নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অন্তর ভাঙা এক যুবক! সহজেই বুঝে যাই কান্নার সুরে-দুঃখটা কত গভীর,অনুভবে শিহরিত হই বাস্তব কত কঠিন, কতটা নির্মম হতে পারে মানুষ! shapnaneer.com \'স্বপ্ননীড়\'।।

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন

সু-স্বাগতম। আপনার আগমনে ধন্য আমি। মানুষ আমি, আমাকে মানুষই ভাববেন, আমি তাই হতে চাই njnoyon.com

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

|| শিমুল || পথ থেকে পথে....

২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:০৩

শিমুল
পথ থেকে পথে....

চৈত্রের তাপদাহে চারিদিক উত্তপ্ত। সূর্যটা ঠিক যেন মাথার উপরে দাঁড়িয়ে আছে স্থির। সুনসান পথ, দুপাশে দুচোখ যায় যতদূর খুলা মাঠ। মাঝেমধ্যে ধুঁলোর সাথে বাতাসের ঘূর্ণি। রোদসী দৃষ্টিপথ চকচকানি দিক্বিদিক। যেন জ্বলন্ত আগুনে রুটির তাওয়ার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা। দূর আকাশে উড়ছে চিল তৃষিত দৃষ্টি রেখে জমিনে, হয়তো খুঁজছে জল। আজ এমনি পথিক জীবন শুরু শিমুলের।

ক্ষুধা দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করে চলা শিমুল, বুকে চেপে প্রিয়া হারানোর দুঃসহ যন্ত্রণা। ভালোবাসার মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত শিমুল আজ পথে নেমে পড়েছে যার মন ভাঙা। ছুটে চলেছে চকচকে রোদের বুকচিরে হেঁটে হেঁটে, সন্ধানী চোখ তার নতুন ঠিকানার খুঁজে। দূর সীমান্তরেখা ছাপিয়ে পাড়াগাঁয়ে চোখে যেনো স্থিরতা।

শিমুলের পেটে ক্ষুধা চোখে তৃষ্ণা, রোদের তিক্ততা আর গরমের জ্বলন দাহনে যেন কোন অনুভূতিই নেই, সে হাটছে তো হাটছেই। চোখে দেখছে পায়ে হাটছে মনে তার অপ্রত্যাশিত আগুন প্রকৃতির তপ্ত আবরণে তার কোন ভ্রূক্ষেপই নেই। মনের পুড়নি তাকে বারবার ভাসিয়ে যাচ্ছে চোখের দুকূল। তবুও ধীর পায়ে হেটেই চলেছে সেই মধ্যরাত থেকেই। পথে এক স্কুলের সামনের টিউবয়েল চেপে একপেট পানি তুলেছিল। পথে দোকান পড়লেও পকেটে টাকা না থাকায় আর কিছুই হয়নি খাওয়া।

পথে এক শিমুলগাছের ছড়ানো ছায়া দেখে ভাবছে একটু জিরিয়ে নেয়া যাক, ভোর থেকে আর দাঁড়ানোই হয়নি কোথাও। কত গ্রাম ছাড়িয়ে এসেছে তার হিসেব রাখেনি শিমুল। মনে তার একটাই চিন্তা আর জেদ সে থাকবেনা আর এই সমাজে, দূরে কোথাও অজানা জায়গায় নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করবে। হাটতে হাটতে মাঠঘাট পেরিয়ে এক নতুন জায়গায় এসে পড়েছে শিমুল। গাছের ছায়া পেয়ে ক্ষুধা আর মানসিক কষ্টের ভারে বসে পড়লো মাটিতেই।

সামনে চোখ ধাঁধানো রোদ, শিমুলগাছ পাতা শূন্য লাল ফুলে রঙিন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাই পড়ন্ত দুপুরের সূর্যের চোখ যেন ফাঁকেফাঁকে পড়ছে শিমুলের গায়ে। তবুও পূবাল বাতাসে বসেই আছে শিমুল, ঝরে পড়া শিমুল-ফুল দেখছে অনেকক্ষণ। বাতাসের সাথে কথা বলতে বলতে, জনশূন্য পথের নীরবতায় বসে থাকতে থাকতে কখন যে শুয়ে পড়েছিল ঠিক মনে নেই। গোধূলি রাঙা বিকেলে গাছের ডালে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভেঙে বসে পড়লো শিমুল। সূর্যটা প্রস্তুত পশ্চিম আকাশে হারিয়ে যেতে। দূরের গ্রামটা আবছা দেখা যাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পথ ডেকে দিবে অন্ধকার। শিমুল ঠিক করতে পারছেনা কোথায় যাবে, কি করবে এখন, সবকিছু তার কাছে নতুন মনে হচ্ছে। পশ্চিম আকাশের গোধূলি রাঙা রূপ দেখে মুগ্ধ। গাছের ডাল থেকে কয়েকটা ফুল ঝরে পড়লো আবারও শিমুলের সামনে। এবার একটা ফুল হাতে নিয়ে কি যেন ভাবছে....।

ও ফুল তুমি ঝরে গেলে
অসময় ওই ডাল থেকে,
ঝরাই বুঝি তোমার ধর্ম!
ভুলে শিমুলের প্রেম কতশত
এক নিমিষে তুমি ঝরে যাও
শিমুলের দিকে ফিরে নাহি চাও
কত যতনে গড়া স্বপ্ন ভুলে
ও ফুল তুমি ঝরে গেলে
শিমুল জ্বলবে তাই আজন্ম.....

মনের অজান্তেই শিমুল গান গাইছিল তার হারানো ফুলকে মনে করে। দুচোখ বেয়ে কখন যে গড়িয়ে পড়ছিল জল তা আর খেয়াল করেনি শিমুল। হঠাৎ মাথায় স্নেহময় হাতের পরশে খেয়াল হয় শিমুলের গান থেমে যায়। উপরের দিকে চেয়েই অবাক বিস্মিত চোখে তাকিয়ে থাকে শিমুল। মায়া ভরা দুটি চোখে সহমর্মিতা আর মমতায় ভরা হাতের স্পর্শ পেয়ে শিমুলের যেন বুকফাটা কান্না বাঁধ মানছে না। চোখ গড়িয়ে পড়ছিল তখনো জলের ধারা। মায়া ভরা দুটি চোখে শীতলা চাহনি দেখে নির্বাক।
কি হয়েছে বাবা তোমার? এই বাঁধ ভাঙা কান্না এই অফুরান দুঃখের কারণ কি শুধুই মন ভাঙার?
শিমুলের মুখে কোন উত্তর আসছে না। দুহাতে চোখ মুছতে মুছতে- না বাবা, তেমন কিছুই হয়নি আমার।
শিমুলের কথা শুনে পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব জটলা চুলের মুরুব্বীর চোখে আরো মায়া ঝড়তে লাগলো-
তুমি বলতে না চাইলেও আমি বাবা তোমার মনের কষ্টটা মোটামুটি বুঝতে পেরেছি। মুরুব্বী শিমুলের পাশেই বসে পড়লো।
শিমুল মুগ্ধ নয়নে সাধু বেশি মুরুব্বীর মুখপানে চেয়ে রয়।
শিমুলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে-
বাবারে, আমি প্রায়ই এই পথে নিজের আস্তানায় ফিরি। কখনো কোনদিন এই পথে কাউকে দেখিনি। এই পথে দিনদুপুরে-ও কেউ থাকেনা। অতিব প্রয়োজন না হলে কেউ আসে না এ পথে, পথটা ভালো না! আমিই মাঝেমধ্যে একা এই পথে আসি, আজও এক ভক্তের বাড়ি থেকে এসছিলাম। তোমার মুগ্ধ করা গান শুনেই দ্রুত হাটছিলাম, তোমার গান শুনেছি দাড়িয়ে, অসাধারণ গেয়েছো। গানের গলাটাও তোমার বেশ। দরদ ভরা গান শুনেই বুঝেছি তোমার মনের চাপাকষ্ট। তোমার বাড়ি কোথায় বাবা ? এখানে কিসের জন্য এসেছো ?

চলবে....

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


সবেমাত্র শুরু হচ্ছে, দেখা যাক কি আছে সামনে

২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:০১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: শুরুতেই শ্রদ্ধাভাজন কারো মন্তব্য পাওয়াটাও সৌভাগ্যের। দোআ করবেন যেন কোনরকম শেষ করতে পারি।

ঈদ মোবারক।

২| ২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

শূন্যনীড় বলেছেন: ভালো লাগলো। বড় কষ্টের শিমুল গড়তে যাচ্ছেন মনে হচ্ছে!!
দেখা যাক কি হয়

২৬ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:০৩

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগা জেনে অানন্দিত হলাম। প্রেরণা হয়ে থাকুন।
হ্যা, মনে হচ্ছে শিমুলের কপালে আরো কষ্ট আছে সামনে।
দোআ করবেন ভাই।

ঈদ মোবারক

৩| ২৭ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৫৯

শূন্য-০ বলেছেন: মনে হচ্ছে ভালো কিছু পাওয়া যাবে সামনে
ভালো লাগলো

২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো মন্তব্যে পেয়ে। কেমন কাটলো ভাই ঈদ ?

ভালো লাগা টুকু আশীর্বাদ হয়ে থাকুক।
শুভকামনা জানবেন

৪| ২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:১৯

শূন্য-০ বলেছেন: অালহামদুলিল্লাহ্, ভালো কেটেছে ভাই।
আপনি কেমন কাটালেন ঈদ, বাড়ি যেতে পারছিলেন ?

আপনার জন্যও শুভ কামনা সবসময়

২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:২৫

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালোই কাটলো ভাই আমারো, যদি পরিবার পরিজন ছাড়া!
না ভাই, বাড়ি যাওয়া হয় নি। কোরবানির ঈদ বাড়ি কাটানোর চিন্তায় এবার যাওয়ার ইচ্ছে দেখাইনি।

অনেক ভালো লাগলো আপনার আন্তরিকতা।

শুভকামনা আপনার জন্যও সবসময়।

৫| ২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৬

অতৃপ্তনয়ন বলেছেন: গল্পের ধরণটা ভালো লাগলো। কষ্টের ছোঁয়া

২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:১৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগা জেনে ভালো লাগলো আমারো।
আশা করি ঈদ ভালো কাটাইছেন।


হ ভাই, এক কষ্টের সাগর শিমুল এর সামনে
পড়েছেন জেনে উৎসাহিত হলাম।
শুভকামনা জানবেন সবসময়

৬| ২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:০২

বিজন রয় বলেছেন: তোমার মুগ্ধ করা গান শুনেই দ্রুত হাটছিলাম, তোমার গান শুনেছি দাড়িয়ে,................ এখানে একটু গড়বড় আঠে বোধহয়।

কবিতা রেখে গল্পে আসলেন, ভাল করেছেন।
আজকাল গল্প খুব কম পোস্ট হয়।

গল্পটা শেষ হোক...........

২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:২০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক আশার আলো ছড়িয়ে গেলেন মন্তব্যে। বোল্ড করা অংশ টুকু থেকে একটু গড়বড় আমারো মনে হচ্ছিল, কেটে দিতে চেয়েছিলাম সেখান থেকে। পরে অমনি পোষ্ট করি, ভাবছি দেখি কি হয়।

গল্পটা আমার মন আকাশে ঘুরছে অনেকদিন ধরেই, লিখেছিও গতমাসে কিন্তু পোষ্ট করা হয়নি এখানে। তাই ভাবলাম গল্পটা শেষ করবো তাড়াতাড়ি।

ভালো লাগলো পড়েছেন জেনে। দোআ করবেন ভাই।

শুভকামনা জানবেন সবসময়

৭| ২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৫৩

ব্লগ মাস্টার বলেছেন: ভালো লাগল গল্প।
ঈদ মোবারক।

২৭ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:০৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: পড়েছেন জেনে মুগ্ধ হলাম ভাই। কৃতজ্ঞতা রাখছি মন্তব্যে।
ভালো লাগাটুকো আশীর্বাদ হয়ে থাকুক।

ঈদ মোবারক। ঈদ আনন্দ লেগে থাকুক প্রতিক্ষণ।
শুভকামনা জানবেন সবসময়।

৮| ২৭ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

ওমেরা বলেছেন: ভাইয়া আপনি তো দেখি দুই হাতে লিখেন !!! চলুক সাথে থাকব ইনশা আল্লাহ ।

২৭ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: এমন ভরসা পাইলে তো লেখাই যায়, কিছু না পাইলেও হয়ে য়ায় এমন আন্তরিক উৎসাহে। প্রেরণা হয়ে থাকুন আপু।

অনেক ভরসা আপনার মন্তব্যে। কৃতজ্ঞতা আপু।

শুভকামনা জানবেন সবসময়।

৯| ২৭ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৪২

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ভালো লাগল

২৭ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৩

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: প্রিয় কবির উপস্থিতি আমার আরো বেশি ভালো লাগলো।
ভালো লাগা রইল প্রিয় কবি'র প্রোফাইল পিকচারটাতেও।
কৃতজ্ঞতা জানবেন, ভালোবাসা সবসময়।

১০| ২৭ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯

তোমার জন্য মিনতি বলেছেন: গল্পেও ভালো লাগা রয়ে গেল +++++

২৭ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: প্রিয় শুভাকাঙ্ক্ষীর উপস্থিতি আমার কাছে বেশি আনন্দের। প্লাস গুলো প্রেরণা হয়েই থাকবে ভাই।

শুভকামনা জানবেন সবসময়।

১১| ২৭ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কাব্যিক নৈসর্গিক বর্ণনা ভালোই লেগেছে!

২৭ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:২০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভাই, অনেক দিন পর আপনাকে দেখে বড্ড সৌভাগ্যবান মনে করছি নিজেকে। কেমন আছেন প্রিয় সাধু ভাই।
আপনি আমার প্রেরণা হয়ে আছেন, থাকবেন ভাই। প্রশংসা টুকু আশীর্বাদ হয়ে থাকুক ভাই।

শ্রদ্ধা ভালোবাসা জানবেন সবসময়।

১২| ২৭ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:১২

নীলপরি বলেছেন: গল্পের শিমূলের সাথে পাঠক একাত্ম হয়ে যাচ্ছে । বেশ ভালো লিখেছেন । এখন পরেরটার অপেক্ষায় থাকলাম ।

শুভকামনা ।

২৭ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:২৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: প্রিয় আপুর আন্তরিক উৎসাহে অনেক প্রেরণা সাহস। কৃতজ্ঞতা জানাই শ্রদ্ধেয়া।

অনেকদিন যাবত এই গল্পটা মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, এইটুকু লিখেছি মাস খানেক আগে, পোষ্ট করা হয়নি। গতকাল দিয়ে দিলাম সাহস করে। ভালো লেগেছে জেনে অত্যন্ত আনন্দিত হলাম। প্রশংসা টুকু আশীর্বাদ হয়ে থাকুক আপু।

গল্পটি তাড়াতাড়ি শেষ করার চেষ্টা থাকবে আপু। দোআ করবেন।
প্রেরণা হয়ে থাকবেন সবসময়।

শুভকামনা জানবেন সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.