নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টিভিতে এনিমেল প্ল্যানেট চ্যানেলে জেরেমী ওয়েডের রিভার মনষ্টার পর্বগুলো আমি বারবার দেখি। ছোটবেলায় বড়শিতে মাছ ধরার নেশা ছিল বলেই হয়তো এই এক্সট্রিম এংলারের দৃশ্যগুলো এত ভালোলাগে।কিন্ত তার চেয়েও বড় কথা এই রিভার মনষ্টার পর্বগুলো আমাকে বহু বছর আগের এক রাতের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। আজ যদি সে সময় থাকতো তাহলে জেরেমীকে বাংলাদেশের হাওড়ে মনষ্টার খুজতে অনুরোধ করতাম।
অফিসের কাজে হাওড় এলাকায় আমাদের কয়েকটি শাখা অফিসে প্রশিক্ষন দিতে গিয়েছিলাম। মার্কুলি, আনন্দপুর, দাউদপুর, দিরাই, ইত্যাদি গ্রামে ছিল আমাদের শাখা বা ক্যাম্পগুলোর অবস্থান। ঢাকা থেকে ভৈরব তারপর লঞ্চে মার্কুলি। সেখান থেকে যেতে হবে সবগুলো শাখায় কিন্ত পাড়ি দিতে হবে সমুদ্রের মত সেই হাওড় তাও কিনা ছোট ছৈইয়া নৌকায়। সে সময় ইঞ্জিনের নৌকার প্রচলন হয়নি। পুরো একদিন লাগতো এক ক্যাম্প থেকে আরেক ক্যাম্পে যেতে। যা হোক এসব বৃত্তান্ত লেখা আমার উদ্দেশ্য নয়।
কাজের এক পর্যায়ে পৌছালাম আনন্দপুর। ছোট্ট গ্রাম চারিদিকে তার অথৈ পানি। ঢেউ আছড়ে পড়ছে দ্বীপের মত সেই গ্রামের চারিদিকে । গ্রামের ঠিক মাঝখানে একটি টিনের ঘরে অফিস, সামনে বারান্দা। সন্ধ্যায় বাবুর্চি একটা হ্যাজাক জালিয়ে দিয়ে গেল উঠানে।
গ্রামের পুরুষদের নিয়ে ছিল আমাদের সমিতি যার বেশিরভাগই ছিল মৎসজীবি। একটু পর একজন দুজন করে বেশ কয়েকজন সমিতির সদস্য হাজির হলো সেখানে। আমিও গিয়ে বসলাম তাদের সাথে। অন্ধকার নেমে এসেছে ততক্ষনে, সাগরসম হাওড় আর দেখা যাছিলনা তবে ঢেউএর ছলাৎ ছলাৎ শব্দ কানে ভেসে আসছিল অবিরত।
শুরু হলো আলাপ। মাছের কথা উঠতেই বৃদ্ধ বয়সের একজন বলে উঠলো এখন আর হাওড়ে আগের মতন মাছ নেই। বুঝলাম মাছ ধরা তার পেশা ছিল। কিন্ত জেলে বলে সম্বোধন করায় বয়োজেষ্ঠ কয়েকজন একসাথে প্রতিবাদ করে উঠলো। তারা তাদের জেলে বলে মানতে নারাজ। বল্লো তারা জেলে নয়, মাছ শিকারী। বুঝতে পারছিলামনা কেন তারা এই পার্থক্য করতে চাইছে। এটা বুঝতে গিয়ে তাদের মুখ থেকে যে কয়টি কাহিনী শুনেছিলাম তার তুলনা শুধু এনিমেল প্ল্যানেটের রিভার মনষ্টারের পর্বগুলোর সাথেই মিলে। আর তাই তারা যে যথার্থই মাছ শিকারী আমি তা মানতে বাধ্য হয়েছিলাম।
আনন্দপুর গ্রামের এমনি এক কাহিনী। এক বর্ষায় খবর এলো গ্রামের হাঁসগুলো পানিতে নামলে আর ফিরছে না।পাশের গ্রামের এক ছোট শিশুও নিখোজ । খবর গেল মাছ শিকারীদের কাছে। তারা লম্বা জেলে নৌকা নিয়ে হাজির হলো। সামনের গলুইতে হ্যাজাক বাতি জ্বালানো, পেছনে হারপুন হাতে শিকারীর তীক্ষ দৃষ্টি। হাওড়ে বড় মাছ ধরার এটাই পদ্ধতি। হ্যাজাকের আলোতে সন্মোহিত হয়ে মাছ ভেসে উঠে জলের উপর আর সেই সুযোগে হারপুন ছুড়ে মারে শিকারী। বক্তা নিজেই ছিল সেই শিকারী।
প্রথম রাতে শিকারীরা গ্রামের চারিদিকে নৌকা বেয়ে কিছুই দেখতে পেলো না। দ্বিতীয় রাতে আবার অভিযান শুরু করলো। সেই রাতে দেখা মিললো সেই হাঁস খাদকের। বিস্মিত হয়ে তারা দেখলো তাদের নৌকার সমান সাইজের প্রকান্ড এক বোয়াল ভেসে উঠেছে পানির উপর। শিকারী তড়িত সিদ্ধান্ত নিল হারপুন ছুড়ে না মারার। কারন হারপুন বিদ্ধ হলে সে যে দৌড় দিত তার বেগ সামলানো তাদের পক্ষে সম্ভব হতো না। মৃত্যু ছিল নিশ্চিত। দৈত্যাকার মাছটি তারা ধরতে পারেনাই বটে তবে হাঁস আর শিশু হারানোর রহস্য উদ্ধাঘাটন ঠিকই করতে পেরেছিল ।
এই সিদ্ধান্তের যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা সে দিয়েছিল আরেকটি কাহিনী বলে আর সেটা ছিল আইড় মাছের। এমনি ভাবে তার দল প্রকান্ড এক আইড় মাছকে হারপুন দিয়ে গেথেছিল। কিন্ত মাছটি দমার পাত্র ছিলনা। হারপুন গাথা অবস্থায় দিয়েছিল দৌড়। দুর্ভাগ্যবশত একজন শিকারীর পায়ে দড়িটি আটকে ছিল। ফলে টানের চোটে নৌকা থেকে সে ছিটকে পড়লো পানিতে। তাকে আর জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নাই। এই অভিজ্ঞতাই বোয়ালটিকে হারপুন ছুড়ে না মারার জন্য তাদের বিরত রেখেছিল।
মাছের হাতে মানুষের মৃত্যুর আরেকটি কাহিনী তারা আমাকে বলেছিল। তখন হাওড়ে অনেক বড় বড় পাঙ্গাস মাছ পাওয়া যেত। জেলেরা পাঙ্গাসের ঝাঁককে জাল দিয়ে বেড় দিয়ে রাখতো। এরপর প্রতিদিন কিছু কিছু মাছ ধরে বাজারজাত করতো। এমনি একটি ঘেরে জেলেরা লক্ষ্য করলো মাছ যা থাকার কথা তা থেকে যেন কমে যাচ্ছে। সিদ্ধান্ত নিল ব্যাপারটি পরীক্ষা করার। নামালো ডুবুরীকে। কিন্ত সে আর ভেসে উঠছে না। পরে সবাই বুঝতে পেরেছিল যে জালের এক জায়গা ছিদ্র করে পাঙ্গাসগুলো বেড়িয়ে যাচ্ছিল। ডুবুরী দেখতে পেয়ে তা বন্ধ করার চেষ্টা নিয়েছিল কিন্ত সেই দৈত্যাকার পাঙ্গাসের ঝাঁক তাকে এমনভাবে চেপে ধরেছিল যে তাদের হাত থেকে সে আর মুক্তি পায়নি।
সত্যি ভয়ংকর তাদের সেই অভিজ্ঞতার কাহিনী শুনতে শুনতে রাত দুটো বেজে গিয়েছিল। হাওড়ের সেই ভয়ংকর মনষ্টারদের গল্পগুলো আজও আমার স্মৃতিতে উজ্জ্বল। এনিমেল প্ল্যানেটের রিভার মনষ্টারের কাহিনীগুলোর সাথে আমি তার সাদৃশ্য খুজে পাই।
বাংলাদেশে সেই সব রিভার বা হাওড় মনষ্টারদের কাহিনী এখন আর হয়তো শোনা যাবে না। আর সে সব শিকারীরাও হয়তো আর বেঁচে নেই।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২০
মুরশীদ বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য ।
২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৩
মদন বলেছেন: +
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২১
মুরশীদ বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মদন প্লাসের জন্য।
৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২২
শায়মা বলেছেন: কি ভয়ংকর!!!!
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪
মুরশীদ বলেছেন: আসলেও ভয়ংকর । মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খাইছে!!!!! বলেন কি!!!! দারুন একটা জিনিস শেয়ার করলেন!!!!
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫
মুরশীদ বলেছেন: আপনার ভালোলেগেছে জেনে খুশি হোলাম। অনেক ধন্যবাদ।
৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১১
আহমেদ জী এস বলেছেন:
মুরশীদ,
অনেকদিন পরে এলেন এমোন একটি লেখা নিয়ে, যা নষ্টালজিক করে দিয়ে গেলো । আজকালকার ছেলে মেয়েদের কাছে এগুলো কিম্বদন্তী মনে হবে ।
আজ আর সেই রাম্ও নেই, সেই অযোধ্যা্ও নেই ।
যে সময়ের কথা, সে সময় পুকুর ভরা মাছ ছিলো, তাদের আকারও ছিলো বিশাল । দক্ষিনের নদীগুলোতে "ভোল" নামের বেশ কিছু মাছ ছিলো । এগুলো লম্বায় কমপক্ষে ৮/১০ ফুটের বেশী হতো । দেখে থাকবেন হয়তো । এক একটা রুই বা কাতল মাছই হতো ১৫/২০ কেজির বেশী । আজ কি এটা কল্পনা করা যাবে ?
ক্রমবর্দ্ধমান জনসংখ্যা তার অপরিমেয় খাদ্য চাহিদার যোগান চাইতে গিয়েই এমোনটা হাল করে দিয়েছে মাছ সম্পদের । আজ একটি ৩/৪ কেজি ওজনের মাছ দেখেই এ প্রজন্মের মনে হয় , কি বিরাট একটা মাছই না দেখেছে সে ।
হায়, কতো দ্রুতই না হারিয়ে গেলো সেই দিনগুলো !
শুভ সন্ধ্যা ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩
মুরশীদ বলেছেন: আহমেদ জী এস অনেক ধন্যবাদ।
আসলে ছোটবেলায় বিলে পুকুরে বর্ষায় এবং চৈত্রে মাছ ধরা নিয়ে আমার এত স্ম্বৃতি আছে যে তা মনে করতে করতেই অনেক সময় কেটে যায়। আর আনন্দপুরের স্বৃতি তো আলাদা।
সেই বড় বড় নদীর পাঙ্গাস, রুই, কাতলা, মহাশোল মাছের কথা বাদই দিলাম ছোট মাছ এর কথাই যদি বলি তাহলে আজকে কি সেই ট্রান্সপ্যারেন্ট ছোট চান্দা, সোনালী ও কালো ডোরার বৈচা, রঙ্গীন খৈলসা, হলুদ কালো গুতুম আর সেই বিভিন্ন প্রকার পুটি মাছই কি দেখা যায় ?
৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩২
কয়েস সামী বলেছেন: দুর্দান্ত!
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৪
মুরশীদ বলেছেন: ধন্যবাদ কয়েস সামী ।
৭| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১২
জুন বলেছেন: প্রিয় বিষয় নিয়ে লেখা পোষ্ট ভালোলাগলো ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৯
মুরশীদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভালোলাগার জন্য ।
৮| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৮
নিরপেক্ষ মানুষ বলেছেন: দুর্দান্ত
কাহিনী শুনলাম।আরো বেশ কয়েক বছর আগে পুকুরে গোসল করতে নেমে বোয়াল মাছের হামলায় প্রাণ হারানো একটা ঘটনা শুনেছিলাম।ঐ ঘটনা শুনার পর অনেকদিন পুকুরে গোসল করতে নামলেই কাহিনিটা মনে পড়ে যেত... ব্যাপারগুলো সত্যিই ভয়ংকর।এখন এই ধরণের ঘটনা শুনাও যায় না
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০২
মুরশীদ বলেছেন: ধন্যবাদ নিরপেক্ষ মানুষ আপনার মন্তব্য আর ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য। এধরণের পুকুরে নামলে এমনিতেই একটু ভয় ভয় করে কারণ নীচে তো কিছু দেখার উপায় নেই। শোনা যায়না এর কারণ হতে পারে এখন সব পুকুরই মোটামুটি চাষের আওতায়।
৯| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:০৬
সুরঞ্জনা বলেছেন: ছোটোবেলা থেকে সিলেটে বড় হওয়াতে হাওরের এমন অনেক কাহিনী শুনেছি। আব্বার মুখে শুনেছি অনেক বড় দিঘীতেও নাকি এমন দৈত্যাকার মাছের হদিশ পাওয়া যেতো।
খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। আমার নাতির খুবই প্রিয় বিষয়ের পোস্ট। তাকে পড়ে শোনাবো।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৬
মুরশীদ বলেছেন: আসলে এসবই যেন রূপকথার মত মনে হয়। হাওড় দিঘী এসবে যে মাছের সমাহার ছিল তাইতো বলে মাছে ভাতে বাঙ্গালী। আপনাদের সিলেটতো ধান আর মাছের জন্যই বিখ্যাত। চা পাতাতো অনেক পরে আসলো।তবে এখনো দেশের যত বড় বড় মাছের সাপ্লাই তা আপনাদের সিলেটের হাওড় অঞ্চল থেকেই আসে।পোষ্ট পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১০| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২৭
মামুন রশিদ বলেছেন: যে গ্রামগুলোর নাম লিখলেন, এগুলো আমার পাশের গ্রাম । আমার গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং সদরে ।
উল্টে যাওয়া নৌকার মত বোয়াল মাছের কাহিনী আমিও শুনেছি । আর সাত/আট বছরের বালকের সমান বোয়াল মাছ আমি নিজেও দেখেছি এবং খেয়েছি ।
যখন 'উজাই' উঠে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে যখন আকাশ গুড়ুগুড়ু ডাকে এবং কিছু বৃষ্টি হয়, তখন বোয়াল মাছেরা নদীতে পড়া পানির ছোট ধারা বেয়ে উপরে আসতে থাকে । আর তখনই ওৎ পেতে থাকা মাছ শিকারিরা দেশি হারপুন ছুড়ে তাদের ধরে ।
ভালো লাগল । ধন্যবাদ ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১২
মুরশীদ বলেছেন: সত্যি আপনাদের অঞ্চলটা অস্বাভাবিক সুন্দর এবং ব্যাতিক্রমী। বানিয়াচং তো বিখ্যাত নাম।হাওরের অনেক গল্প আমি শুনেছি আমি ঐ অঞ্চলের কলিগদের কাছ থেকে। প্রকৃতির সাথে মানুষের আশ্চর্য সমন্বয় এবং বিপদে পরস্পরকে সাহায্যের অনেক উদাহরণ।
তবে সড়ক যোগাযোগের উন্নয়নের সাথে সাথে জানি না প্রকৃতি তার সেই রূপ কতটা এখনো ধরে রেখেছে।
মন্তব্য এবং ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ মামুন রশিদ।
১১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
বেকার মানুষ বলেছেন: -
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১২
মুরশীদ বলেছেন:
১২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪২
মুদ্দাকির বলেছেন: ভালো লাগল
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২১
মুরশীদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভালোলাগার জন্য
১৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৪
লিঙ্কনহুসাইন বলেছেন: আমাদের এলাকাতে এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল ! ১৯৯৮ এর বন্যার পর । আমাদের এলাকায় একটা গোরস্থান ছিল , আর সেই গোরস্থানের সাথেই ছিল এক বিশাল পুকুর , প্রতিবছর জেলেরা সেই পুকুর কিনে মাছ ধরে বিক্রি করতো , সেই পুকুরের সুনাম ছিল অনেক , কারণ জেলেরা প্রচুর মাছ পেতো সেই পুকুরে । প্রতিবছর ১ লাখ টাকারও বেশি দাম উঠতো সেই পুকুর বিশেষ করে কৈ মাছ আর শিং মাছ পাওয়া যেতো বেশি । কিন্তু ১৯৯৮ এ পুকুরটির দাম উঠেছিল প্রায় ১লাখ ২৫ হাজার টাকা , তো জেলেরা মাছ ধরার জন্য জাল পেতেছে কিন্তু কোন মাছই পাচ্ছেনা । ৭ দিনের দিন জাল পুকুরের এক পাশে চাপিয়ে ফেলেছে কিন্তু এই ৭ দিনে মাছ বিক্রি করেছে মাত্র ২৫ হাজার টাকার ! প্রতি বছর এই পুকুর থেকে জেলেরা কম করে হলেও ২ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে কিন্তু এইবার মাছ নেই !! তো ৭ দিনের দিন রাতে জাল উঠাতে গিয়ে এক জেলে নিখোজ হয় !! আর সেই নিখোজ সংবাদ বিদ্যুৎ গতিতে ছুটে যায় আশে পাশে সব গ্রামে , সবাই বলাবলি করতে লাগলো জ্বিন ভুতে হয় তো এই জেলেকে নিয়ে গেছে বা মেরে ফেলেছে !! তাই আশে পাশে সব গ্রামের মানুষ দিনের বেলায় পুকুর দেখতে আস্তো কিন্তু রাতের বেলায় কেউ থাকতোনা । আর জেলেরাও মাছ ধরতে ভয় পেতে শুরু করলো ! তো তখন এক জেলে পুকুরের মাঝে বিশাল আকারের এক মাছ দেখলো আর সবাইকেই জানালো এবং আস্তে আস্তে তারা জাল পুকুরের পাশে চাপাতে থাকলো এবং একে একে উঠে এলো বিশাল আকারের ৪ টা আফ্রিকান মাগুর মাছ !!! সব চাইতে বড়টার উজন ছিল ৭৪ কেজি , ৫৮ কেজি , ৪৬ কেজি , ৩৩ কেজি উজনের ৪ টা মাগুর !! সবাই ধারণা করলো এই মাগুর মাছেই পুকুরের সব মাছ খেয়েছে এবং এক জেলেকে খেয়েছে ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৬
মুরশীদ বলেছেন: জেরেমী ওয়েডের আফ্রিকান ক্যাটফিসের কয়েকটি পর্ব আমি দেখেছি।আমাদের দেশে আমদানীকৃত আফ্রিকান মাগুর সেই প্রজাতিরই যা কি না মাংসাশী আর ভয়ংকর।বন্যায় ভেসে যাওয়া মাগুরগুলো অনেক জায়গাতেই এমন অঘটন ঘটিয়েছিল।ভালো যে এটা এখন নিয়ন্ত্রনে।আপনার লেখা ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতাটি জেরেমী ওয়েডের রিভার মনষ্টারের মতই লাগলো।
ধন্যবাদ পোষ্টে মন্তব্যের জন্য
১৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৮
দারাশিকো বলেছেন: দুর্দান্ত। বড় মাছের গল্প কিছু কিছু শুনেছি, কিন্তু এরকম কিছু শুনি নি।
হাওড় এলাকায় যাওয়া হয় নি এখনো - এবছর যাওয়ার চেষ্টা করা যায়।
ধন্যবাদ।
১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৭
মুরশীদ বলেছেন:
ঘুরে আসুন হাওড়ে।তবে এখন কি অবস্থা তা আর জানা হয়ে উঠেনি।
ধন্যবাদ দারাশিকো মন্তব্য আর পাঠের জন্য।
১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৯
মুরশীদ বলেছেন: আমারও জানা ছিলনা। সে সময়ই প্রথম জানলাম। ঘুরে আসুন তবে এখন কি অবস্থা হাওড়ের জানা হয়নি।
ধন্যবাদ দারাশিকো মন্তব্য আর পাঠের জন্য।
১৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০০
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ওরে!!!!!!!!!!!
চ্রম তো!!!!!!!!!!
+++++++++++++
১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৯
মুরশীদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ইরফান আহমেদ বর্ষণ
১৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৩৩
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: এনিমেল প্ল্যানেট চ্যানেলে জেরেমী ওয়েডের রিভার মনষ্টার পর্বগুলো আমিও দেখি। আমারো ভাল লাগে। আজ দেখলাম তিনি একটা মাছ ধ্রছেন যার দাত মানুষের মত।
আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা ভাল লাগল।
দেরী কেন, মাঝে মাঝেই মনের কথা গুলো লিখে ফেলুন। এত কম লিখছেন! প্রতি সাপ্তাহে একটা করে লিখুন। আমরা জানতে চাই।
১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৪
মুরশীদ বলেছেন: কাজের মধ্যে যেটুকু অবসর পাই তার কিছুটা অংশ কাটে এই চ্যানেলটি দেখে। আপনার ভালোলাগে জেনে ভালোলাগলো। সাহাদাত সাহেব বর্তমানে নিশ্বাস ফেলার অবসরটুকুও পাই না। তার জন্যই কারো পোষ্টে মন্তব্য করা হয়ে উঠে না। আরেকটি ঘাটতি হলো বাংলা টাইপ করতে না জানা। যা আমাকে বেকায়দায় ফেলে। আমার সময় হয়তো টাইপিষ্টের হয় না। এই তাল মেলাতে মেলাতেই লেখা আরো দুরস্থ হয়ে পরে।
অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।
১৭| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩
আরজু পনি বলেছেন:
জুন বলেছেন: প্রিয় বিষয় নিয়ে লেখা পোষ্ট ভালোলাগলো ।
১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৫
মুরশীদ বলেছেন: আপনারও প্রিয় বিষয় জেনে ভালোলাগলো আরজুপনি ।
১৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:০৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
জটিল কাহিনী শেয়ার করলেন ধন্যবাদ। ++++++ রইল।
১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৭
মুরশীদ বলেছেন: পড়া আর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ কান্ডারী অথর্ব ।
১৯| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১০
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন:
তখন আমি পড়ি ক্লাস ফাইভে। জায়গির বাড়ির ছেলেদের সাথে শখ করে গেলাম রাতে মাছ শিকারে। তারা আগেআ আমাকে অনভিজ্ঞতার কারণে হারপুন (কোচ) হাতে নিতে দিলনা।
কান্তু শখ বলে কথা। তাদে ফাঁকি দিয়ে হাতে নিলাম হারপুন। ঘাঁই দিয়ে আটকে দিলাম এক গজার মাছ। যদিও রাতের হারপুন শিকারিরা গজার মাছ শিকার করেনা। ভূত-প্রেতের সাথে এই মাছের কোন এক অজানা সম্পর্কের কারণে। আমি তো আর এসব জানিনা। ফল হল হারপুন সহ আমি পনিতে। একজন মুরুব্বিগোছের সাহসী মানুষ আমাকে উদ্ধার করেছিলেন। কিন্তু সে এক রুদ্ধশ্বাস কাহিনী। অচেতন অবস্থায় রাত শেষ হলো।
আর কখনই সেই শখ জাগেনি...
ধন্যবাদ, সুন্দর পোস্টে নস্টালজিক করে দেওয়ায়...
১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৯
মুরশীদ বলেছেন: গজার মাছের সাথে ভুত প্রেতের কোন সম্পর্ক নেই বলেই আমি বিশ্বাস করি। মাছটি অত্যন্ত শক্তিশালী। তাছাড়া হারপুন ছোড়ার জন্যও চর্চা লাগে তা নাহলে নিজেই তার শিকার হতে হয় বিখ্যাত মবিডিক কাহিনীর মত।
ভাগ্য ভালো মুরুব্বীর সহায়তায় আপনি বেচে গিয়েছিলেন । পোষ্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
২০| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২৯
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন:
আমিও বিশ্বাস করি গজার মাছের সাথে ভূত প্রেতের কোনই সম্পর্ক নেই। সেই সময় মানুষের বিশ্বাসটাই এমন ছিল অনেকাংশে...
২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০০
মুরশীদ বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন সুপান্থ সুরাহী, ধন্যবাদ ।
২১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩১
ফারজুল আরেফিন বলেছেন: দারুণ তো! ++++
২২| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০১
মুরশীদ বলেছেন: তাই !
অনেক ধন্যবাদ পোষ্ট পড়ার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২
হাসান মাহবুব বলেছেন: দুর্দান্ত কাহিনী শুনলাম।