাওকে পরোয়া নয়। অনেক খুঁজে নিজেকে সে ডেডপুলে ধারণ করে। প্রতিশোধ পরায়ণ ডেডপুল নিজেকে সুপারহিরো না ভেবে সুপার ভিলেন ভাবতেই তার পছন্দ। লালবর্ণের একটি সুন্দর সুপার স্যুটও বানিয়ে নেয়। এর মাঝে ভিলেন আসে। তার প্রেমিকাকে আটক করে। তাকে উদ্ধারের নিমিত্তে সে আরো ২/৩ জন সুপারহিরো জুটিয়ে নিয়ে ভিলেনের সাথে যুদ্ধে নামে। যে কোন সুপারহিরো মুভির মতন সে নিজের প্রেমিকাকে ভিলেনের কব্জা থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়। নতুন করে শুরু হয় তাদের প্রেম, আরও দ্বিগুন উদ্যোমে। ধুন্ধুমার অ্যাকশনের সাথে অসম্ভব সব স্ল্যাং আর কৌতুকে ঠাঁসা সে মুভিটি দেখে আমরা ফ্যান হয়ে গিয়েছিলাম।

আমি ও আমার বন্ধু দু'জনই ডেডপুলের পুরাই ফ্যান। এটি চিরাচরিত সুপারহিরো নয়। মার্ভেল নিয়ে এসেছে পর্দায় এক ভিন্ন সুপারহিরো। এবং পরবর্তী পর্বও হলে যেয়ে দেখতে প্রতীজ্ঞ হই।

ডেডপুল ২ (২০১৮)




দু'বছর পর এবছর এসেছে ডেডপুলের দ্বিতীয় কিস্তি। আমরা পূর্বের প্রতীজ্ঞা স্মরণ করে ডেডপুল ২ দেখব বলে ঠিক করি। কিন্তু রমযান এসে যাওয়ায় আর সহজে হয়ে ওঠে না। অবশেষে আজকে সকালে উঠে চলে যাই আবার সেই স্টার সিনেপ্লেক্সে। আমার চাকুরি ছাড়ার মাস কয়েক পর আমার সেই বন্ধু সাগরও চাকুরি থেকে ইস্তফা দেয়। অবসর সময়টায় আমরা দু'জনই একসাথে এম বি এ নামক একখানা আজাইরা ডিগ্রী সম্পন্ন করে আরাম করে বসে আছি। এবার টিকেটের টাকাটা দুবেকার ভাগাভাগি করেই দেই।

এবারের গল্পটা আগের গল্পের ধারাবাহিক। ডেডপুল সাহেব ও তার প্রেমিকা ঠিক করে তারা সংসার শুরু করবে। বাচ্চা ছেলে হবে, না মেয়ে হবে, বাচ্চার নাম কি হবে- এসব নিয়ে ভাবাভাবির মধ্যে ডেডপুলের শত্রুদ্বারা আক্রান্ত হয়ে প্রেমিকা হারিয়ে ডেডপুল পুরোই পাগল। এমতাবস্থায় ডেডপুলকে উদ্ধার করতে আসে পুরনো সুপারহিরো বন্ধু যে কিনা এক্স-মেন পুণরুদ্ধার করতে সংকল্পবদ্ধ। প্রফেসর এক্সের সেই স্কুলে নিয়ে আসে। এরপর তারা ফায়ার ফিস্ট নামক এক অতিকায় কিশোরের সাথে সাক্ষাতপ্রাপ্ত হয়, যার হাত থেকে আগুন বের হয়। সে একজন প্লাস সাইজ সুপার হিরো। অ্যাসাইলামে সে অ্যাডমিনেস্ট্রেটরের বুলির শিকার।

এর মধ্যে ডেডপুলের জীবনে ঘটে কিছু উত্থান-পতন। ফায়ারফিস্টকে হত্যা করতে আসে ক্যাবল নামক এক ভবিষ্যতের যোদ্ধা। নানা রকম ফান, কৌতুক আর তীব্র বুলির মধ্যে সিনেমার কাহিনী এগিয়ে চলে। এরমধ্যে আরো বেশ কিছু সুপারহিরো এসে জমে যায় গল্পের কাহিনী। এর বেশি বললে সিনেমা দেখতে গেলে মজা পাবেন না যে দেখেন নি।

পুরো সিনেমায় পূর্ববর্তী বিভিন্ন মুভির চরিত্র নিয়ে কিছু মজা করা হয়েছে যা ছিল উপভোগ্য। গ্রীন ল্যান্টার্ন রায়ান রেনল্ডস ডেডপুল হয়ে দুটি মুভিতেই চমৎকার করেছে। একটু অন্যরকম করে সুপার হিরো ক্যারেক্টারটা আসলেই অসম্ভবরকম ভালো। হাসতে হলে ডেডপুল মুভি দু'টোই অসাধারণ। যদিও প্রথম কিস্তি প্রথম হিসেবে একটু বেশিই অসাধারণ। তবে দ্বিতীয় কিস্তিও খুব কম যায় না।

খানিকটা র' ফান দিয়ে ভরপুর মুভি। ভিডিওতে তেমন কোন দেখার অযোগ্য সিন নেই, তবে ভাষাটা অনেক বেশি গালাগালি পূর্ণ। রোযার মধ্যে অনেকে দেখতে না চাইলে রোযার পরে যেয়ে দেখে আসতে পারেন।

যারাই মুভিটি দেখবেন, শেষের টিজারটা না দেখে ভুলেও ফিরবেন না। ওটা দেখে হতাশ হবেন না বলে রাখছি। তৃতীয় কিস্তি সম্পর্কে একটু ধারণা পেয়ে যাবেন অবশ্যই।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৫৩

শিখা রহমান বলেছেন: ডেডপুল ছবিগুলোর যে ব্যাপারটা আমাকে টানে তা হলো প্রতিটা চরিত্রের তীক্ষ্ণ রসবোধ। ডেডপুল টু দেখে পুরোটা সময় প্রচন্ড হেসেছি। ভালো লেগেছে দারুন।

আজকাল সব সুপারহিরো মুভিগুলোতেই ক্রেডিট শেষে এক্সট্রা টিজার সিন থাকে। থিয়েটারে দর্শকেরা আলো না জ্বালা পর্যন্ত বসে থাকেন এই সিনগুলোর আশায়।

রিভিঊ ভালো লেগেছে। আমি অবশ্য আগেই দেখে ফেলেছি। মারভেল হোক বা ডিসি, সব কমিক সুপার হিরো মুভি আমার দেখা চাইই চাই। :)

শুভকামনা। ভালো থাকবেন।

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৪

মুচি বলেছেন: কৃতজ্ঞতা। আপনার জন্যও শুভকামনা থাকল।

২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ সকাল ৯:২১

রাজীব নুর বলেছেন: সিরিজ মুভি। না দেখি নাই। তবে দেখব।

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

মুচি বলেছেন: দেখে ফেলুন। বিনোদনের জন্য এমন মুভি দেখাই যায়। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.