নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সব সময় সুন্দর ■ www.facebook.com/niazuddin.sumon

নিয়াজ সুমন

ভালোলাগে ভ্রমন করতে। প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে ছবির ফ্রেমে নিজেকে আবদ্ধ করতে। অবসর কাটে সাহিত্যের আঙিনায় পদচারনা করে। ব্যস্তময় যান্ত্রিক জীবনের মাঝেও চেষ্টা করি নিজের অব্যক্ত কথামালা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে।

নিয়াজ সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

□ সাহিত্য ● গদ্য » চিঠির ভাঁজে ভাঁজে সেই সুখ স্মৃতি

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬


এক.
প্রিয়জনের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার আনন্দ সত্যি অসাধারন। মানব মনে এমন কিছু সুখের অনুভুতি আছে যা প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। চিঠি প্রাপ্তির সুখটা ও তেমন। সুখানুভুতির মুর্হূতটুকু প্রকাশ করা সম্ভব নয় যা শুধু উপলব্ধি করা যায়। খুব ছোট বেলাতে পেয়ে ছিলাম সেই সুখানুভুতি। তখন আমি ক্লাস সিক্স এ পড়ি। তখন মামাদের চিঠি আসতো বিদেশ থেকে। ডাক পিয়ন যখন বাড়িতে চিঠি নিয়ে আসতো খুব খুশি লাগতো। পিয়ন থেকে এক দৌড়ে চিঠি নিয়ে পেলতাম। আম্মু, নানুকে চিঠি পড়ে শুনাতাম। পড়া শেষে সুন্দর সুন্দর ডাকটিকিটের জন্য খামটা যত্ন করে রেখে দিতাম। সবচেয়ে মজার বিষয় হল চিঠি যখন রেজিষ্ট্রি করে আসতো বাড়িতে হৈ হুল্লুড় পড়ে যেত বিদেশ থেকে চেক এসেছে এই গুঞ্জনে। সবার ধারনা ছিল যে রেজিষ্ট্রি চিঠি মানে চিঠির মধ্যে অব্যশই চেক আছে কিন্তু অনেক সময় গুরুত্বপূর্ন চিঠিও প্রাপক তাড়াতাড়ি পাওয়ার জন্য রেজিষ্ট্রি করে পাঠানো হত। চিঠিতে পাঠানো চেক ব্যাংকে জমা দেওয়ার দশ-পনের দিন পর টাকা জমা হত। পিয়ন তাড়াতাড়ি রেজিষ্ট্রি চিঠি নিয়ে আসতো কেননা যথাসময়ে চিঠি দিতে পারলে সেই ভাল বকশিস পাবে।


দুই.
যখন ক্লাস নাইন এ পড়ি তখন মামা শিখিয়ে দিলেন কিভাবে চিঠি লিখতে হয়, চিঠির উত্তর দিতে হয়। সেই দিনের প্রথম চিঠি লেখার অনুভুতি কি যে আনন্দের ছিল তা বুঝানো সম্ভব নয় এই মুর্হূতে। এরপর থেকে মামাদের পাঠানো সব চিঠির উত্তর আমি লিখে পাঠাতাম। স্কুল জীবন শেষ করে যখন কলেজের আঙিনায় পা রাখলাম আধুনিকতার ছোয়াঁয় মোবাইল ফোনের স্পর্শে চিঠি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। ছোট মামা বিদেশ থেকে মোবাইল সেট পাঠালেন। এখন আর একমাস কিংবা এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয় না। মুর্হূতের মধ্যে যখন মন চাই কথা বলা যায় যা সত্যি অন্যরকম আধুনিকতার ছোঁয়া। সময়ের আর্বতে যতই আধুনিক হই না কেন, কিছুদিন পর থেকে চিঠি প্রাপ্তি আর প্রদানের মুর্হূতগুলো মিস করতে লাগলাম। দেখতে দেখতে মোবাইল ফোনের সাথে সখ্য হয়ে গেল। বাড়িতে এখন আর চিঠি নিয়ে ডাক পিযন আসে না। সাইকেলের টুং টাং শব্দে আর হৈ-হুল্লুড় হই না।


তিন.
কলেজের পাঠ চুকিয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম বিভিন্ন প্রত্রিকা আর ম্যাগাজিনে লেখকদের বাহারি স্বাধের লেখা পড়তে পড়তে এক সময় নিজের মাথায় লেখা-লেখির পোকা চেপে বসলো। তারপর থেকে প্রত্রিকা ও ম্যাগাজিনে লেখা পাঠানো শুরু করলাম। সম্পাদক নিরাশ করেনি বেশ কিছু লেখা ছাপা হল দৈনিক প্রত্রিকার পাতায় কালো কালিতে আমার নামে। হারিয়ে যাওয়া চিঠির মিষ্টি গন্ধ আবার অনুভব করতে লাগলাম। লেখা-লেখির সুবাধে কিছু পাঠক-লেখক বন্ধু পেয়ে গেলাম। তাদের উৎসাহ আর ভালোবাসায় লেখা-লেখির আগ্রহ বেড়ে গেল। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সাথে হৃদ্যতাপূর্ন সম্পর্ক সৃষ্টি হল। সাদা কাগজে কালো কালির ভালোবাসায় পূর্ন শব্দের গাথুনিতে নানার রঙে-সজ্জ্বায় চিঠি পোস্ট করলো আমার কাছে। পরম মমতায় আমিও তাদের সেই সব যত্নে লিখা চিঠি গুলোর উত্তর দিয়েছিলাম আনন্দের সহিত। সত্যি এই এক অপূর্ব ভালোলাগার অনুভুতি। যা শুধু উপলব্ধি করা যায়। সময়ের আবহে চলে গেল অনেকগুলি দিন কিন্তু ভালোবাসায় মাখা চিঠি গুলো এখনো রয়ে গেছে আমার কাছে সযতনে অমলিন। সুযোগ পেলে এখনো একবার চোখ বুলিয়ে দেখি আর ভালোলাগার আবেশে নিজেকে জড়িয়ে নিই নতুন করে আবার...





ছবিঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.