নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছোট থাকতে পছনদো করি

নাঈম ফয়সাল নয়ন

সত্য কে সত্য আর মিথ্যা কে মিথ্যা বলার চেষ্টা করি

নাঈম ফয়সাল নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মর্মকথা

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৬

জয়া বেশ রূপবতী ও গুনবতি একটি মেয়ে। S.S.C ও H.S.C তে জোড়া এ প্লাস পেয়ে দেশের সুনাম ধন্য কোন এক ইউনিভার্সিটি তে সবেমাত্র মাত্র ভর্তি হলো। এখন শুধু বসে বসে অপেক্ষা ... কবে তার সপ্ন পুরুষের আগমন ঘটবে!.. তার রস পুকুরে ডুব দেয়ার জন্য পারমিশন চাইবে। তার চাহিদা বেশি কিছু নয়। উচুঁ লম্বা, সুদর্শন হ্যান্ডসাম আর অঢেল টাকা পয়সা থাকতে হবে জনাবের! যেহেতু সেই মেট্রিক কাল থেকেই তার রূপে মুগ্ধ হয়ে একে একে বিয়ের প্রস্তাব গুলো পায়ে ঠেলেছে, সেহেতু এটুকু আবদার, সে তো তার ন্যায্য চাহিদা! আর তা ছাড়া আগের থেকেও এখন আরো বেশি সয়ং সম্পুর্না সে।
ঝলমলে চুলে মায়াবী মুখ টা নিয়ে যখন সে ক্যম্পাসে ঢোকে, চারপাশে না তাকিয়েও অন্যদের চোখ গুলো যে তাকে কেন্দ্র করেই ছানাবড়া তা বেশ বুছতে পারে। কিন্তু কবে এমন কাউকে দেখে তার নিজের চোখটা তৃপ্ত হবে?
বেশিদিন অপেক্ষা করতে হলোনা। তার সপ্ন পুরুষের নাম আবীর রায়হান। একই ইউনিভার্সিটির ফিজিক্সের শেষ বর্ষের ছাত্র আবীর দেশের ধনী শিল্পপতির একমাত্র ছেলে। তার প্রিয় চারটি রংয়ের চারটি গাড়ির একেকটি তে চরে একেক দিন ক্যাম্পাসে আসে সে। আর দশজন ধনীর দুলালের মত আবীর নয়। অযথা কারো সাথে আড্ডা দেয়া, মেয়েদের পিছনে ঘোরা, কোনো নেশা ভান করা বা কোন প্রকার উশৃঙ্খলতা নেই তার ভিতরে। নিতান্তই আপন ব্যক্তিত্বে বিদ্যমান সে। দেখতে সুন্দর, উচুঁ লম্বা, ঠিক যেন জয়ার সপ্নের রাজকুমার।
আবীর কে দেখে এবং ওর সম্পর্কে জেনে বেহাল দশা জয়ার। দিন রাত আবীর কে নিয়ে ভাবতে শুরু করে দিল। কিভাবে আবীর কে তার মনের কথা বোঝাবে ভেবে কুল পায়না। তাই বলে তো আর সরাসরি হ্যংলার মত তার দারস্থ হতে পারেনা! রূপে গুনে সেও তো কম নয়! তাহলে কি করবে? অপেক্ষা করবে? কবে আবীর তার সামনে হাঁটু গেড়ে প্রোপোজ করবে!! কিন্তু তার আগেই যদি অন্য কেউ আবীরের গলায় ঝুলে পরে? এমন তো নয় যে পুরো ক্যাম্পাসে সে একা মাত্র সুন্দরী!! না না ... আর ভাবতে পারলো না জয়া। যে ভাবেই হোক আবীর কে তার চাই চাই!!
১ম দিন -
আজ আবীরের ক্লাস আছে। জয়া বেশ সাজগোজ করে গেল ক্যাম্পাসে। উদ্যেশ্য আবীরের সাথে কথা বলা।
আবীর নীল রংয়ের গাড়ি থেকে নামল। গায়ে নীল রংয়ের সার্ট, নীল সানগ্লাস!! কি কালার কম্বিনেশন!! মুগ্ধ হয়ে গেল জয়া। এই না হলে তার সপ্ন পুরুষ!! কিন্তু একি!! আবীর যে তার দিকেই এগিয়ে আসছে!! জয়া মন্ত্র মুগ্ধের মত তাকিয়ে দেখছে। আবীর এসে থামল জয়ার সামনে।
"এক্সকিউজ মি! আমি কি আপনাকে একটু বিরক্ত করতে পারি?"
জয়া নিজের কান কেও বিশ্বাস করতে পারলো না ...আবীর নিজে এসেছে তার সাথে কথা বলছে ...!!! কিন্তু সে কি বলবে? বা কি বলা উচিত বুজতে না পেরেই কাচুমাচু করে বলল -
"জ্বী বলুন"
"আমি তো বলিনি আপনাকে কিছু বলব! আমি আপনাকে একটু বিরক্ত করতে চাই" বলে মিচমিচ করে হাসছে আবীর! উফ ওর হাসিটাও এত কিউট!! জয়া আমতা আমতা করে বলল -
"সরি, আমি ঠিক বুঝলাম না!!"
"ওকে বুজতে হবেনা, আপনি কষ্ট করে আপনার নাম টা বলুন"
জয়া নিজের নাম মনে করতে পারলো না!! মনে হচ্ছে কোন ঘোরের ভিতরে আছে সে!! তার পরেও কষ্টমষ্ট করে বলল -
"জয়া!! নিলুফার ইয়াসমিন জয়া"
আবীর আগের থেকেও মিষ্টি হাসি দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিল। এই হাসির কোন অর্থ খুজে পেলনা সে। আবীর চলে যাওয়ার পরেই সম্মোহন ভাংলো তার। দ্রুত ব্যাগ থেকে আয়না বের করে দেখলো নিজেকে!! সব ঠিকঠাক আছে তো!! নিজেকে দেখে নিজেরই ঈর্ষা হলো জয়ার! এমন সুন্দরীর প্রেমে যে কেউ পরতে বাধ্য!! একবুক শান্তি ও তৃপ্তি নিয়ে বাসায় ফিরলো জয়া। ফোনের ডাটা অন করতেই নোটিফিকেশন এলো - "you have a new friend request from Abir Raihan"!!!
হা করে তাকিয়ে আছে নোটিফিকেশনটার দিকে !! আনন্দে দশ লাফ দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। তার জীবনের শ্রেষ্ঠ নোটিফিকেশন এটাই!! এবার বুজতে পারলো দুষ্টুটা কেন তার নাম জানতে চাইছিল!! কাঁপাকাঁপা হাতে Accept করলো সে .... ব্যাস ....
এর পরের ঘটনা গুলো আর দশটা প্রেম কাহিনীর থেকে খুব যে আলাদা তা নয়! তাই আমরা ওই ঘটনার ঠিক সাত দিন পরের দৃশ্যে যেতে চাই।--
মাত্র সাতদিনের প্রেম। কিন্তু এর ভিতরেও তারা একে অপরের খুব কাছাকাছি এসে যায়। একদিন আবীর জয়া কে নিয়ে গেলো তার বাড়িতে। ব্যাবসার কাজে বাবা লন্ডানে গেছেন। সঙ্গে মা কে নিয়ে যাওয়াই পুরো রাজ প্রাসাদের মত বাড়িটি ফাকা! জয়া আবীরের প্রেমে এতটাই অন্ধ যে আবীর কে ছাড়া দুনিয়ার আর কিচ্ছু বোঝেনা সে। আর এই সাত দিনে লেখাপড়া শিকেই উঠেছে তা বলাই বাহুল্য!
আবীর কফি বানাচ্ছে, আর জয়া মুগ্ধ হয়ে দেখছে ওর কফি বানানো!! কারো কফি বানানোর ভিতরেও এমন আর্ট থাকতে পারে!! আবীর কফি বানাতে বানাতে মশকারা করে বলল -
"হাম তুম এক কামরে মে বান্ধ হো ..."
জয়া আহ্লাদ জরিত কন্ঠে বলল -
"যাও দুষ্টু কোথাকার!"
"কেন? দুষ্টুমির কি হলো? আমি আর তুমি আজ বিছানায় আসল দুষ্টুমি করব!"
একটা রহস্যের সুরে বলল আবীর। জয়া যেন খুব মজা পেল কথাটা শুনে এমন ভঙ্গিতে বলল -
"তুমিই তো আমার সব!! তুমি দুষ্টামি করবা নাতো কে করবে শুনি?"
দুই কাপ কফি নিয়ে তারা আবীরের বেড রুমে গেলো। অবাক হয়ে দেখে জয়া কত দামী দামী আসবাবপত্র! এত সুন্দর সাজানো ছিমছাম! একদিন এই বাড়ির বউ হবে সে ..ভাবতেই কেমন জানি লাগে! আবীর পিছন থেকে জয়াকে জড়িয়ে ধরলো!! অদ্ভুত এক শিহরনে হাত থেকে কাপ টা পরে গেল জয়ার!! এক ঝটকায় জয়াকে বিছানায় ফেলে দিল আবীর!! নরম বিছানায় দুলে উঠলো সে। জয়ার চোখ বন্ধ! ঘনঘন শ্বাস ফেলছে! নিজেকে সপে দিয়েছে সে আবীরের কাছে!! কেনইবা দেবে না! এমন ছেলেকে না করার সাদ্ধ্যি কার আছে? ফোটা ফোটা ঘাম কপালে , লজ্জা জড়িত মুখ নিয়ে, চোখ দুটো বন্ধ করে অপেক্ষা করছে আবীরের আগমনের ....!!!
দুই মিনিট হয়ে গেল ...কোন সারা নেই!! একই ভাবে বিছানায় পরে আছে জয়া!!... আরো দুই মিনিট হয়ে গেল!! কিন্তু কোথায় আবীর? পিটপিট করে চোখের পাতা মেলল সে ... কেউ নেই ঘরে!! এক ঝটকায় উঠে পরল জয়া .. নিজেকে সংযত করে এঘর সেঘর খুজতে লাগলো। কোথাও নেই আবীর!! এসময় দেখলো কেউ একজন প্রধান দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে! দ্রুতই দরজা খুলল জয়া ...
"ম্যাডাম এই কাগজ টা ছোট সাহেব আপনাকে দিতে কইলো" খাকি পোশাক পরা লোকটা একটা পিন দিয়ে আটকানো কাগজ জয়ার হাতে দিয়ে বলল। সে এই বাড়ির দারোয়ান। বড়িতে ঢোকার সময় দেখেছিল জয়া। জয়া অসম্ভব রকমের বিস্ময় নিয়ে খুলল চিঠিটা -
""জয়া, ছোট বেলা থেকেই একটা সপ্ন নিয়ে আমি বড় হই। সেটা হলো জীবনে একজন চরিত্রবান মেয়ে কে আমার জীবন সঙ্গীনি করার। সে সুন্দরী হতে হবে এমন কোন মানে নেই ... কিন্তু ভালো চরিত্র হতে হবে। আমি বলছিনা তুমি দুশচরিত্র!! কিন্তু যে মেয়ে বিয়ের আগেই মাত্র সাত দিনের সম্পর্কে নিজেকে সপে দিতে পারে তাকে দুনিয়ার আর সবাই চরিত্রবান বললেও, আমি পারব না!! যদি কোন দোষ দাও আমি মাথা পেতে নেব ... কিন্তু তার বিনিময়ে আমাকে ক্ষমা কোরো।
.........আবীর""
[মর্মকথা পাঠকের হাতে]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:



গল্পটি লিখতে ভাবার দরকার হয়নি, মনে হয়!

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮

নাঈম ফয়সাল নয়ন বলেছেন: ভাই পাতি লেখক রা ভাবে কম লেখে বেশি। আমি নিতান্তই তাদের দলের একজন। আপনার মত গুনি ও মহান লেখকের চরণধূলি তে আমার পোস্ট অলংকৃত।

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৮

কালীদাস বলেছেন: গল্পের ম্যাসেজটা ইন্টারেস্টিং, তবে মনে হল খানিকটা তাড়াহুড়ো করে লেখা। বালিকার ফিলিংসগুলো দুর্বলভাবে এসেছে এবং শেষের দিকে খানিকটা দ্রুত ফিনিশিং টানার ঝোঁক চোখে পড়েছে মনে হল।

ব্যাপার না, চেষ্টা চালিয়ে যান :)

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৯

নাঈম ফয়সাল নয়ন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। এভাবে আমার ভুল গুলো ধরিয়ে দিলে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। টুকটাক চেষ্টা করছি লেখার আপনার সহযোগিতা সবসময় কামনা করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.