নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিল্প ও সাহিত্য জগতের এক তৃষ্ণার্ত পথিক।

অনন্ত নিগার

বিজ্ঞানের সঠিক তথ্য বদলে দেবে আপনার জীবন!

অনন্ত নিগার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভূমিকম্প হলে আতঙ্কিত হবেন না!

২১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:১৬

ভূমিকম্প হলেই আমাদের দেশের মানুষ খুবই আতংকিত হয়ে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করতে শুরু করে দেন। অনেকে উঁচু ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে নিজেকে আরো বড় হুমকির মুখে ঠেলে দেন। কিন্তু কিছু তথ্য জানা থাকলে আমার মনে হয় আমাদের মধ্যে আতংকবোধটা তুলনামূলক একটু কম থাকবে। একটু মনোযোগ দিয়ে নীচের তথ্যগুলো পড়ুনঃ
বিশ্বের মধ্যে সবচাইতে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা বা দেশটি হল জাপান। জাপানে প্রতিবছরই ছোট বড়, মাঝারি- মোটামোটি সব রকমের ভূমিকম্পই হয়। কারণ, জাপানের ভৌগোলিক অবস্থানটাই হচ্ছে এমন যে এর চারিদিকেই সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা এবং এই এলাকাগুলোর পুরোটাই আগ্নেয়গিরিতে ভর্তি। আর জাপান সমুদ্রের নীচে আছে একাধিক টেকনোটনিক প্লেটের ফল্ট লাইন, যেখানে প্লেটে প্লেটে নিয়মিত সংঘর্ষ হচ্ছে। তাছাড়া নিয়মিত অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভুমিকম্প তাদের কাছে এখন একটা স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। কয়েক সেকেন্ডের ভুমিকম্প তাদের জন্য কোনো ভূমিকম্পই না। এছাড়াও সামুদ্রিক ভূমিকম্প বা সুনামির মত ভয়ংকর দুর্যোগও তাদের ওপর এসে মাঝে মাঝে থাবা বসায়। বিশ্বের মধ্যে তাই সবচাইতে রিস্কি সিসমিক জোন হিসেবে পরিচিত দেশ হচ্ছে জাপান। অথচ বড় বড় ভূমিকম্প ছাড়া এরা ছোটখাটো ঝাঁকুনিতে মোটেও উদ্বিগ্ন হয়না। আর আমাদের দেশে মাত্র কয়েকসেকেন্ডের এক নাড়াতেই একেবারে ভয়ে আমাদের হাড় পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। অথচ আমাদের দেশের মাটির নীচে বড় কোনো ফল্ট লাইন তেমন একটা নেই বললেই চলে। যেগুলো আছে, সেগুলো হচ্ছে ছোটখাটো এবং সেগুলো হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারতের নীচ দিয়ে চলে যাওয়া বড় ফল্ট লাইনের শাখা-প্রশাখা মাত্র।
আরেকটা উদাহরণ দেই এবার। আমাদের খুব কাছের একটা দেশ হল নেপাল। সিসমিক অ্যাক্টিভ জোন হিসেবে পরিচিত হিমালয়ের এই দেশটি ঝুঁকির দিক দিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয়। বড় বড় ফল্ট লাইন মাটির নীচ দিয়ে যাওয়া আমাদের খুব কাছের এই দেশটি মারাত্মক ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। ওই দেশেও বড় বড় ভূমিকম্প এবং ভূমিধ্বসের ঘটনা নিয়মিতই ঘটে। এবং তারাও ছোটখাটো ঝাঁকুনিতে অভ্যস্ত। নেপালের মানুষরাও মানসিকভাবে ভূমিকম্পের দিক দিয়ে বেশ শক্ত। ছোটখাটো ভূমিকম্প হলে তারা এত সহজে লেজ তুলে দৌড়ায় না। এরকম ঝুকিপূর্ণ দেশের তালিকার মধ্যে আরো আছে- ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, এল সালভাদর ইত্যাদি।
কিছু তথ্য মনে রাখবেনঃ
প্রথমত, ভূমিকম্প যত বড় ঝাঁকুনিই দিক না কেন, এর ভয়াবহতা নির্ভর করে এটা কত সময় টিকবে- তার উপর। ঝাঁকুনির উপর নয়।
দ্বিতীয়ত, ভূমিকম্প বেশি ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে তার উৎপত্তিস্থলে অর্থ্যাত এপিক সেন্টারে। আর আমাদের দেশে যে ভূমিকম্পগুলো হয়, সেগুলোর বেশিরভাগই আসে ভারত বা নেপাল থেকে। অর্থ্যাত এপিক সেন্টার আমাদের থেকে অনেক দূরে।
তৃতীয়ৎ, ভূমিকম্প দিলেই সাথে সাথে কোনো ভবন ধ্বসে পড়ে না। বড় আকারের ভূমিকম্প কয়েক মিনিট ধরে দিতে থাকলে একসময় খুবই দুর্বল প্রকৃতির ভবনগুলো হয়তো ধ্বসে পড়তে পারে। সুতরাং আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, কয়েক মিনিট সময় হাতে পাচ্ছেন। তাই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে উল্টাপাল্টা কিছু করে বসবেন না। একটু মাথা ঠান্ডা রাখুন।
আর চতুর্থ ব্যাপারটা হল- ভূমিকম্প থামার সাথে সাথেই থেমে গেছে ভেবে নিজ ভবনে ঢুকবেন না। নূন্যতম দশ মিনিট পরে ঢুকবেন। কারণ, অনেক সময় বড় ভূমিকম্প আসার আগে প্রাইমারি ভূমিকম্প আসে। প্রাইমারিটা শেষ হবার দশ মিনিটের মধ্যেই বড়টা আসে। যদি দশ মিনিট পার হয়ে যায়, তাহলে নিশ্চিন্ত হয়ে ভেতরে ঢুকুন।
আর সবচাইতে বড় ব্যাপার হল- যদি ঈশ্বর আপনার সাথে থাকেন, তাহলে আপনার কিছুই হবেনা। এই বিশ্বাসটুকু রাখবেন। ভালো থাকবেন সবাই।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:২৮

করুণাধারা বলেছেন: খুব দরকারি কথা লিখেছেন। আমি মাঝে মাঝেই ভূমিকম্পর ভয়ে আতংকগ্রস্ত হই।

ধন্যবাদ পোস্টের জন্য।

২২ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫

অনন্ত নিগার বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

২| ২১ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:৫৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: উপকারী পোষ্টে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা জানবেন।

২২ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫

অনন্ত নিগার বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.