নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি তো আমিই।

আধারে আমি৪২০

আধারে আমি৪২০ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আয়োনীয় দর্শন: বস্তুবাদী দর্শন ও বিজ্ঞান চিন্তার শুরুর কথা......................................................... (পর্ব- ২)

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:০০

এনাক্সিমেন্ডার(Anaximander; 611-547 BC):
আয়োনীয় দর্শনের পরবর্তী দার্শনিক এনাক্সিমেন্ডার। তিনিও ছিলেন মিলিটাস এর অধিবাসী এবং মনীষী থেলিসের প্রত্যক্ষ ছাত্র। এনাক্সিমেন্ডার ছিলেন একজন বিরল চিন্তাশক্তি ও প্রজ্ঞার এক দার্শনিক। তিনিই ছিলেন প্রথম আয়োনীয় তথা গ্রীক দার্শনিক যিনি তার দর্শনকে পুস্তক আকারে লিপিবদ্ধ করেন। কিন্তু তা সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায়। ভূগোল, জ্যামিতি, জ্যোতিষ শাস্ত্র বিষয়ে তার জ্ঞান ছিল তুখোর।
তিনি পৃথিবীর প্রথম মানচিত্রকার, সৌর জগতের নক্সাকারী ও সূর্যঘড়ির আবিষ্কারক।

থেলিস মতো তিনি কোন নির্দিষ্ট পদার্থ থেকে পৃথিবীর শুরু বলে চিহ্নিত করেন নি। তবে কোন বস্তু বা পদার্থ থেকে যে পৃথিবীর শুরু সে ব্যাপারে একমত ছিলেন। তার এই বস্তু ছিল- 'অনির্দিষ্ট নিরাকার' এবং কোন প্রকার ধরনবিহীন। এই বস্তুর একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে: যা অন্য বস্তু থেকে পৃথক। এই পৃথক সত্তার নাম 'আপেরিয়ন' বা অসীমতা। তার এই আপেরিয়ন বা অসীমতার দর্শন বিমূর্ত চেতনার ক্ষেত্রে গ্রীক দর্শনকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। এই আপেরিয়ন হতেই পৃথক বিশ্বের শুরু। তিনি মনে করেন 'আপেরিয়ন' বা মূল শক্তির নিয়ামক হলো তাপ ও শৈত্য। অনির্দিষ্ট বস্তু অত্যন্ত অস্পষ্ট প্রকৃয়ায় শৈত্য ও উষ্ণতায় পৃথক হয়ে পড়ে। এবং এগুলোর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ফলে এই পৃথিবীর সৃস্টি। তিনি মনে করতেন- বস্তু জগতের সবগুলোর মধ্যে অগ্নির প্রভাবই বেশি। নিসর্গ জগতের সৃস্টিসমূহ এক একটি অগ্নির চক্র হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আকাশ, বাতাস, সমুদ্র, মাটি সবই শৈত্য আর উষ্ণতার সংঘর্ষ ও বিচ্ছুরনের ফল। তিনি উষ্ণতা ও শৈত্যের মধ্য দিয়ে সৃস্টিতত্ত্বকে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন।
তার মতে- পৃথিবী বেলুনাকৃতির এবং এর চারপাশে একটি অগ্নিগোলক অনবরত ঘুর্নায়মান, বাকল যেভাবে গাছের সাথে দৃঢ়ভাবে লেগে থাকে ঠিক সেভাবে এটি পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত অথচ ঘূর্ননরত। এবং এটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ফলেই সূর্য, চন্দ্র ও তারকা রাজির সৃস্টি। তিনি পৃথিবীকে মহাবিশ্বের কেন্দ্র ভেবেছিলেন। এবং তিনি একটা সৌর জগতের মডেলও তৈরি করেছিলেন। তিনিই প্রথম ভেবেছিলেন যে- সূর্য বিশাল ভরের কোন বস্তু।

জীবের উৎপত্তি নিয়েও তার একটি বিশেষ মতবাদ রয়েছে। তার মতে- সূর্যের তেজে পৃথিবীর জলজ অংশ ক্রমাগত শুকিয়ে যায় এবং তাপ ও জলীয় অংশ থেকে জীবের সৃস্টি হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এই প্রানীগুলো খুবই ক্ষুদ্র ছিল। পরবর্তীতে পরিবেশ ও পরিস্থিতির প্রভাবে ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। তিনি প্রমান করতে চেয়েছিলেন- পৃথিবীর আদি জীব মানুষ নয়, মৎস্য জাতীয় কোন প্রানী। জলভাগ শুকিয়ে যাওয়ার কারনে এগুলো স্থলে চলে আসে এবং পরিবেশের প্রভাবে ডাঙ্গায় চলাচলের উপযোগী অঙ্গ-প্রতঙ্গের উৎপত্তি হয়। এটা আধুনিক বিবর্তনবাদের সাথে মিলে যায়। তাই বলা যায়- বিবর্তনবাদের ক্ষেত্রে এনাক্সিমেন্ডার ছিলো পথ প্রদর্শক।

এনাক্সিমেন্ডার চিন্তা-দর্শনে থেলিসের চেয়ে বেশ এগিয়ে ছিলেন। তিনিই দ্বান্দিক বস্তুবাদের শুরু করেছিলেন বলা যায়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৮

সিপন মিয়া বলেছেন: দু'টোই পড়লাম।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫

আধারে আমি৪২০ বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.