নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন এক বড় মহাজন

মনের কথা ব্লগে বলে ফেলুন,নয়তো মনে কথার বদহজম হবে

মুনযুর-ই-মুর্শিদ

মুনযুর-ই-মুর্শিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তু ইউ-ইউ বিজ্ঞানে নতুন উপাখ্যান লেখা নারী

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৭

ছবিতে কি দেখতে পাচ্ছেন? ছবিতে একজন তরুণীকে ল্যাবে সহকর্মীর সাথে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।
তিনিই হচ্ছেন Tu Youyou।



দেখে মনে হচ্ছে তিনি চাইনিজ বংশভূত ।তাহলে............ ভিয়েতনাম যুদ্ধের সাথে তার নাম জড়ালো কিভাবে? আবার বলা হচ্ছে তিনি ২০১৫ সালে মেডিসিনে নোবেল বিজয়ী নারী তাও আবার চাইনিজ।

আচ্ছা গল্পটা আস্তে আস্তে শুরু করা যাক।
ভিয়েতনাম এক সময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল।এক সময় হো চি মিন এর নেতৃত্বে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়।ভিয়েতনাম রাজনৈতিকভাবে উত্তর আর দক্ষিণভাগে বিভক্ত হয়।
উত্তরের নেতৃত্বে হো চি মিন।

যুদ্ধের এক পর্যায়ে আমেরিকান আর্মির আগমন ঘটে।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দুই পক্ষের জন্যই ম্যালেরিয়া বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
আমেরিকান আর্মি ও তাদের মিত্রদের জন্য প্বার্শ-প্রতিক্রিয়া থাকলেও ব্যবহারের জন্য দ্রুত চলে এলো Mefloquine। কিন্তু এই নতুন কার্যকরী ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ঔষধ যেন উত্তরে না যায় সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা রাখা হল।

হো চি মিন আর মাও সেতুং এর রাজনৈতিক মতাদর্শ এক। হো চি মিন মাওয়ের সাহায্য চাইলেন। মি মাও ম্যালেরিয়ায় কার্যকরী ঔষধ আবিষ্কারে চীনের গবেষকদের নিয়ে গোপন প্রকল্প শুরু করলেন যার নাম "মিশন ৫২৩"।২৩ মে,১৯৬৭ এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় যার উদ্দেশ্য ম্যালেরিয়ায় কার্যকরী ঔষধ আবিষ্কার এবং তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।"মিশন ৫২৩" এর গবেষক দলের একজন Tu Youyou ।দু বছর পর ১৯৬৯ সালে ইউ-ইউকে ঐ মিশনের প্রধান পদে নিযুক্ত করা হয়।

এই গবেষনা দলটি প্রায় ২০০০ চাইনিজ হারবাল মিশ্রন পরীক্ষা করে ২০০ মিশ্রনকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় যা ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর।কিন্তু সু-নির্দিষ্ট উপাদান চিহ্নিত করা কঠিন হচ্ছিল।
ইউ-ইউ ছাড় দেবার পাত্রী নন। তিনি অবশেষে তাঁর দল-সহ চিহ্নিত করতে সক্ষম হন Artemisia annua L নির্যাস ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর।

এবার Artemisia annua L নিয়ে বিস্তর ঘাটা-ঘাটি শুরু হল। 284–346 CE সময়ে রচিত "A Handbook of Prescriptions for Emergencies by Ge Hong" বইয়ে Artemisia annua নিয়ে গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য পাওয়া গেল।



অবশেষে ১৯৭২ সালে Artemisinin আবিষ্কার সম্ভব হয়েছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে Artemisinin আবিষ্কারের পরে গবেষক-দল প্রথমে নিজেদের দেহে প্রয়োগ করেছিলেন।১৯৭৭ সালে প্রথম বাইরের পৃথিবী জানতে পারে যে Artemisinin আবিষ্কার হয়েছে।



১৯৮১ সালে " Scientific Working Group on the Chemotherapy of Malaria"তে ইউ-ইউ তাদের এই কাজ উপস্থাপনা করেন।এরপরে কেটে গেছে অনেক বছর Artemesinin derivative থেকে আরো কার্যকর উপাদান তৈরীতে অনেক গবেষনা চলছে।
অবশেষে Tu Youyou কে ২০১৫ সালে ম্যালেরিয়া নিয়ে তাঁর অনবদ্য কাজের স্বীকৃ্তি স্বরূপ মেডিসিনে নোবেন পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়েছে।

সংক্ষেপে Tu Youyou:
১৯৫৫ সালে তিনি বেইজিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ফার্মেসী থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
এরপরে চাইনিজ একাডেমি অব চাইনিজ মেডিক্যাল সায়েন্সে গবেষনায় যুক্ত হন।

Tu Youyou প্রথম চীনা নারী যিনি নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
শুনতে অবাক লাগলেও তাঁর কোন Post Graduation ডিগ্রী বা PhD ছিল না। চীনে তাকে "তিন না বিজয়ীও" বলা হয়; "যার কিনা কোন মেডিক্যাল ডিগ্রী নাই,কোন PhD নাই, যিনি কখনও দেশের বাইরে কাজও করেন নি।

বিজ্ঞানে নতুন উপাখ্যান লেখা এই গবেষকের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।

তথ্যসূত্রঃ
http://www.bbc.com/news/blogs-china-blog-34451386
http://www.nature.com/nm/journal/v17/n10/full/nm.2471.html

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৫

আম্মানসুরা বলেছেন: বাহ! নারী বলেই বোধ হয় নারীদের জয়গাথা জানতে এত ভালো লাগে।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২২

ইলুসন বলেছেন: শ্রদ্ধা রইল।

সব কিছুতে নারী পুরুষ ভেদাভেদ করেন কেন? @আম্মানসুরা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.