নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন এক বড় মহাজন

মনের কথা ব্লগে বলে ফেলুন,নয়তো মনে কথার বদহজম হবে

মুনযুর-ই-মুর্শিদ

মুনযুর-ই-মুর্শিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাত্না মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী:

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১৮





১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিম ভারতের পোর বন্দরে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর জন্ম।বাবা-কাবা গান্ধী এবং মা-পুতলীবাঈ।

গান্ধীজি ছোট বেলা থেকেই খুব ধীর স্থির শান্ত স্বভাবের ছিলেন।উনি স্কুলে পড়াকালীন সময়ে কখনও খুব ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারেননি।এমনকি খেলাধুলায়ও ভালো ছিলেন না।এসব নিয়ে উনি কখনও মনক্ষুন্নও হতেন না।তবে গান্ধীজির একটা গুন সবাইকে আকৃষ্ট করতো সেটা হচ্ছে উনি কখনও মিথ্যা বলতেন না।

১৮৮৭ সালে বোম্বে ইউনিভার্সিটি থেকে গান্ধীজি মেট্রিকুলেশন পাশ করেন।

১৮৮৮ সালে "বার এ্যাট ল" ডিগ্রী অর্জনের জন্য লন্ডন যাত্রা করেন।

লন্ডনে অধ্যয়নকালে হেনেরী এস সল্টের "Plea of Vegetarianism" পড়ে বেশ অনুপ্রানিত হন।সেই মাফিক খাদ্যাভাস পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।

১০ জুন,১৮৯১ সালে উনি "বার এ্যাট ল" ডিগ্রী লাভ করেন এবং জন্মভূমি ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।



পরবর্তীতে গান্ধী যখন দক্ষিন আফ্রিকাতে তখন লিও টলস্টয় এর "কিংডম অব গড উইথ ইন ইউ" বই পড়ে টলস্টয়ের চিন্তা ধারার প্রতি উনার আগ্রহ জন্মায়।লিও টলস্টয় এর আরো কিছু বই পড়ার পর গান্ধীজি লক্ষ্য করেন টলস্টয় এর লেখা উনার চিন্তায় বেশ প্রভাব ফেলছে।



ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে গান্ধীজি একেবারে প্রথম সারির নেতা ছিলেন এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই।তবে তিনি স্বাধীনতা চেয়েছেন অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে।



উনার সারাটা জীবনই উনি উৎসর্গ করে ছিলেন প্রিয় মাতৃভূমির জন্য।

এই মহাত্না আততায়ী নথুরাম গডসের হাতে জানুয়ারী ৩০, ১৯৪৮ সালে মারা যান।



নোয়াখালীতে গান্ধীজিঃ

সময়কাল ১৯৪৬ সালের অক্টোবর মাস , তৎকালীন নোয়াখালীতে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।দাঙ্গার খবর শুনে গান্ধীজি বেশ বিচলিত।উনি ১৯৪৬ সালের ৭ নভেম্বর শান্তি মিশনে নোয়াখালী পৌছান।নোয়াখালীর চৌমুহনীতে প্রথম জনসভা করেন।এরপর দত্তপাড়া গ্রাম থেকে শান্তি যাত্রা শুরু করেন।উনার উদেশ্য ছিল জনসংযোগের মাধ্যমে মানুষের মাঝে সহনশীলতা ,সৌহার্দ্য ফিরিয়ে আনা।













গান্ধীজি ১৯৪৭ সালের ২৯ জানুয়ারী জয়াগ গ্রামে আসেন।

গান্ধীজির আগমন স্মরনীয় করে রাখতে ,গান্ধীজির সম্মানে তৎকালীন জমিদার এবং নোয়াখালীর প্রথম ব্যারিস্টার হেমেন্দ্র কুমার ঘোষ জয়াগের তার সমস্ত সম্পদ মহাত্না গান্ধীকে দান করেন।সেই সম্পদ দিয়ে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অত্র এলাকার উন্নয়নের জন্য,উক্ত এলাকায় শান্তির বার্তা প্রচারের জন্য গান্ধী আশ্রমের যাত্রা শুরু হয়।

গান্ধীজি ১৭ ফেব্রুয়ারী,১৯৪৭ সাল পর্যন্ত নোয়াখালী জেলায় ছিলেন।







১৮ ফেব্রুয়ারী উনি চাঁদপুর জেলায় যাত্রা শুরু করেন।চাঁদপুর যাত্রাকালে বিহারে দাঙ্গা শুরু হয়েছে জানিয়ে উনার কাছে চিঠি লেখেন ডাঃ সৈয়দ মাসুদ। ডাক্তার সাহেব উনাকে বিহারে যাবার জন্য অনুরোধ করেন।



গান্ধীজি বিহারে যাবার সময় শিষ্য শ্রী চারু চৌধুরীকে নোয়াখালী ফিরে যাবার নির্দেশ দেন।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাসহ , উন্নয়ন কাজ পরিচালনার জন্য জয়াগ গ্রামে থেকে যান গান্ধী শিষ্য শ্রী চারু চৌধুরী সহ,শ্রী মদনমোহন চট্টোপাধ্যায়,শ্রী দেবেন্দ্র নারায়ন সরকার,শ্রী অজিত কুমার দে,শ্রী জীবনকৃষ্ণ সাহা।শিষ্যগণ গুরুর নির্দেশ জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত পালন করেছেন।



১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর গান্ধী আশ্রমের উপর পাকিস্তান সরকার আক্রোশ প্রকাশ শুরু করে।১৯৫০ এর দশক,৬০ এর দশকে দফায় দফায় নির্যাতন চালানো হয়।এক পর্যায়ে গান্ধী আশ্রমের সমস্ত সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি হিসেবে ঘোষনা করা হয়, সেই সাথে প্রায় সমস্ত কর্মকর্তাকে দফায় দফায় জেলে প্রেরন করা হয়।১৯৭১ সালে পাক বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা শ্রী মদনমোহন চট্টোপাধ্যায়,শ্রী দেবেন্দ্র নারায়ন সরকার,শ্রী অজিত কুমার দে,শ্রী জীবনকৃষ্ণ সাহাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।শ্রী চারু চৌধুরী সে সময়টাতে জেলে বন্দী থাকায় সে যাত্রায় বেঁচে যান।



১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ অধ্যাদেশ বলে "গান্ধী আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্ট" গঠন করে এবং ট্রাস্টের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়।নানা চরাই উৎড়াই পেরিয়ে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এখনও উক্ত এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে নানা প্রয়াশ চালিয়ে যাচ্ছে।



গান্ধী বিষয়ক উল্লেখযোগ্য বইঃ

ডি. জি. তেন্ডুলকরের আট খণ্ডের Mahatma. Life of Mohandas Karamchand Gandhi, পিয়ারীলাল ও সুশীলা নায়ারের দশখণ্ডের Mahatma Gandhi,

আমেরিকান সেনাবাহিনীর জি বি সিংহ গবেষণা গ্রন্থ ‌Gandhi Behind the Mask of Divinity এর জন্য।



এক নজরে মহাত্না গান্ধীর জীবনীঃ

জন্মঃ২ অক্টোবর,১৮৬৯।পোর বন্দর, পশ্চিম ভারত।২০০৭ সালের ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২রা অক্টোবর-কে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা।

বাবাঃকাবা গান্ধী,মাঃপুতলীবাঈ,

বিয়েঃ ১৮৮৩ সালে।স্ত্রীঃ কস্তুরীবাঈ।

লন্ডন যাত্রাঃ ১৮৮৮ সালে।

দক্ষিণ আফ্রিকা গমনঃ ১৮৯৩ সালে।

ভারতে প্রত্যাবর্তনঃ ১৯০১ সালে।

বংগভঙ্গের প্রতিবাদঃ ১৯০৫ সালে।

সত্যাগ্রহের সূচনা(সত্যাগ্রহ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর প্রতিষ্ঠিত একটি দর্শন এবং অহিংস প্রতিরোধের অনুশীলন।): ১৯১৯ সালে।

কলকাতা কংগ্রেসে ভারতের স্বাধীনতার পক্ষে অভিমতঃ ১৯২৮ সালে।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনঃ ১৯৪২ সালে।

স্ত্রী কস্তুরীবাঈ এর মৃত্যুঃ ১৯৪৪ সালে।

দাঙ্গার পর নোয়াখালী আগমনঃ ১৯৪৬ সালে।

নোয়াখালীতে শান্তি ভ্রমনঃ ১৯৪৭ সালে।

জয়াগবাস(নোয়াখালী): ২৯ জানুয়ারি,১৯৪৭ সালে।

আততায়ী নথুরাম গডসের হাতে মৃত্যুঃ জানুয়ারী ৩০,১৯৪৮ সালে।



তথ্যসূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো,২রা অক্টোবর,২০০৯।

http://www.gandhiashrambd.org

উইকিপিডিয়া।



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:৫৭

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: চমৎকার তথ্যবহুল পোস্ট।

এই মহাত্মার জন্য বিনম্র শ্রদ্ধা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.