নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকিলিকস

আকিলিকস › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন মন্ত্রীর জীবনের গল্প!

২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৬

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী। ভাবতে পারেন কতোটা ভিআইপি মানুষ। বাংলাদেশে এই ভিআইপি মানুষদের অবস্থান ভিআইপিদেরও উপরে। তাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশকে ভেদ করে তাদের কাছাকাছি পৌছানো যেন পুলসিরাত সমান। যে মানুষ তাদেরকে ভোট দিয়ে মন্ত্রী বানালো, সেই মানুষগুলোই এখন আর তাদের নিকটস্থানে যাইতে পারে না। কি অদ্ভুদ(!)

কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু একবারই সেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেছিল। তাও আবার সেটা সব মন্ত্রীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ছিল না। দুই একজন মন্ত্রীই শুধু প্রটোকল ব্যবস্থা শীথিল করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে কাছে আসতে দিতেন। সেইরকম একজন মন্ত্রীর জীবনের গল্প অর্থাৎ মন্ত্রীত্ব থাকাকালীন সময়কার গল্প শুনাই।


সেই মন্ত্রী সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। সেই মন্ত্রনালয়ের একটি কাজেই তিনি উত্তরবঙ্গ সফরে আসেন। রংপুর সার্কিট হাউজে থেকে বিভিন্ন ককার্য সম্পাদন করেন। কিন্তু সেই মন্ত্রীর আগমন ছিল অন্যান্য যেকোন সময়কার মন্ত্রীর আগমনের চেয়ে ভিন্ন। সার্কিট হাউজের আশে পাশে এমন আহামরি কোন নিরাপত্তা বেস্টনি ছিল না, যার কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়। বরঞ্জ এমন হয়েছে, মানুষ জানতেই পারেনি সার্কিটি হাউজে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী অবস্থান করছেন। আরো অবাক করা বিষয়, তাঁকে স্বাগত জানিয়ে শহরের কোন পয়েন্টেই গেট সাজানো দেখা যায় নি। যা অন্যান্য মন্ত্রীদের আগমনের বেলায় গোটা রাস্তাই বিভিন্ন ব্যানার ফ্যাস্টুন এবং সাজানো গেট দিয়ে ভরা থাকে। বাংলার আপামর জনসাধারণ এইসব বাড়াবাড়ি রকমের সাজসজ্জা দেখতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এইবার কোন সাজসজ্জা না দেখে সাধারণ অকপটে বলে ফেলেছিলেন, এ আবার কেমন মন্ত্রীরে! জীবদ্দশায় এমন মন্ত্রী দেখি নাই। এমন মন্ত্রীই তো আমাদের পাওয়ার কথা ছিল। ভেবেছিলাম, পাকিস্তানীদের হাত থেকে ‍মুক্তি পেলে হয়তো এমন মন্ত্রী পাওয়া যাবে। কিন্তু দেশ স্বাধীনহবার পর যা দেখলাম তাতে মনে হল, বিদেশি শাসকের হাত বদলিয়ে দেশী শাসকের হাতে পড়েছি মাত্র। কিন্তু কর্মকান্ড সবই এক।

এর সেই সমাজ কল্যান মন্ত্রী একটি জনাকির্ণ সমাবেশে বক্তব্য রাখলেন। তিনি বললেন, আমি খুব খুশি হয়েছি আপনাদের পরিবর্তন দেখে। আপনাদের মনোভাবের পরিবর্তন দেখে। কারণ অতীতে আমি অনেকবারই দেখেছি কোন মন্ত্রী আমলা যদি আপনাদের শহরে আসত, তবে আপনার সাজ সাজ রব লাগিয়ে দিতেন। যেন রাজা মশাই আসছে আর আপনারা প্রজা হয়ে সাজসজ্জা করছেন। কিন্তু আজকে আপনাদের ভিতরে সেই ভৃত্তের ভাব না দেখতে পেয়ে আমি সত্যিই অনেক বেশি আনন্দিত। কারণ আপনারা হয়তো একটু করে বুঝতে শিখেছেন, আপনারা আপনাদের শাসক নই সেবক। আর সেবা করার গুরু দায়িত্বটি আপনারাই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আর একটি কথা। আমি রংপুরে আসার আগেই সবাইকে জানিয়ে দিয়েছিলাম, কোন ধরনের গেট সাজানো অতবা ব্যানার যেন সাজানো না হয়। তারপরও যদি আজ আমি ব্যানার ফেস্টুন দেখতাম তাহলে এইগুলোর লাগানোর পিছনে যাদের হাত ছিল তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে তবেই আমি ঢাকার পথে রওনা হতাম। এই গোলামীর তাড়না থেকে বেরিয়ে আসুন।


মন্ত্রীসাহেবের চাঁদপুর সফর। সফরের নির্দিষ্ট দিনের একদিন আগে তিনি তার রাজনৈতিক পিএসকে নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে সেখানে বেশ কয়েকটি এতিমখানাতে কম্বল প্রদান করা হয়েছে। এই শীতে যেন বাচ্চারা অন্তত কষ্ট না পায়। যাদের জন্য কম্বল দেওয়া হল তারা ঠিকঠাক কম্বল পেল কিনা তা দেখার জন্যই তিনি চুপিসারে চাঁদপুর চলে গেলেন। আর এদিকে পিএস সব ব্যবস্থা করে রাখলেন। নির্দিষ্ট দিনেই পুলিশের প্রটোকলে মন্ত্রী সাহেবের গাড়ি যাবে।

অনুষ্ঠানের দু’দিন আগেই মন্ত্রী সাহেব মাথায় চাদর মুড়ি দিয়ে রাত ১০টায় এতিমখানায় উপস্থিত হলেন। তিনি এতিম খানায় গিয়ে দেখেন, তাদের জন্য যে নতুন কম্বল দেওয়া হয়েছিলেন সেই কম্বলগুলো তাদেরকে দেওয়া হয় নি। সেই পুরনো কম্বল দিয়েই এতিম শিশুরা শীত নিবারনের চেষ্ঠা করে যাচ্ছে। পরেরদিন অনুষ্ঠান শেষে এতিমখানার প্রধানকে ডাকলেন। জিজ্ঞেস করলেন, এতিমখানার বাচ্চাদের কি অবস্থা? প্রধান সাহেব বললেন, জি অনেক ভালো। মন্ত্রী সাহেব বললেন, সরকার থেকে যেসব অনুদান যাচ্ছে তা কি বাচ্চারা পাচ্ছে? নতুন কম্বল কি তারা পেয়েছে? এতিম খানার প্রধান বললেন, জ্বি স্যার। তারা তো নতুন কম্বল গায়ে দিয়েই ঘুমায়। মন্ত্রী সাহেব তখন তাকে সব ঘটনা খুলে বললেন। গতরাতে আমি আপনার এতিমখানায় এসেছিলাম। কই তাদের গায়ে তো নতুন কম্বল দেখলাম না। এরপর তিনি এতিমখানার প্রধানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন।

ঠিক এভাবেই সেই মন্ত্রী সাহেব সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। তিনি ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন হযরত উমর (রাঃ), হযরত উমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ) রাজ্যের ন্যায় শান্তি। যেমনটা মানুষের মনে আক্ষেপ ছিল, এমন যদি হত আমার দেশের শাসক হত, উমরেরই মত হত আবু বক্করের মত। এই ন্যায় পরায়ন ইতিহাস সৃষ্টিকারী মন্ত্রীকে আজকের এই দিনে হত্যা করা হয়। জুডিশিয়্যাল ক্রাইম এর মাধ্যমে নাটক সাজিয়ে তাঁকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। তবুও আফসোস নেই। কিন্তু এই জাতিটির জন্য আফসোস হয়। কারণ, কবি বলেছেন‘যেখানে গুনীর কদর হয় না, সেখানে গুনীরা জন্ম নিবে কি করে’।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৬

রায়হান চৌঃ বলেছেন: ও ভাই..... গ্রাম বাংলায় কিছু প্রচলিত প্রবাদ আছে............কাউয়া চিনে ঘাউয়া কাঁড়ল, চামড়া চিনে মুচি, স্বর্ন কারে স্বর্ণ চিনে... তুই চিনবি কি ?? সত্যি বিষ্মিত হওয়ার কিছু নেই... আমার দেশের কাউয়া টাইপের মানুষ রা সব সময় ঐ ঘাউয়া নিয়েই পড়ে থাকবে

২| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১৩

অদৃশ্য যোদ্ধা বলেছেন: মন্ত্রীটা কে ছিলেন?

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৮

আস্তিক এলিয়েন বলেছেন: এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করাতেই বোতলখোরদের টনক নড়ে গিয়েছিলো। তারা উঠেপড়ে লেগেছিলো এদেরকে যে করেই হোক রাজনীতি থেকে হটাতে হবে, নইলে আমরা দেশের সম্পদকে নিজেদের বাপ দাদার সম্পদের মত ব্যবহার করতে পারবো না, বড় বড় বোতল খেতে পারবো না। জাতি একসময় এই বোতলখোরদেরকে যেমন ডাষ্টবিনে নিক্ষেপ করবে , তেমনি সেই দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী মন্ত্রীদের আজীবন স্মরন রাখবে।

৪| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৪

মার্কো পোলো বলেছেন:
এরকম নেতা, নেতৃত্ব থাকলে দেশের চেহারা চেঞ্জ হয়ে যেত। আফসোস! সবাই আসে পকেট ভারি করতে, সেবা দিতে নয়। :(

৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৫

ছণ্ণ্ ছাড়া বলেছেন: অদৃশ্য যোদ্ধা:: মন্ত্রীটা ছিলেন আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ

৬| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৬

কবি এবং হিমু বলেছেন: কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের চোঁখে কালো একটা চশমা লাগানো থাকে।তারা কোন দিন ও সত্যটা মানতে পারে না।আর তাই জাতির এই দশা।আমরা পরিবারতন্ত্র আর বংশের উপাধি নিয়ে বসে আছি।আমাদের মানসিকতা হলো ডাক্তারের ছেলে ডাক্তারই হবে।চাষীর ছেলেকে ডাক্তার হিসেবে মেনে নিতে আমাদের সমাজের অনেক কষ্ট।এ ১০০ বছর পরে ও এ জাতি এমনি থাকবে হয়তো রাস্তা-ঘাট বা বিল্ডিং এর বদল আসবে কিন্তু মন-মানসিকতা.....

৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৫৬

আলগা কপাল বলেছেন: কি হচ্ছে এসব? মার্কেল আব্রাহাম লোকটা কে? প্রতিটা পোস্টে এসে এসব নোংরা গল্প কমেন্ট করে যাচ্ছে। মডুরা কোথায়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.