নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকিলিকস

আকিলিকস › বিস্তারিত পোস্টঃ

পিছনে ফেলে সামনে চল, জামায়াত শিবিরকে পুঁজি করে ব্যবসা কর।

২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪২

কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আর এক সার্কাস!
ছাত্রলীগের দু’গ্রপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাতে মিছিল হবে। হলে যারা থাকবে তাদের সকলকেই মিছিলে উপস্থিত থাকতে হবে। সেই বাধ্যবাধকতার কারণেই হলের বাহিরে আসতে হল। ছাত্রলীগের মিছিল এর আগে কখনোই খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ মেলেনি। তাই এইবারের সুযোগটি মিস করতে চাইলাম না।

মিছিল শুরু হয়ে গেল! মিছিলটিকে শুধু মিছিল না বলে জঙ্গি মিছিল বলাই শ্রেয়। কারণ প্রায় সকলই দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিছিল করছে। কারো হাতে রড,রামদা আবার কারো হাতে হকেস্টিক। ছা্ত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ বলে কথা। কিন্তু মিছিলের পুরো স্লোগানই ছিল জামায়াত শিবিরকে নিয়ে। একটা দুইটা শিবির ধর,সকাল বিকাল নাস্তা কর! শিবিরের চামড়া ‍তুলে নিবো আমরা।
সেই মিছিলে নেতৃত্বদানকারী একজন আমার পূর্ব পরিচিত। মিছিল শেষে সেই নেতাকে বললাম, ঝগড়াটা তোমাদের নিজেদের মধ্যকার! সেখানে জামায়াত শিবির আসল কোথায় থেকে? তখন সেই নেতা হেসে বলল, শিবিরের নাম না নিলে তো জোশ আসে না। পোলাইপাইন উত্তেজিত হয় না!

জি! এই জামায়াত শিবিরকে পুঁজি করেই ছাত্রলীগের নেতারা দলের কর্মীদের উজ্জেবিত করে যাচ্ছে। এই জামায়াত শিবিরকে পুঁজি করেই ইমরান এইচ সরকার নিজের ব্যাংক ব্যালেন্স জ্যামিতিক হারে বাড়িয়ে নিয়েছেন। আবার এই জামায়াত-শিবিরকে পুঁজি বানিয়েই টিকে আছে দেশের বেশ কয়েকটি পত্রিকা। সেই সাথে জামায়াত শিবিরকে পুঁজি করেই সেই পত্রিকাগুলোর কর্মচারীদের পেটে ভাত জুটতেছে। জামায়াত শিবিরকে পুঁজি করেই তাদের প্রেসের চাকা আজও বেশ ভালভাবেই সচল আছে।



আবার এই জামায়াত শিবিরকে পুঁজি করেই বেশ কাজী সিরাজ এবং সৈয়দ আবুল মকসুদের মত কলামিস্টরা কলাম লিখে দুই পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে। একাত্তর টিভির মত টিভি চ্যানেলগুলো দিনরাত জামায়াত শিবিরকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বানিয়ে নিজেদের টিআরপি রেকর্ড সংখ্যক বাড়াবার ধান্দায় আছে। আর সেই ধান্দা করবেই বা কেন, এতো তাড়াতাড়ি একাত্তর টিভি যে নাম কামিয়েছে তার পিছনে তো জামায়াত শিবিরের ভূমিকা যে অনসীকার্য তা একাত্তর টিভির সিইও নিশ্চয়ই অস্বীকার করবেন না। সেই সাথে জামায়াত কে গালি দিয়ে এখনো বেশ ভালভাবেই নিজের জায়গাটা পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির। তিনি যে অনুষ্ঠানেই যান, সেখানেই শুধু ‘জামায়াত শিবির’ নাম জপেন। এই তো সেদিন, বাংলা ভিশনে অনুষ্ঠিত বিশিষ্ঠ্য টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব কিরন সাহেবের একটি টকশোতে শাহরিয়ার কবির উপস্থিত হলেন। সেই টকশোর বিষয় ছিল, সংখ্যালঘু হামলা। শাহরিয়ার কবির বলে দিলেন নাসিরনগরের ঘটনার জন্য জামায়াত শিবির দায়ী। তখন অনুষ্ঠান সঞ্চালক বললেন, কিন্তু পুলিশের রিপোর্ট তো ভিন্ন কথা বলছে। স্থানীয় রাজনৈতিক দন্দ থেকেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তখন শাহরিয়ার কবির বললেন, আমি তো আপনাকে সেটাই বুঝাতে চাচ্ছি। এই জামায়াত শিবির আওমিলীগের ভিতরে প্রবেশ করেই এইসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। ঠিক সেই সময়ই অনুষ্ঠান সঞ্চালক, শাহরিয়ার কবিরের দিকে পারমানবিক বোমাটা ছুড়ে মারলেন। তিনি বললেন, আমরা জানি পাবনার সাঁথিয়ায়তেও একই ভাবে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ঘটনায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুকু সাহেব এবং তার ভাতিজার সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছিল। তবে কি তারাও জামায়াত শিবিরের লোক ছিল?

বর্তমান সময়ে জামায়াত অথবা শিবির রাজপথে না থাকলেও পত্রিকাওয়ালারাই জামায়াতকে মাঠে রেখেছে। বাংলা ট্টিবিউন নামের একটি অনলাইন পত্রিকা এই জামায়াতকে নিয়ে নিউজ করেই মার্কেটে বেশ নাম করেছে। তাই এখন বসে বসে, জামায়াতকে নিয়ে নিউজ বানাচ্ছে! শিবিরের কেন্দ্রীয় অফিস কোথায়! শিবিরের গাড়ির গ্যারেজ কোথায়! শিবিরের নেতাদের ব্যবহৃত বর্জ্য কোন ভাগাড়ে যায়! এইসবই হল নিউজ! আর আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, জামায়াত শিবিরকে কেন্দ্র করে সব নিউজই সর্বাধিক পঠিত হয়ে থাকে। তাহলে শিবিরকে নিয়ে নিউজ বানাবে না কেন?

আসলে সত্যি কথা বলতে, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে স্বয়ং জামায়াতের যতটা না ক্ষতি হবে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে আওয়ামিলীগের। কারণ তখন আওয়ামিলীগ তাদের ছাত্রলীগকে উজ্জেবিত করার জন্য শিবিরকে পাবে না। হাসান মাসুদরা তখন আর মাল খেয়ে যেন তেন কথা বলতে পারবে না। তখন আর তিনি বলতে পারবেন না, হিরোশিমায় পারমানবিক বোমা হামলার জন্য জামায়াত শিবির দায়ী! ইমরান এইচ সরকারের ধান্দাময় ব্যবসাটা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ এখন গজাগরন মঞ্চের ব্যবসাটা যা একটু টিকে আছে তা ঐ জামায়াত শিবিরের নামের কারণেই টিকে আছে। জামায়াত নিষিদ্ধ হলে শাহরিয়ার কবিররা আর টকশোতে জায়গা পাবেন না। তখন আর হলুদ খামে ভরে টাকাও নিতে পারবেন না। কাজী সিরাজরা কলামিস্টের পরিচয়ে আর কলামও ধরতে পারবেন না। সর্বোপরি পত্রিকাওয়ালা নিউজের কাটিত বাড়াতে হিমশিম খেয়ে যাবেন।

এতোকিছু ভেবেই হয়তো জামায়াত কে নিষিদ্ধ করা হবে না। জামায়াত এখন একটি ব্যবসায়ীক পুঁজি। এই অর্থনৈতিক মন্দার দিনে সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে নিশ্চয়ই ফ্রি পুঁজিটি বন্ধ করবেন না। তাই সেই সকল ব্লগারদেরও চিন্তিত হবার কারণে নেই। যাদের মাথায় রাত দিন ২৪ ঘন্টাই জামায়াত শিবিরকে বাঁশ দেবার চিন্তাভাবনা ঘোরে। চালিয়ে যান আপনাদের ব্যবসা। সেই সাথে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। সবকিছু ভুলে, পিছনে ফেলে সামনে চল, জামায়াত শিবিরকে পুঁজি করে ব্যবসা কর।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৬

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: স`হ`ম`ত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.