নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুসূর্যকে লেখা রূপকথা

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য

অনুসূর্যকে লেখা রূপকথা

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডুব, ঢাকা অ্যাটাক ও আমাদের সিনেমা

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:১৬



ডুব আমি দেখিনি। দেখার ইচ্ছা হয়নি। কারণ ফারুকী হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে ফাতরামি করেছে। পরে কখনো হয়তো দেখবো। এই সিনেমার অধিকাংশ দর্শক ইরফান খান অভিনয় করেছে বা ফারুকীর সিনেমা বলে দেখতে যাচ্ছে না, দেখতে যাচ্ছে হুমায়ূন আহমেদ-এর জন্য। এটা পৃথিবীর অনেকগুলি হল/থিয়েটারে রিলিজ পেয়েছে এবং পাবে। জায়গায় জায়গায় ফারুকীর অনেক লিংক আছে, জানাশোনা আছে। তারওপর প্রযোজক মালদার। তবে এই সিনেমা যদি ব্যবসা করে সেটা হুমায়ূন আহমেদের নাম ভাঙিয়েই করবে।
ডুব আমাকে টানেনি, ঢাকা অ্যাটাক টেনেছে। ডুব টানছে না কারণ এটা হুমায়ুন আহমেদের জীবনভিত্তিক অনেকটা, তাও তার জীবনের ছোট্ট একটা সময়ের বির্তকিত একটা বিষয় নিয়ে বানানো। এইটা নিয়ে ফারুকি একধরনের মিথ্যাচার করেছে, মিডিয়ার কাছে পাশ কাটানো কথা বলেছে। সে বলছে হুমায়ুনের জীবন থেকে কাহিনি নিয়ে সে বানায় নাই। কিন্তু সে তা করছে। ট্রেইলার দেখলেই সেটা বোঝা যায়। স্যুট পরা ছেলেটাকে দেখলেই নুহাশের মুখ মনে পড়ে। সমুদ্র দেখলেই সমুদ্রবিলাস। লাশের খাটিয়া দেখলেই হুমায়ূনের মৃত্যুর কথা। এইটা অসততা। হুমায়ুনের মৃত্যুর ৫০/১০০ বছর পর তার পুরো জীবন নিয়ে সিনেমা বানালে আমার বা আমাদের কোনো আপত্তি ছিলো না। কিন্তু তার জীবনের একটা খ-িত এবং বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সিনেমা বানানোর উদ্দেশ্যে আর যাই হোক মহৎ হতে পারে না। বিশেষ করে তার পরিবার যেহেতু জীবিত। তাদের কাছে অনুমতি নেয়ার বিষয় আছে। কারণ তাদের আপত্তির জায়গা থাকতেই পারে। এইটা স্রেফ অবাণিজ্যিক সিনেমা বানানোর নাম করে ধান্ধাবাজি। এই জায়গাতেই ফারুকী অসৎ আমার কাছে। তাকে এই ধান্দাবাজি করতে হলো কারণ সে সোকল্ড কমার্শিয়াল সিনেমা বানাবে না। বানালে তার স্ট্যাটাস নেমে যাবে। সে মূলত পুরস্কার নিতে চায়। আর আরো পরিচিত সমোলোচিত হতে চায়। তাতে বাঙলা সিনেমার কোনো উৎকর্ষ সাধিত হবে না।

তাহলে দীপংকর দীপন মূলধারার বাণিজ্যিক সিনেমা বানালেন কেনো? তিনিতো ফারুকীর মতো অতো পরিচিত না। তবে ঢাকা অ্যাটাক দিয়ে এখন পরিচিতি পাচ্ছেন। কারণ তা সে ডিজার্ভ করে। মূলধারা, বিকল্পধারা ইত্যাকার বিষয়ে তার সবিশদ চুলকানি নাই, অন্যান্য এলার্জিও নাই। তিনি নিপাট ভদ্রলোক। তিনি তো বাণিজ্যিক সিনেমাই বানাবেনই। মূলত বাণিজ্যিক ছবির মধ্যে ভালো সিনেমা বানানোর চেষ্টা করাটাই বাঙলা সিনেমার ক্ষেত্রে বিপ্লবের মধ্যে পড়ে। ফারুকী বিপ্লব করতে চায় নাই। এই কারণে আমি দীপংকর দীপনকেই অ্যাপ্রিশিয়েট করবো। ঢাকা অ্যাটাক ১২৩ টা হলে ৪ সপ্তাহ চলছে মানে সেটা হিট। ৫ কোটির সিনেমা এর মধ্যে ১০ কোটির ব্যবসা করেছে। ধরেন, এই সিনেমা কিছুই হয় নাই। না হইলেও একটা চেষ্টা নিছে সেটাই বাহবা পাওয়ার মতো।

ঢাকা অ্যাটাকের মতো সিনেমা নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। এককথায় বাঙলাদেশি পূর্বাপর বাণিজ্যিক অ্যাকশন সিনেমার তুলনায় ভালো। অনেক নতুন বিষয় এসেছে। ছোটখাট অনেক অসংগতি আছে, তা বলার প্রয়োজন মনে করছি না এই কারণে যে মেইনস্ট্রিম বাণিজ্যিক সিনেমার আকালে এই সিনেমা বিশাল জোয়ার নিয়ে এসেছে বলেই আমার মনে হয়েছে। তবে কয়েকটা বিষয় না বললেই নয়, আরিফিন শুভর জায়গায় যদি পরিচালক এবিএম সুমনকে কাস্ট করতেন তবে খুবই ভালো হতো। এই ছেলেটা ভয়াবহ স্মার্ট, খুবই ভালো এবং ক¤প্যাক্ট অভিনয় করেছে। আর মাহিয়া মাহিকে বাহুল্য মনে হয়েছে, মনে হয়েছে এই সিনেমায় কোনো নায়িকা না থাকলেও চলতো। তারপর পরপর শটে শুভর চুল একবার বড় দেখানো, একবার ছোটো দেখানো। দিনের বেলা বান্দরবানে কমান্ডো টাইপের অপারেশন ইত্যাদি অনেক ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে ভাবলে সিনেমাটা আরো ভালো হতে পারতো। দাঁড়াতে পারতো গল্প। এই সিনেমা ইতোমধ্যে বাঙলাদেশের সকল সিনেমার ব্যবসায়িক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। দীপংকর দীপনের কাছ থেকে আশা রাখছি এই রকম আরো ভালো ভালো থ্রিলার সিনেমা পাবো।

আমি মনে করি বিকল্পধারা বলে কিছু থাকাই দরকার নাই। সবই মেইনস্ট্রিম হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সিনেমা হয় ভালো সিনেমা অথবা দুর্বল সিনেমা। আমি অবশ্যই বাঙলাদেশের সিনেমার প্রেক্ষিতে কথাগুলি বলছি। যে দেশের মেইনস্ট্রিম সিনেমাই দাঁড়াতে পারে নাই সেদেশে পরিচালকদের বিকল্পধারা নির্মাণ করা রীতিমত ক্রাইম, যারা নিজেকে মেধাবী মনে করে। তাদের প্রথমে উচিত মেইনস্ট্রিমটাকে লাইনে আনা, দাঁড় করিয়ে দেয়া। এখন বিষয় হচ্ছে মেইনস্ট্রিম বলতে আপনি কী বোঝেন। আপাত কথায় মেইনস্ট্রিম হচ্ছে যেটা আমজনতা সহজেই গ্রহণ করবে। মানে সাধারণের বোধগম্য।

বিকল্পধারা এখন পর্যন্ত এদেশে কারা নির্মাণ করেছে? এর উত্তর ডিপজল ছাড়া কমবেশি সবাই চেষ্টা করছে । হয় নাই তেমন কিছু। মানে দাঁড়ায় নাই, নেতিয়ে পড়েছে। আমজনতার রুচি পাল্টাতে হলে সেটা মূলধারার বাণিজ্যিক সিনেমার ভিতর দিয়ে পরিবর্তনের মাধ্যমেই করতে হবে। ধরেন, ঢাকা অ্যাটাকের মতো আস্তে আস্তে গল্প পাল্টে দিলেন। তারপর আইটেম সং, ভায়োলেন্স ইত্যাদি। একটা বাণিজ্যিক ছবি চলার জন্য যেইসব মশলা ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে অ্যাকশন, ভায়োলেন্স, সেক্স, রোমান্স ইত্যাদি প্রধান। এখন ভায়োলেন্স বাদ দিলে সেক্সকেও আপনি আর্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন, যদি আপনার মাথায় বস্তুর ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা বিদ্যমান থাকে। কিংবা ক্রমে আইটেম সং থেকে নারীর খুল্লাম খুল্লাম বিষয়, নারীকে রসগোল্লা বা যৌনযন্ত্র হিশেবে উপস্থাপনের বিষয় বাদ দেয়া যায়। অ্যাকশনটাকে বিশ্বাসযোগ্য আর বাস্তবসম্মতও করা যায়।

(খসড়া)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৩

আরিফ রুবেল বলেছেন: আপনার মেসেজ যদি আমি না বুঝি তাহলে ব্যর্থতা আমার নয় আপনার। সিনেমা একটু বড় পরিসরে গল্প বলা। গল্প বলার সবার নিজস্ব ধরণ থাকে। গল্পটা জনপ্রিয় হবে কি না সেটা যেমন গল্পের কন্টেন্টের উপর নির্ভর করে তেমনি নির্ভর করে গল্পকারের গল্প বলার উপরও আমার কাছে এই জায়গাটায় ফারুকী ব্যর্থ তার ডুবের গল্প নিয়ে। আর দীপন ব্যবসা করতে পেরেছেন কারণ তার সিনেমায় গল্প ছিল এবং তিনি গল্পটা বলতে পেরেছেন। তাই দর্শকও ঢাকা অ্যাটাকের সাথে থেকেছে। ব্যবসা করেছে।

অ ট আপনি এখনও ব্লগে আছেন দেখে ভালো লাগল।

২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কোন সিনামেক এখন আর সিনেমা মনে হয় না,
সিনেমা এখন ছিঃনামা !

৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২২

সুমন কর বলেছেন: ভালো লিখেছেন। সহমত।

৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৪

সালাউদ্দীন খালেদ বলেছেন: ভাল লিখেছেন, প্রায় ৫ বছর পর ব্লগে লগিন করে আপনার লেখা পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.