নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অন্তর ভাঙা এক যুবক! সহজেই বুঝে যাই কান্নার সুরে-দুঃখটা কত গভীর,অনুভবে শিহরিত হই বাস্তব কত কঠিন, কতটা নির্মম হতে পারে মানুষ! shapnaneer.com \'স্বপ্ননীড়\'।।

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন

সু-স্বাগতম। আপনার আগমনে ধন্য আমি। মানুষ আমি, আমাকে মানুষই ভাববেন, আমি তাই হতে চাই njnoyon.com

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চৌদ্দবছর পরে...!!

১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সুখদুঃখ হাসি কান্না সবার জীবনেই থাকে কম আর বেশি। প্রতিটি প্রাণেই কিছু স্বপ্ন থাকে, যে স্বপ্ন গুলো বেঁচে থাকার প্রেরণা হয়ে মন আকাশে ভেসে বেড়ায় সবসময়। মানুৃষ স্বপ্ন চোখে সুখের আশায় ঘর বাঁধে। কারো'বা ঘর বাঁধার আগেই সব সুখ, হৃদয়ে জমানো যতো আশা সবই দুঃস্বপ্ন হয়ে যায়। ঘর বাঁধার আগেই পুড়ে যায় কারো ঘর...!! জীবনের ঘরটাও বাঁধার আগেই পুড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া ঝঁলসানো ভালোবাসার দুঃসহ যন্ত্রণা ভুলে থাকতে মাঝেমধ্যেই নিঃসঙ্গ নীরব রাতের সাথে কথা বলে চলে যায় জীবনের অনেক রাত....

প্রতিটি প্রাণই ভালোবাসা খুঁজে, মনের মতো বন্ধু খুঁজে, ভালোবাসার মানুষটাকে নিয়ে কতশত সুখের গল্প সাজাতে চায় মনের মণিকোঠায়, তৃপ্তি আর ভালোবাসা সব একজনের মাঝেই খুঁজে পেতে চায়...!! আমারও একটা তৃপ্তির জায়গা ছিল, একটা মানুষ ছিল ভালোবাসার। স্বপ্ন ছিল তাকে নিয়ে দুনিয়ার যতো সুখ আর ভালোবাসা ভরে একটি ছোট্ট ঘর বাঁধার। যে ঘরে সে আর আমি অনন্তকাল সুখে থাকবো। জীবনের প্রথম যৌবনের আগমনে তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু সেই '৯৪-এর শেষের দিকে...! দীর্ঘ প্রায় সাত বছর কত অন্তরঙ্গ আর মধুর সম্পর্ক ছিল তার সাথে আমার! কতশত সুখস্মৃতি আর সে- আমার প্রতিটি মুহূর্ত কত মধুর করে তুলতো! তাকে ছাড়া পৃথিবীর বুকে ইচ্ছে ছিল না নিতে একদিন নিঃশ্বাস।

অথচ! সেই মানুষটি একদিন(২৩-২-২০০০ইং তারিখ রাগারাগি করে আমার কাছথেকে তার দেয়া শেষ চিঠিগুলো ও তার ছবি গুলো নিয়ে চলে যায়। আবার আসে কয়েকদিন পর, ক্ষমা চায় কষ্ট দেয়ার জন্য। আমি মেনে নেই সবকষ্ট ভুলে যাই দেখাতেই। আবার ২৯-৩-২০০০ইং তারিখ কি নিয়ে যেন কঠিন অবিশ্বাস করছে আমাকে, বলছে- আমার বিয়ে হয়ে যাবে কয়েকদিনের মধ্যেই, তুমি ভুলে যেও আমাকে। আমি বলেছিলাম- তুমি থাকতে পারবে তো! যদি পারো তো বিয়ে করেই নিও। আর যদি না থাকতে পারো, আমাকে প্রয়োজন মনে কর, যদি বিশ্বাস করতে পারো তবে চলে এসো আমার কাছে, আমি বুকে জড়িয়ে নেবো চিরদিনের জন্য। তখন অভিমান ভুলে হেসে হেসে বলেছিল, আমি তোমারি সাথী, থাকবো চিরদিন। আমি বলেছিলাম- তুমি যেও না, তোমাকে বিয়ে দিয়েই দিবে এবার। সে বলেছিল- আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা কোনদিন, আমার বিয়ের আসর থেকে হলেও চলে আসবো তোমার কাছে। তুমি কোন চিন্তা করো না আমার জন্য। কিন্তু! সেবার আর ফিরে আসেনি আমার কাছে...! ১০-৪-২০০০ইং তার বিয়ে হয় অন্যত্র।)ছেড়ে যায় আমাকে। নিজের সুখটাকে বেশি প্রয়োজন মনে করে সুখী হতে চলে যায় আমার সুখের ভুবনে আগুন জ্বেলে। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়ে যায় ছয়-সাত বছরের জমানো কত গভীর ভালোবাসা। কিছুই ছিল না অবশিষ্ট তাকে হারিয়ে... হারাবার। নিঃস্বতা আর নিঃসঙ্গতা গ্রাস করেছিল আমাকে। স্তব্ধ হয়ে বেঁচে ছিলাম, মরতে পারিনি, নিতেই হয়েছে নিঃশ্বাস জীবনের নিয়মে।

তার সাথে অবহেলা আর প্রতারণা পেয়ে ভেঙে যায় আমার মনের সমস্ত বিশ্বাস। কোন আশ্বাস পাইনি কোনভাবে, কোনকিছুতে। তার সাথে ভালোবাসার দিনগুলি আর সুখস্মৃতি গুলো খুব পুড়াতো আমায় সবসময়। ঘর থেকে বের হলেই তার স্মৃতিরা আমাকে ঘিরে রাখতো, আমি যেন স্তব্ধ রয়ে যেতাম, পিছন থেকে বারবার ডাকার পরও আমার কানে পৌঁছতো না কোন ডাক...! সেই নিঃস্বতা আর স্তব্ধতা কাটাতেই (২৮-১২-২০০০ইং)বাড়ি ছেড়ে চলে যাই তার নিষেধ করা সেই চাকরিতেই...! নিজেকে নির্বাসিত করে রাখাই ছিল আমার চাকরিজীবনেরর শুরু। ভেবেছিলাম জীবনটা নির্বাসিতই কাটিয়ে দেবো, আর কোন মায়ায় জড়াবো না নিজেকে, গড়তে চাই'বো না কোন সংসার মিথ্যে এই দুনিয়ায়...! সুখের সংসার সাজাতে প্রচুর বিশ্বাস আর ভালোবাসা থাকতে হয় মনে। আমার ছিল না! তাই ভাবতাম, সংসার সাজিয়ে লাভ কি, যদি বিশ্বাসই রাখতে না পারি। আমার যে বিশ্বাস যা ছিল সবই ভেঙে গিয়েছে! বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কাউকেই আর বিশ্বাস করতে পারতাম না তখন। নতুন কোন স্বাদ আর ছিল না মনে...!!

চৌদ্দবছর পর.....

২৪-১০-২০১৪ইং তারিখ বসেই ছিলাম প্রতিদিনের মতো। তখন আমার পোষ্টিং এক হাওড় এলাকায়। চারিদিক পানিতেই ভরা থাকে বছরের বেশিরভাগ সময়। কোথাও যাওয়া হয় না। ফেসবুক দেখি আর বসেই থাকি। গতরাতে মিন্টু ফোন করে বললো তোর নাম্বার নিল সাথী ফোন করে। আমি দিয়ে দিয়েছি। তোর কাছে ফোন দিবে হয়তো। আমি সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম সেদিন। এত বছর হয় মোবাইল কিনেছি, কতদিন ভাবতাম সে আমাকে খুঁজবেই কোনদিন। যদি সেই সুযোগ কোনদিন আসে সেই ভাবনায় আমার ফোন কখনো বন্ধ রাখতাম না। সে দেয়নি কখনো, খুঁজে নি কখনো। আজ এতদিন পর তার ফোন দেয়ার কথা শুনে আমি কতটা খুশি হয়েছিলাম তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।

পরেরদিন সকাল কেটে দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। তার ফোন আসলো না, ভাবছি হয়তো দিবেই না। দুপুরে খাওয়ার পর শুয়েই ছিলাম। হঠাৎ বেজে ওঠে বালিসের পাশে রাখা মোবাইল। অপরিচিত বাংলালিঙ্ক নাম্বার। দেরি না করে রিসিভ করলাম। চুপ হয়ে কানে ধরে আছি। ওদিক থেকে কোন সাড়া নেই.... আমি হ্যালো হ্যালো করছি। ফোন কেটে গেল...। আমি কল দিলে মোবাইল বলছে আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যালেন্স নেই। মাথা নষ্ট। তাড়াতাড়ি ওঠে বাজারের দিকে রওয়ানা দেই। বাজারে গিয়ে টাকা ভরে ফিরছি। আবারও ফোন সেই নাম্বার থেকে। আমি রিসিভ না করে হাটছি। কারণ, বাজারে অনেক লোকের কথায় হয়তো ফোনের কথা ঠিকমতো শুনবো না। কিন্তু আবার মিসকল দিলে আর থাকতে পারলাম না ফোন না দিয়ে। ফোন হচ্ছে..... রিসিভ করে আবারও চুপ।
হ্যালো.... একটা মেয়ের কণ্ঠ। কণ্ঠটা আমার খুব পরিচিত, ঠিক মিনতির মতো। তবুও একটু বোঝার জন্য কিছু বলছি না। সে আবারও হ্যালো...
কে আপনি....?
চিনতে পারলা না...?
এবার চিনেছি.....
তুমি ভুলেই গেছো সব...!
কেমনে বুঝলা...?
তুমি আমার কণ্ঠ শুনেও চিনতে পারলা না!
চিনেছিলাম তো....
হুম, মিথ্যে.... তুমি হ্যালো হ্যালো করলে কেন?
বুঝতে চাইছিলাম ভালো করে।
কেমন আছো তুমি....?
কি বলবো.... ভালোই তো আছি...!
হ্যা তাইতো দেখছি.... তুমি সব ভুলে গেছো...!
কিভাবে ভুলবোরে.... যদি ভুলতেই পারতাম!
একদিন তো আমার খবরও নিলা না, আমি কেমন আছি, কিভাবে আছি...?
সেই অধিকার তো ছিল না আমার....! তোমার বাড়িতে যাওয়ার অনেক ইচ্ছাকে বিসর্জন দিতে হয়েছে কেবল তোমাকে ভেবেই। তবুও মনিরার কাছে কয়েকদিন তোমার নাম্বার চেয়েছিলাম, দেয়নি। আমার নাম্বার সবার কাছেই দিয়ে রেখেছিলাম তুমি যদি কখনো একবার খুঁজো...!
হুম, চেষ্টা করনি, চেষ্টা করলে ঠিকই পাইতা...!
কতটা ইচ্ছা ছিল কথা বলার তা তোমাকে বুঝাতে পারবোনা। তুমি আমার নাম্বার কার কাছে পাইছো...?
ইচ্ছা থাকলে কতভাবে মিলানো যায়। আমি মেয়ে হয়ে তোমার নাম্বার আগে জোগাড় করলাম, আর তুমি ছেলে হয়ে পারলা না...!
হুম, খুব কাজের কাজ করেছো তুমি, আমার স্বপ্ন সত্যি করেছো....।
কিভাবে....!
এই যে ফোন দিছো....।
এতে স্বপ্ন পূরণের কি হইল।
আমার স্বপ্ন ছিল তোমার সাথে কোনদিন কথা হবে আমার। এই মোবাইল নাম্বারটা কিনার পর থেকেই ভাবতাম তুমি হয় তো ফোন দিবে। কারণ, আমার সাথে কথা বলার স্বাদ জাগবেই তোমার কোনদিন। তুমি এখন কোথায়...?
বাসায়...
কোন বাসায়....
শেরপুর....
শেরপুর...! শেরপুর কোথায়... ? আমি অবাক হয়েছি সে শেরপুর। কারন, তার তো শেরপুর থাকার কথা ছিল না। কিন্তু কেন!
আমরা বাসা নিয়েছি এখানে....।
কেন, কেন,
ছোট ছেলেটা মাদ্রাসায় কোরআন পড়ছে, সেজন্য তাকে নিয়ে যাওয়া আসার জন্য আমাকেও থাকতে হচ্ছে।
কতদিন যাবত আছো...?
পরাই একবছরই হলো...
এতদিন পরে আমার কথা মনে পড়লো...?
না, মনে পড়েছে অনেক আগেই। তোমার নাম্বার জোগাড় করাই ছিল অনেক ব্যাপার। কারো সাথে দেখাই হচ্ছিল না। গতকাল মিন্টুর সাথে দেখা হওয়ায় নাম্বারটা নিয়েছি। মিন্টু নাম্বার দিতেই চায় না... !
পরে...
পরে আর কি। বললাম দেও, কোন সমস্যা হবে না। পরে দিয়েছে। কিন্তু ফোন দিতে কেমন যেন ভয় হচ্ছিল।
কেন, ভয় কিসের...?
যদি রাগ করো তুমি!
তোমার সাথে রাগ করবো, আমি! অসম্ভব আমার জন্য!
তুমি সব ভুলে গেছো তাই না?
তুমি ভুলতে পারছো...?
ভুললে কি আর এতকষ্ট করে নাম্বার জোগাড় করে ফোন দিতাম।
এতদিন কেন মনে হল না!
হয়েছে, সাহস পাইনি। যদি তুমি আবার পাগলামি শুরু কর...
আমি ভালো ছিলাম কবে...!
না, বিয়ে করেছে, বাচ্চা হয়েছে, ভালো থাকেনি...!
বাচ্চা হইলেই ভাল থাকলাম!
না তো কি... ?
তোমার তো দুই বাচ্চা, তুমি কেন মনে রেখেছো!
ভুলা কি আর যায়....!
তাহলে আমি কি করে ভুলে থাকতে পারি....!
তোমার সাথে অনেক কথা আছে আমার, পরে বলবো। এখন রাখছি। তুমি ভালো থেকো।
এখন কি করবা...?
এতক্ষণ শুয়েই ছিলাম, এখনো গোসল করাই হয়নি!
কি বল! গোসল তো সকালেই করার কথা।
আরে না, তুমি আর ভালো চিন্তা করতে পারো না...!
খারাপটা কি করলাম! তোমার তো সকালেই গোসল করার কথা, নাকি?
হুম, প্রতিদিন কি সকালে গোসল করে মানুষ!
আমি তো সেরকমই ভাবি....
তুমি তো ভাববাই....
সত্যিই বলছি... বিশ্বাস করো, তোমার মতো সুন্দরী বউ পাশে থাকলে শুধু সকালে না, কতদিন যে দুপুর সন্ধ্যায় গোসল করাইতাম তার হিসেব থাকতো না।
তুমি বুঝি বউরে খুব ভালোবাসো...?
বাসি তো... তবে তোমাকে মনে করে মাঝেমধ্যে তোমার নাম বলে ফেলতাম! তখন কি হইতো আমিই জানি...!
মিথ্যা বলছো....
তুমি নিজেই জিজ্ঞেস করে জেনে নিও একসময়।
না, আমি যাবো না ঝুমার কাছে।
কেন?!
তোমার আম্মাকে ভয় হয় আমার। আন্টি যদি আগের মতই....
আরে না, তুমি সময় নিয়ে একদিন বেড়িয়ে যেও।
তুমি একসময় বউ বাচ্চাসহ বেড়িয়ে যেও, তারপর।
আচ্ছা, বাদ দেও। তোমার আসা লাগবে না।
তুমি কবে আসবা?
কেন, দেখা করবা নাকি?
খুব মন চাইতেছে দেখবার?
কেন বিশ্বাস হয় না?
না, হয়। আচ্ছা, রাতে কথা হবে তোমার সাথে এখন রাখি। বলেই কিছুক্ষণ লাইন না কেটেই চুপ করে, তুমি কি করছো বলে লাইনটা কেটে দিল।

সেদিন তার সাথে এভাবে এতগুলো কথা হবে আমি ভাবতেই পারিনি কোনদিন। আমি মনে সবসময় ভেবেছিলাম সে হয়তো আমাকে ভুলেই গেছে...! কিন্তু সেদিন কথা শুনে মনে হয়েছিল না, সে আমাকে ভুলতে পারেনি। সেও আমাকে মিস করেছে অনেকসময়। তার প্রতি এতদিনের জমে থাকা কষ্ট গুলোর কিছুই আর সেদিন বলিনি। আমি হয়তো সব ভুলেই গিয়েছিলাম! আমার কাছে মনে হয়েছে সেই আগের সাথীর সাথেই কথা বলছি। হাইরে ভালোবাসা সামান্য মোবাইলে কথা বলতেই চৌদ্দবছরের কষ্ট সব ভুলিয়ে দিতে পারিস!!!

সেদিন রাতের বেলায় আবার যখন ফোন দিল তখন মনে হল দুজন পাশাপাশি শুয়ে শুয়ে কথা বলছি। অনেক কথাই বললো রাতে। সেও আমার মতো প্রতি রাতেই মনে করেছে, নীরবে ভাসিয়েছে বুক চোখের জলে। তারও ছিল আমার মতো অন্তর জ্বালা।  তার কথা শুনে শুনে সেদিন নিজেকে খুব সুখী মনে করেছিলাম। ভেবেছিলাম আমি ভুল করিনি তাকে ভালোবেসে, সে আমার ভাগ্যেই ছিল না। তাই তাকে পাইনি। রাতে যখন বলছে, তুমি আসো, তখন মনে হয়েছিল পাখা যদি থাকতো তাহলে এখনি চলে যেতাম। আমি ভুলেই গিয়েছিলাম সে অন্য জনের দুই সন্তানের মা, সেও।

সেদিন থেকে আমাদের মাঝে প্রতিদিনই কথা হতো। দিনে অনেকবার। যখন সময় পেতো তখনই ফোন দিতো। আমি কেটে দিয়ে ফোন দিতাম। কথা বলা শুরু করলে যেন আর থামতেই চাইতো না। ধীরে ধীরে তার শেরপুর বাসা নিয়ে থাকার সব গল্প শুনলাম সেদিন। সে একাই থাকে তার ছোট ছেলেকে নিয়ে শেরপুর। স্বামী বাড়িতেই থাকে, কলেজ ব্যবসা সংসার সব সে বাড়ি থেকেই সামলাচ্ছে। সপ্তাহ শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তার কাছে আসে আবার শনিবার সকালে চলে যায়। এভাবেই প্রায় একবছর যাচ্ছে শুনে অবাক হয়েছিলাম। প্রতিমাসে বাড়ি যাই। কোন কোন মাসে দুই তিনবারও যাওয়া হয়ে যায় তবুও তার সাথে কোনদিন দেখা হল না, কারো কাছে জানতেও পারলাম না! সেদিন তার সাথে কথা বলার সময় মনে হয়েছিল সেই আগের সাথীই আছে সে। সেই আগের মতোই ভালোবাসে আমাকে। আমি বারবার তাকে ভেবে ভেবে সেই ষোলো বছরের যুবকে পরিণত হই। পাই সেই আগের শিহরণ তাকে ভেবে...!

ভালোবাসা বুঝি এমনই এমনই হয়...! ভালোবাসার মানুষ বুঝি এভাবেই মুহূর্তে ভুলিয়ে দিতে পারে সবকষ্ট সব বিরহ যন্ত্রণা...! এর জন্যই বুঝি মানুষ ভালোবাসে...!!

কয়েকদিন সারারাত আমার সাথে কথা বললো মোবাইলে। কত কথা, কত কষ্ট তারও ছিল...! সবই বললো আমার সাথে, কথা যেন আর শেষই হতে চায় না...! আমি ট্রাই করতে মাঝেমধ্যে পুরনো দিনের কোন স্মৃতির শুরুটা বলে চুপ থাকতাম, সে বাকিটুকু বলে বলে কাঁদতো...! আমি মোবাইলে তাকে কিছুতেই শান্তনা দিয়ে থামাতে পারতাম না। শেষে আমিও কাঁদতাম, কান্নাজড়ানো কণ্ঠে সে তখন আমার কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়তো, কথায় কথায় আবার দুজন স্বাভাবিক হতাম।

এভাবেই কয়েকদিন চলার পর আমাকে বাড়ি যাওয়ার অনুরোধ, আমাকে নাকি খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তার। আমি কয়েকদিন আগেই এসেছিলাম বাড়ি থেকে। তবুও তার সাথে দেখা করার জন্য সময় বের করেই ফেললাম চারদিনের মধ্যে। তিনদিনের অনুমতি নিয়ে একদিন চলেই গেলাম শেরপুর....

(চলবে...)
ছবিটি আমার মোবাইল থেকে এখন তোলা

(উপরের ছবিটি ফেসবুকে পেয়েছিলাম কোনএক কালেক্ট পোষ্টে, তাই চিত্রশিল্পীর নাম দিতে পারলাম না, দুঃখিত।)

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর।

১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। শুভেচ্ছা রইল।

শুভকামনা আপনার জন্য।

২| ১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

শূন্যনীড় বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন। ভালো লাগলো +++++

১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো লাগলো প্রশংসা পেয়ে।

শুভকামনা জানবেন সবসময়।

৩| ১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১০

মমতাজ-কলি বলেছেন: পুরানো সেই দিনের কথা সে কি ভোলা যায়...।
অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। ধন্যবাদ।

১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানবেন ভাই।

অনেক উৎসাহ পেলাম ভাই। প্রেরণা হয়ে থাকবেন। প্রশংসাটুকু আশীর্বাদ হয়ে থাকুক।

শুভকামনা জানবেন সবসময়।
শুভ সন্ধ্যা।

৪| ১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯

ওমেরা বলেছেন: এটা যদি গল্প হতে তাহলে বলতাম আবেগ দিয়ে লিখা সুন্দর হয়েছে ।

যেহেতু এটা বাস্তব তাই বলব এটা কোন ভাল লিখা না ভাইয়া এতে আপনার প্রতি মানুষের খারাপ ধারনা আসবে ।আমাদের উচিত আবেগকে কন্ট্রোল করে বিবেককে জাগ্রত করা ।

আমার কথায় মনে কষ্ট নিয়েন না ভাইয়া আপন মনে করেই কথাগুলো বল্লাম ।

ধন্যবাদ ভাইয়া ।

১২ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক আন্তরিকতার ছোঁয়া মন্তব্যে আপু। কৃতজ্ঞতা রইল মুগ্ধতায়।


আসলে আপু, আমার ছোট্ট জীবনটায় ঘটে যাওয়া সব ঘটনাই একেকটা গল্প মনে হয়। কখনো অবাক হই, আবার কখনো খুব নীরব স্তব্ধ হয়ে ভাবতে থাকি ফেলে আসা দিনগুলো, কখনো বা দুচোখ ভিজাই কষ্টের তাপদাহে! খুব বলতে ইচ্ছে করে কাউকে। কাউকে পাইনা সেরকম বিশ্বস্ত! তখন মনে হয় লিখে রাখি আমার কষ্টের সময় গুলো। আমি কেন যেন ছদ্মনাম ব্যবহার করতে পারিনা! আমি তো কোন লেখক নই, তাই নিজের মতো করে নিজের কথাই লিখে যাই। এতে আমাকে অনেকে খারাপ ভাবে, কেউ বা মনে করে বিকৃতমস্তিষ্ক নিয়ে ছেলেটার জীবন শেষ। অনেকেই আবার মনে করে দুষ্টপ্রকৃতির মানুষ! কিন্তু আমি জানি, আমি কতোটা ভালো কতটা মন্দ। আমি নিজেকে খুঁজি সবসময়, নিজের মনকে ফলো করি- সে কোথায় যায়, কি ভাবে, কিসে সে সুখানুভব করে। আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সব গল্পই লিখতে চাই। অনেক সময় ভয়ও পাই যে কেউ খারাপ ভাববে, তুচ্ছব্যক্তি মনে করবে। আবার ভাবি ভাবুক না কেউ খারাপ, ভাবুক না কেউ আমি নিঃস্ব!! আমি তো সামান্যই একজন সাধারণ মানুষ। আমি চিহ্নিত তুচ্ছব্যক্তি। সমস্যা কি! ব্যাঙের আবার কিসের সর্দিকাশির চিন্তা। আমি মুক্ত। আমি মুক্ত থাকতে চাই। দোআ করবেন।

তাছাড়া আমার কোন গল্পে এমন কোন অপরাধ নাই যার জন্য আমাকে কেউ দোষতে পারে। যা আছে তা কেবল আমার নিজের কষ্ট আর ক্ষতির হিসাব। আমি তো তার সাথে খারাপ কিছু করিনি কখনওই!!!

অনেক কথা অাপু আপন ভেবেই বলে ফেললাম, কিছু মনে করবেননা প্লীজ।

শুভকামনা জানবেন সবসময়।

৫| ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:০৯

কানিজ রিনা বলেছেন: এটা ভালবাসা না এটা প্রেম। তবে প্রেম ধরে
রাখতে পারেন নাই সেটা ব্যর্থতা। পাশে যে
আছে তাকে ভালবাসুন। সন্তান থাকলে তার
জন্য ত্যাগ করুন। প্রেম কাছে থাকলে সাধারন
দুরে থাকলে অসাধারন। গল্পটা ভালই লাগল।
জাগতীক প্রেমের হাড়ানোর বেদনায় মানুষ
সৃষ্টিকর্তার প্রেম চাওয়া শেখে। আর চাইতে
চাইতেই একসময় প্রেম থেকে পরমে রুপ নেয়।
বেদনা না থাকলে আকাশ তরঙ্গে ভাসা যায়না
যদি কিছু বুঝেন, ধন্যবাদ।

১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:৪১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক সুন্দর কথা বলেছেন আপু। একদম আমার মনের মতো। কৃতজ্ঞতা রাখছি মন্তব্যে।

আমি সংসারী। বউ এক ছেলে নিয়ে ভালোই কাটছে দিন আপনাদের দোআ আল্লাহ্'র রহমে। বাবা মা আছেন এখনো মাথার উপর ছাঁদ হয়ে। ভাই ভাবি ছোট বোন সবাইকে নিয়ে মোটামুটি ভালোই যাচ্ছে দিন। ব্যতিক্রম কেবল আমার স্মৃতিপট!

সবাই সুখের সময় দুঃখকে মনে রাখে না। অবশ্য দুঃখের সময় মনে না রাখাই ভালো। তবুও আমার স্মৃতিগুলো কেমন যেন আমার মনের আকাশটাকে মেঘলা করে রাখতে চায়! আমি বৃষ্টির মতো কাগজে ঝরিয়ে স্মৃতির নৌকার বুঝা কমাই।

"জাগতীক প্রেমের হাড়ানোর বেদনায় মানুষ
সৃষ্টিকর্তার প্রেম চাওয়া শেখে। আর চাইতে
চাইতেই একসময় প্রেম থেকে পরমে রুপ নেয়।
বেদনা না থাকলে আকাশ তরঙ্গে ভাসা যায়না।"-- অনেক সুন্দর কথা বলেছেন আপু। আমি বুঝেছি মোটামুটি। মানুষ দুঃখকষ্টে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে বেশি। মানুষ দুঃখের দিনেই আল্লাহ্'র কাছে সুখ কামনা করে, আল্লাহ্'র উপর ভরসাটা আসেই মন থেকে। দুনিয়াবি ভালোবাসায় ব্যর্থ হলেও সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় না। বেদনা আছে বলেই মানুষ সুখের স্বপ্ন সাজায়, কল্পনায় সুখের ছবি আঁকে। দুঃখক্লিষ্ট হৃদয় খুব সহজেই অপরের আবেগ অনুভূতি বুঝে নিতে পারে। আমি কষ্টগুলো নেড়েচেড়ে সুখ খুঁজে বের করি। দোআ করবেন আপু।
লেখাটা প্রশংসিত হয়েছে তাই খুব আনন্দিত।

আবারও কৃতজ্ঞতা আপনার মন্তব্যে।
শুভকামনা জানবেন সবসময়।

৬| ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:০৯

কানিজ রিনা বলেছেন: এটা ভালবাসা না এটা প্রেম। তবে প্রেম ধরে
রাখতে পারেন নাই সেটা ব্যর্থতা। পাশে যে
আছে তাকে ভালবাসুন। সন্তান থাকলে তার
জন্য ত্যাগ করুন। প্রেম কাছে থাকলে সাধারন
দুরে থাকলে অসাধারন। গল্পটা ভালই লাগল।
জাগতীক প্রেমের হাড়ানোর বেদনায় মানুষ
সৃষ্টিকর্তার প্রেম চাওয়া শেখে। আর চাইতে
চাইতেই একসময় প্রেম থেকে পরমে রুপ নেয়।
বেদনা না থাকলে আকাশ তরঙ্গে ভাসা যায়না
যদি কিছু বুঝেন, ধন্যবাদ।

১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:৪৩

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রাখছি মন্তব্যে। প্রেরণা হয়ে থাকবেন।

শুভকামনা সবসময় আপনার জন্য।

৭| ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:১৬

অাসাদুজ্জামান লিটন বলেছেন: চমতৎকার

১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:৪৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: লেখাটা প্রশংসিত হয়ে ধন্য হলো ভাই। প্রেরণা হয়ে থাকবেন সবসময়।

শুভকামনা রইল ভাই।
শুভেচ্ছা।

৮| ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:৩৯

নাগরিক কবি বলেছেন: বাস্তব আর আবেগ এই দুটো জিনিষ এর বৈরিতা বিদ্যমান। যে/ যারা আবেগী তারা শুধু জীবনে আবেগ নিয়ে বেঁচে থাকে। আই হোপ ইউ ঊইল রিকোভার ইউর সিচুয়েশন এস আর্লি এয়া পসিবল।

১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:১১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক সুন্দর মন্তব্য রেখে গেছেন ভাই। কৃতজ্ঞতা রাখছি মন্তব্যে।

ইংরেজি আমি ভালো বুঝি না, পড়তে পারলেও উত্তর মিলাতে পারিনা আমি। তবে আপনার লাইনটা একটু সহজ হওয়াতে কিছুটা বুঝেছি ভাই। আমিও বিশ্বাস করি, শুধু আবেগ দিয়ে জীবন চলে না, জীবনে সমৃদ্ধি করতে বাস্তবমুখী হওয়াটাই জরুরী। আসলে ভাই, আমাকে চব্বিশঘণ্টার মধ্যে ঘুম ব্যতীত বাকি সবটুকু সময় বাস্তবতার সাথেই কাটাতে হয়। আমার চাকরিটাই এইরকম! বাস্তবিক না হলে এই চাকরিটা করা যায় না। মানুষের চোখের সামনেই আমার সময় কাটাতে হয়। মানুষ কল্পনায় যতোটা দৌড়ায়, বাস্তবে তা পারেনা কখনো। আমিও পারিনা, দৌড়িয়েই চলেছি গন্তব্যহীন। মানুষ অনেক বড় হতে চায়, আর আমি যেমন আছি তেমনি থাকতে চাই। তাই বাড়তি কোন আকাঙ্খা আমার নাই। আল্লাহ্ এমন রাখলেই আমি সুখী মনে করি নিজেকে, শুকরিয়া আল্লাহ্'র উপর। দোআ করবেন ভাই। আপনার কথা আমি বুঝেছি। আমার আবেগ কষ্টানুভূতি-গুলো শেষ করছি লিখে লিখে, বড্ড যন্ত্রণা দেয় এই জমে থাকা স্মৃতিগুলো!
গল্পের আলোচিত ব্যক্তির নামটা অন্যকিছু দিলেই আপনাদের এমন টেনশন হতো না, আপনাদের আন্তরিকতা বুঝতে পারছি আমি, সহমর্মিতা দেখে মুগ্ধ হই। দেখি গল্পটা এডিট করে ছদ্মনাম ব্যবহার করতে পারি কিনা। দোআ করবেন ভাই।

অনেক কথা বললাম, মনে কষ্ট নিবেন না ভাই।
শুভকামনা আপনার জন্য।

৯| ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:০০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ভাল লিখেছেন , ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল

১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:২১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক উৎসাহ পেলাম ভাই। প্রেরণা হয়ে থাকবেন আমার সামনের দিনগুলোতে। প্রশংসাটুকু আমার কাছে আশীর্বাদ হয়ে থাকুক।

আসলে হইছে কি ভাই, আমি তো কোন লেখক নই বা গল্পকার, তাই নিজের স্মৃতিগুলো সুন্দর করে লিখার চেষ্টা করি। তাতে লেখার অভ্যাস বা আরো ভালোভাবে সাজিয়ে লিখতে শিখতে পারবো এমনটাই ভাবনা আমার। দোআ করবেন ভাই।

শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানবেন সবসময়।
আল্লাহ্ আপনার সময়গুলো সুখসমৃদ্ধি ভরে দিক এই প্রত্যাশা।

শুভেচ্ছা জানবেন ভাই।

১০| ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:৫৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:

খুব সুন্দর লিখেছেন +

১৩ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:২০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক আনন্দিত হয়েছি প্রিয় কবি'র কাছে্ প্রশংসিত হয়ে। অনুপ্রাণিত করবে আমার সামনের দিনগুলোতে প্রেরণা হয়ে।

শুভকামনা জানবেন ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.