নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'\'...সব যাত্রা -থিয়েটারের মজলিসেও সেই কাছারির ব্যবস্থা। \'ভদ্রলোকদের\' বসিবার ব্যবস্থা। মুসলমানদের ব্যবস্থা দাঁড়াইয়া দেখার।\'\'

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৭

সাম্প্রদায়িক চেতনা!

''জমিদাররা হিন্দু-মুসলিম-নির্বিশেষে সব প্রজার কাছ থনেই কালীপূজার মাথট আদায় করিতেন। এটা খাজনার সাথে আদায় হইত। খাজনার মতই বাধ্যতামূলক ছিল। না দিলে খাজনা নেওয়া হইত না। ফরাযী পরিবারের ছেলে হিসাবে আমি গোঁড়া মুসলমান ছিলাম। মূর্তি পূজার চাঁদা দেওয়া শেরেকী গোনা। এটা মুরুব্বিদের কাছেই- শেখা মসলা। কিন্তু মুরুব্বিরা নিজেরাই সেই শেরেকী গোনা করেন কেন? এ প্রশ্নের জবাবে দাদাজী , বাপজী ও চাচাজী তাঁরা বলিতেনঃ না দিয়া উপায় নাই। এটা রাজার জুলুম। রাজার জুলুম নীরবে সহ্য করা এবং গোপনে আল্লার কাছে মাফ চাওয়া ছাড়া চারা নাই। এ ব্যাপারে মুরুব্বিরা হাদিস-কোরআনের বরাত দিতেন।

কিন্তু আমার মন মানিত না। শিশু-সুলভ বেপরোয়া সাহস দেখাইয়া হম্বি-তম্বি করিতাম। মুরুব্বিরা 'চুপচুপ' করিয়া ডাইনে-বাঁয়ে নযর ফিরাইতেন। জমিদারের লোকেরা শুনিয়া ফেলির না ত!

কালীপূজা উপলক্ষ্যে জমিদার কাছারিতে বিপুল ধূমধাম হইত। দেশ-বিখ্যাত যাত্রাপার্টিরা সাতদিন ধরিয়া যাত্রাগান শুনাইয়া দেশ মাথায় করিয়া রাখিত। হাজার হাজার ছেলে -বুড়া সারা রাত জাগিয়া সে গান-বাজনা-অভিনয় দেখিত। সারাদিন মাঠে-ময়দানে খেতে -খামারে এই সব নাটকের ভীম-অর্জনের বাখানি হইত। দর্শক শ্রোতারা প্রায় সবাই মুসলমান। কারণ এ অঞ্চলটাই মুসলমান প্রধান। আমাদের পাড়া-পড়শী আত্মীয়-স্বজন সবাই সে তামাশায় শামিল হইতেন। শুধু আমাদের বাড়ির কেউ আসিতেন না। আমার শিশুমন ঐ সব তামাশা দেখিতে উসখুস করিত নিশ্চয়। পাঠশালার বন্ধুদের পাল্লায় পড়িয়া চলিয়াও যাইতাম তার কোন-কোনটায়। কিন্তু বেশীক্ষণ থাকিতে পারিতাম না। বয়স্ক কারও সংগে দেখা হইলেই তাঁরা বলিয়া উঠিতেনঃ 'আরে, তুমি এখানে? তুমি যে ফরাযী বাড়ির লোক! তোমার এ সব দেখতে নাই।' শেষ পর্যন্ত আমি ঐ সব তামাশায় যাওয়া বন্ধ করিলাম। কিন্তু বোধহয় কারো নিষেধে ততটা নয় যতটা শিশু-মনের অপমান-বোধে। কারণ সে সব যাত্রা -থিয়েটারের মজলিসেও সেই কাছারির ব্যবস্থা। 'ভদ্রলোকদের' বসিবার ব্যবস্থা। মুসলমানদের ব্যবস্থা দাঁড়াইয়া দেখার।''

'আমার-দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর'- আবুল মনসুর আহমদ। পৃষ্ঠা ১৩ থেকে ১৪।।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:

" ফরাযী পরিবারের ছেলে হিসাবে আমি গোঁড়া মুসলমান ছিলাম। মূর্তি পূজার চাঁদা দেওয়া শেরেকী গোনা। এটা মুরুব্বিদের কাছেই- শেখা মসলা। "

-ভারতে যে মুর্তি পুজা হয়, সেটার জন্য চাঁদা দিলে গুণাহ হবে, সেই খবর ইসলাম প্রচারকেরা কি জানতেন?

অন্য ধর্মের লোকদের যেকোন উপায়ে সাহায্য করার দরকার।
মুসলমান জাতি বেঁচেছিল খৃস্টানদের সাহায্যের উপর। আমেরিকায় শতশত চার্চ ব্যবহৃত হয়েছে ঈদের নামাজের জন্য।

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৩

মোরতাজা বলেছেন: সেটি কি কেউ অস্বীকার করেছে? জানালে ভালো হয়।।

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

'আমার-দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর'- আবুল মনসুর আহমদ। পৃষ্ঠা ১৩ থেকে ১৪।।

-এসব বই লিলিপুটিনদের জন্য লেখা

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৩

মোরতাজা বলেছেন: এর চে বেটার কোন অপশন সাজেস্ট করতে পারেন। খাটো করার মধ্যে বিকৃত আনন্দ আছে। তবে এটা অভিজাত জ্ঞানীদের মানায় না!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.