নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অভিষেকহীন অভিসারিকা

নাসরিন চৌধুরী

সময় মানুষকে কিভাবেইনা বদলে দেয় ,বদলে যাই - বদলে যায় সবাই! আনমনে স্মৃতির পাতা উল্টাই বেছে বেছে জমে থাকা ক্লেদগুলোকে উগলে ফেলে দেই স্বস্তির নিঃশ্বাসের চাদরে নিজেরে জড়াবো বলে! কিন্তু কতটা পারি বা পেরেছি কতটাই বা পারা যায় খুঁতের মাঝে নিখুঁতের বীজ বোনা !

নাসরিন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ সভ্যতা'র আঁচলে লাগেনি মেহেদী'র রঙ!

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৯





দাদী তার দুই নাতনী নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছে! তন্ন তন্ন করে খোঁজা হল কোথাও পাওয়া গেলনা। সারা গ্রামময় খবর ছড়িয়ে পড়ল কিন্তু কারো চোখেই পড়েনি। আসগর আলী'র মেজাজ খুবই খারাপ, হাতের কাছে পেলে মেয়ে দুটোকে বটি দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলবে এমনটাই সে গজগজ করে বলছিল! রহিমা স্বামীকে প্রবোধ দেয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু উল্টো সে বারবার আজগর আলী ধমক খেয়ে চুপসে গেল। তাদের দুটি মেয়ে, বড়টির নাম রুপালী ও ছোটটির নাম শিউলি। বড় মেয়ের বয়স চৌদ্দ আর ছোটটির বয়স তের। গায়ের রং কালো বলে বলে রুপালি জন্য বিয়ের ঘর তেমন একটা আসেনা, আর আসলেও হয় বউ মারা যাওয়া বা বউয়ের বাচ্চা হয়না এমন সকল পাত্র। রুপালী'র মনের মাঝে প্রশ্নটি বারে বারে মোচড় দিয়ে ওঠে--পাতিলের তলার মত কালো এমন একটা মেয়ের নাম কেন রুপালি রাখা হল! সময় পেলেই দাদীকে জিজ্ঞাসা করে, “দাদী আমি এত কালা একটা মাইয়া আমার নাম রুপালি ক্যান? রুপার মত গায়ের রঙতো আমার না!”



দাদী মানেই তার ধ্যান, দাদী মানেই তার জ্ঞান। জন্মের পর থেকেই দাদী'র কোলে পিঠেই মানুষ। পিঠেপিঠি দু'বোন হওয়ায় রহিমা দুটো বাচ্চা নিয়েই হিমসিম খাচ্ছিল তাই দাদী শরীফা বানু নাতনীকে কোলে তুলে নেন। ষাট বছরের শরীফা বানু এক ফোঁটা অবহেলা করেননি নিজ দায়িত্বে। বাবা মায়ের অবহেলা, পাড়া প্রতিবেশী'র অবহেলা এগুলো রুপালী'র নিত্যসঙ্গী। মাঝে মাঝেই মন খারাপ হলে দাদী সে জায়গায় ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।



পাশের বাড়ির কলিম শেখের বড় ছেলে ওবায়দুল মাঝে মাঝেই রুপালীদের বাড়ি আসে। কলিম শেখ আর আজগর আলী দুজনই বন্ধু মানুষ এবং একসাথে দুজনের কারবার। সেই থেকেই আজগর আলী'র মনে বেশ খায়েশ জন্মেছে যে বন্ধু'র সাথে একটা আত্মীয়তা হোক। কলিম শেখের কাছে কথাটা বলবে বলবে করেও বলা হচ্ছেনা। এদিকে মাঝে মধ্যেই ওবায়দুলকে বাড়িতে আসতে বলে, মাঝে মধ্যে ভাল-মন্দ কিছু রান্না হলে খেয়ে যেতে বলে। ওবায়দুল খুশি মনেই তা লুফে নেয়। বয়স তার চব্বিশ হলো গত মাসে। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ে আর পড়েনি। জড়িয়ে পড়েছে কালোবাজারী ও অসৎসঙ্গে। প্রায়ই বাজারে মন্টু মিয়া'র চায়ের দোকানে তাসের আড্ডা আর রাত বাড়লে চলে রমরমা নীলছবি। দিনের বেলায় চায়ের দোকানে হাইভলিউমে বাজতে থাকে হিন্দী গান “মুন্নী বদনাম হুয়া ডার্লিং তেরে লিয়ে” অথবা “চিকনী চামেলী” নয়ত “ওলা লা ওলা লা তুহি মেরি ফ্যান্টাসি”, আর নয়ত “সুন্দরী চলেছে একা পথে সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে”-----।



গ্রামের বাজার পেরিয়েই হাইস্কুল। তাই স্কুলগামী মেয়েগুলোকে বাজারে মন্টু মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে দিয়েই আসা যাওয়া করতে হয়। প্রতিদিনই ওবায়দুল বসে থাকে তার চামচাগুলোকে নিয়ে। মেয়ে দেখলেই শুরু হয়ে যায় বেসুরো গলায় সেই আইটেম গানগুলো। আসগর আলী'র বড় মেয়ে রুপালীও সেই স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ে এবং তাকেও হেঁটে যেতে হয় বাজারের দোকানগুলোর সামনে দিয়ে কিন্তু তাকে খুব একটা জ্বালাতন কেউ করেনা। তাই রুপালী বেশ খুশি নিজের চেহারা নিয়ে, মনে মনে বলে ভাগ্যিস কালো হইছিলাম, নইলে পাজি ছোঁড়াগুলো বড়ই যন্ত্রণা দিত! কিন্তু রুপালী'র বেশ খারাপ লাগে যখন দেখে তার বান্ধবীদের স্কুলে আসা যাওয়ার পথে টিজ শুনতে হয়। কেউ কিছু ওবায়দুলদের বলেনা ভয়ে, কারন ওদের দ্বারা সবই সম্ভব।



এক বছর আগের ঘটনাটি এখনও এলাকার লোকজনের মন থেকে মুছে যায়নি। প্রতিদিনের মত স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা হয়েছিল রুপালী'র বান্ধবী শিরিন কিন্তু তার আর বাড়ি ফেরা হয়নি। একসপ্তাহ ধরে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেলনা। শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল রুপালীদের বাড়ির বাইরে টয়লেটের ট্যাংকির ভেতর। সারাবাড়িময় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল তাই বাধ্য হয়েই ট্যাংকির ঢাকনা খুলতে বাধ্য হয়। খুলে দেখে একটা বস্তাবন্দী লাশ কিন্তু সেটা যে নিজের মেয়ের লাশই হবে তা ভাবতে পারেননি শিরিনের বাবা মা। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে অর্ধগলিত লাশ নিয়ে যায় ময়না তদন্তের জন্য। খবরের কাগজে শিরোনাম হয় শিরিন কিন্তু আজও তার খুনীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। রুপালী জানে ওবায়দুল শিরিনকে অনেক বিরক্ত করত। তার চেলাগুলো সারাক্ষণ খবর রাখত যে শিরিন কখন কোথায় যায়, কি করে! শিরিন পাত্তা দিতনা কিন্তু সেটার মাশুল এভাবেই তাকে দিতে হল! রুপালী ভাবে পুলিশকে সব বলে দিবে কিন্তু পারেনা সে।



দাদী নাতনী'র মনের হাবভাব সবই বুঝতে পারেন। তাই জিজ্ঞাসা না করে সরাসরিই বললেন, ঘটনা কি? রুপালী জানে সে দাদী'র কাছে কিছুই লুকাতে পারবেনা তাই সে শিরিনের ব্যপারটা দাদীকে খুলে বলে। সেই কথা শুনে দাদী রওনা হয় থানায় কিন্তু আজগর আলী'র কানে সে কথা চলে যায়। নিজের মা'কে এসে ইচ্ছামত বকাবকি করে এবং বলে, “মা নিজের কথা ভাবোনা ভাল কথা কিন্তু আমার মাইয়াগুলার জীবন নিয়া তুমি খেলতাছ ক্যান? তুমি জান এর পরিণাম কি হইব? শরীফা বানু কিছুই বলতে পারেনা নিজের ছেলেকে কিন্তু তার আজ আপসোস হয় নিজের গর্ভের সন্তানকে নিয়ে। টাকার কাছে মানুষ এত সহজে বিকে যায়! টাকা আর ক্ষমতার জোরে মানুষের সাত খুন মাফ হয়ে যায়! দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন সেদিনের মত।



ইদানিং ঘন ঘন ওবায়দুল এ'বাড়িতে যাতায়াত করছে। শরীফা বানু রুপালীকে ঘর থেকে বেরুতে দেননা ওই সময়টা। রুপালীও নিজেকে বেশ গুটিয়ে রাখে। কিন্তু শিউলি ওবায়দুলকে দেখলেই খুশিতে পাগল হয়ে যায় কারন ওবায়দুল যতবারই আসে ওদের দু'বোনের জন্য কিছুনা কিছু নিয়ে আসে। আর শিউলি সেগুলোকে লুফে নেয়। এনিয়ে আজগর আলী ও রহিমার কোন মাথা ব্যথা নাই। কিন্তু শরীফা বানু এনিয়ে ছেলে ও ছেলে বৌকে বললেন, “তোমরা নিজের হাতেই নিজের মৃত্যুর কাফন কিনতাছ।এমন সেয়ানা দুইডা মাইয়া ঘরে অথচ তোমাগো কোন চিন্তাই নাই! ওবায়দুল প্রায়ই বাড়িতে আসে, তারে তোমরা যত্ন কইরা খাওয়াও। তোমরা জাননা হের স্বভাব চরিত্র?”

আজগর আলী বলে, “ মা বেডা মানুষের আবার স্বভাব চরিত্র কি! আর আমিও চাই ওবায়দুল রুপালীরে পছন্দ করুক। এখনও প্রস্তাব দেই নাই ভাবছি সময় কইরা ওবায়দুলের বাপের কাছে প্রস্তাব দিমু।”

শরীফা বানু তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠলেন বললেন, “পাগল হইছস? গায়ের রং কালা বইল্যা মাইয়াডারে আগুনে ফেলবি? তোদের কোন মায়া নাই কিন্তু আমি ওরে বড় করছি আমি ওর জীবনডা নষ্ট হইতে দিমুনা।” আজগর আলী মা'কে ধমক দিয়ে বললেন, “যেইডা বোঝনা হেইডা নিয়া চিল্লাও ক্যান? যাও ঘরে গিয়া ঘুমাও ম্যালা রাইত হইছে।”



আজগর আলী'র বাড়ির উঠোনটি বেশ বড়। পশ্চিম পাশে আজগর আলী'র বড় একটি টিনের ঘর আর পূর্ব পাশে ছোট একটি টিনের ঘর। ছোটটিতে শরীফা বানু রুপালীকে নিয়ে থাকে। আর তার পেছেনেই খড়ের একটি গাদা। শরীফা বানু ছেলের ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেন হঠাৎই খড়ের গাদা'র ওদিক থেকে ফিসফিস আওয়াজ শুনতে পেলেন। কাছে যেতেই দেখলেন আবছা আলোয় দুটো ছায়া মূর্তি। গলা পরিষ্কার করে ডাক দিলেন, কেডা ওখানে? গলার আওয়াজ পেয়েই মনে হল কেউ দৌড়ে পালাল। আর অন্যজন পালাবার সময় পেলনা। শরীফা বানু হাতে থাকা হারিকেনটাকে উঁচু করে ধরলেন, দেখলেন পুরাই বিবস্ত্র অবস্থায় শিউলী নিজেরে লুকাবার চেষ্টা করছে। এই দেখে শরীফা বানু কি করবেন কিছুই বুঝতে পারলেননা। তাড়াতাড়ি ছোট নাতনীকে কাপড় পড়িয়ে নিজের ঘরে নিয়ে এলেন। রুপালী'র সামনে কিছু জিজ্ঞাসা করলেননা শুধু বললেন শিউলি আজ আমার কাছে শুইব তুই আজ ওই ঘরে ঘুমা রুপালি। কিন্তু রুপালি কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই বললেন, শিউলি আজ খুব ডরাইছে। তার নিজের রুমে একা শুইতে ভয় পাইতাছে।বাইরে নাকি কি দেখছে!

রুপালি বলল, “দিলাত আমার ভিতরেও ডর ঢুকাইয়া! আমরা দুজনই বরং তোমার কাছে থাকি!” শরীফা বানু আর আপত্তি করতে পারলনা। সকাল হবার অপেক্ষায় রইলেন কিন্তু সকাল হল, বিকেল হল কিন্তু শিউলি আজ আর ধরা দেয়না। শিউলির সাথে কথা বলা বড় প্রয়োজন কিন্তু সে লাপাত্তা। রহিমাকে জিজ্ঞাসা করতেই সে বলল, “শিউলিত ওর নানা বাড়ি গেছে। অনেক দিন যায়না তাই সকালে আবদার করল আমি আর না করি নাই। ওর বাপেইত নিয়া গেল।” শরীফা বানু কিছু বলতে পারলনা কারন সে জানে কারো কাছে বলে লাভ নাই, সবাই তাকেই উল্টা পাল্টা বলবে বা বকবে। ভাবছে যদি শিউলি'র কাছে ওই ছেলের নামডা জানতে পারত! আর শিউলিরে একটু ভাল করে বুঝাইতে পারত!



না প্রায় পনেরদিন হয়ে গেল শিউলি ফিরে আসেনি। এদিকে আজগর আলী রুপালি'র বিয়ে ঠিক করেছে ওবায়দুলের সাথে। রুপালি অনেক আপত্তি করেছিল, দাদীকে দিয়ে বাপকে বুঝিয়েছে কোন লাভ হয়নি। সামনের শুক্রবার বিয়ে মাত্র সাত দিন বাকি। গ্রামের সবাইকে দাওয়াত দেয়া হয়ে গেছে। বোনের বিয়ে উপলক্ষ্যে শিউলি বাড়ি এল কিন্তু এই পনের বিশ দিনে মেয়ের কি হাল হয়েছে! চোখের নীচে কালি পড়ে গেছে, কিছু খেতে পারছেনা। দাদী খুব দ্রুতই টের পেয়ে গেল। এবার শিউলিকে ডেকে নিকে জিজ্ঞাসা করলেন—শিউলি বলল, দাদী আমারে মাফ কইরা দেও। আমি এখন কি করুম? আমার খালি বমি আসে কিচ্ছু খাইতে পারিনা। আর ওবায়দুল ভাই আমারে কইছিল বিয়া করব কিন্তু এখন সে আমারে রাইখ্যা বুবুরে বিয়া করতাছে। দাদী তুমি কিছু কর!”

শরীফা বানু নাতনী'র দু'গাল কষে দুটো চড় দিয়ে বললেন, “কাউরে ভাল পাইলেই তার লগে শুইয়া যাইতে হইব? এখন যে অঘটন ঘটাইছস কেমনে কি করুম এখন!” রুপালিও শেষ পর্যন্ত জেনে গেল ছোট বোনের ঘটনা। দাদীকে পাঠাল ওবায়দুলের কাছে কিন্তু ওবায়দুল সাফ অস্বীকার করল এবং এসব কিছুই জানেনা বলে দাদীকে ফিরিয়ে দিল। দাদী ওবায়দুলকে পুলিশের ভয় দেখালেন কিন্তু এতে হীতে বিপরীত হল। ওবায়দুল শিউলিকে খুন করার হুমকি দিল।



শুক্রবার সকাল থেকেই দাদী শরীফা বানু ও দুই নাতনীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আজ রুপালির বিয়ে কিন্তু বিয়ের আসরে সকল মেহমান এসে গেছেন কিন্তু তাদের কোন সন্ধান পাওয়া গেলনা। সন্ধ্যা সাত'টার দিকে ওবায়দুলের লোকজন ওদের তিনজনকেই জোড় করে ধরে নিয়ে এল।বলল, ওবায়দুল ভাই বড় রাস্তার মোড়ে শহরের বাসের জন্য অপেক্ষা করতাছিল ওখান থাইকা ধইরা আনছি।” ওবায়দুল এবার শরীফা বানু'র দিকে চোখ কটকট করে তাকাল। আজগর আলীকে বললেন, “চাচা যা হইবার হইছে এবার বিয়া পড়ান।” শরীফা বানু নিজের ছেলেকে কিছু বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু ওবায়দুলের জন্য পারলেননা।



রাতে বিয়ে হয়ে গেল রুপালি'র। শিউলী কাউকে কিছু বললনা। ভোররাত তিনটা'র দিকে দাদী টয়লেটে যাবেন বলে শিউলিকে বললেন কুপিটা ধরিয়ে দিতে। শিউলি কুপি ধরিয়ে দিয়ে দাদী'র বিছানায় ঝিম মেরে বসে রইল। কতক্ষণ কেটে গেছে সে টের পায়নি কিন্তু দাদী এতক্ষণ কি করছে! এই ভেবে সে দেখতে গেল কিন্তু দেখল টয়লেটের বাইরে কুপি জ্বলছে। সামনে এগিয়ে যেতেই সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল শরিফা বানুকে জ্বিনেরা মেরে ফেলেছে। এমনভাবে একমাত্র জ্বিনেরাই মারে। লাশের মাথার পেছেনের চুলগুলো পুড়িয়ে ফেলেছে কিন্ত সামনের চুলগুলোকে পুড়িয়ে দেয়নি। শাড়ির আঁচলটুকু পুড়িয়ে ফেলেছে কিন্তু বাকি পুরোটা শাড়ি যেমন ছিল তেমনি আছে। চোখের ভ্রুগুলো পুড়িয়ে ফেলেছে কিন্তু চোখের বিকৃতি করেনি। বুকের ব্লাউজের একসাইড একটা বুকসহ পুড়িয়ে দিয়েছে।

গ্রামের বিখ্যাত কবিরাজগণ এলেন এবং সবাই বললেন, “হাঁ জ্বিন চালান দিলাম জ্বিনরা কইল, এটা ওরাই করছে কারন শরীফা বানু ভোর রাতে তাদের চলার পথে সামনে পড়ছিলেন!”



শিউলি দেখেনি-- কিছুই দেখেনি, এ ঘটনার পর শিউলি বাকরুদ্ধ হয়ে যায়! মাঝে মাঝে দাদী'র কবরের পাড়ে গিয়ে বসে থাকে উদ্দেশ্যহীনভাবে-------!





মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:




ভাল লাগলো।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২২

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য। ভাল থাকুন।

২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৮

পার্থ তালুকদার বলেছেন: আমাদের সমাজের কিছু কঠিন গোপন সত্য তুলে ধরেছেন ।

ভাল লাগল।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৫

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। ভাল থাকুন

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০২

আবু শাকিল বলেছেন: করুণ গল্প । গল্পের রুপালি এবং শিউলী চরিত্র দুটি সুন্দর ভাবে সাজিয়ে এনেছেন।

গল্পে এত্ত গুলা লাইক :) :)

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৬

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ শাকিল আপনাকে লেখাটি পড়েছেন ও এত্তগুলান লাইক দিয়েছেন।

ভাল থাকা হোক

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৭

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: গল্পে দ্বিতীয় ভালো লাগা রইল।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৭

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রবাসী ভাই। ভাল থাকবেন।

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩২

কলমের কালি শেষ বলেছেন: :( :( :(.... গল্পটা বেশ করুন লাগলো । শেষের টুইষ্টটা ভালো লাগলো । অসাধারন সমাপ্তি ।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৮

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: জেনে খুশি হলাম । ধন্যবাদ অনেক অনেক । ভাক থাকা হোক

৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৩৬

এহসান সাবির বলেছেন: হাজারও ওবায়দুল আমাদের দেশে, আর কত সহ্য করবে শিউলি, রুপালি বা শিরিনের মত মেয়েরা?


এক গুচ্ছ ভালো লাগা।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৯

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: হুম এভাবেই চলছে হয়ত আরো চলবে। কে জানে --!!!

ধন্যবাদ সাবির আপনাকে। ভাল থাকুন।

৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:০৬

নিলু বলেছেন: লিখে যান

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩০

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন

৮| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:২১

নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন: থ্যাংকস
আমাদের কে নিয়মত কিছু দেবার জন্য
আশা করছি সব সময়ই পাবো।
পড়তে শুরু করেছি মাত্র শেষ করিনি
ভাবলাম আগে কমেন্টস্টা করে আসি
তবে একজন সতেচন নাগরিক হিসেবে
আপনি রুপালীর চৌদ্দ বছর বয়সেই বিয়ের
চিন্তা শুরু করলেন?
আর
রুপালীর আর শিউলির বয়সের ব্যবধানটা
একটু বেশি দিলে ভাল হতনা
আমরা কি আর এখন আগের মত আছি ?
লিখায় এক রাশ রজনীগন্ধ্যার শুভেচ্ছা।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৫

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

আমি আমাদের গ্রামীন সমাজের একটা চিত্র তুলে ধরেছি যেখানে আজো তের চৌদ্দ বছরের মেয়েদের জীবনের সাথে বিয়ের শিকলটা পড়িয়ে দেয়া হয়।
গ্রামের মোড়ল , তাদের বখাটে ছেলেদের উৎপাত , তারপর মেয়েগুলো কিভাবে মেনে নেয়ে নিয়তি তা তুলে ধরতে চেয়েছি।

আর আমি সচেতন নাগরিক হিসেবে ওই বয়সটা কখনও বিয়ের কথা ভাবতেই পারবনা কিন্তু আমি আমার চিন্তার কথা গল্পে বলিনি আমি গল্পে সেসব মানুষের কথা তুলে ধরতে চেয়েছি যারা এমন ঘটনার স্বীকার হয় প্রতিনিয়ত।

আশা করি বোঝাতে পেরেছি। ভাল থাকবেন।

৯| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৯

আলম দীপ্র বলেছেন: গল্পে ৫ম ভালোলাগা ।

দমক> ধমক ।
ঠিক করে নিয়েন ।
শুভকামনা নিরন্তর ।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৫

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে , ভাল থাকুন।

১০| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬

মুহিব জিহাদ বলেছেন: হৃদয় ছুয়ে যাওয়া গল্প। পোস্টে ভালো লাগা রইল

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৬

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে । আমার ব্লগ বাড়িতে স্বাগতম। ভাল থাকা হোক

১১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৬

খেলাঘর বলেছেন:


সমস্যা, আমাদের মেয়েদের কপালে দু:খ।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৭

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।

১২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১০

সকাল রয় বলেছেন: অনেক ভালো লেখা।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৮

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: গল্পকারের মুখ থেকে এমন কথা ভবিষ্যতে গল্প লেখার প্রেরণা হয়ে থাকবে।

ধন্যবাদ সকাল'দা। ভাল থাকুন।

১৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৮

সুমন কর বলেছেন: গল্পে ভাল লাগা রইলো।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৮

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন আপনাকে। ভাল থাকবেন।

১৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১১

ডি মুন বলেছেন: নৃশংসতার গল্প।



বেশ ভালো লেগেছে।
++++

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৯

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ মুন আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য। ভাল থাকা হোক।

১৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:১২

উদাস কিশোর বলেছেন: চরিত্রের সুন্দর উপস্থাপনায় গল্প বেশ ভাল লেগেছে

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:১০

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য। ভাল থাকুন

১৬| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৪

তুষার কাব্য বলেছেন: একরাশ ভালো লাগা +++

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:১১

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ রইল অনেক। ভাল থাকুন

১৭| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৪

মাহফুজ তানজিল বলেছেন: গল্প অসম্ভব ভালো লেগেছে । +++

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন। ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগছে। পাশে পাব এই প্রত্যাশায়

ভাল থাকুন। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা

১৮| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২১

মামুন রশিদ বলেছেন: আমাদের সমাজের গভীর অন্ধকারের গল্প । ভালো লেগেছে ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪১

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই লেখাটি পড়ার জন্য।
ভাল থাকবেন।

১৯| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৪

নাজনীন পলি বলেছেন: মর্মান্তিক ঘটনা । আজকাল গল্প ও লিখছেন এবং প্রতিটিই চমৎকার হচ্ছে । শুভেচ্ছা আপু ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪২

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: গল্প লেখিকার কাছ থেকে কমেন্ট পেয়ে ভাল লাগল।
আসলেই জানিনা গল্প আমাকে দিয়ে হবে কিনা।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
ভাল থাকা হোক

২০| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:০৭

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: প্রথমেই তোমাকে নামকরণের জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। গল্পটার যথার্থ একটা নাম দিয়েছ। ঘুণে ধরা সভ্যতার আঁচলে মেহেদীর রঙ লাগলে বোধ হয় সেখানে কিছুটা পরিবর্তন আসতো। মেহেদী রঙ পড়ে একজন নারী পুরনো জীবন থেকে বের হয়ে গিয়ে নূতন জীবনে পদার্পণ করে। কিন্তু আমাদের সভ্যতা এখনো যে সেই আগের মতোই রয়ে গেছে, যেখানে ওবায়দুলদের বসবাস, যেখানে মানুষের সৌন্দর্য মুল্যায়িত হয় গায়ের রঙের উপর নির্ভর করে। তাই তুমি যথার্থই বলেছ, "সভ্যাতার আঁচলে লাগেনি মেহেদী'র রঙ"।
ওবায়দুল তার পথের কাঁটা শরীফা বানুকেও বিদায় করে দিয়েছে। শিউলি নীরব সাক্ষী হয়েও বাকী জীবন মুখ খোলার সাহস দেখাবে না বলে মনে হল। কারণ শিউলি শরীফা বানুর নাতনী হলেও শরীফা বানু হয়ে উঠতে পারে নাই। ওবায়দুলদের জগতে শরীফা বানু এক ভয়াবহ ত্রাস। তাই সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে শরীফা বানুকে বিদায় করে দিয়েছে।
রুপালী ও শিউলির মা বাবা যা করেছে, তাতে ওবায়দুলদের দৌরাত্ব্য যে বাড়বে, তাতে কোন সন্দেহ নাই। সমাজ ধ্বংসের শুরুটা মনে হয় পরিবার থেকেই শুরু হয়।
রুপালীর বিয়ে হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আদৌ কি সেটাকে বিয়ে বলা যাবে? যাবে না। অন্তত শরীফা বানুদের মতো মানুষ এটাকে বিয়ে বলবে না। বলবে ব্যভিচার।
ইভটিজিং, ব্যভিচার, হত্যা, ওবায়দুলের মতো পশুদের তাণ্ডব, শিউলির মতো অবুঝ মেয়েদের মিথ্যা ফাঁদে পা বাড়ানো, বর্ণ বৈষম্য, টাকার কাছে বিবেককে বিকিয়ে দেয়া সবই গল্পে তুলে এনেছ।
পল্লীর পরতে পরতে এমন করুণ ইতিহাসের শোকগাঁথা অনেক লেখা থাকলেও আমরা সহজে তা তুলে আনি না। তুমি এনেছ এবং খুব ভালো ভাবেই এনেছ। কবি বলে কিছুটা বাড়তি সুবিধাও পাও। কারণ শব্দ কবিদের খেলার পুতুল। ইচ্ছা মতো শব্দ নিয়ে খেলাতে কবিদের জুড়ি নাই।
শিউলির দুর্ঘটনা এবং রুপালীর বিয়ে- এই দুটো ব্যাপারে আরও একটু সময়ের তফাৎ দেখাতে পারলে ভালো হতো। কারণ মাত্র পনের দিনের ব্যবধানে উপসর্গগুলো দেখা দেয়াটা কিছুটা দ্রুত মনে হল। মেয়েলী ব্যাপার। হয়তো তুমি আমার চেয়ে ভালো বুঝবে।
গল্প ভালো হয়েছে নাসরিন। বার্তাবহুল গল্প বিশেষ করে আমাদের সমাজের অন্ধকারাচ্ছন দিকগুলো যখন গল্পে স্থান পায়, সেটা আমার কাছে বরাবরই ভালো লাগে। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৬

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: প্রোফাইল এর ছবিটা দেখেই সন্দেহ করসিলাম---এইডা কে হইতে পারে!!!
পরে মন্তব্যের স্টাইল দেখে ৮০% শিউর ছিলাম এবার ১০০% শিউর।

আসছি পরে

২১| ১২ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: অনেক ভালো লাগল।

২২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪৩

হামিদ আহসান বলেছেন: সুলিখিত সুপাঠ্য জীবনঘনিষ্ঠ গল্প৷ অামাদে সমাজে বিশেষ করে গ্রামীন সমাজে এই রকম গল্প বিরল নয়৷ সব মিলিয়ে দারুন লিখেছেন গল্প৷ বুঝা গেল কবিতার মতো গল্পেও অাপনার হাত ভাল ......

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.