নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অভিষেকহীন অভিসারিকা

নাসরিন চৌধুরী

সময় মানুষকে কিভাবেইনা বদলে দেয় ,বদলে যাই - বদলে যায় সবাই! আনমনে স্মৃতির পাতা উল্টাই বেছে বেছে জমে থাকা ক্লেদগুলোকে উগলে ফেলে দেই স্বস্তির নিঃশ্বাসের চাদরে নিজেরে জড়াবো বলে! কিন্তু কতটা পারি বা পেরেছি কতটাই বা পারা যায় খুঁতের মাঝে নিখুঁতের বীজ বোনা !

নাসরিন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জলে ভাসা পদ্ম

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৮



আপনি যতোদিন সার্ভিস দিতে পারবেন ততোদিন আপনাকে সবাই ভালো বলবে- ভালোবাসবে। সারাদিন একজন মেয়ে পুরোটা সংসার সামলায়- বাচ্চা সামলায়- বাজার করে- বাইরে জব করে। এরপরে উনিশ থেকে বিশ হলেই আপনারা বলেন তুমি কি একাই সংসার করো নাকি আশেপাশে অন্য নারীরা সংসার করেনা? কিন্তু গিয়ে দেখেন অন্য নারীদের স্বামীরাও তাদের সেইম কথাটাই বলে। কিন্তু কোনো মেয়ে যদি তার স্বামীকে বলে, অমুকের স্বামী বাড়ি কিনেছে- গাড়ি কিনেছে- বৌকে জুয়েলারি গিফট করেছে- আইফোন গিফট করেছে তখন আপনাদের সহ্য হয়না! বলেন, ওহ তুমিও সেই ব্যাটার বৌ এর মতোই লোভী! আপনি অন্যের বউদের উদাহরণ দিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত ছোটো করেন কিন্তু সে উদাহরণ টানতে গেলেই আপনার পৌরষত্বে লাগে!

এখন সারাদিন এতো কষ্ট করার পরেও এই সংসারে সে তার কাজের কোনো স্বীকৃতি বা মূল্যায়ন পায়না। দিনশেষে ক'জনইবা বলেন- তুমি অনেক করছো একটু বিশ্রাম নাও। আবেগে ক'জনইবা মাথায় একটু হাতটা বুলিয়ে দেন? সেটাতো নয়ই বরং উল্টা বলেন, ওমা তোমার সংসার তুমি করবা না অন্য কেউ এসে করবা নাকি? তোমার বাচ্চা তুমি পালবা না তো কে এসে পালবে?

এইযে শুধু কাজের বেলাতেই তোমার সংসার তোমার সংসার বলেন কিন্তু কোন কারণে মনোমালিন্য হলে এই তোমার সংসারটা তখন আপনার হয়ে যায়। বলেন, বের হয়ে যাও বাসা থেকে এটা আমার বাসা! বাচ্চাদের অভিভাবক এর অধিকার পেতে আদালতে যান! কি পরিমান হিপোক্রেট আপনারা ভেবে দেখেন!

দিনশেষে একটা জিনিস ভুলে যান আপনারা যে, এই শরীরটাও রক্ত-মাংসের। সে শরীরটাও বিশ্রাম চায়! জব, সংসার,বাচ্চা এসবের বেড়াজালে এই মানুষটাকে কতটুকু সাপোর্ট দেন? নাইবা দিলেন কিন্তু সার্ভিস আশা করেন ১০০%! জব আপনারাও করেন কিন্তু দিনশেষে বাসায় এসে পা দুলিয়ে টিভি দেখতে পারেন- টেবিলে রেডি খাবার খেতে পারেন। কিন্তু যে মেয়েরা জব করে তারা সব সামলে অফিস যায় এবং অফিস থেকে এসেও রান্না বাচ্চা সব সামলায়। সবাই ঘুমিয়ে গেলে সে ঘুমাতে যায় তবুও সে তাকে প্রতিনিয়ত শুনতে হয়, কোনো কাজই ঠিকমতো করতে পারোনা! অথচ আপনারা কজন তাকে একটু রান্নাঘরে সাহায্য করেন? বাচ্চাদের সামলাতে সাহায্য করেন?

কাজের সাহায্যকারীর বেতন ও আজ পাঁচ হাজারের কম নয় কিন্তু ঘরের বৌকে আপনারা অনেকেই কাজের সাহায্যকারীর চেয়ে নীচে নামায়ে ফেলেন। কবুল বললাম, ব্যাস সে এখন আমার আর আমার পরিবারের বিনা বেতনে সার্ভিস দিবে। সার্ভিস দিলেই হবেনা সবার মন রক্ষা করে চলতে হবে। শ্বাশুড়ি - ননদ- দেবর সবাইকে খুশি রাখতে হবে। বাচ্চা মানুষ করতে হবে! এসবের চাপে একটা মেয়ের জীবন থেকে হারিয়ে যায় তার শখ- আহ্লাদ - স্বপ্ন- ভালোবাসা- আবেগ! অনেক কর্মজীবি মেয়েদের বেতনটাও তাদের কাছে রাখার অনুমতি নেই। বেতন পেয়েই স্বামী বা শ্বাশুড়ির হাতে তুলে দিতে হয়!

আমাদের সমাজের বিবাহিত মেয়েগুলোরে নিয়ে একটা জরিপ করেন তখন বুঝবেন বিয়ের পর একটা মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি এবং স্বামীর ঘরে কতটুকু কাজ করার মেশিন মনে করে আর কতটুকু মানুষ মনে করে!
ত্যাগ খালি একজনেই করবে এমনি নিয়ম বানায়ে দিয়েছেন আপনারা। সবাই শাবানার মতো বউ চায়- যে সব কিছু নীরবে হজম করে স্বামী আর তার পরিবারের টর্চার সহ্য করেও সেখানে পড়ে থাকবে। আর সবাইকে ক্ষমা করবে।

জীবন একটাই। নিজের মতো করে বাঁচার জন্য আল্লাহ কাউকে দুবার পৃথিবীতে পাঠাবেনা। পাশের মানুষটা যেদিন ক্ষেপে যাবে সেদিন সে বিদ্রোহ করবেই। তখন দেখবেন আগ্নেয়গিরি থেকে কিভাবে লাভার বিস্ফারণ ঘটে! আপনি যখন তার কাছ থেকে শ্রদ্ধা- ভালোবাসা বঞ্চিত হবেন এবং সেই মানুষটা যখন আপনাকে ছেড়ে যাবে তখন বুঝবেন সেই মানুষটার মূল্য!

আমাদের সমাজের অনেক ছেলে এবং তার পরিবারের মানসিকতাই এমন। এই সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে! ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে তবে সেটা সমাজের উদাহরণ হয়না এবং সংখ্যার বিচারে সেটা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনা!

পাশের মানুষটার যত্ন নিন। সে কাজ করার মেশিন নয় তাকেও রক্ত মাংসের মানুষ ভাবুন- তার কাজের স্বীকৃতি বা মূল্যায়ন করুন। অন্যের স্ত্রীদের সাথে তুলনা না করে বরং তার প্রশংসা করুন। শাসন করে- ঝগড়া করে আপনি তাকে ফোর্স করছেন কিন্তু ভালোবেসে প্রশংসা করে দেখেন সে তারচেয়ে দশগুন বেশি আপনাকে ফেরত দিবে! বেলাশেষে সেই মেয়েটিই আপনার পাশে থাকবে বন্ধু হয়ে। সে আপনার সন্তানর মা- তাকে শ্রদ্ধা করুন।


***কোনো লেখাকেই লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না***

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৭

তারেক ফাহিম বলেছেন: সাবানার মত একখান বউ এনে দেও আপু,
একখান সেলাই মেশিন কিনে দেবো,

কিছুক্ষন পরেই চৌধুরী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক হব B-)

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: হা হা সিরিয়াস পোষ্টেও হাসি আসলো

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে মেয়েদের কোথাও শান্তি নেই। না ঘরে, না বাইরে।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪২

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: সেরকমই হচ্ছে প্রায়ই সংসারে।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:২০

ফাহমিদা বারী বলেছেন: গল্প কবিতার নাসরিন আপা?
খুব ভালো লাগছে আপনাকে এখানে দেখে!

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪০

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: জ্বি আপু, আমিত সামুতে প্রায় ৫ ধরেই আছি।প্রথম আলো ব্লগ বন্ধ হবার পর থেকেই আছি। মাঝখানে একটু অনিয়মিত ছিলাম এই যা!"

৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সত্য কথা বলেছেন আপি। একমত আপনার সাথে

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪২

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু

৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি। আমাদের পুরুষদের এমনটা করা উচিৎ না। তবে সবাই যে করে তা কিন্তু নয়। এতো করার পর ও নারীদের সঠিক মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। নারীরা যা করেন তার কোন মূল্য হয়না। জগতের প্রতিটি নারীর প্রতি শ্রদ্ধা রইল।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৪

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: আমি লিখেছি ব্যতিক্রম আছে তবে অধিকাংশ ফ্যামিলিতেই হচ্ছে।
আশাপাশে অনেক অভিজ্ঞতা থেকে বলছি

৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৮

মা.হাসান বলেছেন: ছেলেরা বউদের খালি বদনাম করবে, মেয়েরাও বলবে ছেলেরা এত অত্যাচার করে। তার পরেও দুই পক্ষই বিয়ের জন্য পাগলা। মাথায় এগুলার কি?

(আমার মাথায় আগে গোবর ছিল, এখন সব ফাঁকা হয়ে গেছে)

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৫

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: এখানে অত্যাচারের কথা বলিনি- বলেছি একটা সংসারে একজন মেয়ের অবদান কতটুকু, অবহেলা কতটুকু! তার স্বীকৃতি বা মূল্যায়ন কতটুকু!

৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৮

শামছুর রহমান বলেছেন: আমাদের সমাজের এটি বাস্তব চিত্র ! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই এমন সত্য চিত্র তুলে ধরার জন্য !

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:১১

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মূল্যায়নের জন্য

৮| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৯

রক বেনন বলেছেন: এর ঊল্টো ও আছে। কিন্তু সেগুলো নিয়ে কেউ লিখে না! না ছেলেরা, না মেয়েরা!

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:১০

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: আপনি লেখেন আপনার অভিজ্ঞতা- আমরাও পড়ে জানি।

৯| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলাদেশের বেশীর ভাগ ছেলে স্বামী হিসেবে ভালো নয়, এরা ইতর টাইপের

১০| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৫

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: শেষ কথাটা ভালো বলেছেন

১১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: এই সাবকন্টিনেন্টে স্ত্রীকে অনেক ক্ষেত্রে দাসদাসীর পর্যায়ে মূল্যায়ন করা হয়।
এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

১২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৪

সাাজ্জাাদ বলেছেন: মেয়েরা নিজের মনে করেই সংসারে কাজ করে। নিজের বাচ্চার যত্ন , নিজের স্বামীর যত্নের যাতে কোনও কম না হয় তা ভেবেই করে। মোটামুটি সব মেয়েই এতে খুশী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.