নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হেথায় বলিও না সত্য, উন্মোচনে রহস্য, করিও গোপন, যা আছে মম অভ্যন্তরে, যাপিত জীবন, কঠিন ভীষণ, পদে পদে তাহার শত আঘাত, ক্রন্দনে খুঁজিয়া নিও প্রান, তাহার দিব্য চোখে, সব যে দুঃখ মহাসাগর সমান......।।

কিউপিড রিটার্নস

আমি কে খুঁজে ফিরি এখনও আমাকে। আমি কে, জানি এটুকু আমি তার যাকে খুঁজি আমি বারবার, শহরের যান্ত্রিকতায় এপার ওপার, ভালোবাসার।

কিউপিড রিটার্নস › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোপার্নিকাস

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৬

অনেকদিন পর আপনাদের মাঝে এলাম, অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে আবারো, আজ আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো, পৃথিবীকেন্দ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের সকল থিওরি পরিবর্তন করে সূর্যকেন্দ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রবক্তা, নিকোলাস কোপার্নিকাস (Nicolaus Copernicus) এর সাথে।

তখন টলেমী'র(Ptolemi) পৃথিবীকেন্দ্রিক থিওরি চরমে, পৃথিবী স্থির, সূর্য তার চারদিকে ঘুরছে, যখন বাল্টিক সাগরের ভিস্টুল নদীর তীরে পোল্যান্ডের থর্ন(Torun) শহরে, তামা ব্যবসায়ী পরিবারে ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৪৭৩ সালে কোপার্নিকাসের জন্ম নেন। পারিবারিক নাম "নিকোলাস কোপার্নিক" ,যার অর্থ বিনয়ী, যা তার চরিত্রে আজীবন ফুটে ছিল ।

পিতার মৃত্যুর পর কোপার্নিকাসের শৈশব কাটে তার মামা, লুকাস ভাৎসেনরোডের কাছে। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে নিকোলাস ১৮বছর বয়সে ভর্তি হোন, "ক্র্যাকাও" ইউনিভার্সিটিতে। সেকালের বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ব্রডজেৎস্কি এখানের শিক্ষক তখন,আর্টসের ছাত্র হয়েও পড়ে রইলেন, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে। মামা বলতেন, "আকাশে না তাকিয়ে মাটির দিকে তাকাও"। কিশোর কোপার্নিকাসকে এই কথা খুব আঘাত করত, মামার ইচ্ছায় ডাক্তারিতেও পাস দিলেন। ২৩ বছর বয়সে ভর্তি হলেন, ইতালির "বেলেগনা ইউনিভার্সিটিতে"। বিষয় ঐ জ্যোতির্বিজ্ঞান। শিখলেন গ্রীক-লাতিন। টলেমীর তত্ত্বগুলো তার মনে সন্দেহ জাগাতে থাকল। তার মত আরো অনেকের, চার্লস ৫ম'এর উপদেষ্টা ওরিসিমি,পন্ডিত কুপার নিকলাস, এমনকি দ্য ভিঞ্চিও মানতে চাননি, হেলিওসেন্ট্রিক মহাবিশ্বকে। দ্বিধাগ্রস্থ কোপার্নিকাস চাকরি ছেড়ে মামার কাছে ফ্রউয়েনবার্গ চলে আসেন যাজকের কাজ নিয়ে। সাথে ডাক্তারি-মানবসেবা, রাজনীতিতে যোগ দেন, অর্থনীতির উপর কাজ করেন, মুদ্রামান কমানো, একক মুদ্রার থিওরিও তার দেয়া। পোপের অনুরোধে বানালেন আধুনিক ক্যালেন্ডার। ১৫০৫ আর ১৫১১সালের দুটি সূর্যগ্রহণের পর বুঝে ফেললেন তার চিন্তার সত্যতা।

এখানেই বাধ সাধল, বিজ্ঞান আর ধর্ম, অনেকে বাইবেলের ব্যাখ্যা দিয়ে কোপার্নিকাসকে নির্বোধ পাগল ঠাউরালেন, চুপ করে গেলেন কোপার্নিকাস, জানেন ভালো করেই, চার্চের বিরুদ্ধে বলা আর মৃত্যু ডেকে আনা এক। লিখে ফেললেন তার অমর বইঃ দ্য রেভোল্যুশনিবাস অরবিয়াম সেলেস্টিয়াম (De revolutionibus orbium coelestium) দুটো থিওরিঃ ১। পৃথিবী নিজ অক্ষের চারদিকে ২। সূর্য কেন্দ্রে এবং পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। ছাপালেন না সেই বই, লুকিয়ে রাখলেন ১৫৪১ পর্যন্ত, জীবন সায়াহ্নে এসে পরিচয় হল "রেটিকাস"নামের তরুন জার্মানের সাথে, রেটিকাস "কোপার্নিকাসবাদে" বিশ্বাসী ছিলেন, বই ছাপাতে অনুরোধ করলেন, ছাপা হল বই, উৎসর্গ কাকে জানেন??-- পোপ ৩য় পলকে।

নুরেমবার্গের এক মুদ্রাকার পরিবর্তন করলেন পান্ডুলিপি, বাদ গেল, অ্যারিস্টারকাসের নাম, যার মাথায়ই এসেছিল, গতিশীল পৃথিবীর থিওরি। বহুদিন সমালোচিত হয়েছিলেন, কোপার্নিকাস, কেন তিনি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেননি।যখন পাওয়া গেল মূলকপি, ভুল ভাঙল।

১৫৪৩এ প্রকাশিত হল বই, কোপার্নিকাস তখন মৃত্যুসজ্জায়, হাতে বইটা নিয়ে নাড়াচাড়া করলেন, ২৪মে কোপার্নিকাস বইটি হাতে নিয়েই মৃত্যুবরন করলেন। তাকে সমাধিস্থ করা হয়, Frombork ক্যাথেড্রালে। ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর ক্যাথেড্রাল ফ্লোর থেকে প্রাপ্ত হাড়এর সাথে কোপার্নিকাসের একটি নিজস্ব বইয়ের ভেতর থেকে পাওয়া চুলের ডিএনএ মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে,ইহাই কোপার্নিকাসের দেহাবশেষ, যিনি বিজ্ঞানীদের মাঝে সর্বপ্রথম "হেলিওসেন্ট্রিক ইউনিভার্স থিওরি" দিয়েছিলেন, যার হাত ধরেই গ্যালিলিও, কেপলার, নিউটন, আইনস্টাইন জ্যোতিবিজ্ঞানকে মহিমান্বিত করেছেন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০০

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কোপার্নিকাস সম্পর্কে যদিও জানি, তবুও অনেকে হয়তো জানেন না। পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ ।

ভালো থাকবেন :)

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৮

কিউপিড রিটার্নস বলেছেন: ধন্যবাদ, সামনে, টাইকো ব্রাহে, এরিস্টারকাস,গ্যালিলিও সবাই আসবে।

২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৩১

হাসান মাহবুব বলেছেন: সুলিখিত ইতিহাস। একটানে পড়লাম।

৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০০

অগ্নি সারথি বলেছেন: ভাল লাগা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.