নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন এক বড় মহাজন

মনের কথা ব্লগে বলে ফেলুন,নয়তো মনে কথার বদহজম হবে

মুনযুর-ই-মুর্শিদ

মুনযুর-ই-মুর্শিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কালো মানিক ম্যান্ডেলা

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৬:৪৩

বর্ণবাদ হচ্ছে এমন একটি ধারনা বা বিশ্বাস যাতে এক জাতির লোকেরা অন্য জাতি অপেক্ষা উৎকৃ্ষ্ট মনে করেন এবং তাদের উপর কর্তৃত্ব করার নিমিত্তে বৈষম্যমূলক আচরণ করেন।

১৬৫২ সালে ওলন্দাজরা কেপ কলোনি প্রতিষ্ঠা করে।১৭৯৫ সালে ব্রিটিশরা কেপ কলোনি দখল করে নেয়।তখন ডাচরা কেপ কলোনি ছেড়ে গিয়ে দক্ষিন উপকূলে নিজেদের বসতি গড়ে তোলে। ব্রিটিশরা কেপ কলোনিকে সমুদ্র যাত্রায় বিশ্রাম/বিরতি স্থল এবং দাস বেচাকেনার জন্য ব্যবহার করতে থাকে।

১৮৬৭ সালে দক্ষিন আফ্রিকার খনিতে হীরা ও ১৮৮৪ সালে স্বর্ণের সন্ধান মেলে; সেই থেকে দক্ষিন আফ্রিকাতে বহিরাগতদের আনাগোনা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়।এক পর্যায়ে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় আদিবাসী আফ্রিকানরা ব্রিটিশ ও ডাচদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ।এ রকম পরিস্থিতিতে কয়েকটি দলের সৃষ্টি হয়।যেমন- কালোদের "আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস" , সাদাদের "ন্যাশনাল পার্টি।

১৯৪৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে "ন্যাশনাল পার্টি " জয় লাভ করে।সেই থেকে ন্যাশনাল পার্টি ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত অশেতাঙ্গদের উপর ব্যাপক দমন নিপীড়ন চালায়।

আদিবাসী কালো আফ্রিকানদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার"আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের"অন্যতম প্রধান নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা।যিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন সমাজ থেকে বর্ণবাদের অস্তিত্ব বিলীনের জন্য। তার জীবনের ২৭ টি বছর কারাগারে কাটিয়েছেন সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য।সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠায় এত বড় ত্যাগ স্বীকার করা নেতা বেশ বিরল।



ক্যালেন্ডারের পাতায় নেলসন ম্যান্ডেলার বর্ণিল জীবনঃ

জুলাই ১৮ ,১৯১৮ ইস্টার্ন কেপ অঞ্চলে এক গোষ্ঠী প্রধানের পরিবারে ম্যান্ডেলার জন্ম ।

ম্যান্ডেলা তার গোত্রের দেয়া "মাদিবা" নামেও জনসাধারণের

কাছে পরিচিত ।

উনি ১৯২৫ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন; সেখানেই উনার এক শিক্ষিকা ।MISS MDINGANE; NELSON ডাক নাম দেন।

১৯৩০ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে উনার বাবা মারা যান।

CLARKEBURY BOARDING INSTITUTE এ উনি JUNIOR CERTIFICATE লেভেল সম্পন্ন করেন।

WESLEYAN SECONDARY SCHOOL থেকে উনি মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাশ করেন।

এরপরে উনি ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রী সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে UNIVERSITY COLLEGE OF FORT HERE এ ভর্তি হন। কিন্তু, ছাত্র আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিঃষ্কার করা হয়।

পরবর্তিতে উনি ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রী অর্জন করেন UNIVERSITY OF SOUTH AFRICA থেকে।এছাড়া নানা বাঁধা বিপত্তির মাঝেই ম্যান্ডেলা আইন বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করেন।

১৯৪২ সাল থেকে উনি রাজনীতিতে সক্রিয় অংশ গ্রহণ শুরু করেন।

১৯৪৪ সালে উনি AFRICAN NATIONAL CONGRESS এ যোগদান করেন।

১৯৪৮ সালে ANC Youth League এর ন্যাশনাল সেক্রেটারী নির্বাচিত হন।

১৯৫১ সালে উনি ANC Youth League এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

১৯৫২ সালে DEFIANCE CAMPAIGN এ উনি "ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার ইন চীফ" নির্বাচিত হন।ম্যান্ডেলা সহ ১৯ জন ভলান্টিয়ারকে SUPPRESSION OF COMMUNISM ACT এর অধীনে দোষী সাব্যস্ত করে ৯ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়।

২১ মার্চ ,১৯৬০ সালে SHARPEVILLE MASSACRE সংঘটিত হয়।

৮ এপ্রিল ,১৯৬০ সালে AFRICAN NATIONAL CONGRESS কে নিষিদ্ধ করা হয়।

১৯৬১ সালে ANC গোপনে Umkhonto weSizwe(MK) নামে কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।মূলত ১৯৬১ সালে ANC সশস্ত্র বিপ্লবের সিদ্ধান্ত নেয়।

১১ জানুয়ারী,১৯৬২ সালে ম্যান্ডেলা-সহ ANC এর এক অংশ সামরিক প্রশিক্ষনের জন্য দেশ ত্যাগ করেন।

২৩ জুলাই, ১৯৬২ সালে ম্যান্ডেলা প্রশিক্ষন শেষে দেশে ফিরে আসেন।

একই বছরের ৫ আগস্ট ম্যান্ডেলাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়।

অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে ম্যান্ডেলাকে যাবৎজীবন কারাদন্ড দেয়া হয়।



২৭ মে ,১৯৬৩ সালে ম্যান্ডেলাকে ROBBEN দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয়।

১২ জুন ,১৯৬৩ সালে PRETORIA জেলে আনা হয়|

একই বছরের ৯ অক্টোবর কুখ্যাত RIVONIA TRIAL শুরু হয় ।

১১ জুন,১৯৬৪ সালে ম্যান্ডেলাসহ ANC নেতাদের আবার যাবৎজীবন কারাদন্ড সাজা ঘোষনা করা হয়।

১৩ জুন,১৯৬৪ সালে রোবেন দ্বীপের কারাগারে ম্যান্ডেলাকে ফেরত পাঠানো হয়।

৩১ মার্চ,১৯৮২ সালে ম্যান্ডেলা,SISULU,RAYMOND MHLABA,ANDREW MLANGENI ,AHMAD KATHRADA কে POLLSMOOR জেলে পাঠানো হয়।

পরবর্তীতে ডিসেম্বর ৭, ১৯৮৮ সালে ম্যান্ডেলাকে VICTOR VERSTER জেলে পাঠানো হয় । এখানে উনি ১৪ মাস কারা ভোগ করেন।

ফেব্রুয়ারী ২, ১৯৯০ সালে AFRICAN NATIONAL CONGRESS কে নিষিদ্ধ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।

ফেব্রুয়ারী ১১, ১৯৯০ সালে ম্যান্ডেলাকে মুক্তি দেয়া হয়।

ডিসেম্বর ১০, ১৯৯৩ সালে বর্ণবাদ বিরোধী অসামান্য অবদানের জন্য উনাকে নোবেল পুরষ্কার প্রদান করা হয়।

২৭ এপ্রিল,১৯৯৪ সালে দক্ষিন আফ্রিকার ইতিহাসে প্রথম বারের মতো কৃ্ষ্ণাঙ্গরা তাদের ভোট দেয়ার সুযোগ পান।

মে ৯, ১৯৯৪ সালে উনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।এক মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় থেকে উনি স্বেচ্ছায় প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে আসেন;যা দক্ষিন আফ্রিকার ইতিহাসে'ত বটেই সারাবিশ্বের ইতিহাসে বেশ বিরল ঘটনা।

ডিসেম্বর ১৪, ১৯৯৪ সালে উনার আত্নজীবনীমূলক গ্রন্থ "LONG WALK TO FREEDOM" প্রকাশ করেন।

১৯৯৫ সালে "NELSON MENDELA CHILDREN'S FUND" প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৯৯ সালে "NELSON MANDELA FOUNDATION" প্রতিষ্ঠা করেন।

অক্টোবর ১২, ২০১০ সালে উনার দ্বিতীয় গ্রন্থ "CONVERSATIONS WITH MYSELF" প্রকাশিত হয়।

জুন ২৭, ২০১১ সালে "THE AUTHORISED BOOK OF QUATATIONS" প্রকাশিত হয়।

ডিসেম্বর ৫, ২০১৩ সালে ম্যান্ডেলা মারা যান।



তথ্যসূত্রঃ ১)উইকিপিডিয়া,

২)http://www.nelsonmandela.org

৩) দৈনিক মানব জমিন,১৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৪ ইং

৪) LONG WALK TO FREEDOM

















মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.