নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিল্প ও সাহিত্য জগতের এক তৃষ্ণার্ত পথিক।

অনন্ত নিগার

বিজ্ঞানের সঠিক তথ্য বদলে দেবে আপনার জীবন!

অনন্ত নিগার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পানি কচু পাতাকে ভেজাতে পারেনা কেন?

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫

শৈশবে আমরা অনেকবার বৃষ্টি আসার পর বড় বড় কচুপাতা মাথায় নিয়ে ছাতা বানিয়ে দৌড়েছি। কচুপাতা থেকে পানি গড়িয়ে পরতে দেখেছি, কিন্তু ভিজতে দেখিনি। অথবা অনেক সময় নিজেরাই নাছোড়বান্দার মতো পানির পাত্র এনে কচুগাছের মাথায় ঢেলে তাকে গোসল করানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু নাহ! ব্যাটা তো গোসল করেনা। আজীবন শুষ্ক থাকার এই রহস্যটা কী? যেখানে অন্য যেকোনও গাছের পাতায় অনায়াসে পানি বা বৃষ্টির ফোঁটা আটকে থাকে, সেখানে কচুপাতার এমন একগুঁয়ে স্বভাবের কারণ কী?
আশৈশব ভেবেছি। ধরে নিয়েছিলাম, হয়তো পলিথিন ব্যাগের মতো কচুপাতার গায়েও কোনও ন্যাচারাল পলিথিনের পাতলা আবরণ রয়েছে। কিন্তু কোনও এককালে বিজ্ঞান পড়ে জানতে পারলাম সেই প্রশ্নের সুদুত্তর। তবে সরাসরি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাতে যাওয়ার আগে আমি আমার মতো করে একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে দেই আগে, এতে আমার মনে হয় বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা আমাদের জন্য আরও সহজ হয়ে যাবে।

ধরুন, আপনি অনায়াসে স্পাইডারম্যানের মতো একটা এবড়ো-খেবড়ো দেয়াল বেয়ে সহজেই উঠে যেতে পারেন উপরে। কেন? কারণ, দেয়ালটার গা খুব বেশী এবড়োখেবড়ো ও গর্তে ভরপুর থাকায় আপনি দেয়ালের সেই ভাঁজগুলোতে হাত রেখে সহজে বেয়ে উঠে যেতে পারছেন। কিন্তু এবার যদি আমি আপনাকে বলি ক্যারম বোর্ডের মতো মসৃণ কোনও দেয়াল বেয়ে উপরে ওঠার জন্য, পারবেন? ক্যারমের মতো মসৃণ দেওয়াল তো দূরের কথা, স্বাভাবিক উঁচু দেয়ালই আমরা হাত দিয়ে ধরে ধরে বেয়ে উঠতে পারবো না। হয় দেয়ালটাকে খুব অমসৃণ হতে হবে, আর নয়তো আমাদের হাতে স্পাইডারম্যানের মতো আঠালো কোনও পদার্থ লাগানো থাকতে হবে, অন্যথায় এ-কাজ অসাধ্য সবার জন্য।
এবার কল্পনা করুণ, আপনি হলেন বৃষ্টির ফোঁটা, আর দেয়ালটা হল গাছের পাতা। মিলটা কোথায় বুঝতে পারছেন? অমসৃণ দেয়ালগুলো হচ্ছে অন্যান্য গাছের পাতা, যেগুলোতে আপনি, মানে পানির ফোঁটা আটকে থাকতে পারে। কিন্তু মসৃণ দেয়ালটা হচ্ছে কচুপাতা যেখানে আপনি, মানে পানির ফোঁটা আটকে থাকতে পারেনা। এবার চলুন বৈজ্ঞানিক শব্দ দিয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা আমরা শুনে নেই।

প্রথমে দুটি শব্দের সংজ্ঞা আমরা জেনে নেই। সংসক্তি বল ও আসঞ্জন বল। একই পদার্থের অণুগুলোর নিজেদের মধ্যে বিদ্যমান আকর্ষণ বল হচ্ছে সংসক্তি বল। আর দুটি ভিন্ন পদার্থের অণুর মধ্যকার আকর্ষণ বলকে বলা হয় আসঞ্জন বল।

পানি যখন কোনও গাছের পাতায় কিংবা অন্য পদার্থের উপরে এসে পড়ে, তখন সেটি সেই পাতায় বা সেই পদার্থে আটকে থাকতে হলে তাকে একটি শর্ত মেনে চলতে হয়। সেই শর্তটি হচ্ছে- গাছের পাতার উপরে পানি ঢাললে যদি পানি ও কচুপাতার অণুগুলোর আকর্ষণ বল পানির নিজের অণুগুলোর আকর্ষণ বল অপেক্ষা বেশী হয়, অর্থাৎ আসঞ্জন বল যদি সংসক্তি বল অপেক্ষা বেশী হয়, তাহলেই কেবল পানি সেখানে আটকে থাকবে। মানে, পানির অণুগুলোর মধ্যকার ফাঁকের চেয়ে যদি পাতার অণুর মধ্যকার ফাঁক বেশী হয়, তাহলে পানি সেই ফাঁকে হাত রেখে আটকে থাকতে পারবে। কিন্তু ঘটনা যদি হয় উলটো, মানে পানি ও কচুপাতার আসঞ্জন বল অপেক্ষা পানির অণুসমূহের মধ্যকার সংসক্তি বল অধিক শক্তিশালী হয়, তাহলে পানি আর সেখানে আটকাবে না, পিছলে পড়ে যাবে, যেভাবে আপনি মসৃণ দেয়াল থেকে পিছলে পড়ে যাবেন অনায়াসেই। এই হল মূল ব্যাপার। ধন্যবাদ সবাইকে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৩

সাহিনুর বলেছেন: ভাইয়া দারুন লিখেছেন কিন্তু আপনি।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫২

অনন্ত নিগার বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আশা করি পাশে থাকবেন সবসময়।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৫

স্বপ্নীল ফিরোজ বলেছেন: দারুণ তো।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২১

রাজীব নুর বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতার প্রুফ কে দেখেছিলেন ?

৪| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩১

কলাবাগান১ বলেছেন: চমৎকার বিষয়...আপনি জানেন কি পিচার প্ল্যান্ট তার পাতাকে এমনভাবে পিচ্ছিল করে রাখে যাতে পোকা মাকড় পিছলায়ে তার গ্লাসের মত আকৃতির পাতার নিচে পড়ে যায় যেখানে সে তার রস দিয়ে পোকা কে মেরে খায় (Carnivorous plant)
"pitcher plants use to make insects slide down their leaves into their digestive juices."
হার্ভাডের বিজ্ঞানী আইজেনবার্গ এই নিয়ে গবেষনা করেন এবং পাতার অনুকরনে সুপার স্লিপারী মেটেরিয়ালস আবিস্কার করেন যেটা পানিকেও মাইনাস তাপমাত্রা তে ও জমতে দেয় না যদি সেই মেটিরিয়ালস দিয়ে কোন বস্তু বানানো হয়..নাসার চ্যালেন্জার বিধ্বস্ত হয় রকেটের গায়ে বরফ জমাতে ...এখন চিন্তা হচ্ছে এই মেটিরিয়ায়লস দিয়ে রকেট এর সারফেস কে মুড়ে দেওয়া..

এর আরো এপ্লিকেশন দেখুন এখানে

Super Slippery Surface inspired by plant slipper surface
YouTube link for Super Slippery materials

রাজীব নুর সব জায়গায় তার 'ট্রেডমার্ক' কে দেখাতে চায়........বিখ্যাত হওয়ার অপচেস্টা

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৪

অনন্ত নিগার বলেছেন: না ভাই, অতো কিছু জানিনা। ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য এবং লিংক এটাচমেন্টের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.