নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশে ফ্রিজে গরুর মাংস রাখার অভিযোগে আখলাখ নামক এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরেছে কিছু উগ্রপন্থি হিন্দু। তার ২২ বছর বয়সী ছেলেকেও পিটিয়ে আহত করেছে। এ সবই ধর্মের গোড়ামির জন্য। ভুক্তভোগীর পরিবার দাবী করেছে তাদের বাড়ীতে গরুর মাংস ছিল না, ছিল খাসির মাংস।
আমার প্রশ্ন হলো- গরুর মাংস থাকলেই বা কি সমস্যা? তাদের ঈদ তারা গরুর মাংশ খাবে না খাসির মাংস খাবে, সেটা ওদের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তারা তো আপনাকে খাওয়ায় নি? তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সমস্যাটা ধর্মান্ধতা বা ধর্মের গোড়ামীতে। এই গোড়ামি বা মৌলবাদীতাই সব নষ্টের মূলে।
তবে বাংলাদেশে এর বিপরীতে হিন্দু ঘরবাড়ী মন্দিরে হামলা হয় নি। এটা অত্যন্ত সৌভাগ্যের কথা।
কারন আমরা এর পূর্বে দেখেছি, ভারতে কোন সাম্প্রদায়িক হামলা হলে, সেটার আগুন বাংলাদেশেকেও পুড়িয়েছে । কারন এদেশের হিন্দুরা ভারতের হিন্দুদের জাত ভাই। এছাড়া কোন কারন নাই। যেহেতু জাত ভাই সেহেতু ওদের না পেলেও এদের মারো।
১৯৯২ সালে উন্মাদ, উগ্রপন্থি হিন্দুরা ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে এবং মুসলিমদের উপড় চালায় অকথ্য নির্যাতন। তাদের অভিযোগ ছিল- মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির ছিল। যার ফলে নৃশংসতার স্বীকার হয়ে বিলীন হয়ে যায় শত বছরের পুরনো মসজিদটি।
২০০২ সালের গুজরাটের দাঙ্গায় কয়েক হাজার ডানুষ মারা যায়। এছাড়া ভূমিহীন হয়ে যায় হাজারো মানুষ। যাদের অধিকংশ ছিল মুসলিম। এটাও ছিল ধর্মের দোহাই দিয়ে। এই ঘটনাগুলো ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপড় অকথ্য নির্যাতনের খড়গ। এই নির্মমতার স্বীকার কিছু নিরপরাধ মানুষ। যারা জানতও না বাবারি মসজিদ বা গুজরাট কোথায়?এই মানুষগুলো কি দোষ ছিল?তাদের দোষ একটাই তারা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কাফের। এরা হীন বল। তাই এদের মারা যায়েজ।
তাছাড়া ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময়কার চিত্রটাও দেখতে পারি। সে সময় হাজার হাজার হিন্দু মুসলিম নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিল। তারা শুধু ধর্মের কারনে হয়েছিল ভিটেছাড়া, উদ্বাস্তু। তাদের চিরচেনা বাড়ীটাই হঠাৎ করে হয়ে গেছে অন্যের। সারা জীবনের পরিচিত মুখগুলোই হঠাৎ করে অপরিচিত হয়েছিল। এসবই হয়েছে শুধু ধর্মের কারনে। ধর্মই মানুষের ভেতরের পশুটাকে বের করে এনেছিল।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায়শই হিন্দুদের মন্দির, বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। ২০১৩ সালে শ'য়ে শ'য়ে হিন্দু মন্দির, বাড়িঘর ভাংচুর করেছে নিছকই কিছু গুজবের ভাত্তিতে। পত্রিকার পাতা খুললেই এ ধরনের খবর অহরহ চোখে পড়ে। এটা কিসের জন্য। ধর্মের জন্যই তো? নাকি নয়?
২০১২ সালের রামুর সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনার কথা মনে আছে তো? সেদিন সেখানে প্রায় ১২ টি বৌদ্ধ মন্দির ও ৪০ টি বাড়ী পুড়িয়ে দেয়া হয়। সেখানে গুজব ছিল কোরান অপমাননার। কে জানি কোরআন অপমাননা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল আর তাতেই ধর্মান্ধ কট্টরপন্থী মুসলিমরা এই বিভৎস ঘটনার জন্ম দিয়েছিল। অসহায় সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের সেখানে কিছুই করার ছিল না। সেখানে ছিল শুধু উন্মত্ত মুসলিমদের উল্লাস, আগুনের লেলিহান শিখা আর বৌদ্ধদের অসহায় আর্তনাদ। এ সবই ধর্মান্ধতার ফসল।
বৌদ্ধরা নাকি খুবই নিরীহ আর শান্তিপ্রিয় জাতি। অথচ ২০১২ সালে মায়ানমারে তারাই রোহিঙ্গাদের উপড় চালিয়েছিল অবর্ননীয় নির্যাতন। ধর্মান্ধতার বিষাক্ত ছোবলে তারাও হয়ে উঠেছিল একেকটা মানুষ খেকো হিংস্র জন্তু। সেখানে ছড়িয়ে পড়েছিল জাতিগত দাঙ্গা। যার স্বীকার হয়েছিল মুসলিমরা। কয়েক শত মানুষ তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিল এর যাতাকলে পড়ে। উদ্বাস্তু হতে হয়েছে কয়েক হাজার মুসলিমকে। এটাও শুধু ধর্মের কারনে। সেখানেও শুধু গুজবের উপড় ভিত্তি করে এই অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল।
আজকের তথাকথিত সভ্য খ্রিস্টানরাও ছিল উগ্রপন্থি। এটা এখনো বিদ্যমান হয়তোবা একটু কম। তারা একসময় গুজব রটিয়ে হাজার হাজার মানুষকে মেরেছিল শুধু ধর্মের কারনে। হাজার হাজার মহিলাকে মেরেছিল ডাইনি অপবাদ দিয়ে। তাছাড়া ক্রুসেডের যুদ্ধের কথা নিশ্চয় সবাই জানেন।
ধর্মান্ধতার করাল গ্রাস থেকে কোন ধর্মের মানুষই রেহাই পায় নি। সব দেশের সংখ্যালঘুরাই হয়েছে নির্যাতনে স্বীকার। প্রতিটি ধর্মই ভিন্ন ধর্মের মানুষের উপড় দিয় স্টীম রোলার চালিয়েছে। এটা অতীতেও ঘটেছে, এখনও ঘটতেছে এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে বলে মনে হয়।
এটা কি ধর্মের ব্যর্থতা? আপাত দৃষ্টিতে তাই মনে হয়। অনেকেই বলবেন- এগুলো করেছে কিছু সুযোগ সন্ধানী, নিকৃষ্ট মানুষ। এখানে ধর্মের কি দোষ? আমার প্রশ্ন - এরা নিরীহ মানুষের উপড় অত্যাচার করেছে কিসের জন্য? ধর্মের জন্যই তো, নাকি? মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃস্টি করেছে ধর্মই। তাহলে ধর্ম এখানে কিভাবে দায় এড়াতে পারে?
ধর্ম হাজার মাইল দুরের মানুষকে আপন করেছে অথচ পাশের বাসার মানুষটাকে করে দিয়েছে পর। যে ধর্ম মানুষকে মানুষ ভাবতে শিখায় না, সেই ধর্ম দিয়ে কি লাভ? এটা তখনেই বন্ধ হবে যেদিন পৃথিবীর সব মানুষের একটাই ধর্ম হবে, সেটা হলো মানবতা।
সর্বোপরি- মানব ধর্মই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৩৮
আধারে আমি৪২০ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২৯
বালুচর্ বলেছেন: ধর্ম চাই, ধর্মান্ধতা চাইনা।
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৪১
আধারে আমি৪২০ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩২
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ধর্ম আছে বলেই পৃথিবীটা এখনও বাসযোগ্য হয়ে আছে। ধর্মের কারণে যত মানুষ মারা গিয়েছে তার চেয়ে বেশী মারা গিয়েছে অন্যান্য কারণে। ধর্মীয় গোঁড়ামি বন্ধ করতে হবে ধর্ম নয়। মানবতা ধর্মতেই আছে।
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৬
আধারে আমি৪২০ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। কিন্তু তারপরেও কিছু কথা থেকে যায়।
৪| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩২
দরবেশমুসাফির বলেছেন: এটা কি ধর্মের ব্যর্থতা? আপাত দৃষ্টিতে তাই মনে হয়। অনেকেই বলবেন- এগুলো করেছে কিছু সুযোগ সন্ধানী, নিকৃষ্ট মানুষ। এখানে ধর্মের কি দোষ? আমার প্রশ্ন - এরা নিরীহ মানুষের উপড় অত্যাচার করেছে কিসের জন্য? ধর্মের জন্যই তো, নাকি?
কিছু সুযোগ সন্ধানী, নিকৃষ্ট মানুষ ধর্মের জন্য কেন একাজ করবে?? ধর্ম আর নৈতিকতার কোন ধার তারা ধারবে কেন??তারা এগুলো করেছে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার ও ক্ষমতা হাসিলের জন্য। এক্ষেত্রে ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ মানুষকে নিজেদের ইচ্ছামত ধর্ম বুঝিয়ে তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার ও ক্ষমতা হাসিলের জন্য তাদের ব্যবহার করেছে। এক্ষেত্রে ধর্মের কোন দোষ নেই।
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৪০
আধারে আমি৪২০ বলেছেন: ধর্মের সৃস্টিই হয়েছিল মানুষের শান্তির জন্য। কিন্তু সেই ধর্মই কেন বারবার অশান্তি সৃস্টি করছে? ধন্যবাদ।
৫| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৪
গেম চেঞ্জার বলেছেন: ধর্মের ব্যর্থতা বলে আসলে আরেকটা গোঁড়ামিপনা করা হয়। এটা হলো রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। প্রশাসনের, শিক্ষার, সভ্য হতে পারার ব্যর্থতা।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৪৫
আধারে আমি৪২০ বলেছেন: রাষ্ট্রের ব্যর্থতাটাই মূখ্য।
৬| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৪৩
তালভোলা বলেছেন: ভালো পোস্ট
তবে বলি , অাগুন দিয়ে রান্না করা অাবার ঘর বাড়ি জ্বালানো যায়
সবটাই নির্ভর করে তার ব্যবহারের ওপর।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৪২
আধারে আমি৪২০ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২৫
আহলান বলেছেন: হুমম ...