নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের রং

আসাদ ইসলাম নয়ন

লেখক ও পরিচালক ।

আসাদ ইসলাম নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা

৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:০৬

রিতু বদ্ধ ঘরের ভেতরে বসে আছে ।বাহির থেকে বোঝা যাচ্ছে সে ভেতরে কার সাথে যেনো কথা বলছে ।ব্যাপারটা এক আগেও নবীন খেয়াল করেছে ।ইদানিং রিতু প্রায় এই ঘরে থাকে ।ভেতরে কি করে তা নবীন জানে না ।কয়েক বার জানার চেষ্টা করেছে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি ।তবে কাজের মেয়ের কাছে থেকে কিছু শুনেছে ।যেমন রিতু এই খানে বাচ্চাদের খেলার বেশ কিছু জিনিস এনে জড় করেছে ।কাজের মেয়ের কথা অনুসারে,রিতু এই খানে একটা বাচ্চার সাথে খেলা করে ।কথা গুলো শুনে নবীন এর ভালো লাগেনি ।ওদের বিয়ের আজ প্রায় ৫ বছর হলো তাদের কোনো সন্তান হয়নি ।ডাঃ এর কথা মতে হবার কোনো সম্ভাবনাও নেই ।নবীন ব্যাপারটা সবার কাছে চেপে গিয়েছিল ।তাতে লাভ হয়নি ।সবাই ঠিকই জেনে গেছে ।তার পর যা হয়,যার সাথে যখনি দেখা হয় এক গাদা সান্তনা দেয় ।এক পর্যায়ে ব্যাপারটা রিতু পর্যন্ত গড়াল ।তখনি নবীন সিদ্ধান্ত নিল সে এলাকা পাল্টাবে । সেই মত আজ এক মাস হলো এই বাড়িতে উঠেছে নবীন ।

প্রথম দিকে সব ভালোই ছিলো ।হঠাৎ রিতু একদিন এই রুমের চাবি চাইলো ।রুমটা তালা লাগানই ছিলো ।বাড়ির মালিক শুধু একবার বলেছিলো ।ঐ রুমে তার কিছু জিনিস রাখা আছে ।রুমটা যেনো খোলা না হয় ।নবীন তখন তাকে বলেছিলো ,দামি কিছু থাকলে যেনো নিয়ে যায় ।মালিক তখন তাকে বলেছিল,জিনিস গুলো দামি না তবে তার শখের ।এর পর আর নবীন কথা বাড়ায় নি । রিতুর চাবি চাওয়াটা বাড়াবাড়ির দিকে যাচ্ছে দেখে নবীন চাবি দিয়ে দিল । তার পর থেকে রিতু বেশির ভাগ সময় ঐ রুমে কাটাতে লাগলো ।প্রথম দিকে কোনো সমস্য না হলেও ব্যাপারটা আস্তে আস্তে বাড়াবাড়ির দিকে চলে যায় ।একদিন নবীন বাড়িতে এসে দেখলো রিতু কাঁদছে ।কারণ জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেয়নি রিতু ।রাতে ঘুমতে যাবার সময় নবীন দেখলো ,বিছানায় রিতু নেই । খোঁজ নিয়ে দেখলো ঐ রুমে আছে রিতু ।নবীন কয়েকবার রুমের দড়জায় বাড়ি দিলো দেখলো ভেতর থেকে রিতু কোনো উত্তর দিচ্ছে না ,তবে রিতুর কান্নার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে । নবীনের সরা রাত ঘুম হলো না ।সকালে নাস্তার সময় নবীন রিতুর কাছে ব্যাপারটা জানতে চাইলো ।রিতু যা বলল তাতে নবীন হতভম্ব হয়ে গেলো । নবীন যে গতোকাল তার এক মেয়ে কলিগ কে নিয়ে দুপুরে বাহিরে খেতে গিয়েছিলো তা রিতু জানে । নবীন যখন জানতে চাইলো কে বলেছে ? তখন ২য় বারের মতো অবাক হলো রিতু বলল তাদের সন্তান ।এর পর আর নবীন কিছু বলল না ।বিকেলে অফিস থেকে ফিরে প্রায় জোর করেই রিতুকে ডাঃ এর কাছে নেয়া হলো এবং সেই ঘরের তালা ভেঙ্গে সব জিনিস বাহিরে ফেলে দিতে বলল কাজের মেয়েকে ।

ডাঃ নিশ্চিত করলো রিতু গর্ভবতী ।নবীনকে এমন কোনো কাজ করতে নিষেধ করলো যাতে রিতু মানুষিক ভাবে আঘাত পেতে পারে ।আসার পথেই নবীন ঘর পরিস্কার এর ব্যাপারটা তুলতে চাইলো ।কিন্তু কেনো যেনো রিতু এড়িয়ে গেলো ।নবীন আরও অবাক হলো যখন বাড়িতে ফিরে রিতু এক বারও ঐ রুমে গেলো না ।রাতে শোবার সময় নবীন রুম পরিস্কারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করায় রিতু হাসলো এবং নবীনের বুকে মাথা রেখে বলল,ঐ রুমে যে ছিল সে এখন আমার পেটে ।

এর সপ্তাহ খানেক পরেই নবীন বাড়িটি বদলে ফেলল ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.