নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুসূর্যকে লেখা রূপকথা

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য

অনুসূর্যকে লেখা রূপকথা

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প : মাতুলালয়

০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:১৩


এখন তাহারা একে অপরের কাপড় খুলিতেছে। দর্শক কোনদিকে তাকাইবে? কোন ক্ষতচিহ্ন ধরিয়া পাঠ করিবে ভূগোল। আহা, মাতুলালয়ে আসিয়া এইসব আম্রকাননে যে হরিলুট হইবে তাহা কি আমরা আগে জানিতাম?

বৃদ্ধ কবিয়ালের ভাবনা এইভাবে সাধুরীতিতে আবর্তিত হয়। এবং তার ললাটে আরো দুইটা ভাঁজ পড়ে। তারপর দুপাটি জুতো বগলে চেপে রেখে চোখ মোছে হাতের পিঠে। হঠাৎ তার কাঁধের ঝোলা থেকে লাফিয়ে বের হয় তার সঙ্গী ইঁদুরটি। বড় রাস্তায় নেমে এদিকওদিক খাবার সন্ধান করে। ইঁদুরটির আচরণে বৃদ্ধের কেমন দিশেহারা লাগে। তিনি ইঁদুরটিকে ধরতে যান। কিন্তু পারেন না। এই আপাতপিচ্ছিল প্রাণিটি একটা নর্দমায় নেমে পড়ে। ফলত বৃদ্ধ পুনর্বার একা হয়ে পড়েন। এবং একাকিত্ব কাটানোর ওষুধ হিশেবে তাদের কাপড় খোলা দেখেন। আর ভাবেন, মাতুলালয়ে আসিয়া এইসব আম্রকাননে যে হরিলুট হইবে তাহা কি আমরা আগে জানিতাম?

বৃদ্ধ কবিয়াল বললো, ‘হয়! আমি কি আর জানিতাম মাঝগাঙে এই নৌকায় জল ঢুকিবে। জল উঠাইতে লাগিবে আড়াই ঘন্টা। এই যাত্রাবিড়ম্বনা জাইন্না শুইন্নাই—জাইন্না শুইনাই এই পথে আসিয়াছি। এখন কী করিবা?’
পাশ থেকে অস্ফূটে শোনা যায়, ‘বৃহন্নলা, নপুংসক, ফুটপাথ, খাসি, লাল আয়না, ফালুদা...’ ইত্যাদি।

ফলত বৃদ্ধ একদিন কবিরাজের বাড়ি যায়। কবিরাজকে বলে, ‘কবিরাজ সাব! আপনে কবিরাজ আর আমি কবি—আমার সমস্যার সমাধান দ্যান।’
‘সমস্যাডা কী?’
‘বিরাট রাজার মাইয়াডারে আর নাচ-মাছ শিখাইতাম চাই না—টেম্পু চালাইতাম চাই।’
‘হক কথা। সমাধান হইতাছে তেঁতুল।’
‘হ! তেঁতুল খাই তো। চটপটির লগে খাই, খালি খালি বিট লবণ দিয়া খাই... আরিফ্যার লগে বেইট ধইরা একপোয়া খাইছিলাম...’
‘এইডাই সমস্যা।’
‘তয় যে কইলেন সমাধান!’
‘না, বিচি খাইতে হইবে। তেঁতুল খাইলে খাড়ায় না, এর বিচি খাইলে খাড়ায়।’

তারপর দিন যায়, রাত আসে। সে বললো, ‘কী হইয়াছে?’
কবি উত্তর করলো, ‘তাহাদের কথা ও কাজে মিল নাই। আমার উচিত তাহাকে পরিত্যাগ করা।’
‘কেউ যদি শুরু থেকে নৈর্ব্যক্তিক সবকিছুকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করা শুরু করে, তবে তাকে অস্থাবর সম্পত্তি যথা পায়ের স্যান্ডেল, জাঙ্গিয়া বা পেন্টি, গায়ের শাট বা শেমিজ বা শাড়ি, বিছানার চাদর, দাঁতের ব্রাশ ইত্যাকার বস্তুর মতোই নিজের খেয়াল খুশি মতো ব্যবহার করা শুরু করে। আর তারা তো এই হীরকরানির রাজ্যে শুরু থেকেই রাজ্যটাকে ব্যক্তিগত অস্থাবর সম্পত্তি কিংবা মাতুলালয় বা মামাবাড়ি হিশেবে ধরে নিয়ে খাবলাখাবলি করতেছে।’
‘আহ্ আহ্...।’ বৃদ্ধ কবিয়ালের বুকের ভিতর থেকে চিৎকার বেরিয়ে এলো ।
সে মিন মিন করে বললো, ‘ধৈর্য ধারণ করো। মানুষের সীমাবদ্ধতা রহিয়াছে। সবই প্রকৃত অর্থে ভূতের কাণ্ড। ইহাদের তিন পা। মাঝখানের পা অন্য দুই পায়ের তুলনায় একটু খাটো। ডান পা বেশি চলে, বাম পা একটু খোঁড়া। ইহারা শুধু মাছভাজি নয় গরুর মাংসও পছন্দ করে, কালোভুনা। একচক্ষু হরিণেরাই কেবল ইহাদের দেখে বলে মৃগনাভী চুরি হয়ে যায়।’
তার কথা শুনে তো আমার মেজাজ ছিড়ে যাবার উপক্রম হলো। চিৎকার করে বললাম, ‘চুপ! শুয়োরের বাচ্চা। আর একটা কথা বলিলে তোকে খুন করিয়া ফেলিবো...’

আমার রক্তবর্ণ চোখ রক্তজবা হওয়ার আগেই সে চলে গেলো দেখে আমি কারো দৃশ্য অনুসরণ করলাম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৪৪

প্রতিভাবান অলস বলেছেন: পুরোটা পড়ার পর মনে হলো অনেক কিছু বুঝলামম,আবার সাথে সাথেই মনে হলো কি যে বুঝলাম সেটাই বুঝলাম না!

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৫০

সুমন কর বলেছেন: বর্তমান সময়ের কিছু কথা এসেছে। বাকিটা দুরূহ !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.