নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার প্রিয় কিছু পাপের কাছে আমি বন্দি হয়ে আছি

নাভিদ কায়সার রায়ান

তৃতীয় ধরণের পাগল হল সেয়ানা পাগল। এটা সবচেয়ে কঠিন ধরণের পাগলামি। এই পাগল কি সুস্থ না অসুস্থ সেটা বোঝা খুব কঠিন। যখন সে পাগলামি করছে তখন তার কাজকারবার হবে সুস্থ মানুষের মতো। জটিল সব যুক্তি দিয়ে সে তার পাগলামি প্রতিষ্ঠিত করবে। আবার যখন সে সুস্থ থাকবে তখন তার চিন্তা ভাবনা হবে পাগলের মতো। অফিসে এবং বাসায় নিয়মিত ভাবে আমি এই পাগলের ভূমিকায় অভিনয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার কাছে ভালোই লাগে। শুধু মাঝে মধ্যে আমার মাথার মধ্যে জ্যোৎস্না ঢুকে পড়ে। তখন খুব অস্থির লাগে। কেন লাগে জানি না। আপনারা কেউ কি জানেন?

নাভিদ কায়সার রায়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি রিভিউঃ The Lunchbox

০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ১:২৭





ইউনিভারসিটিতে চার বছর হই হুল্লোড় করে কাটানোর পর যখন চাকরিতে ঢুকলাম তখন হঠাৎ করেই কেউ যেন আমার চোখ থেকে রঙ্গিন চশমাটা অত্যন্ত নির্দয় ভাবে খুলে নিল। আমার সাধের বাউন্ডুলে জীবনের সেখানেই সমাপ্তি ঘটলো। শুধু তাই না, আমার নির্দোষ মনের গহীনে লুকানো একান্ত যে স্বপ্নগুলো এতদিন পর্যন্ত আমাকে পথ চলতে দিক নির্দেশনা দিয়েছিল – ধীরে ধীরে সেই স্বপ্নের ঘুড়িগুলো কেটে যেতে লাগলো এক এক করে। জীবনটা একটা জেলখানা বলে মনে হতে লাগলো এক সময় আর সেই কয়েদ খানায় আমিই একমাত্র আসামী - বিনা দোষে জেল খাটছি।

কাঠখোট্টা একাউন্ট্যান্ট ফার্নান্দেজ সাহেবের জীবনটাও এভাবেই কাটছিল। দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর চাকরি করার পর তিনি আগামী মাস থেকে রিটায়ারমেন্টে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সব কিছু ঠিকঠাক। ব্যাংক ম্যানেজার শ্রফ সাহেব একদিন তাঁর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন অফিসে নতুন জয়েন করা আসলাম শেখের সাথে। শেখ তাঁর রিটায়ারমেন্টের পর ওই একই পদে দায়িত্ব পালন করবে। সবকিছু চলছিল স্বাভাবিক ভাবেই।

আটপৌরে রুটিন মাফিক জীবনে অভ্যস্ত ফার্নান্ডেজ সাহেবের সাথে হঠাৎ করেই অদ্ভুত একটা ঘটনা ঘটে যায়। স্বামীকে খুশী করার জন্য ইলার রান্না করা স্পেশাল মেন্যুর লাঞ্চ বক্স ভুলক্রমে চলে যায় ফার্নান্ডেস সাহেবের কাছে।

এরপর প্রতিমিনিটে The Lunchbox এর গল্প আপনাকে নিয়ে যাবে মানব মনের সেইসব সূক্ষ্ম অনুভূতির কাছে যার আমেজ আপনার মনকে বিমোহিত করে রাখবে সিনেমার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত, এমনকি সিনেমা শেষ হওয়ার পরও।

সিনেমার গল্পটা এর চাইতে আর বেশী বলতে ইচ্ছা করছে না। কোন এক ছুটির দিন দুপুরে দেখেছিলাম। অদ্ভুত সুন্দর গল্পের এই সিনেমাটা আমার মনে একটা চমৎকার অনুভুতিতে ভরে দিয়েছিল। আমার মনে হয় সবারই ভালো লাগবে এটা। তাই হাতে যদি সময় থাকে তাহলে আর সময় নষ্ট না করে দেখে ফেলুন The Lunchbox। অনেকেই হয়ত আগে দেখেছেন। আমার মনে হয় আবার দেখতে খারাপ লাগবে না সিনেমাটা।



The Lunchbox সিনেমায় ফার্নান্ডেজের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সাবলীল অভিনেতা ইরফান খান বলতেই হবে, চমৎকার অভিনয় করেছেন ভদ্রলোক। আসলাম শেখের চরিত্রে ছিলেন নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি আমার দেখা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকির প্রথম সিনেমার নাম “Kahaani”। সেখানে তাঁর অভিনয় দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এবারো হলাম। আরো জানতে পারলাম এই সিনেমায় অসাধারণ অভিনয়ের জন্য তিনি Filmfare Award পেয়েছেন “সেরা পার্শ্ব অভিনেতা” হিসেবে। ইলা চরিত্রে রূপদান করেছেন নিমরাত কউর আমার কাছে তাঁর অভিনয়ও অসাধারণ লেগেছে। মন ছুঁয়ে গেছে তাঁর প্রতিটি এক্সপ্রেশন।

চলচ্চিত্রটি সর্বমোট ১১ টি পুরস্কার জিতে নিয়েছে। আর ৯ টি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। যার মধ্য সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে এটি জিতে নিয়েছে সম্মান জনক Filmfare Award.

সিনেমাটির লেখক-পরিচালক ছিলেন রিতেশ বাটরা (Ritesh Batra )। চমৎকার কাজ করেছেন বলাই বাহুল্য। আমার অবশ্য পিত্তি জ্বলে গেল। কারণ সিনেমাটা দেখার পর আমার মনে হয়েছে - আমরা কেন এরকম সহজ সরল অথচ দুর্দান্ত স্ক্রিপ্টের সিনেমা বানাতে পারি না?

উইকি থেকে রিতেশ বাটরার সম্পর্কে যা জানতে পারলাম সেটা তুলে ধরলাম –



রিতেশ বাটরা মুম্বাইতে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে ফিল্ম নিয়ে পড়ালেখা শুরু করেছিলেন, শেষ করতে পারেন নি। ইকোনমিক্সের মতো খটোমটো সাবজেক্টে আন্ডারগ্রেড করে তিন বছর কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে চাকরিও করেছেন। কিন্তু তারপর আবার ফিরে গেছেন ফিল্ম লাইনে। The Lunchbox পরিচালনার আগেও তিনি Care regular Cairo, Gareeb Newaz’s Taxi আর The morning Rituals নামে তিনটি শরত ফিল্ম পরিচালনা করেছেন। তবে The Lunchbox –ই তাঁর এখন পর্যন্ত সেরা কাজ। মধ্যবিত্ত জীবনের সাধারণ গল্পগুলোই তাঁর সিনেমায় ফিটে উঠেছে অসাধারণ স্বকীয়তায়। এর জন্য অবশ্য তিনি যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মোটা দাগের ঘটনা আর চিরাচরিত জীবনযাপনের আড়ালে যে অসাধারণত্ব আছে – সেটা তিনি সারথকভাবেই তাঁর সিনেমায় তুলে ধরতে পেরেছেন। আর তাঁর সে কাজে তাঁকে নিশ্চিতভাবে সহায়তা করেছে সিনেমার প্রতি তাঁর অগাধ আর অকৃত্তিম ভালবাসা। And none the less – dedication.

আমার দেশেও এমন জীবনমুখী চলচ্চিত্র তৈরি হোক। আমাদের দেশের চলচ্চিত্রও ছড়িয়ে পরুক দেশে দেশে – সেই আশায় রইলাম।



আর জানতেঃ



IMDB



[yt|https://www.youtube.com/watch?v=Qdn6nVJHyfM





আমার অন্যান্য রিভিউগুলোঃ



১) মুভি রিভিউঃ “π”

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ১:৪৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: মুভিটা দেখি নাই! দেখি আজকে নামাইয়া ফেলব। আপনার রিভিউ ভালোই লাগছে।

০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ১:৫৭

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: সিনেমার তুলনায় আমার রিভিউ কিছুই হয় নাই। তারপরও যখন ভালো বললেন তখন অত্যান্ত বিনয়ের সাথে ধন্যবাদ জানাই। সিনেমাটা দেখলেই বুঝবেন। অসাধারন সিনেমা। আগামী শুক্রবারে আবার দেখবো।

২| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

আমি ভাল আছি বলেছেন: দেখেছি। খুব ভাল লেগেছে। সমাপ্তি টা ভাল লাগে নি। কি দোষ হত বেচারীর সঙ্গে উনার দেখাটা করিয়ে দিলে!!!!

০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ২:১৫

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: আমার কাছে তো শেষের অংশটুকু সবচেয়ে বেশী ভালো লেগেছে। ভেবে দেখেন, শেষটায় কিন্তু শেষ হইয়াও হইল না শেষ - একটা আশা রয়ে গেল যে হয়তো সব কিছু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। হয়তো নতুন করে, নতুন কোন গল্প শুরু হবে নতুন কোন জায়গায়.।.।

৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৮

লিন্‌কিন পার্ক বলেছেন:
লাঞ্চবক্স মুভিটা বেশ ভাল লাগছে ।

০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: মন্ত্যবের জন্য ধন্যবাদ। মুভিটা আসলেই ভালো।

৪| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ বিকাল ৩:০০

সোহানী বলেছেন: ভাইরে মুভির রিভিউ দেয়া মানে মুভিটা না দেখা পর্যন্ত শান্তি মিলে না...... কি আর করা.... দেখতেই হবে ... কি বলেন!!!

০৪ ঠা মে, ২০১৪ বিকাল ৩:২৩

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: আপনি যদি সিনেমা ভক্ত হন তাহলে এটা অবশ্যই দেখা উচিৎ। দেখে তারপর আমাকে একবার ধন্যবাদ দিয়ে যায়েন।

৫| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ বিকাল ৩:০০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: দেখি নাই তবে ডাউনলোড করে দেখে নিব।

০৪ ঠা মে, ২০১৪ বিকাল ৩:২৫

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: দেখে নিয়েন। রিভিউ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৬| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৮:৩৮

মামুন রশিদ বলেছেন: আপনি তো দেখি ভালোই মুভির পোকা !

০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৯

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: হা হা হা। আর তো কিছু পারিনা.
দেখছেন সিনেমাটা?

৭| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৮:৫২

তাসজিদ বলেছেন: দেখতে হবে।

লেখায় +++++++++++++++++

০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১১:৫০

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: সিনেমাটাও +++++

৮| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১০:৩০

এহসান সাবির বলেছেন: দেখা যেতে পারে।

০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৩

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: কেবল একশন মুভির ফ্যান না হোলে দেখে নিতে পারেন।

৯| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১১:২০

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: দেখতে হবে । শুভেচ্ছা ভাই ।

০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: দেখে ফেলেন। শুভেচছা নিলাম! ধন্যবাদ ভাই!

১০| ০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:২৬

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
অনেকদিন ধরে ভাবতেছি দেখবো।
কাল দেখেই ফেলব।

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৪০

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: হাতের কাছে থাকলে দেখে ফেলেন। ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ।

১১| ০৫ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:০৫

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
নাভিদ,
রিভিউ চমৎকার হয়েছে। হ্যাঁ! নিঃসন্দেহে একটি ভালো মুভি উপহার দিয়েছেন রিতেশ বাটরা। স্রোতের বিপরীতে ভিন্নধর্মী হিন্দি সিনেমা এবং নির্মাণশৈলীও সাধুবাদ যোগ্য !

ধন্যবাদ আপনাকে।

০৫ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৩

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও!

১২| ১৪ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৫:১২

চিশতী শুভ বলেছেন: চমৎকার রিভিউ

১৪ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৪

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: ধন্যবাদ চিশতী শুভ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.